নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[email protected]

পি মুন্সী

পাঠ ও মন্তব্যের জন্য সকলকে স্বাগতম। কোন পুরানো পোষ্টেও নির্দ্বিধায় মন্তব্য করতে পারেন; সাড়া পাবেন।

পি মুন্সী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কমিউনিষ্ট চীনের পুঁজিতন্ত্র ও মেলামাইন

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৩:৫১

বন্ধু সুমন রহমান মেলামাইন নিয়ে আমার এক ব্লগ Click This Link পড়ে একটা মন্তব্য দিয়েছিলেন। ঐ মন্তব্যের অংশ বিশেষ ছিল এরকম:



"- পত্রপত্রিকা পড়ে যতটুকু জানলাম, চীন শুধু মেলামাইনের উৎপাদনই বাড়ায় নি, মেলামাইনকে দুধে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিষয়টা উদ্বেগজনক, চীনের মুনাফা হোক সেটা চাওয়া যায়, কিন্তু মুনাফালিপ্সা পুঁজিবাদী দেশগুলোর চেয়ে বেড়ে যাবে এটা ভাবা যায় না"।

এতে আমার প্রতিক্রিয়া থেকে নিচের লেখার সূত্রপাত। পড়ুন সেই প্রতিক্রিয়া:



চীনের উপর এত আশা ভরসা রাখা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না। বরং এসব অতীতে অবাস্তব আশা ভরসা রাখাই আমাদের অনেক দুঃখের কারণ।



আর চীন যে পুঁজিতান্ত্রিক পথ গ্রহণ করেছে শুরু থেকেই তা পশ্চিমের পুঁজিতান্ত্রিক পথ থেকে ভিন্ন কিছু বলে কোন ধারণা আমরা পাইনি। পশ্চিমের পুঁজিতান্ত্রিক পথ থেকে কোন অভিজ্ঞতা তাদের সঞ্চয়ে নিয়েছে বলে আমরা জানি না। বলা যায়, পশ্চিমের পুঁজিতন্ত্রের প্রতি কোন পর্যালোচক (Critical) অবস্হান বা মূল্যায়ন নিয়ে চীন এই পথে চলা শুরু করেনি।



অন্য আর দিক থেকে দেখুন, পশ্চিমের পুঁজিতন্ত্র আর সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতন্ত্রের একটা বড় মিলের দিক হলো উভয়ের শিল্প বিপ্লবই পরিবেশ বা প্রাণবৈচিত্র রক্ষার বিবেচনায় জ্ঞানকানা। প্রকৃতির উপর তথাকথিত বিজ্ঞানের বিজয় বা মানুষের Predatory দৃষ্টিভঙ্গির জয়জয়কারকেই বিজয়গৌরব জ্ঞান করা হয়ে এসেছে ওখানে।



পুঁজিতণ্ত্রিক সম্পর্কে উৎপাদন সংগঠনের ক্লাবে late-comer হওয়ায় পুরানো সদস্যদের খারাপ দিক বা খারাপ অভিজ্ঞতাগুলো থেকে কোন শিক্ষা নেবার সুবিধা নিবার যে সুযোগ ছিল - সে সম্পর্কে নয়াচীনের কোন আগ্রহ বা প্রয়োজন জ্ঞানও ছিল না। ফলে শুরু থেকেই আমরা জানতে পারছিলাম চীন এমন কোন নতুন পুঁজিতণ্ত্রিক সম্পর্ক বা রূপ আমাদের সামনে আনতে পারবে না? ওর জন্য এমন কোন রাজনৈতিক দার্শনিক প্রস্তুতি চীনের মধ্যে আমার দেখিনি। এই চীনের কাছে তাই চর্বিতচর্বন ছাড়া আমরা কীইবা আশা করতে পারি। এমনকি বোধহয় তা চর্বিতচর্বনও নয়। আমেরিকান রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট ও অর্জনও সে বুঝতে অক্ষম। আমাদের BSTI এর কথা বাদ দেন; আমেরিকার FDA (Food & Drug Administration) এর মত প্রতিষ্ঠান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য কেন গুরুত্ত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এটাই তো চীনা বিপ্লবীরা এখনও বুঝতে অক্ষম। FDA এর পূর্বানুমতি ছাড়া কোন খাদ্য বা ড্রাগ জাতীয় পণ্য কোন উৎপাদক কোম্পানী বাজারজাত করতে পারে না শুধু নয়, এটা ফৌজদারি অপরাধ। অথচ চীনে এধরণের নিয়ন্ত্রণমূলক প্রতিষ্ঠান না গড়েই যে পুঁজিতন্ত্রে হাত লাগিয়েছে তা তো আজ প্রমাণিত। শিশু মৃত্যু ও ব্যাপক মহামারি অসুস্হতা ও বিপর্যয় ঘটে যাবার পর দুধ উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের প্রধান একজিকিউটিভদের মাজায় দড়ি বেধে ধরে এনে জেলে পুরে দেওয়াটা রাষ্ট্রের ক্ষমতার বাহাদুরি দেখানো বা ক্যারিকেচার ছাড়া আর কী? মেলামাইনযুক্ত দুধ পণ্যের মর্যাদা পেয়ে বাজারে আসতে পারলো কেন?



