নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শোষণ-বৈষম্য হীন একটা মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনে কাজ করি আমি। বুর্জোয়া আধিপত্যের বিপরীতে রাজেনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও মনজাগতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাল্টা আধিপত্য গড়ে তোলাই প্রথম কাজ।
আজ গণজাগরণ মঞ্চের ১ বছর পূর্তি। ঘটনাবহুল এই এক বছরে গণজাগরণমঞ্চ যেমন অসংখ্য ঘটনার শিকার হয়েছে তেমনি জন্মও দিয়েছে অসংখ্য ঘটনার। গণজাগরণমঞ্চের আন্দোলনের ঢেউ যেমন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে দুনিয়াব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তেমনি দেশের জেলায় জেলায় আর বিদেশের বাঙালী অধ্যূসিত অঞ্চলেও সূচনা করেছে আন্দোলন। এই গণজাগরণমঞ্চই বাঙালী নতুন প্রজন্মকে অন্তত নাড়া দিতে পেরেছে, জাগিয়ে তুলতে পেরেছে তাদের ভিতরকার প্রতিবাদী বাঙালীত্বকে।
কাদের মোল্লার উত্থিত দুটি আঙ্গুল যে গণজাগরণমঞ্চের জন্ম দিয়েছিলো, গণজাগরণমঞ্চের সেই পরোক্ষ জনক রাজাকার কাদের মোল্লা আজ আর নেই! কিন্তু গণজাগরণমঞ্চ ঠিকই এখনও বেঁচে-বর্তে আছে।
একটা পর্যায়ে গণজাগরণমঞ্চের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় আওয়ামী সরকারের হাতে। সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তখন গণজাগরণমঞ্চের ভূমিকাও ছিলো দৃষ্টান্তমূলক। সেটা নিয়ে কম আলোচনা-সমালোচনা হয় নি অবশ্য। অনেকের মতে এখনও গণজাগরণমঞ্চের লাগাম রয়েছে সরকারেরই হাতে।
কিন্তু এতকিছুর পরও গণজাগরণমঞ্চের যে অর্জন, সেই অর্জনকে ম্লান করার কোন সুযোগ নেই। গণজাগরণমঞ্চের মূল অর্জনগুলো যদি আমি পর্যায়ক্রমে লিখতে চাই তাহলে সেগুলো হতে পারে নিন্মরূপ-
লক্ষ লক্ষ বাঙালীকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের প্রতিবাদী কয়েকলক্ষ মানুষকে রাজপথের আন্দোলনে টেনে এনেছে এই গণজাগরণমঞ্চ। মধ্যবিত্তশ্রেণীর একটা অংশও এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে, যা যে কোন আন্দোলনকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিতে খুবই প্রয়োজনীয়। গণজাগরণ মঞ্চ এই লক্ষ লক্ষ মানুষকে যে আন্দোলন শিখিয়ে গেলো, রাজপথে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করা এবং নিজেদের দাবী আদায় করার যে শিক্ষা ও সাহস দিয়ে গেলো- এটা ভবিষ্যতের আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যাপক প্রভাব পড়বে আমার বিশ্বাস।
ধর্মব্যবসায়ীরা গণজাগরণমঞ্চের আন্দোলনকারীদের নাস্তিক হিসাবে আখ্যায়িত করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে খেপিয়ে দেয়ারও সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু কিছু ধর্মান্ধ মানুষ ছাড়া দেশের বেশিরভাগ মানুই ধর্মব্যবসায়ীদেরই এই অপপ্রচার ও অপব্যাখ্যা শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করে নি। এতে একদিকে যেমন রাজপথের আন্দোলনকারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের জন্ম হয়েছে, তেমনি উগ্র-ধর্মান্ধ-ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও বেশ বড় জনমত তৈরী হয়েছে। অনেক ধর্মপরায়ণ আন্দোলনকারীও ধর্মব্যবসায়ীদের এই গণবিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে।
কাঁদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর এবং অন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ তরান্বিত করতে সরকার ও বিচার বিভাগকে যথাযথ চাঁপ সৃষ্টি করতে পেরেছে এই গণজাগরণমঞ্চ। মহাজোট সরকার ও যুদ্ধাপরাধী জামাত-শিবিরের সাথে নতুন বোঝাপড়া ও সমঝোতার যে পাঁয়তারা চলছিলো, গণজাগরণমঞ্চ এই ষড়যন্ত্রকেও রুখে দিতে সমর্থ হয়েছে।
থাবা বাব খুন হয়েছেন। ধর্মগাধাদের হামলার শিকার হয়েছেন আসিফ মহিউদ্দিন সহ গণজাগরণমঞ্চের আরো অসংখ্য কর্মী। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে গণজাগরণমঞ্চ হাজার হাজার মুক্তমনা, প্রতিবাদী তরুণের জন্ম দিয়েছে এবং ধর্মগাধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস ও অনুপ্রেরণাও যুগিয়েছে। এই গণজাগরণমঞ্চই তৈরী করেছে অসংখ্য জনপ্রিয় তরুণ নেতৃত্বের, যারা গণমানুষের স্বার্থ রক্ষায় আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিতে পারবে।
তাই গণজাগরণমঞ্চের অনেক সমালোচনা থাকলেও এর প্রয়োজনীয়তা ও যথার্থতার দিকটিই ফুটে উঠেছে সর্বক্ষেত্রে। শুভ হোক গণজাগরণমঞ্চের আগামী দিনগুলি। তরুণ প্রজন্মের আরো লক্ষ লক্ষ প্রতিবাদকারী, আন্দোলনকারীর জন্ম হোক এই গণজাগরণমঞ্চের মধ্য দিয়ে।
শুভ জন্মদিন গণজাগরণমঞ্চ!
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:০০
ফিলিংস বলেছেন: শুভ শুভ শুভ হোক গণজাগরণমঞ্চের আগামী দিনগুলি >>>>