নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের প্রত্যাশাহীন এই শহরে থেকে যাক কিছু খুচরো কথা...

পদ্মপুকুর

একজন শভেনিস্ট ও স্মৃতিকাতর মানুষ

পদ্মপুকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিলেটের করিমগঞ্জ কেনো আমাদের হলো না

১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:১৯

জকিগঞ্জ সিমান্তে কুশিয়ারা নদীর ওপারেই রয়েছে করিমগঞ্জ

সীমান্ত শহরে কাটানো আমার কৈশোরবেলায় পরিচিতবলয়ের অনেকেই ‘রিফুজি’ হিসেবে পরিচিত ছিলো। এই পরিচয়ের সুলুক সন্ধান করাটা আমাদের কিশোরদের কাছে দরকারি মনে হয়নি সে সময়। বড়দের মনোভাব কেমন ছিলো, বলতে পারবো না কিন্তু ‘রিফুজি’ শব্দের প্রয়োগের মধ্যেই এক ধরনের শ্রেণীকরণ ছিলো। এটা মেনে নিয়ে এ দেশের জল-হাওয়ায় বড় হলেও ভারত থেকে আসা এই মানুষদের প্রথম বা দ্বিতীয় প্রজন্ম মনের ভেতরে বয়ে বেরিয়েছি এক দগদগে ঘা; যার শুরু হয়েছিলো সাতচল্লিশের দেশভাগের পর থেকে।

আমরা যারা এ মাটিতেই সাত পুরুষ ধরে আছি, তারা আসলে বুঝতেই পারবো না ঠিক কি ধরণের এক দুর্বোধ্য কষ্ট তাঁরা বয়ে চলেছেন অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে। অনেক পরে এসে এ ধরনের তারকাচিহ্নিত একটা পরিবারের মেয়ের সাথে যখন আমার বিয়ে হলো, তাঁদের কথায়, গল্পে আমি একটু একটু বুঝতে পারতাম সে হাহাকার।

ঊনিশশ সাতচল্লিশ এভাবেই বিপুলসংখ্যক মানুষকে শিকড়হীন করে দিয়েছে, নিজের জন্মভূমীকে করে দিয়েছে এক নীলস্মৃতি। যদিও তাসলিমা নাসরিন ‘অস্বীকার’ কবিতায় বলছেন- সাতচল্লিশ শব্দটিকে আমি রবার দিয়ে মুছে ফেলতে চাই/ সাতচল্লিশের কালিকে আমি জল সাবান দিয়ে ধুয়ে দিতে চাই/ সাতচল্লিশ নামের কাঁটা গলায় বিঁধছে, এই কাঁটা আমি গিলতে চাই না....। কিন্তু ভারতবর্ষ জুড়ে ছেচল্লিশের জাতিগত দাঙ্গাসহ রাজনৈতিক বিবিধ প্রেক্ষাপটে বিভক্তিকরণ অনেকটা অনিবার্যই হয়ে পড়েছিলো বলেই মনে হয়।

আমাদের জাতীয় জীবনের জন্য দেশভাগ হয়ে যাওয়াটা ইতিবাচক হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। তানভীর মোকাম্মেল তার প্রামাণ্যচিত্র সীমান্তরেখা ১৯৪৭- এ বলেছেন দেশভাগ না হলে পূর্ববাংলার মানুষের জীবনযাত্রা কেমন হতো তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যায় মুর্শিদাবাদের মুসলিমদের দেখলে।

এই দেশভাগের বিষয়ে জানতে গিয়ে একটা তথ্য দেখে রীতিমত আঁতকে উঠলাম! আরেকটু হলেই আমাকেও আজ হয় আমার বউয়ের মতই রিফুজি পরিবারের ছেলে হিসেবেই বেড়ে উঠতে হতো, না হয় ভারতীয় হতে হতো!! র‌্যাডক্লিফের প্রথম পরিকল্পনায় মুসলীম সংখ্যাগরীষ্ঠ মুর্শিদাবাদ পূর্বপাকিস্তানের সংগে এবং হিন্দু সংখ্যাগরীষ্ট খুলনা অঞ্চল পশ্চিম বাংলার সাথে যুক্ত ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে সে পরিকল্পনা সংশোধন করা হয় এবং খুলনাকে পূর্ব পাকিস্তান এবং মুর্শিদাবাদকে পশ্চিম বাংলার সাথে জুড়ে দেওয়া হয়। তাই উপরোক্ত কোনটি হওয়া থেকে আমি বেঁচে গিয়েছি।

আমার কানের পাশ গিয়ে গুলি চলে গেলেও বাঁচতে পারেনি সিলেটের লাগোয়া করিমগঞ্জ।

কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহেরু এবং মুসলিম লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে পাশে বসিয়ে লর্ড মাউন্টব্যাটেন তাঁর ভারত ভাগের পরিকল্পনা ঘোষণা করছেন

সাতচল্লিশে ইংরেজ রাজের নিয়োগকৃত এই আইনজীবি, সিরিল র‌্যাডক্লিফ এই দেশকে ভাগ করার জন্য আসেন এবং মাত্র পাঁচ সপ্তাহের মধ্যেই ভারতবর্ষকে ভাগ করে ফেলেন। এই দূরহ কাজ তিনি মোটামুটি ভালোভাবেই সম্পাদন করলেও সমস্যা সৃষ্টি হয় পাঞ্জাব প্রদেশ ও বাংলা প্রেসিডেন্সীকে নিয়ে; কারণ এ দুই যায়গাতে হিন্দু মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত প্রায় সমান ছিলো। ফলে একই ভাষাভাষী হওয়া সত্বেও এই দুই এলাকাকে ভাগ করতে হয়।

সে হিসেবে আসামের অংশ সিলেট বা করিমগঞ্জ পূর্ব পাকিস্তানে যুক্ত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মুসলীম প্রধান এলাকা হওয়ায় এবং নিম্নবর্ণের হিন্দুদের সমর্থনে এই এলাকার মানুষ পাকিস্তানে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সাতচল্লিশের মধ্য আগস্টে সিলেট ও করিমগঞ্জের মানুষ তাই পাকিস্তানি পতাকা উঠিয়ে দেয়। যেহেতু ভারত ভাগের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পাঞ্জাব ও বাংলাকে ভাগ হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিলো, তাই আসামের একটা অংশ সিলেট ও করিমগঞ্জ পাকিস্তানে অন্তর্ভূক্ত হতে চাওয়াটা একটা ব্যতিক্রমী সমস্যা হিসেবে দাড়িয়ে যায়, যা শেষ পর্যন্ত গণভোটের মধ্য দিয়ে নিরসন হয়।

১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ জুলাই গণভোট হয়। বঙ্গবন্ধুসহ সেসময়ের মুসলীমলীগের নেতারা প্রায় ৫০০ কর্মী নিয়ে সে সময় ভেটের জন্য সিলেট এসেছিলেন। এই ভোটে ৭৭ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছিলো। যার ভেতরে প্রায় ৫৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতে সিলেট ও করিমগঞ্জের মানুষ পাকিস্তানের পক্ষে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু গণভোটের রায় না মেনে করিমগঞ্জকে ভারতের সাথে যুক্ত করে দেন র‌্যাডক্লিফ। যদিও অন্য এক যায়গায় দেখা গেছে যে গণভোটের আগে ১৮ আগস্টেই এটা পয়েন্ট অব রেজুলেশন হিসেবে যুক্ত করা হয়েছিলো যে, গণভোটে যদি সমগ্র সিলেট পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ও, তবু বাফার জোন হিসেবে ত্রিপুরার সাথে আসাম তথা বাকি ভারতের মসৃণ যোগাযোগ রক্ষার খাতিরে করিমগঞ্জ ভারতের অংশ হবে। এ কারণে আগস্টের ১৪ থেকে ১৭ পর্যন্ত করিমগঞ্জে পাকিস্তানের পতাকা উড়লেও ১৮ তারিখে আবার ভারতের পতাকা উড্ডীন করা হয়।