আবার দেখুন কী ধরণের উঠতি মধ্যবিত্ত ভোক্তা চীন নিজের জনগণকে তৈরী করেছে। মেলামাইন কেলেঙ্কারি নিউজের কয়েক সেকেন্ডের ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, এসব উঠতি মধ্যবিত্ত এই কেলেঙ্কারির পরও সুপার মার্কেটে হামলে পড়ছে মেলামাইনহীন দুধের খোঁজে। কেন? বাচ্চা শিশুকে কৌটার দুধ খাওয়ানো পশ্চিমের পরিত্যাক্ত এই আধুনিকতা, নয়া পুঁজিতান্ত্রিক চীনের উঠতি মধ্যবিত্ত ভোক্তার কাছে

এখনও আধুনিক নতুন শহুরে সহজ জীবনযাপনের কালচার। এর মানে নয়া পুঁজিতান্ত্রিক চীনে কী ধরণের নতুন ভোক্তাসমাজ গড়ে উঠতে পারে, এর বিপদ কী - সে সম্পর্কে চীনা সরকার শুরু থেকেই একদম বেখবর ছিল। অথচ পুরানো শক্তিশালী কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক কমিউনিষ্ট রাষ্ট্র হবার সুবিধাকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়ে সরকার মটিভেশন ও প্রচারনা চালিয়ে শক্ত জনমতের সচেতন ভোক্তাসমাজ দাঁড় করাতে পারত। কারণ ভোক্তা ও উৎপাদক মানে একই বিষয় কে দুই দিক থেকে দেখা। পুঁজিতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণহীন উৎপাদক নিজের কেবল যেনতেন প্রকারে মুনাফার মোটিভ থেকে নিজেই উঠতি মধ্যবিত্ত ভোক্তা ও এর মানসিক গঠনের উপর কর্তৃত্ত্ব নিয়ে নেবেই এটাতো আমরা সবখানে দেখেছি। লাক্স সাবান মেখে ফর্সা হওয়া যায়, বিখ্যাত নায়িকা হওয়া যায়, ফেয়ার এ্যান্ড লাভলি মেখে সাত দিনে কালো ত্মক ফর্সা করা যায়, কৌটার দুধে বা সেরিলাকের পুষ্টিগান, হরলিক্সে বাড়ন্ততার প্রমাণ - এরকম নির্জলা মিথ্যা, প্রলোভন দিয়ে ভোক্তা জনগোষ্ঠির ভাবনার উপর কর্তৃত্ত্ব নিয়ে নেয়া -এটা ঘটবেই তা জানার জন্য মহাজ্ঞানী হবার দরকার পরে না। অথচ চীনা রাষ্ট্র, সচেতন ভোক্তা জনগণের পক্ষ নিয়ে, এ্যডভেটাইজমেন্টের নীতিমালা, FDA ইত্যাদির মাধ্যমে সহজেই মুনাফাসর্বস্ব উৎপাদককে উৎখাত করে কোনটা পণ্য আর কোনটা পণ্য নয় এর সীমারেখা টানতে পারত। অর্থাৎ উল্টা ভোক্তা উৎপাদকের উপর সহজেই নিয়ন্ত্রণ আনতে পারত। এগুলো কোন বিপ্লবী দেশের কর্মসূচি নয়। পশ্চিমের দেশের এসব অভিজ্ঞতা তো আজ সবার সামনেই হাজির।

চীনের কাছাখোলা পুঁজিতন্ত্র কেবল চীনের জন্যই নয় আমাদের সমাজকেও কেমন নড়বড়ে ও হুমকির মুখে ফেলেছে তাই আজ চোখে আঙ্গুল দিয়ে আমাদের দেখাচ্ছে।

অতএব এটা কমিউনিষ্ট চীন বলে কিছু আশা করার চক্কর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:০৫

সমীরণ বলেছেন: তোমার মিষ্টি খাওয়ার কি অবস্হা তাহলে ?

