নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শোষণ-বৈষম্য হীন একটা মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনে কাজ করি আমি। বুর্জোয়া আধিপত্যের বিপরীতে রাজেনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও মনজাগতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাল্টা আধিপত্য গড়ে তোলাই প্রথম কাজ।
সাঁথিয়ায় হিন্দু পল্লিতে হামলা আর রামুর বৌদ্ধ পল্লিতে হামলা- দুটি হামলাই একই সূত্রে গাঁথা। রামুতে যেমন পুলিশ,সমাজপতি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা হামলার সময় নিবর দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। পাবনার সাঁথিয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক একই। এমনকি স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বা ধর্মনিরপেক্ষ মুসলমানরাও হামলার সময় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে টুশব্দটিও করেননি। যত আহা-উহু সেটা হামলার অনেক পরে।
সংখ্যালঘুদের উপর হামলাকারীরা তো আর প্লেনে চড়ে ভিন দেশ থেকে আসেনি! এমনকি তারা ভিন্ন জেলারও লোক নয়। তারা বেশিরভাগই হিন্দুপল্লির আশপাশের গ্রামগুলোর মুসলমান। সেই সব হামলাকারীদের গ্রামগুলোতে যেমন ধর্মান্ধ ছাগলসম্প্রদায় বাস করে, তেমনি বাস করে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয়পার্টির নেতা-চেলারাও। আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেউই জানলো না অথচ সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হলো- এটা একেবারেই কবির কল্পনা। বাস্তব দৃশ্য ভিন্ন। আমরা দেখেছি রামুর বৌদ্ধপল্লিতে হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলো স্থানীয় জামায়াত, বিএনপি এমনকি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। আর সেই কারনেই রামুর ঘটনায় জড়িতদের বিচারিক প্রক্রিয়া এগুচ্ছে না। মুল পরিকল্পনাকারীদের অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর যাদের ধরা হয়েছে তারাও অনেকে ইতিমধ্যেই সাক্ষী না পাওয়ার অজুহাতে খালাস পেয়ে গিয়েছে।
যে কারনে পুলিশ আসার পরেও রামুতে যেমন হামলা অব্যাহত ছিলো, পুলিশ ছিলো নিরব দর্শক, ঠাওর করতে পারেনি হামলাকারীদের বাঁধা দেবে কি না! উপরের কড়া হুকুম পাওয়ার পরই একমাত্র তারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়। ঠিক সেই একই কারণে সাঁথিয়ার হিন্দু পল্লি পাবনা জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং মহাসড়কের উপর অবস্থিত হলেও পুলিশ আসতে সময় নেয় তিন ঘন্টা। স্থানীয় ভালোমানুষ সাজা মুসলমানরাও হামলার সময় হিন্দুদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেনি। হামলাকারীরা যখন উল্লাস করতে করতে বাড়ী ফিরে গেছে তারপরই কেবলমাত্র হিন্দুদরদী মুসলমানরা এবং পুলিশ এসে হাজির হয়েছে ঘটনাস্থলে। স্থানীয় যে সমস্ত মুসলমানরা সংখ্যালঘুদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা করছেন তাদের অনেকেরই ছেলে, ভাই বা আত্মীয়রাও হামলার সাথে সরাসির যুক্ত ছিলো।
পুলিশ একেতে হুকুমের গোলাম, তারউপর মহাদুর্নীতিবাজ। পুলিশের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত জামাতীদের
আধিপত্যও চোখে পড়ার মতো। তাই পুলিশ দিয়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রদান কখনই সম্ভব নয়। এই ধরণের হামলা একমাত্র স্থানীয় মুসলমানদের পক্ষেই রুখে দেয়া সম্ভব। এলাকার ধর্মন্ধরা যখন হামলার সিদ্ধান্ত নেয় বা হামলার জন্য সমবেত হয়- এটাতো কোন চুরি-গোপনের কাজ না। তারা রিতিমতো মসজিদের মাইক থেকে হামলার ঘোষণা দেয়। স্থানীয় স্কুল বা মাদ্রাসার মাঠে সমাবেশ-মিছিল করে ভাঙচুরের মহড়া দেয়। তাই এলাকার সকলেই বুঝতে পারে কি ঘটতে যাচ্ছে পাশের গ্রামের সংখ্যালঘুদের ভাগ্যে।
যে সমস্ত মুসলমানরা হামলায় অংশ নেয় না বা মনে করে হামলা করা ঠিক নয়, তারাও দিব্যি ঘরে বসে থাকে হামলার পরে মায়াকান্না দেখানোর জন্য।
রামুর ঘটনার যেমন বিচার হয়নি এবং যথাযথ বিচার হওয়ার সম্ভাবনাও নাই। তেমনি সাঁথিয়ার হামলারও যথাযথ বিচার বা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সম্ভাবনা নাই। আর তাই বাংলাদেশে মুসলমান কর্তৃক হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান তথা সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চলতেই থাকবে। মুসলমান বলে কথা! সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশে থাকতে হলে তাই হামলা-নির্যাতন সহ্য করেই থাকতে হবে। অন্যথায় পাশে মহাভারত!
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫২
বেকার সব ০০৭ বলেছেন: হামলা যেই করুক তাদের সঠিক বিচার হওয়া দরকার,
এটা একেবারেই (কবির) কল্পনা বানান টা দেখে নিন