এখানে একটা বিষয় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শত বছর ধরে পাশাপাশি বসবাস করে আসছে এমন কোন সম্প্রদায়কে একটা লাইন টেনে বিভক্ত করা যেতোনা এবং র‌্যাডক্লিফ নিজেও জানতেন যে এটা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হয়েছিলো ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার কয়েকদিন পর। এতে করে অসংখ্য মানুষ স্বাধীনতার আনন্দ উদযাপন শুরু করে দিলেও তারা নিজেরাই জানতোনা যে তারা ঠিক কোন দেশের অধিবাসী হতে যাচ্ছেন। এ কারণে ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় এলাকাভিত্তিক সমর্থনের ভিত্তিতে দু দেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিলো। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের বশিরহাটেও প্রথম দুদিন পাকিস্তানি পতাকা উড়েছিলো।

কলকাতার পেটের ভেতরে থেকে বশিরহাটের পাকিস্তানে যুক্ত হওয়া সম্ভব ছিলো না, উচিৎও ছিলো না। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী করিমগঞ্জ হতে পারতো আমাদেরই অংশ, যৌক্তিকও ছিলো সেটাই যেহেতু গণভোটের মাধ্যমে তাঁরা সে রায়ই দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য করিমগঞ্জের, যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে তারা যুক্ত হতে পারেনি আমাদের সাথে, ধরে রাখতে পারেনি ভাষার স্বকীয়তা। অনেকেই হয়তো জানেন না যে ১৯৬১ সালে আসামে রাজ্যভাষা হিসেবে অসমীয়াকে চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে বাংলাভাষীরা আন্দোলন করেছিলো, যে আন্দোলনে ১১জন শহিদও হয়েছিলেন।

একবার জকিগঞ্জ গিয়ে কুশিয়ারা নদীর এ পাড়ে দাড়িয়ে ওপাড়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার মন খুব আদ্র হয়ে উঠেছিলো।

পাকিস্তান ও ভারতের স্বাধীনতার প্রধান দুই নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও মহাত্মা গান্ধী


আমাদের ভাষা আন্দোলনের সাথে আসামের বাংলাভাষীদের ভাষা আন্দোলনের অত্যন্ত মিল রয়েছে। ওরাও শহিদ হয়েছে। এই তথ্যটি আমাদের দেশের অনেকেরই অজানা। তাই সবার জানার সুবিধার্থে ব্লগার রাকু হাসান নিচের মন্তব্য ঘরে সুন্দর করে সে ইতিহাসের সারসংক্ষেপ বলেছেন, এখানে সেটা আমি জুড়ে দিচ্ছি।

রফিক-সালামদের সাথে আসামের বাংলা ভাষাবাসীদের যেন এক আত্মীক সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৬১ সালের ১৯ মে দিনটি বাঙালিদের জন্য অবশ্যই স্মরণীয়। ভাষার জন্য একবার প্রাণ দেওয়ার ইতিহাস আমি দেখিনি একমাত্র বাঙালি ছাড়া। সেখানে আমরা দুইবার প্রাণ দিলাম। ইতিহাস হয়তো মনে করেনি বাঙালির কোলঘেঁষে আসামের শিলচর আবারও রক্তস্নান করবে। ঢাকা-টু -শিলচর। দেখেন কিভাবে ইতিহাস মিলে যায়। ১৯৬১ সালে ৩রা মার্চ বিমলা প্রসাদ অসমিয়াকে আসামের রাষ্ট্রভাষার ঘোষণা দেওয়াতেই বাঁধে বিপত্তি। ইতিহাস মনে রাখবে চপলাকান্তকেও। তিনিই নিখিল আসাম বাঙ্গালা ভাষা সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন শিলচরে। এই সম্মালেনটিই অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছে।


সূত্র: বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া, বিবিসি বাংলা, ডয়েচেভেলে, ইন্ডিয়াটাইমস এবং প্রামাণ্যচিত্র সীমান্তরেখা


মন্তব্য ৭৭ টি রেটিং +১৯/-০

মন্তব্য (৭৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


কুশিয়ারা নদীর প্রস্হ কতটুকু?

১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৪৫

পদ্মপুকুর বলেছেন: 250 m on average

২| ১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: দেশভাগ বহু পরিবারের হতাশার কারন।
কত পরিবার যে পথে নামতে হয়েছে! মাটির টান বা শিকড় অন্য জিনিস।

দেশভাগ করে কোনো কল্যান কি বয়ে এনেছে? আজও তো হিন্দু মুসলিম এক হতে পারে নি। মসজিদ বা মন্দির ভাঙছে। আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: দেশভাগের মাধ্যমে হিন্দু মুসলিম এক হবে কি ভাবে, এক না হওয়ার জন্যই তো দেশভাগ হয়েছিলো। তবে বর্তমান অবস্থাকেই কল্যাণ ধরে নিতে হবে। কারণ দেশভাগপূর্ব বিবিধ বিষয়কে মাথায় রাখলে মনে হয় এ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না। ইতিহাসবিদরা আরও ভালো বলতে পারবেন।

৩| ১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫৪

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: রেডক্লিফ ইচ্ছাকৃত ভাবে সামন্ত রাজাদের কাছ থেকে ঘুষ খেয়ে সিলেটের সীমারেখা টেনেছে পাহাড়ের পাদদেশ ধরে! এখন- বিছানাকান্দি, জাফলং গিয়ে সীমানা দেখলে তার প্রমান পাওয়া যায়; পাহাড় ইন্ডিয়ার ভাগে রেখে সীমানা টেনেছে- লোভী বৃটিশ!

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১২

পদ্মপুকুর বলেছেন: না, এটা মনে হয় ঠিক না স্যার। কারণ প্রদেশ, টেরিটরি, প্রিন্সলি স্টেট, প্রেসিডেন্সি, ইত্যাদির সীমানা ধরেই ভাগ করা হয়েছিলো। পাহাড়ি অঞ্চলগুলো আগে থেকেই ত্রিপুরা, মিজোরাম বা আসাম প্রদেশের অংশ ছিলো।

৪| ১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:০৮

ফেনা বলেছেন: প্রথমবার এই তথ্য জানলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাল থাকবেন সতত।

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩

পদ্মপুকুর বলেছেন: পৃথিবীর কত কিছুই তো অজানা আমাদের। তার মধ্যেও ব্লগে এসে কিছু জানতে পারছি, জানাতে পারছি। এটুকুনই পাওনা। ভালো থাকবেন আপনিও।

৫| ১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৩২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: দেশ ভাগ না করে বৃহত্তর ভারত প্রতিষ্ঠা করলে বেশি ভালো হতো।

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: এখন আর সে আলাপে গিয়ে খুব একটা লাভ হবে না। আমাদের পূর্বপুরুষরা যেটা ভালো মনে করেছিলেন, তার পেছনে নিশ্চয় কার্যকারণ ছিলো।

৬| ১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৩৪

শের শায়রী বলেছেন: দেশভাগের পর একটা প্রজন্ম নিজের জন্মভুমির হারানোর বেদনা বুকে পুষে মারা গেছে, পরের প্রজন্ম নিজের শিকড়ের টানের কষ্ট নিয়ে সারা জীবন ভুগছে, এপার বাংলায় এনিয়ে খুব বড় আকারের লেখা না হলেও, দ্বিতীয় প্রজন্ম মানে যারা নিজের শিকড়ের টানের কষ্ট নিয়ে সারা জীবন ভুগছে এদের মাঝে সুনীল, শীর্ষেন্দু, সমরেশদের লেখায় বার বার ফুটে উঠছে।

র‍্যাডক্লিফ যেভাবে কলমের খোচায় এত অল্প সময়ে অসংখ্য মানুষের চোখের পানি ফালানোর কারন হয়ে দাড়িয়েছিলেন এক যুদ্ধ ছাড়া তার আর কোন নজির নেই। র‍্যাডক্লিফের কলমের দাগে অসংখ্য মানুষ হাহাকার করে মারা গেছে। দারুন একটা লেখায় প্লাস জানবেন। এগুলো এই প্রজন্ম জানে না বললেই চলে।

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: হাঁ, হাঁ, হাঁ! আপনি এসেছেন তাহলে!। এই পোস্টটা আমি আপনাকে উৎসর্গ করতে চেয়েছিলাম। কারণ আপনার অনুপ্রেরণা এবং অনুকরণে আমি এই পোস্টটা লিখতে চেয়েছি। অন্য সবার মত আমার লেখারও নিজস্ব একটা ধারা আছে। কিন্ত আপনার মত গবেষণামূলক লিখতে গিয়ে না আপনার মত হয়েছে, না আমার আগের পোস্টগুলোর মত হয়েছে। দুটোর মিশ্রণে ভালোমানের ওরস্যালাইন হয়েছে। সব্যসাচী হতে পারলাম কই!