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৫৪

পি মুন্সী বলেছেন: মিষ্টি খাবার সুযোগ নাই।

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:১০

নাজিম উদদীন বলেছেন: বিড়াল দেখা যাচ্ছে ইঁদুর মারতে পারছে না।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:৪৫

পি মুন্সী বলেছেন: একদম ঠিক ধরেছেন।
বলা হয়েছিল বিড়াল সাদা না কালো তা নাকি বড় কথা নয়, বিড়াল ইদুর মারতে পারে কী না এটাই নাকি কেবল বিবেচনার বিষয় - এই ধারণাটাই তো ভুল। বিনা বিবেচনায় অবাধে পুজিতান্ত্রিক কারবার চলতে দিলে সে তো মুনাফাসর্বস্ব স্বভাবের দাঁত নোখ বের করবেই। ইদানিং একজনকে একটা ভালো উদাহরণ দিতে দেখেছি। বলছেন, পুঁজির স্বভাব কুকুরের বাঁকা লেজের মত। একে সবসময় সোজা করে রাখার জন্য কঠোর শাসন নিয়ন্ত্রণের মাঝে একে বেধে রাখতেই হবে। নইলে ছেড়ে দিলেই তা আবার বাঁকা হয়ে যাবে। আর তাই দরকার শক্ত রাষ্ট্রের, বিশেষত গরীর সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের সমর্থনপুষ্ট গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। চীন রাষ্ট্রের সে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পুজিতান্ত্রিক কারবার না বুঝে, এমনকি পশ্চিমের পুজিতন্ত্রের এত বিশাল বিশাল অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও সে অভিজ্ঞতা থেকে কোন শিক্ষা নিল না। কোন পর্যালোচনা ছাড়াই যেকোন পুজিতন্ত্র, যেকোন বিড়াল হলেই তার চলে বলে উজান বাইতে লাগলো। ফলে যা বিপদ ঘটবার তাই ঘটতে শুরু করেছে, এ বিড়াল দেখা যাচ্ছে আর ইঁদুর মারতেও পারছে না। এর নীট ফল আমরা যা দেখছি, আমেরিকান ভোক্তাকে ধার দিয়ে ঘি খাওয়ানোর বাজার ব্যবস্হায় শস্তায় পণ্যের বিক্রিবাট্টা বাড়িয়ে উঠতি পরাশক্তির এক দানবীয় অনুভব চীন করতে পারছে। তবে এই পরাশক্তীয় চরিত্র আমেরিকার মত দানবীয় পরাশক্তীয় চরিত্রের চেয়ে কোন অর্থেই ভিন্ন কিছু দেখাতে পারেনি।

৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১১:১৪

সুমন রহমান বলেছেন: জরুরি লেখা। চীন এককালে সমাজতান্ত্রিক ছিল বলেই হয়ত চীনের পুঁজিতন্ত্র নিয়ে বাড়তি প্রত্যাশা কাজ করে। আপনি বলেছেন যে লেইট কামার হওয়ার পরেও চীন পশ্চিমা পুঁজিবাদ থেকে কোনো শিক্ষা নিতে পারে নি। আসলেই। বরং আমার আরো মনে হয়েছে চীনের পুঁজিতন্ত্র আরেকটু নিকৃষ্ট ধরনের পুঁজিতন্ত্র। পশ্চিমের পুঁজিতন্ত্র এবং শিল্পের বিকাশকে অন্তত তাদের ভোক্তাশ্রেণীর সাথে কিছু হলেও বোঝাপড়ায় যেতে হয়েছে। বিকশিত হবার সময়ে পশ্চিমা ভোগ্যপণ্য শিল্প (অন্যান্য শিল্পও) অনেক বেশি নিজ নিজ রাষ্ট্রের ক্রেতাগোষ্ঠীর চিন্তা মাথায় রেখেই বেড়ে ওঠেছে। আর চীন তো গোড়া থেকেই বিশ্ববাজারের বোঝা মাথায় নিয়ে বসে আছে! তার উৎপাদিত পণ্যের ক্রেতাগোষ্ঠী জগতময় বিভিন্ন রাষ্ট্রে ছড়ানো ছিটানো। পাশাপাশি সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা থেকে পাওয়া জবাবদিহিতার অনুপস্থিতি তাকে নিজ রাষ্ট্রের ক্রেতাগোষ্ঠী মোকাবেলার ক্ষেত্রেও বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। উন্মাদের মত পুঁজি একুমুউলেট করে করে পৃথিবীর শীর্ষে উঠা তার উদ্দেশ্য। এ কারণেই চীনের পুঁজিবাদ থেকে পশ্চিমা পুঁজিবাদ কোনো কোনো জায়গায় শ্রেয়তর লাগে।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:৫৮

