নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চেষ্টাই আছি........
'পাতা হে- ইহা সে বহ্ত দূর, গলত ওর সেহি কে পাড়, এক ময়দান হে, মে অহা মিলুঙ্গা তুজে।'
পৃথিবীর বিশুদ্ধতম মহান শিল্পী হল- নির্ভেজাল দুঃখ, কষ্ট। সে ক্ষুদার্ত পেটের উত্তাপে পুড়ে যাওয়া হৃদয় হোক, অথবা আশিকীর ছ্যকায়। বিখ্যাত সব পেইন্টিং, কবিতা, গল্প, উপন্যাস দুঃখ-কষ্টে জর্জরিত। এর পেছনে থাকে শিল্পকারের ভগ্নাংশ হৃদয়। কারণ- ভাঙ্গা হৃদয়ের আর্তনাদ কানে পৌঁছায় না, সোজা বুকে চিরে ভেতরে ঢুকে যায়।
spoiler alert
প্রেমের আগুনে ফোস্কা পড়া হৃদয়ের দহনের গল্প এটি, যে হৃদয় আকুলি-বিকুলী করে সবসময়। যেখানে জনার্ধন নামে একটি ছেলে থাকে, যৌথ পরিবারে বাস। রক মিউজিক যার প্যাশন। দু:খ-কষ্ট যাকে কখনো স্পর্শ করেনি। তাই তার সুরেলা কণ্ঠ কানে পৌঁছালেও হৃদয়ে ঢোকে না কারো। Frustrated হয়ে কেবল দাপাতে থাকে। তখন খতানা ভাই তাকে বলে- পৃথিবীর বিখ্যাত সব শিল্পীদের মধ্যে একটা জিনিস কমন, আর সেটা হল পেইন। কথাটা মাথায় গেথে যায় জনার্ধনের। হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে পেইন। কতটা পাগল? আমরা আমজনতা বলি- সৃষ্টিশীল লোকেরা একটু পাগলই হয়।
আমাদের ছকে বাধা জীবনের বাহিরে কাউকে দেখলেই আমরা তাকে পাগল বলি। যেখানে শিল্পকারদের কাজই ছক ভাঙ্গা।
হীর, কলেজের সবচেয়ে সুন্দরী- স্মার্ট মেয়ে। আমাদের সবার কলেজেই এমন একটা মেয়ে থাকে, যে প্রত্যেকের স্বপ্নে তো আসে ঠিকি কিন্তু বাস্তবে থেকে যায় ধরা ছোয়ার বাহিরে। জনার্ধন উরফ জেজের এক বন্ধু মজা করে বলে হৃদয় ভাঙার মেশিন। কথাটা ঘুড়তে থাকে জেজের মাথায়। সে তার সম্পূর্ণ হৃদয় তুলে দেয় হীরের হাতে। হীর ভাঙেও, কিন্তু সমস্যা হল- সাথে হীরের হৃদয়টাও ভেঙে যায়। জেজে তখনো বুঝে উঠতে পারেনি যে- তার হৃদয়ে ভাঙনের সুর বাজতে শুরু করেছে। হীর আর জেজে খুব ভালো বন্ধু হয়ে যায়। যেমনটা লোকে বলে- এক লাড়কা ওর এক লাড়কি কাভি দোস্ত নেহি বান সাক্তা। সুতরাং প্রেমে পরে যায় তারাও। বন্ধুত্বের চাকচিক্যে এতটাই মশগুল থাকে যে, হৃদয়ের কথা শোনার সময় হয় না তাদের। ওদিকে হীরের বিয়ে হয়ে যায়, হীর চলে যায় প্রাগ। জেজে বাড়িতে এসে পড়ে ফ্যামেলী ড্রামায়। যোগ দেয় পারিবারিক ব্যবসায়। যেখানে কখনো সে যেতে চায়নি। কিন্তু ঠায় হয়ে বসতে পারেনা সেখানে। টাকা চুরির দায়ে ভাইয়েরা বের করে দেয় বাড়ি থেকে। কথায় বলে না! দুঃখ যখন আসে চারদিক থেকেই আসে। কোথায় যাবে বুঝতে না পেরে, পৌঁছে যায় নিজাম উদ্দিন বাবার দরগায়। সেখানেই খায়, ঘুমায়, গান গায়। কেটে যায় প্রায় দুই মাস। তারপর একদিন ভেতরটা নাড়া দিয়ে উঠলে, বাবাকে সালাম ঠুকে চলে আসে খতানা ভাইয়ের কাছে। খতানা ভাই তাকে বিভিন্ন পূজায় গান গাওয়ার বেবস্থা করে দেয়। সেখান থেকে মিউজিক কম্পোজারের ডাক পরে, চলে যায় প্লাটিনাম মিউজিক এর কাছে। প্লাটিনাম মিউজিক থেকেই বের হয় তার প্রথম এলবাম। ভাঙা হৃদয়ের আর্তনাদ পৌঁছাতে থাকে প্রতিটি হৃদয়ে। জনপ্রিয় হতে থাকে সে। প্লাটিনাম মিউজিকের হাত ধরে পৌঁছে যায় প্রাগ। সেও এক মজার গল্প, মুভি দেখলেই বুঝতে পারবেন। প্রাগে গিয়েই দেখা করে হীরের সাথে। যেখানে হীর ঐশ্বর্যের প্রাসাদে অতৃপ্ততার রোগে ভোগে। সেখানেই বন্ধুত্বের নিবির সম্পর্ক রূপ নেয় শরীর তত্বিয় বাইলজিতে। একই সঙ্গে পাওয়ার আনন্দ আবার হারাবার ব্যাথায়, জেজের হৃদয় থেকে বের হতে থাকে সুরের ঝংকার। আকুতি ভরা কণ্ঠ গেয়ে ওঠে-"তোমায় কেড়ে নেব না ছেড়ে দেব, তোমায় চেয়ে নেব না ফিরে যাব, এই সময় কি করব? এই সময় আমি কি করবো! যা আমাকে শান্তি দিবে, আরাম দিবে।"