এপার বাংলায় এনিয়ে খুব একটা কথা না হওয়ার একটা বড় কারণ হলো এপারে যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই ভালো অবস্থায় আছেন, পক্ষান্তরে ওপারে যারা গেছেন, তাদের অধিকাংশই এখানে শিক্ষিত এবং সম্পদশালী ছিলেন। যখন ওপারে গেছেন, সম্পদতো আর সাথে নিতে পারেননি ইচ্ছেমত আবার এখানকার প্রতিপত্তিও ঠিক সেভাবে ওখানে গড়ে তুলতে পারেননি। একারণে ওখানে এপারের জন্য কথা হয় বেশি।

তবে এটা খুবই কষ্টের একটা বিষয়। এটা যে কি পরিমাণ কষ্টকর, খুশবন্ত সিং এর ট্রেন টু পাকিস্তানে খুব সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে। আমার স্ত্রীপক্ষের বয়স্ক আত্মীয়দের মধ্যে এখনও দেখি ফেলে আসার জন্মভূমীর জন্য কষ্ট আর কম বয়স্কদের মধ্যে দেখি তারই সুখালোচনা।

ভালো থাকবেন।

৭| ১০ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আপনি কি খুশবন্ত সিং এর “ট্রেন টু পাকিস্তান” পড়েছেন?
মানুষের রক্ত কান্না জর্জরিত দেশভাগ।



১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮

পদ্মপুকুর বলেছেন: জ্বী স্যার, পড়েছি, তবে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর অনুবাদ।

৮| ১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আবারও সেই নির্মম দেশভাগ, দেশত্যাগের ঘটনা যা মানুষকে করে বেদনাহত। আসলে ক্ষমতাশীনের কলমের খোচাই মানুষ ও এলাকাকে করে দেয় বিচ্ছিন্ন তাই করিমগঞ্জ আমাদের হলো না।

তথ্য শেয়ারে ধন্যবাদ।

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: আবারও সেই নির্মম দেশভাগ...
চেয়েছিলাম শুধু করিমগঞ্জ কেনো ভারতের হলো, তার একটা গল্প লিখব। কিন্তু হয়ে গেলো দেশভাগের তথ্যবর্ণনা। কি আর করা বলেন, আমাদের জীবনের অংশই হয়ে গেছে এই দেশভাগ, না চাইলেও তাই চলে আসে।

৯| ১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



করিমগঞ্জ, হাইল্যাকান্দী এবং কাছাড় মহকুমাকে আমাদের এলাকার লোকজন "সাড়ে তিন থানা" বলে ডাকতেন। এখন এগুলো জেলার মর্যাদা পেলেও আগের মানুষের অভ্যাস বদলায়নি। সাতচল্লিশে দেশভাগের সময় অন্যায়ভাবে এই তিন জেলাকে ভারতের অধীনস্থ করা হয়। আমার দুই দাদার বিরাট ব্যবসা ছিল করিমগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র। এক দাদা ছিলেন যুব কংগ্রেসের বড় নেতা। সাতচল্লিশের এক রাতের দাঙ্গায় সবকিছু ফেলে কোনমতে সাতরিয়ে কুশিয়ারা পার হয়ে এপারে আসতে হয়েছিল তাদের। জকিগঞ্জে আমাদের বাড়ি থেকে করিমগঞ্জের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। তখন শুকনো মৌসুমে পায়ে হেঁটে, সাইকেল/রিক্সায় করিমগঞ্জে যেতেন। কুশিয়ারা নদী নৌকা দিয়ে পারাপার করা হত। বর্ষা মৌসুমে বাড়ি থেকে করিমগঞ্জ যেতে নৌকা ছিল একমাত্র ভরসা। জকিগঞ্জের শিক্ষিত আর জমিদার শ্রেণীর একটি বড় অংশ ছিলেন হিন্দু ধর্মালম্বী। উনাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশই তখন দেশত্যাগ করেন। এটা ছিলো খুবই দুঃখজনক। পাশাপাশি, ভারতের এই অংশ থেকে অনেক মুসলিম এদেশে চলে আসেন। সিলেট শহরে একটি উল্লেখযোগ্য সংখক বসবাসকারীর আদি নিবাস করিমগঞ্জের আশপাশে।

এই দেশভাগে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই তিন জেলার মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি, আচরণ, খাদ্যাভ্যাস সিলেটের মানুষের মত। আমাদের অনেক আত্মীয় করিমগঞ্জে আছেন। আমার ফুফাত ভাই করিমগঞ্জ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি।

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: আমি এই বিষয়ে খুব একটা লেখা পাইনি। এ রকম একটা ঘটনা সিলেটের মানুষের লেখায়, সাহিত্যে আসা উচিৎ। মানুষ কি এগুলো ভুলে গিয়েছে কাওসার ভাই? আপনার মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে যে করিমগঞ্জের সাথে সিলেটর যোগাযোগটা ঠিক কি পর্যায়ের গভীর ছিলো। আপনার অনেক আত্মীয় ওখানে আছেন এখনও।

সিলেট ও করিমগঞ্জ নিয়ে আপনি কি একটা লেখা দিবেন স্যার? আমরা আরও অনেক কিছু জানতে পারবো।

১০| ১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: কলকাতা কিলিং এর পরিকল্পনাকারী ছিল সরোয়ারদী,শেরেবাংলা মুসলিমলীগের কিছু পাতীনেতা এবং পুলিশের কিছু কর্মকর্তা।এর জেরে নোয়াখালীতে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা।

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: বলতে পারবো না ভাই। একেতো বয়স অল্প, তার উপরে রাজনৈতিক ইতিহাসের ছাত্র নই। কিন্তু এক যায়গায় আমি পড়লাম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (আপনার সোহরাওয়ার্দী বানানটাতে একটু অবহেলার ছাঁপ রয়েছে বলে মনে হচ্ছে), শেরেবাংলাসহ নেতারা শেষ পর্যন্ত বাংলাকে অবিভক্ত রাখার জন্য চেষ্টা করেছিরলেন। কিন্তু একদিকে মুসলীম লীগের একটি অংশ, অন্যদিকে শ্যাম প্রসাদ মুখার্জীর নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল তীব্র বিরোধিতায় সেটা আর হয়নি। এখন দাঙ্গার পেছনে কারা পরিকল্পনা করেছিলো বা আদৌ করেছিলো কিনা, সেটা ইতিহাসই বলবে ঠিকভাবে।

১১| ১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৮

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: +

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৮

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ

১২| ১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আমার দৃষ্টিতে প্রশ্ন বিদ্ধ অসম বন্টন। মূলত নেহেরু আর ফার্স্ট লেডির পরকীয়া এর জন্যে দায়ী। মোটের উপর মুসলমানরা বঞ্চিত। বৃটিশ রাজ ক্ষমতা দখল করে মুসলিম শাসকদের হাত থেকে আর দিয়ে যায় হিন্দুদের হাতে। তারা বৃটিশ দের আঁতাত করেছিল তারা ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছিল আর মুসলমান রা শুরু থেকেই ছিল বিদ্রোহী তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। মুসলমানরা শুরুতে চাটুকারিতার পথ বেছে নিলে অন্য রকম হতো মনে হয়।....

১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৮

পদ্মপুকুর বলেছেন: শাসনকর্তা থেকে প্রজা সাব্যস্ত হয়ে মুসলিমরা দীর্ঘদিন বিহ্বল হয়ে ছিলো। সেই ক্ষোভের সাথে নেতৃত্বহীনতা তাদেরকে সে সময় ইংরেজি শিক্ষা থেকে দুরে রেখেছিলো। কিন্তু আমার মনে হয়, যদি সে সময় মুসলিম নেতৃত্বের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো সঠিক হতো, তাহলে ইংরেজি না শেখার বিষয়টা গৌণ হয়ে যেতো।

সে সময় তারা পরাধীন হয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, কিন্তু আজ আমরা স্বাধীন দেশে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছি কি?