পি মুন্সী বলেছেন: "চীনের পুঁজিতন্ত্র আরেকটু নিকৃষ্ট ধরনের পুঁজিতন্ত্র" আপনার এই মনে হওয়া সঠিক। চীনের পুঁজিতন্ত্র নিজের রাষ্ট্রের চরিত্রে যে ধরণের বদল এনেছে ও ছাপ ফেলেছে এর গুরুত্ত্বপূর্ণ লক্ষণ দেখুন সুদান প্রসঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র নীতিতে। সুদানের তেল উত্তোলনের কাজ ও তেল পাওয়ার জন্য চীনের ভুমিকা আমেরিকার চেয়ে কোনভাবেই ভিন্ন কিছু নয়।

৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:২০

সাদাকালোরঙিন বলেছেন: বিশ্লেষনটা ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:৫৯

পি মুন্সী বলেছেন: আপনার আগ্রহ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:২৪

আহসান হাবিব শিমুল বলেছেন: ভালো লিখসেন।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:০০

পি মুন্সী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৪৫

জাতেমাতাল বলেছেন: ধন্যবাদ পি মুন্সী- বেশ যুক্তিগ্রাহ্য লিখা। সহমত সুমনের মন্ত্যবের সাথেও।

এর সাথে যোগ করতে চাই- প্রথমবারের মতো একটা কার্যকর ফুড সেফটি ল এর জন্য চীনের সরকার নড়াচড়া শুরু করেছে। প্রাথমিক ভাবে আইনের খসড়া চলতি পার্লামেন্টের অধিবেশনে তোলাও হয়েছে- এই পার্লামেন্ট যাকে কম্যুনিষ্ট পার্টির রাবার ষ্টাম্প বলে গন্য করা হয়- কোন মাত্রার কার্যকরি আইন জারী করবে তা নিয়ে অবশ্য অনেকেই সন্দিহান। যদিও এঘটনায় চীনের রপ্তানী বাজার বেশ বড় ধরনের হুমকির সম্মুখীন নিঃসন্দেহে ।

এই দুধ কেলেঙ্কারী নিয়ে সরকার তথা কম্যুনিষ্ট পার্টির তরফ থেকে এই ঘটনায় সুর নিচু রাখার জন্য আইনজীবিদের বিভিন্ন গ্রুপ আর স্থানীয় পত্রিকা গুলোকে প্রচুর হুমকি-ধামকির খবর পাওয়া গেছে। সম্ভাব্য জনবিক্ষোভ যাতে দানা না বাধঁতে পারে তার জন্যই এ সর্তকাবস্থা বলাই বাহুল্য।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:১৩

পি মুন্সী বলেছেন: সংযুক্ত অতিরিক্ত তথ্যের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৪৫

নুরুজ্জামান মানিক বলেছেন: গুরুত্বপুর্ণ লেখা।

০৫ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:১০

পি মুন্সী বলেছেন: ধন্যবাদ। একাজে পাঠকের গুরুত্বও কিন্তু কম নয়।

৮| ২১ শে নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৩

বাইত যামু বলেছেন: প্লাস

২১ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৩২

পি মুন্সী বলেছেন: প্লাসের চেয়ে কিছু লিখলে বেশি খুশি হতাম।

৯| ২১ শে নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২৫

মাহবুব সুমন বলেছেন: পড়ার মতো পোস্ট

২১ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৩৪

পি মুন্সী বলেছেন: ভালো কথা।

১০| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:৩২

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: পশ্চিমের পুঁজিতন্ত্র আর সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতন্ত্রের একটা বড় মিলের দিক হলো উভয়ের শিল্প বিপ্লবই পরিবেশ বা প্রাণবৈচিত্র রক্ষার বিবেচনায় জ্ঞানকানা।

