নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পিনাকড্রিম

পাগলামী

পিনাকড্রিম

পিনাকড্রিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঋণকে না বলুন।ক্রেডিট কার্ড ছুড়ে ফেলুন।

১৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:১৬

ঋণকে না বলুন।ক্রেডিট কার্ড ছুড়ে ফেলুন।

-প্রিন্স এ ওয়াকী (পিনাকড্রিম)

ঋণের ফাঁদে কখনও পা দেবেন না।আপনি না খেয়ে আছেন কেউ দেখবে না, ক্ষুধার কষ্ট হবে শুধু মাত্র।খাবারের জন্য কখনও হতাশ হবেন না,দুশ্চিন্তা করবেন না।বিশ্বাস রাখুন আপনার জন্য আপনার রিজিক মহান রিজিক দাতা নির্ধারণ করেই আপনাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।তাই অন্তত খাবারের জন্য কোনও রকম দুশ্চিন্তাকে প্রশ্রয় দেবেন না।কোনো না কোনো ভাবে কিভাবে যেন আপনার রিজিকের ফায়সালা হয়ে যাবে,হয়তো শাহী খাবার না,তবে ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য তা যথেষ্ট হবে।শুধু খেয়াল রাখবেন বেহিসাবি জীবন যাপনের জন্য যেন নিজের ও পারিবারিক জীবনে দুর্গতি টেনে না আনেন।

আমরা অধিকাংশই অনেক সময় আলগা ফুটানি অথবা ভাব দেখাতে যেয়ে ঋণের ঘরে পা রাখতে শুরু করি।আরে ভাই আবলুশ বা মেহগনি কাঠের খটিয়ায় শুতেই হবে, কে বলেছে?ড্রয়িং রুমে হালআমলের সোফা,শোকেস,ওয়ালমেট ফার্নিচার ব্যবসায়ীর কাছে থেকে দীর্ঘমেয়াদি বাকিতে নিতেই হবে কেন?কেন আমাকে কারুর মিষ্টি কথার মায়াজালে জড়িয়ে যেখানে পরিবারের জন্য একটা ইলিশ বা এক কিলো মাংস হলেই চলে, সেখানে কেনইবা পরে দিয়েন স্যার,এই আদুরে সম্বোধনে গলে বিগলিত হয়ে বাজারের থলে ভরে ভুল সুখের নাও বাইতে বাইতে ঘরে ফেরা।তারপর আছে কাবুলিওয়ালা নামের ব্যাংকওয়ালাদের মিষ্টি মধুর কি ব্যবহার। স্যার এই ফায়দা,ওই সুবিধা,কোনো ঝামেলাই পোহাতে হবে না।,প্রথম প্রথম আপনার দৃঢ় না কিন্তু নাছোড়বান্দা কাবুলিওয়ালার আদা-জল খেয়ে আপনার পেছনে জুতার তলা ক্ষয় করে আপনার না'কে যখন হ্যাঁ সূচক পরিণত করে ঠিক তখনই কাবুলিব্যাটা আড়ালে একটা চালিয়াতি হাসি হেসে মনে মনে বলে, এবার বুঝবা বাছাধন! তারপর ইতিহাস। যেহেতু ভার্চুয়াল কারেন্সি তাই খরচে কোনো রাখঢাক প্রায়ই থাকে না।নিমিষেই লাখ টাকা ব্যালেন্সের কোঠা শেষ প্রায়।এরপর মাসিক কিস্তি।এরকম কারুর মানিব্যাগ থুক্কি ওয়ালেটে তিন থেকে চারটি পর্যন্ত ফুটানি কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড থাকে এবং আমি নিজ কানে কাউকে বলতে শুনেছি বিল মেটাতে যেয়ে, আমি ভাই হার্ড ক্যাশ ক্যারি করি না,ক্রেডিট পে করবো।এবং তাকে,তাদের উদ্ভ্রান্তের মতো আচরণ করতে দেখেছি কিস্তির দায় মেটাতে এর ওর কাছে হাত পাততে ইনিয়েবিনিয়ে কিছু টাকার জন্য।কেউ পরিচিতির কারণে প্রথম প্রথম দিয়েও দিয়েছেন, আবার তিনিই আবার তাগাদা দিয়েছেন ফুটানিওয়ালাকে, কী ভাই,টাকাটা কবে দেবেন?