১৩| ১০ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৪

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: অজানা বিষয় জানলাম। +

১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:১২

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনাকেও প্লাস। আপনিতো চার বছরের পুরোনো ব্লগার। কিন্তু আজই প্রথম দেখলাম বলে মনে হচ্ছে। নিয়মিত থাকুন। দেখবেন ভালো একটা পরিবার পাবেন। গুরুজন, সমবয়সী, ছোট, সব ধরনের।

১৪| ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:০৯

কল্পদ্রুম বলেছেন: বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলন নিয়ে আমরা ক জন জানি!নিজেই স্কুল কলেজে লিখে এসেছি 'আমরা একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছি।' তারপর ৫২ এর দীর্ঘ বর্ণনা।বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আসামের শহীদদের ব্যাপারে জেনেছি।কোরিয়ানদের ভাষা আন্দোলনের ব্যাপারে জেনেছি।আমরা এমনিতেই গর্বিত জাতি।কিন্তু এই যে 'আমরাই একমাত্র' বলে বাচ্চাদের ভিতর একটা সিউডো জাত্যভিমান তৈরির চেষ্টা।এটা কি ঠিক?
কানের পাশ দিয়ে গুলি যাওয়ার ব্যাপারটা আমার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৩১

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। আমাদের সবকিছুতেই 'একমাত্র' এবং 'প্রথম' হওয়ার আদেখলপনার আড়ালে জাতিগঠনের অতিপ্রয়োজনীয় অনেক বিষয় ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কতজন যে ভাষা আন্দোলনের বিষয়টা সঠিক জানে, সন্দেহের অবকাশ আছে। কিছু বছর আগে উগান্ডা বা রুয়ান্ডা এবং লন্ডনে বাংলাকে দ্বিতীয় ভাষা করা হয়েছে মর্মে একটা কথা চাউড় হয়েছিলো। আমরা ব্যাপক উল্লসিহ হয়ে আহ্লাদে আটখানা হয়ে পড়েছিলাম। পরে দেখা গেলো সংবাদটা সত্যি নয়।

আমাদের এই আদিখ্যেতার উল্টোপাশে আমরা আসলে এই ভাষা ও তার সংস্কৃতিটা সত্যিকার অর্থে কতটুকু ধারন করছি, সেটা মজবুত করা অনেক জরুরী ছিলো। কিন্তু ওই সিউডো জাত্যাভিমানের চোটে আমরা সেগুলোর প্রয়োজন অস্বীকার করেছি, করছি।

ধন্যবাদ স্যার মন্তব্যর জন্য।

১৫| ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৫৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: তথ্যবহুল লেখাটা পড়ে ভালোই লাগলো

১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:০৭

পদ্মপুকুর বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার।

১৬| ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:০৮

রাকু হাসান বলেছেন:


ধন্যবাদ পদ্ম পুকুর ভাই ইতিহাস সেঁচে দারুণ এক ইতিহাস জানানোর জন্য। এতটা বিস্তারিত জ্ঞান ছিলো না ।কাওসার চৌধুরী --ভাইয়ের মন্তব্যটি ভালো লেগেছে।
সিলেট ও করিমগঞ্জ নিয়ে আপনি কি একটা লেখা দিবেন স্যার? আমরা আরও অনেক কিছু জানতে পারবো।
--আপনার এই প্রশ্ন আমারো ।



রফিক-সালামদের সাথে আসামের বাংলা ভাষাবাসীদের যেন এক আত্মীক সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৬১ সালের ১৯ মে দিনটি বাঙালিদের জন্য অবশ্যই স্বরণীয় । ভাষার জন্য একবার প্রাণ দেওয়ার েইতিহাস আমি দেখি নি । একমাত্র বাঙালি ছাড়া,সেখানে আমরা দুইবার প্রাণ দিলাম । ইতিহাস হয়তো মনে করি নি,বাঙালির কুলঘেষে আসামরে শিলচরে আবারও রক্তস্নান করবে । ঢাকা-টু -শিলচর। দেখেন কিভাবে ইতিহাস মিলে যায় । ১৯৬১ সালে ৩রা মার্চ বিমলা প্রসাধ অসমিয়াকে আসামের রাষ্ট্রভাষার ঘোষণা দেওয়াতেই বাঁধে বিপত্তি । ইতিহাস মনে রাখবে চপলাকান্ত কে । তিনিই নিখিল আসাম বাঙ্গালা ভাষা সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন শিলচরে । এই সম্মালেনটিই অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছে। ছবি সেই ১১ জন শহীদ নাম ও ছবি সহ দিলাম ।


আবারও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। ভালো লাগছে আপনারা লিখছেন দেখে।

১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:১৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: যেহেতু আমি ওদের ভাষা আন্দোলন নিয়ে লিখিনি, তাই এই প্রসঙ্গ আসেনি। তবুও আপনার মন্তব্য পছন্দ হয়েছে বিধায় পোস্টের নিচে দিয়ে দিলাম। আপত্তি করবেন না নিশ্চয়।

১৭| ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২০

রাকু হাসান বলেছেন:

কোন আপত্তি নয় :) । আপনার পোস্টের মূল বিষয়বস্তু থেকে এই কমেন্ট আলাদা । যখন লিখছিলাম তখনই মনে হচ্ছিলো। মূলত আমি ১১ জন শহীদের সূত্র ধরেই মন্তব্য করেছি। তবে হ্যাঁ ,আপনার মূল বিষয়বস্তু এটা না । এই মন্তব্যটি মুছে দেওয়ার অনুরোধ করবো।

১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৫

পদ্মপুকুর বলেছেন: তাহলে আমি বুঝবো কিভাবে যে আপনি অনাপত্তিপত্র দিচ্ছেন? এম্নিতেই একটু আগে মডারেটর মহোদয় অনুমতি ব্যতিরেকে ছবি ব্যবহারের বিষয়ে কড়া পতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন.. :-0

১৮| ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমি ভাই দেশভাগের পক্ষে না।
দেশভাগ সমস্ত বাঙ্গালীদের জন্য অভিশাপ স্বরুপ।

১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৮

পদ্মপুকুর বলেছেন: আমাদের একজন সাবেক একজন রাজনীতিবিদ কি বলে গেছেন, দেখেন-

১৯| ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৩

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: এই সব কত দুঃখ আছে আমাদের!

১০ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:০৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: ..... এরই মাঝে বেঁচে থাকে হাসি কান্না। ইত্যাদি... :D

২০| ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৫৭

আখেনাটেন বলেছেন: শুধু করিমগঞ্জ কেন, বাংলা ভাগ হওয়ারই তো কথা ছিল না। তৎকালীন ভারতবর্ষের ১১ প্রদেশের মধ্যে ৪টি ছিল মুসলিম অধ্যুষিত। তার মধ্যে বাংলা ও পাঞ্জাব ছিল। কিন্তু ভাগের সময় দেখা গেল ভারতের উত্তর প্রদেশের মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ মুসলিম হলেও পুরোটাই ভারতের থাকলেও পাঞ্জাব ও বাংলায় তা মানা হয় নি। এ নিয়ে ক্যাচাল চলে। যখন ব্রিটিশদের কাছ থেকে কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভা আশ্বাস পায় যে বাংলা ও পাঞ্জাব আনুপাতিক হারে ভাগ হবে তখনই দেশভাগে রাজি হয়। এর পরেও চলে নানা কূটকৌশল। এতেই করিমগঞ্জ ভারতের কাছে। অথচ ভাগ হওয়ার আগে বাংলার নেতারা বিশ্বাস করছিল সমগ্র বাংলা ও আসাম পাকিস্তানের অন্তুর্ভুক্ত হবে। এ নিয়েও খেলা চলে দিল্লিতে। জিন্নাহ-নেহেরু সেখানে বড় কূটচাল চালে।

১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:২৫

পদ্মপুকুর বলেছেন: এখন তো আর এগুলো মেনে না নিয়ে উপায় নেই। সে সময় পূর্ববঙ্গীয় নেতৃবৃন্দ বাংলাকে এক রাখার ব্যাপক চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি এখানে আলাদা একটা স্বায়ত্বশাসিত এলাকা হবে, এমনও চেষ্টা হচ্ছিল। কিন্তু ওই যে, কুটচাল! তার কারণে বাংলা তার সীমানা হারানোর সাথে সাথে আমরাও আরও অনেক কিছু হারিয়ে ফেললাম।