এটাই আমার কাছে এই লেখার গুরুত্বপূর্ণ দিক। রাষ্ট্র হবে সমাজতান্ত্রিক আর অর্থনীতি দাঁড়াবে পুঁজিতান্ত্রিক শিল্পবিপ্লবের কায়দায় তা হয় না। এটা করতে গিয়ে একদিকে প্রকৃতি ও মানুষের সমাজের মেটাবলিক মিথষ্ক্রিয়া ধ্বংস করা হয়েছে, ভাবা হয়েছে মানুষ যেন প্রকৃতির বাইরের কোনো সত্তা। প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদেরও শিল্প দরকার, কিন্তু বাজারের জন্য না হয়ে সমাজের জন্য যদি তা হয়, তাহলে ঐ ধরনের শিল্পায়ন এবং তার প্রযুক্তি পরিহার করে কীভাবে আমরা এগব। প্রযুক্তি যে মোটেই নীরিহ কিছু নয়, রাজনীতিহীণ নয়, তা পি মুন্সির থেকে বেশি কে জানেন?

চীনের অস্তিত্ব আজ বিশ্ব পুঁজিবাদের জন্য অনিবার্য। আমেরিকা যদি বিশ্বের শাদ্দাদের বেহেশত হয়, তাহলে চীন সেই বেহেশতের ভোগের যোগানদাতা, এক বৈশ্বিক কর্মশালা। কমিউনিস্ট আদলের রাষ্ট্র সেখানে সবার থেকে শ্রমিকদের ই বেশি শোষণ করছে। কারণ, শ্রমিক শ্রেণীর রাষ্ট্র বলে শ্রমিকদের অধিকার দাবির কোনো সুযোগ সেখানে রাখা হয়নি। তার ফলেই চীনা রাষ্ট্ররে পক্ষে পুঁজিবাদী শোষণ অন্য পুঁজির দেশরে থেকেও বেশি করে চালানো সম্ভব হচ্ছে। এ জন্যই চীন আমেরিকার কাছে ছাড় পায়। অন্যদিকে মার্কিন ট্রেজারি বন্ড কিনেও চীন আমেরিকাকে দেউলিয়া হওয়ারি হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখছে। কারণ দেউলিয়া আমেরিকা তো আর চীনা ভোগ্যপণ্য কিনতে পারবে না।

এখানে অন্য একটি দিকও লক্ষ্যণীয়। চীনের বাইরের দেশে লগ্নি পুঁজি ভাড়া খাটিয়ে বা সাম্রাজ্যবাদী এন্তজাম ব্যবহার করে উদ্বৃত্ত শোষণ করতে পারছে না। বাজারেও তাকে তীব্র প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হচ্ছে। সেকারণে নিজ প্রকৃতি, জনগণ ও নিজ শ্রমিকদের শোষণ করেই তার পুঁজি একুমুলেট করতে হচ্ছে।
তবে হালে চীন আফ্রিকা ও পূর্ব এশিয়ায় তার থাবা বাড়ানো শুরু করেছে। রিসোর্সের জন্যই তাকে এটা করতে হবে।
একই কথা কিছুটা ভারতের জন্যও প্রযোজ্য।
যাহোক, এই আলোকে চারদলীয় জোটের লুক ইস্ট নীতির মাজেজা কী দাঁড়ায়, সেটাই আমার জানবার আগ্রহ। ধন্যবাদ পি মুন্সীর আলোচনার জন্য।