কখনো নদীর স্রোতের ধাক্কায় ফসলের জমি কিংবা বসত ভিটার বুক ভাঙ্গনের সুর শুনেছেন, কতটা করুন।
শান্তি সে পায় না। প্রাগ এর অনুষ্ঠান শেষে হীর, জেজের সাথে ঝগড়ায় জড়ায়। হীর বুঝতে পারে এই সম্পর্কের কোন ভবিষৎ নেই। যার ভবিষৎ নেই, সেটা শেষ হয়ে যাওয়ায় ভালো। ব্যাথা ভরা হৃদয় নিয়ে হীর চলে যায় বাড়ি, আর জেজে এয়ারপোর্ট। এয়ারপোর্টে গিয়ে জেজের ভেতর অনুশোচনা ভর করে। সে ফিরে আসে। ট্রেস পাসিং করে হীরের বাড়ির ভেতরে ঢোকে। জন্ম হয় একটি নাটকীয় ঘটনার। হীরের পরিবার জেনে যায় সব। অসহ্য পরিস্থিতি সহ্য করতে না পেরে হীর অজ্ঞান হয়ে যায়। ক্ষেপাটে ষাঁড়ের মত তড়পাতে থাকে জেজে। কিন্তু ছকে বাধা জীবন গুলো, মেনে নিতে পারে না সেই পাগলামি। তাই জেজে কয়েদ হয় জেল-খানায়। এদিকে প্লাটিনাম মিউজিক প্রাগে গাওয়া জেজের গান গুলো ছেড়ে দেয় মার্কেটে। হুমড়ি খেয়ে পড়ে শ্রোতারা।
জেল থেকে জামিন নিয়ে ফিরে আসে জেজে। আলোচনা- সমালোচনার ঝড় তোলে মিডিয়া। বিয়োগের ব্যথায় শয্যাসায়ী হীর ও ফিরে আসে শশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি। হীরের ছোট বোনের কাছ থেকে জেজে জেনে যায় সব। ছুটে যায় হীরের কাছে। ভেঙ্গে পড়া শরীর কেবল ফিরে পাবার আনন্দে, মনের জোড়ে উঠে দাঁড়ায়। সেখানে আবার মিলন হয় তাদের। কিন্তু সেটাও হয় ক্ষণস্থায়ী। মিলনে গর্ভবতী হয় হীর। ভাঙা শরীর বইতে পারে না আর একটি নতুন শরীরের ভার। চলে যায় হীর, না ফেরার দেশে। অনন্ত দহনে জ্বলতে জ্বলতে তীব্র আকুতিতে গাইতে থাকে জেজে "অবুঝ পাখি, ঘরে আয়। "
চমৎকার একটা মুভি। গল্প, প্রেজেন্টেশন সব মিলিয়ে দারুন একটি প্যাকেজ। পীযূষ মিশরা, শাম্মি কাপুর, রণভীর কাপুরের অভিনয় ছিল দেখার মত। সুস্বাদু খাবারের স্বাদ যেমন জিহ্বায় লেগে থাকে। নার্গিস ফাখরি ছিল কোন রকম, খেলাম আর কি, স্বাদহীন। তবে এর মিউজিক গুলো অসাধারণ। প্রিতিটি গানের লিরিক্স ভেদ করবে আপনার বুকও। কারণ আমরা সবাই অসুখের অসুকে ভুগছি। যেমনটা আইয়ুব বাচ্চু বলে গেছেন- সুখেরি পৃথিবী, সুখেরি অভিনয়, যত আড়ালেই রাখো- আসলে কেউ সুখী নয়। আমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু দুঃখ আছে। কারো সখের কলম হারাবার, কারো আপনজন। কেউ প্রেমিকার প্যরায় অতিষ্ট, কেউ বিয়োগের ব্যাথায়। কেউ বা আমার মত ভালবাসতে না পারার।
২| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ১০:৫১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: গানগুলো তো অসাধারণ !
৩| ০৬ ই মে, ২০২১ রাত ১২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখেছি।
৪| ০৬ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:৪৪
ফয়সাল রকি বলেছেন: খুবই চমৎকার একটা সিনেমা।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ১০:২২
রাজীব বলেছেন: মুভির দেখিনি তবে ট্রেলার দেখে মনে হয়েছে রনবীর কাপুরের শ্রেষ্ঠ অভিনয়। রনবীর যেকোন চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।