২১| ১১ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:০৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভালো লিখেছেন। বসিরহাটের ঘটনাটা নতুন লাগলো আমার কাছে। এমন কোন কথা বা লিংক দিলে খুশি হতাম। তবে ৪৬এর বসিরহাট সম্পর্কে এই মুহূর্তে আমার একটা লেখা চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে সে সময়কার শহর সম্পর্কে এমন কথা শুনিনি। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অপ্রতুল। অন্যাতম মাধ্যম ছিল মার্টিন-বান রেল, অন্যদিকে ইছামতী নদী। সেখানে বেতার যোগে কোথায় পতাকা উড়লেও তা গোটা এলাকার ছবি নয়।
ধন্যবাদ পদ্ম পুকুরভাই।

শুভেচ্ছা নিয়েন।

১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৮

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার মন্তব্যর উত্তর দেয়ার জন্য আড়াইঘন্টার এক ডকুফ্লিম দেখলাম এতক্ষণ। কারণ ঠিক কোথায় তথ্যটা পেয়েছিলাম তা মনে করতে পারছিলাম না। এই ডকুফিল্মের ১:৪৫:০০ মিনিট দেখে দু এক মিনিট দেখুন। এখানে যে ভদ্রলোক কথাটা বলছেন, তিনি খুব গুরুত্বপূর্ণ কেউ হয়তো নন, কিন্তু যিনি এই ফিল্মটি নির্মাণ করেছেন, তিনি গুরুত্বপূর্ণ।

২২| ১১ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:২০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



দুঃখিত, ব্যস্ত থাকায় দেরীতে আসলাম। আসামের ৩৩টি জেলার মধ্যে এই তিন জেলা (করিমগঞ্জ, হাইল্যাকান্দি এবং কাছাড়) একটা সময় সিলেট অঞ্চলের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। এ অঞ্চলের লোকজন সিলোটি হিসাবে পরিচিত ছিল। ত্রিপুরা যেমন বৃহত্তর কুমিল্লা ছিল। আসামের বাকি ৩০টি জেলা আপার আসামে। মাঝখানের গভীর জঙ্গল এবং উঁচু পাহাড় এ অঞ্চলকে বিভক্ত করে রেখেছে। এজন্য এখনো মানুষের কালচার সিলেটি, অহমীয় নয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেই, এই তিন জেলার ছাত্র-ছাত্রীরা অহমীয় নয় বাংলায় শিক্ষা অর্জন করেন। ১৯৬১ সালের ১৯ মে ১১ জন প্রতিবাদী শিলচর রেলওয়ে স্টেশনে আসাম প্রাদেশিক পুলিশের গুলিতে শহীদ হওয়ায় এই তিন জেলার জন্য আলাদা শিক্ষাক্রমের আইন দিল্লীর সংসদে পাশ হয়। যা এখনো বলবৎ আছে। অহমীয় ভাষা বাংলা ভাষায় চেয়ে প্রাচীন হলেও ১৯০০ খৃষ্টাব্দের আগ পর্যন্ত আসামের বেশিরভাগ লোক বাংলায় কথা বলতো, বিশেষ করে সিলেটি বাংলায়। এছাড়া নাগরিলিপির প্রচলন ছিল উল্লেখ করার মত। অহমীয় ভাষার উচ্চারণ অনেকটা সিলেটি আঞ্চলিক ভাষার মতো।

(১৬) মন্তব্যে প্রিয় 'রাকু হাসান' ভাই এবং আপনি আমার প্রতিউত্তরে এ বিষয় নিয়ে আরো লিখতে বলেছেন। আমি লিখার চেষ্টা করবো। এ বিষয়ে আসলেই বেশি বেশি লেখা উচিত। নতুন প্রজন্ম সত্যটা জানুক। (ধন্যবাদ)

১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:৩২

পদ্মপুকুর বলেছেন: এই লেখাটা লেখার সময় আমার দুজনের কথা মনে এসেছিলো খুব করে। একজন শের শায়েরি, আমি তাঁর মত করে লিখতে চেয়েছিলাম এই পোস্ট টা, দ্বিতীয়জন আপনি। আপনার কোনো পোস্টে সিলেটসংশ্লিষ্টতা না পড়লেও লন্ডনের গল্প শুনে শুনে আমার কেন যেন মনে হয়েছিলো আপনি সিলেটের হবেন। আর কমিরগঞ্জ সিলেটের এলাকা। কিন্তু আপনি যে তার চেয়েও বেশিভাবে করিমগঞ্জের সাথে জড়িত! এখন এ বিষয়ে একটা সুগদ্য লেখা আপনার জন্য ফরজ হয়ে গেলো।


তানভীর মোকাম্মেল এর একটা ফিল্মে দেখলাম লোয়ার আসামে বাংলা মিডিয়ামে লেখাপড়ার ব্যবস্থা থাকলেও তা দিনকে দিন সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাভাষীদের দুঃখবোধও আছে্

২৩| ১১ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:২৫

করুণাধারা বলেছেন: +++++++++++++++.….....

চমৎকার রচনা! রাজনীতির সাথে মানবিক দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। রিফুউজি কথাটা মনের গভীরে গিয়ে আঘাত দেয়, আপনার তখন সুযোগ আছে অন্তত একজন মানুষের মন থেকে সেই আঘাতের বেদনা দূর করবার, আপনি অবশ্যই সেই বেদনা দূর করার চেষ্টা করবেন, আশাকরি। সেই সময় যারা পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে নতুন জায়গায় বসতি গড়েছিলেন, তারা ফেলে আসা জন্মভূমির জন্য আজীবন বেদনা বয়ে বেড়িয়েছেন, সেই সাথে যোগ হয়েছে রিফিউজি তকমার বেদনা। আপনার স্ত্রী সম্ভবত দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের- তবু এই তকমা তাকে ছেড়ে গেল না!!!

সিলেট ও করিমগঞ্জ ছিল কাছাড় জেলার অন্তর্গত। অনেক উচ্চপদস্থ সরকারি চাকুরে সিলেটে পোস্টেড ছিলেন এবং তারা চাকরি ছেড়ে না গিয়ে পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকরি করতে লাগলেন। সিলেটের আদি নিবাসীরা তাদের কাছাড়ী বলতেন এবং যত উপযুক্ত হোক না কেন, কাছাড়িদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়াতেন না। এই বেদনা বয়ে বেড়ানো মানুষ গুলো জন্মভূমির কথা মনে করে কাছাড় এসোসিয়েশন করে নানা অনুষ্ঠানে একত্রিত হন। কিছুদিন আগে ইন্তেকাল করা ডা. জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন কাছাড়ি। তার প্রকৌশলী পিতা দেশভাগের সময় সিলেটে পোস্টেড ছিলেন এবং সেখানেই থেকে যান, পরবর্তীতে ঢাকায় স্থায়ী হন। এমন বহু মানুষ আছে দেশভাগের বেদনা বয়ে বেড়ানো।

১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:৪১

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনি যথার্থই বলেছেন যে শব্দটা তাঁদের মনের গভীরে গিয়ে আঘাত দেয়। সে আঘাতের চিহ্ন এতটাই প্রবল যে এদের প্রথম বা দ্বিতীয় প্রজন্মের অনেকেই এখনও স্থানীয়দের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ককে অনুৎসাহিত করেন।

আমার হোম মিনিস্টার তৃতীয় প্রজন্মের। ঘটনা হলো- এই বিষয় নিয়ে আমার বা আমার পরিবারে কোনো প্রিজুডিস কখনও ছিলো না, এখনও নেই। এ কারণে বিয়ের সময় আমি জানতামই না যে সে ওই তারকাচিহ্নিত পরিবারের (চামে জানিয়ে দিলাম আরকি; তিনি এই ব্লগের পাঠিকা)। এলাকাভিত্তিক এই তকমা ছেড়ে যাওয়া মুশকিল। কারণ এসব এলাকার নামই হয়ে গেছে রিফুজিপাড়া টাইপের। তবে আশার কথা হলো এলাকার নামে জুড়ে গেলেও আস্তে আস্তে এই শব্দের আবেদন উভয়পক্ষেই অপসৃয়মান।

আপনি সুন্দর একটা দিক তুলে এনেছেন, অশেষ ধন্যবাদ। কাছাড়িদের বিষয়েও কিছুই জানতাম না।

২৪| ১১ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৩০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



'ডক্টর ত্রিগুণা সেন'-কে নিয়ে ব্লগে লিখেছিলাম। তিনি আমাদের এলাকার। অবাক করা বিষয় হলো আমিউনাকে নিয়ে লেখার আগে জকিগঞ্জের মানুষ তাকে চিনতোই না বলা যায়! তাঁর অবদান এবং অর্জন জানলে চমকিত হবেন। এমন গুণীজন আর দেশপ্রেমিকদের নিয়ে আরো লেখা উচিৎ। সাতচল্লিশের দেশভাগ এমন গুণীজনকে দেশছাড়া করেছে।

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:২০

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়ে এলাম। বই পড়ার আকালের এই যুগে ব্লগে বিভিন্ন বিষয় জানা যায়, এটাই প্রাপ্তি।

২৫| ১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: লিংক দেখলাম।

ভালো থাকুন।
জীবন হোক আনন্দময়।

১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:৪২

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার কি খবর হে নাগরিক লেখক?