২৫ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ২:৩৩

পি মুন্সী বলেছেন: বলেছেন: পশ্চিমের পুঁজিতন্ত্র আর সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতন্ত্রের একটা বড় মিলের দিক হলো উভয়ের শিল্প বিপ্লবই পরিবেশ বা প্রাণবৈচিত্র রক্ষার বিবেচনায় জ্ঞানকান" - একথা আমি বলেছি বটে তবে এর একটা ঐতিহাসিক বিচারের দিক আছে, সেটাও পরিস্কার থাকা দরকার। সোভিয়েত ইউনিয়ন পশ্চিমের শিল্প বিপ্লব পুরাটাই কপি করেছে এই অর্থে যে পরের বাক্যে আমি বলেছি, "প্রকৃতির উপর তথাকথিত বিজ্ঞানের বিজয় বা মানুষের Predatory দৃষ্টিভঙ্গির জয়জয়কারকেই বিজয়গৌরব জ্ঞান করা হয়ে এসেছে যেখানে"। অর্থাৎ পুঁজিতান্ত্রিক উৎপাদন ও ভোগের লিপ্সার মানুষ যেমন Predator (রাক্ষুসী মাগুর স্বভাবের) হয়, প্রকৃতির জানু চিপে হলেও তাঁর ভোগের ফসল তাকে বের করতে হবে, তাতে আর কার কী হলো চিরতরে লয় পেলো না বাঁচলো মরল এসব বিবেচনাবোধশুন্য এক মানুষ বের হয় ওখান থেকে। "প্রকৃতির উপর মানুষের বিজ্ঞানের বিজয়" - এই তাঁর ধর্ম। যাই তাঁর ভাল লাগে নিজের সংকীর্ণ স্বার্থ তাই সে করে, এতে আগামি প্রজন্মের লয়ের ব্যবস্হা পাকা করা হলো কিনা - সে হুশজ্ঞানও এর নাই।
সোভিয়েত ইউনিয়ন এই শিল্প বিপ্লবের সবটাই Predator ধারণা ও "প্রকৃতির উপর মানুষের বিজ্ঞানের বিজয়" - এই ধর্মটাসহ নিজের দেশে কপি ও চর্চা করেছে। শুধু অভিজ্ঞতা অর্থে যদি ধরি তাহলে মানতেই হয় ওর সামনে বাস্তব অভিজ্ঞতা বলতে পশ্চিমের শিল্প বিপ্লবই ছিল দুনিয়ার একমাত্র অভিজ্ঞতা। ফলে সেও পশ্চিমের মত Predator ও "বিজ্ঞানবাদীতা" ধারণা গিলেই বিকশিত হয়েছিল। পশ্চিমের পুঁজিতন্ত্রে পরিবেশে ও প্রাণবৈচিত্র সম্পর্কে হুশজ্ঞান তখনও আসে নাই। ফলে পশ্চিমের শিল্প বিপ্লবে তুলনায় বয়স্ক হলেও ওর থেকে এবিষয়ে অভিজ্ঞতালাভের কিছু উপস্হিত ছিল না। অতএব ঐতিহাসিক বিকাশের অভিজ্ঞতার বিচারে ষ্টালিনের সমাজতন্ত্রকে মাফ করতে হচ্ছে।
এর মানে কী আমি আমার জ্ঞানকানার অভিযোগ থেকে সরে আসছি? না। ঐতিহাসিক বিকাশের অভিজ্ঞতার বিচারে একটা মাফ পেতে পারে একথাই বলছি কেবল। তাহলে দুটোর মধ্যে তফাৎটা কোথায়?
তফাৎটা বুঝার জন্য প্রথমে পশ্চিমের সাক্ষ্য নেয়া যাক। পশ্চিম বলতে পারে আমার সমাজ মুনাফা ড্রিভেন, মুনাফাই আমার চালিকাশক্তি, প্রাইমমুভার; ফলে আমার সমাজ, মানুষ, বিজ্ঞান তো ওরকম হবেই। ফলে মানুষ-প্রকৃতি বিষয়ক কোন জ্ঞান কোথাও থাকলেও ওকে কব্জা করা আমার জন্য অসম্ভব। আমার সমাজের জ্ঞান বিকাশের পথ এটাই, আমি পুঁজির ইচ্ছার কাছে বন্দি। বিপরীতে ষ্টালিন সাহেবের নিশ্চয় এখানেও পশ্চিমেরটা কপি করতে পারেন না। তো বয়ানটা আমাদের মধ্যেই একটা প্রশ্নোত্তর পর্বে সেড়ে ফেলা যায় কিনা দেখি। আচ্ছা, গুরু মার্কসের কোন দিক নির্দেশনা, বা দার্শনিক বক্তব্য কি আছে? যদি থাকে তবে তাকে অবজ্ঞা করা, বুঝতে না পারা ও প্রয়োগে না নেবার দোষে ষ্টালিনকে দোষী করতে পারি, পরোক্ষে ষ্টালিন কিভাবে মার্কস পড়েছিলেন তা জানতে পারি। হ্যাঁ তাই। মার্কসের মানুষ-প্রকৃতি বিষয়ক ধারণা, যেখান থেকে পরিবেশে ও প্রাণবৈচিত্র সম্পর্কে মূল ধারণাটা পাওয়া সম্ভব, এটা চর্চায় যে মার্কসবাদ (এটা কেবল ষ্টালিন নয়) দাঁড়িয়ে আছে সেখানে নেই। সেটা এখানে ব্যাখ্যা করব না, "জর্মন ভাবাদর্শ" বইয়ের একটা অংশ অনুবাদ করে দিব।
নিচের অংশটা পরে দেখুন কিছু ধারণা দিতে পারি কী না। অনুবাদের পর মুল ইংরাজিটাও দিয়েছি।