কী পড়লেনতো যাতাকলে।মাছুয়াওয়ালার তাগাদা(যদিও ক্ষুদ্র একটি অংশ),বাকির দোকানের ঝাল ব্যবহার, ফার্নিচার ব্যবসায়ীর বারংবার খোঁজ খবর নেওয়া এবং কিস্তি দিতে এক দুইদিন দেরি হলেই, তো বুঝবেন।যারা ভুক্তভোগী তাদের অভিজ্ঞতা থেকে জেনে নেবেন দয়া করে।যখন তখন ফোন,আপনাকে বিরক্তির চরমের নিয়ে যাবে,ফোন রিসিভ করতেই আহা!টকা ঝাল সব। কোথায় সেই স্যার, কোথায় সেই ব্যবহার, এযে খাণ্ডারনির চেয়েও বেশি কিছু।

শুরু হয়ে যায় এবার মিথ্যার আশ্রয়। নানা রকম মিথ্যা,ছোট মিথ্যা,বাসায় থেকে মিথ্যা,পথ বদল,দিনের আলো ছেড়ে আঁধারে পথ চলা।এরপর মেজাজের উঠানামা,দুশ্চিন্তা, পরিবারের সদস্যদের সাথে বিনা কারণেই বাকবিতন্ডায় জড়ানো। পালিয়ে বেড়ানো। সবচেয়ে দুঃখজনক ;নিজের কাছ থেকেই নিজে পালিয়ে বেড়ানো।ফলাফল শান্তির সাংসারিক জীবনে অশান্তির ঘনঘটা।ছন্দপতন।ব্যক্তিজীবনের বারোটা বেজে যায়।ব্যক্তিত্ব একদম তলানীতে।নিজেকে অসহায়,অপাংক্তেয় মনে হয় প্রতিনিয়ত।

তারপরও কিন্তু পাওনাদারদের কোনো সিমপ্যাথি আপনি পাবেন না।তার প্রয়োজন তার কিস্তি। কিভাবে? সেটা আপনিই ভালো জানেন।
তাই চাহিদা ছোট করুন।

পরিবারের সদস্যদের সাপের পাঁচ পা দেখানো থেকে বিরত থাকুন।

অহেতুক কেনাকাটা, অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা এড়িয়ে চলুন।

ইলিশ মাছ,যমুনার পাঙ্গাশ, হাওরের কালিবাউশ আর কচি পশুর মাংস দিয়ে আপনার বাসার রেফ্রিজারেটর পরিপূর্ণ করার কোনো দরকার নাই এবং অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে যেয়ে গল্পের ঝাঁপি খুলে বসার কোনো কারনই দেখি না।যখন ঋণ মামা কাধে চেপে বসবে,সেই সাথে যখন পরম আত্মীয় হয়ে (পাওনাদার আপনার যেমন খোঁজ খবর নেবে,তেমনটা আপনজনেরাও সাধারণত নিয়ে থাকেন না।অবশ্য এর ব্যাতিক্রম আছে অনেক স্বজনের মাঝে)পাওনাদার আপনার খুব ঘন ঘন খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করবে,আমার বিশ্বাস আপনার মোটাও ভালো লাগবে না, আমি হলফ করে বলে দিতে পারি।

আসুন শুধু শুধু ফুটানি বাদ দেই।সকল প্রয়োজন একেবারে না মিটিয়ে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে একটার পরে একটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দরদাম করে বাকির ফাঁদে পা না দিয়ে ক্রয় করি।এতে যেকোনো কিছুর কদর থাকবে।পরিবারের সদস্যরাও বুঝতে শিখবে একবারে সব হয় না।চাহিদা করলেই বা চাইলেই সব পাওয়া যায় না।তারজন্য অপেক্ষা করতে হয়।

আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে পরিচিত,অল্প পরিচিত,আশেপাশের অনেককেই দেখেছি দারুণ ভাব আর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বেহিসাবি, যখন যা ইচ্ছা যথেচ্ছাচার জীবন যাপন করেছে আগুপিছু না ভেবে,পা দিয়েছে জীবনের চালচিত্র মেটাতে ঋণের ফাঁদে। তারপর চোখের সামনেই তাদের দেখছি, কী নাজেহাল অবস্থা।পালিয়ে বেড়ানো। না খেয়ে থাকা।চেয়ে চিনতে দিনাতিপাত। দুঃখজনক অপঘাতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
তাই সাবধান।নিজেকে বাঁচান।পরিবারকে বাঁচান।সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখুন।

আয় বুঝে ব্যয় করতে শিখুন।পরিবারের সদস্যদের নূন্যতম ধারণা দিন আপনার উপর্জনের ব্যাপারে।পরিবার আপনার আত্মার অংশ, ওরা নিশ্চয় আপনাকে বুঝবে।এতে করে একটা পরিবার,একটা জীবন সাধারণভাবে দিন যাপন করলেও সেখানে সুখের বাড়বাড়ন্ত থাকবে নিশ্চিত।