২৬| ১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:০৭

নতুন নকিব বলেছেন:



চমৎকার পোস্ট। +++

১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:৪২

পদ্মপুকুর বলেছেন: থ্যাংকইউ স্যার

২৭| ১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:২৮

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:

বাংলাদেশের জাতীয় পদক প্রাপ্ত প্রফেসর ডাঃ মোবারক আলী'র মতো নামকরা মানুষেরা করিমগঞ্জের নাগরিক এবং বাংলাদেশের অধিবাসী ছিলেন। আমি একজনকে চিনি যিনি নাসা'র চীফ রকেট সায়েন্টিস্ট ছিলেন। তিনিও করিমগঞ্জের নাগরিক হয়েও বাংলাদেশের অধিবাসী ছিলেন। বাংলাদেশের প্রয়াত একজন রাষ্ট্রদূতও করিমগঞ্জের নাগরিক। এই মানুষদের প্রত্যেককে আমি ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি।

করিমগঞ্জের নাম শুনলেও কখনো এর ইতিহাস জানা হয়নি। আপনার কাছ থেকে জেনে অনেক ভালো লাগলো।

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:২৭

পদ্মপুকুর বলেছেন: এতসব জেনে করিমগঞ্জকে নিজের শরীরের অংশের মত অনুভুতি হচ্ছে এখন।

২৮| ১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:২০

জুন বলেছেন: আমরা যতবার জাফলং বেড়াতে গিয়েছি ততবার আমার স্বামীর একই আক্ষেপ আমাদের কেন এই পাহাড়গুলো দিলো না! এরপর যখন শিলং বেড়াতে গিয়ে চেড়াপুঞ্জি আসলাম যা বাংলাদেশ ভারতের সীমানায় তখন সেই উচু পাহাড়ের মাথা থেকে নীচে পানিতে ডুবে থাকা বাংলাদেশ দেখে অনেক মন খারাপ করে বল্লো "আমাদের ভাগে কেন একটু পাহাড়ও পরলো না"। আসলে বৃটিশদের সাথে দর কষাকষিতে দক্ষ কোন নেতা আমাদের মাঝে ছিলোই না। শিলং ছাড়াও আসামে আমরা প্রচুর সিলেটবাসীদের সাথে পরিচিত হই। এত বছর পরেও তাদের আক্ষেপ কেন এমন ভাগাভাগি হলো।
আপনার লেখাটি ভালো লাগলো অনেক পদ্মপুকুর।
+

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: ভাইজানের অনুভুতির সাথে বাংলাদেশের সবার অনুভুতিই মিলে যাবে। কিন্তু পাহাড় আমাদের সাথে না আসার পেছনে অন্যতম কারণ ছিলো ওগুলো আগে থেকেই ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়ের মত রাজ্য বা প্রিন্সলি স্টেটের সাথে যুক্ত থাকা। বঙ্গপ্রদেশের সাথে তো ওগুলো ছিলোই না। ধর্মীয় প্রাধান্যের ভিত্তিতে ভাগাভাগি হওয়ায় ওই রাজ্যগুলো এমনিতেই এই হিসাবের বাইরে ছিলো।
তবে বাংলা+আসাম+ত্রিপুরা মিলে হলে ভালো হতো, কারণ এসব যায়গায় অসমিয়া, ত্রিপুরা বা হিন্দির ব্যাপকতার মধ্যেও বিপুল সংখ্যক বাংলাভাষী রয়েছে।

এই চিন্তা যখন করছি, তখন নিচে ম. হাসানের দু' বছরের জুনিয়র যেটা বলেছেন, ভারতীয়দের দিক থেকে সেটাও চিন্তার বিষয় বটে!

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২৯| ১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৪

মুজিব রহমান বলেছেন: নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের আসার কথা ছিল পাকিস্তানের সাথে। এখন ওখানকার মুসলিমরা পিছিয়ে আছে। ভারতের ২০ কোটি মুসলিমই সমস্যায় রয়েছে। জাতিগত দ্বন্দ্ব উসকে না দিলে এমন সমস্যাও তৈরি হতো না আর ভারতও ভাগ হতো না।

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৩৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: ঠিকই বলেছেন

৩০| ১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:০৮

মা.হাসান বলেছেন: ১০ নম্বর মন্তব্যে জাতীয় নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের নামে যে ঘৃন্য কুৎসা রটনা করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং ওনাকে রেফারেন্স দেওয়ার আহ্বান জানাই।

বাংলাদেশের খুলনার অনেক এলাকায়ও সে সময় ভারতের পতাকা ওড়ানো হয়েছিল। পরে চোদ্দো বা পনেরই আগস্ট এ্ এগুলো নামিয়ে নেয়া হয়।
দেশভাগের জন্য ইংরেজদের এককভাবে দোষ দেওয়া ঠিক বলে মনে করি না। ইংরেজদের তরফ থেকে এমনকি এরকম প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে ইউনিয়ন ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন করা হবে ; ইউনিয়ন গুলোর স্বাধীনতা থাকবে তারা কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চায় কিনা এ বিষয়ে। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা এই প্রস্তাব মেনে নেননি। সমঝোতার সকল পথ বন্ধ হওয়ার পর ভারত ভাগ করা হয় বিস্তারিত বর্ণনা ইন্ডিয়া উইনস ফ্রিডম বইটিতে পাবেন।

যারা শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন তাদের কষ্ট সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব না, সে চেষ্টাও করি না। তবে আমি বাংলাদেশে এদের মধ্যে যাদের দেখেছি তাদের সকলেই প্রথম এবং দ্বিতীয় জেনারেশন এদেশীয় দের সঙ্গে বিয়ের ঘটনা এড়িয়ে গিয়েছেন তৃতীয় এবং পরের প্রজন্ম থেকে ওই বিষয়টা আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এদের ঘটি বলে উপহাস করা হয় , পাকিস্তানি বলা হয় মোহাজের। ভারত এবং পাকিস্তানে এই সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। বাংলাদেশ হয়তো রয়ে গেছে, তবে আমার চোখে দৃশ্যমান না।

ছোটবেলায় একবার বাংলাদেশের ম্যাপের দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, সিলেট থেকে চিটাগাং এর দিকে লাইন টা একটু সোজা করে টানলেই ভারতের কতখানি অংশ আমরা ন্যায্য ভাবে পেয়ে যেতে পারতাম। আমার দু'বছরের যুনিয়র এক ছেলে আমাকে জবাবে বলল, বাংলাদেশের ম্যাপ না দেখে ভারতের ম্যাপ টা দেখেন । বাংলাদেশ কেমন একটা গর্তের মতো ঢুকে পড়েছে। ঠিকমতো লাইনটা টানা হলে তো বাংলাদেশেরই থাকার কথা না।

১৯৭১ এ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় আমাদের পরম পাওয়া । আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গ দিল্লির অধীনস্ত রয়ে গেছে। যারা দেশভাগের সময় বাংলাদেশে চলে এসেছেন তারা ভাগ্যবান বলে মনে করি।

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: প্রথমত ১০ নম্বর মন্তব্যের বিষয়ে আমার বক্তব্য প্রতিমন্তব্যে দিয়েছি। ব্লগতো ওপেন স্পেস, যে যার মত করে কথা বলবে এখানে। উনিও বলেছেন। কিন্তু ঐতিহাসিক কোনো বিষয়ে, বিশেষ করে যখন সেটা কন্ট্রাভার্সিয়াল হয়, তখন রেফারেন্সসহ দিলে ভালো।

শুধু বসিরহাট বা খুলনা নয়, আরও অসংখ্য যায়গায় এটা ঘটেছিলো। যদ্দুর মনে পড়ছে, হুমায়ূন আহমেদ এর মধ্যাহ্নেও এরকম একটা ঘটনাকে চিত্রায়িত করা হয়েছে। আর যারা শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন তাদের কষ্ট সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব না,এটাই সত্যি কথা।