"চেতনা, ধর্ম অন্য যা কিছু আপনার পছন্দ সেদিক থেকে দেখে মানুষকে আলাদা ভাবা যেতে পারে। তবে প্রকৃতিতে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার উপায় পুনরুৎপাদন শুরুর ভিতর দিয়েই মানুষ প্রথম নিজেকে পশু থেকে আলাদা করা শুরু। মানব শরীরের গঠন-বৈশিষ্ঠ প্রকৃতির এই একধাপ বিকাশকে সম্ভব করে তুলতে পারার পূর্বশর্ত। প্রকৃতিতে নিজেকে বাচিয়ে রাখার উপায় পুনরুৎপাদন করতে পারার মানে হলো - পরোক্ষে মানুষের নিজেই নিজের প্রকৃত বৈষয়িক জীবনের পুনরুৎপাদন ঘটানো। ........তবে পুনরুৎপাদনের এই বিশেষ ধরণকে শুধুই মানুষের বৈষয়িক শরীর পুনরুৎপাদন ভেবে ভুল করা যাবে না। বরং এটা আসলেই এটা মানুষের কর্মতৎপরতার একটা বিশেষ রূপ, জীবন প্রকাশের একটা বিশেষ রূপ, নিজের জীবনযাপন পদ্ধতি প্রকাশের একটা বিশেষ রূপ। মানুষ যেভাবে তার জীবন প্রকাশ করে তাঁরা সেরকমই। অতএব এখানে মানুষ কী আর কী বা তাঁর উৎপাদন - এক বিন্দুতে প্রতিভাত। তাঁর উৎপাদন মানে কী উৎপাদন, কীভাবে উৎপাদন এই উভয় অর্থে"। Men can be distinguished from animals by consciousness, by religion or anything else you like. They themselves begin to distinguish themselves from animals as soon as they begin to produce their means of subsistence, a step which is conditioned by their physical organisation. By producing their means of subsistence men are indirectly producing their actual material life.........।
This mode of production must not be considered simply as being the production of the physical existence of the individuals. Rather it is a definite form of activity of these individuals, a definite form of expressing their life, a definite mode of life on their part. As individuals express their life, so they are. What they are, therefore, coincides with their production, both with what they produce and with how they produce. ---
The German Ideology, Click This Link

চারদলীয় জোটের লুক ইস্ট নীতি নিয়ে বলার ইচ্ছা রইল।

১১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:২৩

প্রণব আচার্য্য বলেছেন: ++

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:১৫

পি মুন্সী বলেছেন: প্লাস নয়, আপনার কাছে মন্তব্য প্রত্যাশিত ছিল।

১২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:২৮

প্রণব আচার্য্য বলেছেন: আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত, তাই আলাদা করে কিছু বলিনি।

চীনের উত্থান আমার কাছে ফানুশ এর মতো মনে হয়। আমার ধারনা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চীন গভীর বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। আপনার আলোচনায়ও এসেছে, শুধু মুনাফা চিন্তাই বর্তমান চীনের একমাত্র লক্ষ্য; চীনের অর্থনৈতিক কিম্বা যেটাকে আপনি রাজনৈতিক দার্শনি প্রস্তুতি বলেছেন, সেই প্রজ্ঞা একবারেই অনুপস্থিত। ভবিষ্যতের দিকে চীনের কোন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থাপন করা আছে বলে মনে হয়না। আছে কেবল পরাশক্তি হওয়ার আগ্রাসী লালসা। লোভ। চীন যেমন কমিউনিজম থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তেমনি পুঁজিবাদের বিকৃত রূপকেই গ্রহন করেছে।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫০

পি মুন্সী বলেছেন: আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.