*ঋণকে না বলুন।
*ঋণকে প্রশ্রয় দেবেন না।
*চাহিদাকে সীমিত করতে শিখুন।অতিরিক্ত খরচ থেকে বেরিয়ে আসুন।
*চাকচিক্য বা চোখের তারাকে আটকিয়ে দিন।
*পরিবারের সদস্যদেরকে অপরিণামদর্শী জীবন যাপন সমন্ধে ধারণা দিন।
*কারুর সাথে তুলনায় যাবেন না।অমুকের সেটা আছে,তমুকের ওইটা আছে,আমার লাগবেই,গৃহিনীর মান অভিমান পর্ব,সন্তানের আবদারের বায়না।ভাই সবাই মিলে বসুন।আলোচনা করুন।সিদ্ধান্ত নিন।ভূতভবিষ্যৎ ভেবে,ভালো মন্দ বিচার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন।কিনবেন বা দেবেন, তবে এখন নয়, নির্দিষ্ট একটা সময় নির্বাচন করুন।ঈদ হতে পারে,পূজার উৎসব হতে পারে,জন্ম দিন হতে পারে,নতুন বছরের শুরুতে হতে পারে,তবে শর্ত জুড়ে দিন কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত খরচ,পারিবারিক খরচ কমাতে হবে, সেই সাথে এটাও বলে দিন যার যা সামর্থ্য সবাই কন্ট্রিবিউট করবে। এতে একটা উৎসবের আমেজ থাকবে এবং প্রাপ্তির জন্য অপেক্ষা থাকবে,সেই সাথে সহজেই যে সব হয় না এ বোধটা উত্তর প্রজন্মের জন্য একটা শিক্ষণীয় বিষয় হবে।পারিবারিক অধ্যায় শিক্ষা অর্জনের বিরাট এক ক্ষেত্র।
**ক্রেডিট কার্ডকে দৃঢ়ভাবে না বলুন।
**কাবুলিওয়ালাকে নিজের ধারে কাছে মোটেও ভেড়ার সুযোগ দেবেন না।
*** কোনো কারণে যদি নিজের কারণে বা পারিবারিক কারণে ঋণ বা কর্জ করতেই হয়,তার আগে বুঝুন,কিভাবে ধার শোধাবেন,কত দিনে?যে কারণে ঋণ করতেই হবে ব্যাপারটা কতখানি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিন,তারপর না হয় প্রয়োজনের তাগিদে ঋণ হতেই পারে।তবে খেয়াল রাখবেন নিজেকে বা পরিবারকে যেন বিড়ম্বনার মুখোমুখি না হতে হয়।

সব সময় স্রষ্টাকে স্মরণ করুন,ভরসা করুন।
অতি আপনার জনদের সাথে যোগাযোগ রাখুন সাধ্যের মধ্যে।
পরিমিতি জীবন যাপনে নিজে অভ্যস্ত হোন, পরিবারের সদস্যদেরকেও সংযমী হতে শেখান।সময় পেলেই পরিবারের সদস্যদের সাথে ভাব বিনিময় করুন আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে।সবার মতামতের মূল্য দিন।এতে করে পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন অনেক অনেক সহজ হয়ে যাবে।
সব সময় শোকরগোজার থাকুন।স্রষ্টাকে বেশি বেশি ধন্যবাদ দিন আপনার যাপিত জীবনের জন্য।
আবারও বলছি সাধু,ঋণ শব্দটি জীবন থেকে মুছে ফেলুন।
আর ফুটানি বাদ দিয়ে দিন।কারণ দিন শেষে খেরোখাতা আপনাকেই মেলাতে হবে।নিজ অর্থায়নে প্রয়োজন মেটাতে শিখুন।শুধু শুধু লোক দেখানোর মানেই হয় না।

হুম যখন সুযোগ আসবে তখন না হয় নিজের সাথে বা পরিবারের সবার সাথে আলোচনা করে একদিন একটু বেহিসাবি হলেন।তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন অতিরিক্ত খরচের দায় কিভাবে মেটাবেন, যেটা একান্তই নিজস্ব ব্যাপার বা পারিবারিক। কারণ আপনি খেয়ে আছেন নাকি না খেয়ে, কেউ দেখতে আসবে না।


তাই আবারও স্মরণ করিয়ে দেওয়া, দৃঢ়ভাবে ঋণকে না বলুন।
মনে হবে আপনি স্বর্গে আছেন।
সবাই ভালো থাকুন পরিমিতিবোধে,নিজের আত্মসম্মান নিয়ে।
১১৩৮
১৯ আগস্ট ২০২২
লেখালেখির কারখানার নিজস্ব কক্ষ থেকে।
অ পা

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:২৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার লেখাটা ভালো লেগেছে।

২| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৬:৩১

সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: একমত

৩| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:০৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: চমতকার পোষ্ট, সম্পূর্ন একমত। আমি এনজিও এর পাল্লায় পরে অনেককে ধ্বংস হতে দেখেছি!!

৪| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৩৬

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: ঋণ করার নেশা স্লো পয়জনের মত মানুষকে ধীরে ধীরে শেষ করে দেয়। ক্রেডিড কার্ডও সবাই ঠিকমত হ্যন্ডল করতে পারে না।

৫| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:২৯

গেঁয়ো ভূত বলেছেন:


ভালো পরামর্শ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.