অনেক লম্বা মন্তব্য করেছেন। ধন্যবাদ স্যার।

৩১| ১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

হাসান রাজু বলেছেন: আমার মায়ের নানা বাড়ি সিমান্তের ওপারে। আশেপাশের সব বাড়ির একই অবস্থা। যেন বিয়ে করিয়ে পাশের জেলা থেকে কেউ মেয়ে এনেছে কেউ দিয়েছে এক সময়। ভাষা, সংস্কৃতি, চলাফেরা, ভাবনা সব এক। আমি ওপারের অনেক আত্মীয় দেখেছি। ১৫/২০ বছর আগেও তারা অনায়েসে আসা যাওয়া করতেন। এখন আর সেই দিন নাই। পাসপোর্ট ভিসা লাগে। শেষ বয়সে একবার বোনটাকে দেখতে আসে কেউ। কেউবা বাপের ভিটা শেষ বারের মত দেখে যেতে চায়। আবেগ ঘন একটা সময় চলছে এখন। আর কয়টা বছর পর এই বন্ধনের শেষ ঘিটটা ছিঁড়ে যাবে।

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: যদি আমাদের পররাষ্ট্রনীতি দুর্বল না হতো, তাহলে হয়তো এই যাতায়াত ব্যবস্থাকে আরও সহজীকরণের মাধ্যমে এই আত্মীয়তার বন্ধনকে এগিয়ে নেয়া যেতো। কিন্তু সেটা হয়নি। দুঃখজনক হলেও সেটাই মেনে নিয়ে চলতে হবে। উপরে ম. হাসান বলেছেন- এই ধরনের মানুষদের দুঃখকে বোঝা আমাদের জন্য সম্ভব না।

৩২| ১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫৯

জুন বলেছেন: মা হাসানের জুনিয়ারের সাথে একমত হইতে পার্লাম্না পদ্মপুকুর :(
বাংলাদেশ আর ভারতের মানচিত্র দেখলে ছোটবেলা থেকেই আমার মনে হতো "দেখেছো দাদা কেমন ছোট ভাইকে বা হাতে আগলে রেখেছে" #:-S

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:০৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: জাতির অংশ হিসেবে আমিও একমত নই। কিন্তু ভারতীয়দের দিক থেকে চিন্তা করলে....
তবে আপনার চিন্তাটা ইউনিক মনে হলো। :-P

৩৩| ১১ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুন্দর একটা ইতিহাস জানলাম। করিমগঞ্জ যে সিলেটের একটা অংশ ছিল, তা আমরা হারিয়েছি, এ জিনিসটা মনে একটু বেদনারও সঞ্চার করলো।

তবে, সিলেট আগে থেকেই বাংলার অংশ ছিল। বিভিন্ন সময় বাংলা থেকে আসামে গেছে, আবার আসাম থেকে বাংলায় ফিরেছে, এমন হয়েছে। ১৮৭৪ সালের পর প্রথম চলে যায় আসামের সাথে।

১৯৪৭ সালে দেশবিভাগ না হলে ভারতের এ ভূ-খণ্ড এখনো আগের মতোই জ্বলতো। দেশ-বিভাগের মূল কনসেপ্ট উঠে আসে প্রধানত এসব সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রেক্ষাপট থেকেই। ক্ষমতা ভাগাভাগির লোভে করা হয়েছে, এ অজুহাত আমার কাছে খুব গৌণ মনে হয়।

আমাদের ১৯৭১-এর প্রয়োজন পড়তো না, যদি একে ফজলুল হকের লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী দেশভাগ কার্যকর করা হতো, যেখানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদের নিয়ে একাধিক রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব ছিল, একটির নাম যদি পাকিস্তান হতো, তাহলে আমাদের এ পূর্ব বাংলা হয়ত পূর্ব বাংলা বা বাংলাদেশ হিসাবে তখন থেকেই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে যাত্রা শুরু করতো। মূল বেইমানিটা জিন্নাহই করেছিল।

সুন্দর পোস্টের জন্য শুভেচ্ছা রইল।

১৩ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:১৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: ১৯৪৭ এবং তৎপূর্বে যে সব সামাজিক, অর্থনৈতিক ঘটনাবলী মুসলীমদের মনে যে অনাস্থা সৃষ্টি করেছিলো, তা নিরসনে দেশভাগ অনিবার্য হয়ে পড়েছিলো বলেই মনে হয়।। দেশভাগের ৭০-৭৫ বছর পর এসে স্থিতিশীল একটা সমাজে বসে সে সময়ের নেতৃবৃন্দের সমালোচনা হয়তো করা যায়, কিন্তু ওই সময়ের মুসলিম সমাজের মনোকষ্টটা বুঝতে পারা অতটা সহজ নয়।

শেরে বাংলার লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পাকিস্তানের সাথে জুড়ে না দিয়ে যদি এখানে স্বতন্ত্র একটা দেশ হতো, সেটাই বোধহয় সবচে ভালো হতো।

আপনি সুন্দর পোস্ট বলেছেন, আমি কৃতজ্ঞ।

৩৪| ১১ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০৩

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনাকেও প্লাস। আপনিতো চার বছরের পুরোনো ব্লগার। কিন্তু আজই প্রথম দেখলাম বলে মনে হচ্ছে। নিয়মিত থাকুন। দেখবেন ভালো একটা পরিবার পাবেন। গুরুজন, সমবয়সী, ছোট, সব ধরনের

আমি অফ লাইনে থাকি। প্রতিদিন না আসলেও এক সপ্তাহে একবার আসি। পাঠক বলতে পারেন।

১৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১০

পদ্মপুকুর বলেছেন: জ্বী ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো পাঠক হওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।

৩৫| ১৫ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৫৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:




নতুন প্রজন্মের অনেকেরই কাছে বিষয়গুলো স্বপ্নের মতো। অনেকেই মনে করেন সাতচল্লিশ আমাদের সঙ্গে ততটা সংশ্লিষ্ট নয়।
এমন দুরবর্তী একটি বিষয়কে নিকটে এনে দিয়েছেন আমাদের জন্য।
অনেক চমৎকার একটি লেখা দিয়ে সাতচল্লিশকে এনালিসিস করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, পদ্মপুকুর!

ভারত ইতিহাসের বেদনাতুর বছর ১৯৪৭। এটি না হলেই হতো। তসলিমা নাসরীন এঅঞ্চলের মানুষের অনুভূতিটুকুই তুলে ধরেছেন।

সীমান্তরেখা ১৯৪৭ দেখেছি। পড়েছি বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী। সিলেটের গণভোট একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং অঞ্চলকে পূর্বপাকিস্তানভুক্ত করাও একটি বিশেষ অর্জন।

১৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১১

পদ্মপুকুর বলেছেন: আমি আমার অনুভূতিগুলোই নিজের মত করে প্রকাশ করতে চেষ্টা করি, সেটাকে আপনার মত লেখক যখন চমৎকার বলেন, রীতিমত আপ্লুত হই।

ভালো থাকবেন। শুভ ব্লগিং।

৩৬| ২০ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: রেস্পেক্টেড স্যার,

দীর্ঘসময় ধরে ভিডিও ক্লিপটি আমি দেখেছি। 14 মিনিট 35 সেকেন্ডের দিকে একবার বসিরহাটের প্রসঙ্গ এসেছে। ভাষ্যকারের বয়ান অনুযায়ী উনার মায়ের বাপের বাড়ি ছিল বসিরহাটে। নানার কবরস্থান কৃষ্ণনগরে। কিন্তু দেশভাগের বিরম্বনার ফলে খুলনা থেকে ওনার মায়ের পক্ষে কৃষ্ণনগরে নানা কবরস্থান দেখা সম্ভব হয় না বলে উনি উল্লেখ করেছেন। পরে দু'ঘণ্টা সাত মিনিটের দিকে আর একবার ইছামতি নদীর প্রসঙ্গ এসেছে। যেখানে বিজয় দশমীকে কেন্দ্র করে দুই বাংলার অগণিত নর-নারী এক উৎসবমুখর পরিবেশে মিলিত হয়। এই ছাড়া আলাদাভাবে কোথাও আর বসিরহাটে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলনের প্রসঙ্গ দেখলাম না। অবশ্য দীর্ঘ সময়ের ভিডিও কোন একটি মুহূর্তের জন্য হলেও আমার দৃষ্টিগোচরে না আসতেই পারে। যে কারণে আপনার কাছে অনুরোধ যদি পর্টিকুলার বিশেষ ওই সময়টা উল্লেখ করেন তাহলে উপকৃত হই।

শুভেচ্ছা নিয়েন।

২০ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:১৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: অনুগ্রহ করে ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড থেকে শুরু করে ১ মিনিট দেখুন। আমি উপরেই সময় উল্লেখ করে দিয়েছিলাম। হয়ত কোনো কারণে মিস করে গেছেন। এ যায়গায় একটা পুকুরের শানবাধানো ঘাটে দুজন পুরুষ ও একজন নারী ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। আবারও বলছি, এখানে যে ভদ্রলোক ইন্টারভিউ দিচ্ছেন, তাঁকে আমি চিনিনা, খুব গুরুত্বপূর্ণ কেউ হয়তো তিনি নন, কিন্তু যিনি এই ফিল্মটি নির্মাণ করেছেন, সেই তানভীর মোকাম্মেল গুরুত্বপূর্ণ।

৩৭| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভোট না হলে সম্ভবত পুরো সিলেট ভারতে চলে যেত।
ভারতের তামিলরা ১৯৩৭ সালে হিন্দির বিরুদ্ধে এবং তামিল ভাষার পক্ষে আন্দোলন করে। এতে ২ জন মারা যায় ও বহু লোক গ্রেপ্তার হয়। তবে তাদের আন্দোলনটা সফল হয়নি।
নদিয়া জেলা ১৭ আগস্ট ১৯৪৭ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্গত ছিল। পরে কুষ্টিয়া বাদে (কুষ্টিয়া নদিয়া জেলার অংশ ছিল) বাকি অংশ ভারতের অন্তর্গত হয়।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৫৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: আমি তামিলনাড়ুতে গিয়েছি। ভারতের পেটের মধ্যে থেকেও ওদের ভাষার প্রতি ভালোবাসা অপরিসীম। মানুষ হিন্দি শিখতে চায় না, যারা জানেন, তারাও বলতে চাননা। অন্যদিকে কলকাতায় এখন হিন্দিই লিঙ্গুয়া ফ্রাংকা হয়ে গেছে। নদীয়ার ঘটনাটা কি? জানলে লিখে ফেলুন প্লিজ।

৩৮| ২২ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ১৯৪৭ সালে পাঞ্জাব আর বেঙ্গল প্রভিন্সে হিন্দু আর মুসলমানের সংখ্যার অনুপাত মোটামুটি কাছাকাছি ছিল। ফলে এই দুই প্রদেশকে ভাগ করা কঠিন হয়ে পরে। ভারতবর্ষকে বিভাজন করার জন্য সীমানা রেখা নির্দিষ্ট করার দায়িত্ব দেয়া হয় একজন ব্রিটিশ আইনজীবীকে যার নাম ছিল সিরিল রেডিক্লিফ। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের সময় প্রণীত মানচিত্রকে সামনে রেখে Bengal Boundary Commision সিরিল রেডিক্লিফের নির্দেশনায় কাজ শুরু করে। যদিও প্রয়োজনে এই মানচিত্র পরিবর্তন করার এখতিয়ার তাদের ছিল। ১৯০৫ সালের মানচিত্রে নদীয়া, মুর্শিদাবাদ , মালদহ ও পশ্চিম দিনাজপুর এই চারটি জেলা এবং বনগ্রাম থানা পূর্ব বঙ্গের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট এই জেলাগুলির মানুষ আনন্দ করলেও তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছিল তারা আসলে কোন দেশের মধ্যে পরবে। ১৯০৫ সালের মানচিত্রের সূত্রে তারা ভেবেছিল যে এই জেলাগুলি পাকিস্তানের মধ্যে পরবে। কিন্তু ৩ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়ে যায় এবং মুর্শিদাবাদ, মালদহ, পশ্ছিম দিনাজপুর ও বনগ্রামকে পুরোপুরিভাবে ভারতের অধীনে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয় আর নদিয়া জেলাকে দুই ভাগ করে এক ভাগকে নাম দেয়া হয় নবদ্বীপ আর আরেক ভাগের নাম দেয়া হয় কুষ্টিয়া। নবদ্বীপ ভারতে চলে যায় আর কুষ্টিয়া পাকিস্তানে চলে আসে। পরবর্তীতে নবদ্বীপ পুনরায় নাম বদলে নদিয়া হয়ে যায়। বলা হয়ে থাকে যে নদী আর রেলপথ কে বিবেচনায় রেখে এরকম বিভাজন করা হয়। তবে সিরিল রেডিক্লিফের পাঞ্জাব ও বঙ্গের এই বিভাজন অনেক সমালোচনার জন্ম দেয়। এর ফলে দেশ বিভাগের পর পরই ভয়ঙ্কর দাঙ্গা হয় পাঞ্জাব ও বঙ্গে।

৩৯| ২৪ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:০০

অসিত কর্মকার সুজন বলেছেন: ২০০২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার উদ্দেশ্যে আমরা বন্ধুরা রওনা দিলাম ট্রেনে । ট্রেনে যাওয়ার কারণ হলো , বন্ধুর বাবা সিলেট রেলওয়েতে চাকুরী করতেন ।তাই বাৎসরিক ভ্রমণের জন্য টিকিট ফ্রী ছিলো উনাদের। তো সেই সুবাদে ফ্রী ভ্রমণ । তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসে ইঞ্জিন পরিবর্তনের জন্য ১ ঘন্টা বিরতি নিতো ( এখন জানি না ,এখন অবশ্য বাসে যাওয়া হয় ) । ট্রেন থামলো ইঞ্জিন পরিবর্তন হবে ।আমরা তিন বন্ধু কামড়ায় বসে আছি । প্রথম যাচ্ছি তাই দরজা খুলে বাইরে যাচ্ছি না । এমন সময় এক বয়স্ক চাচা আমাদের কামড়ায় ঢুকে এসে বললো এটা উনার রিজার্ভ করা । বাকী দুই বন্ধু ভড়কে গেলো । আমি ভাবলাম যদি তাই হয় তবে আমাদের কিছু করার নেই , কিন্তু আমার বন্ধুর বাবা যেহেতু সিলেট রেলওয়ে তে আছেন তাই যা হবেই হোক খারাপ কিছু হলে খবর হবে স্বাভাবিক । আমি বন্ধুদের বললাম চাচা কে বসতে দে। আমরা সিলেট যাব বলে চাচাকে জিজ্ঞে স্করলাম কই যাবেন ? উনি বললো ব্রাহ্মণবাড়িয়া ষ্টেশন স্কুলের শতবর্ষ উদযাপনে তিনি এসেছে হবিগঞ্জ থেকে । প্রোগ্রাম শেষ করে চলে যাচ্ছেন , এটা শুনে মাথায় ঝিলিক দিলো । কারণ আমার কাছে পুরানো গল্প শুনতে ভালো লাগে । উনাকে বললাম চাচা আপনার হবিগঞ্জ যেতে ৩ ঘন্টা লাগেব আসেন আমাদেরকে আপনার জীবন কাহিনী বলেন । উনিও খুব উৎসাহ পেলেন।সেই সময়ে করিম গঞ্জের এই কাহিনী শুনলাম । জানলাম খুলনা ও সিলেট এর কথা গুলো । দেশভাগের এই বিশেষ দিক গুলো ।আমি মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম । দেশভাগ নিয়ে আমার আগ্রহ সবসময় তাই কিছু কিছু জানি । উনি যখন বলছিলেন তখন খুব বিমর্ষ লাগছিলো । পরে বললো উনাদের সব ভাইবোন করিমগঞ্জে উনি একা হবিগঞ্জ । অনেকদিন দেখেন না । এক সময় উনার গন্তব্যে এলে উনি নেমে যান । কিন্তু আমি আজো সিলেট গেলে সেই সময় টা মিস করি । কোন ভাগই কখনো সুখকর হয় না । তাও আবার প্রকৃতিকে ভাগ করে তো মোটেও না ।


লেখককে ধন্যবাদ ভালো একটি পোষ্টের জন্য । আজকাল তো এসব কেও জানতেও চায় না ।

২৪ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:০৮

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি বিষয় সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য। মহাকালের কিছু অনিবার্য বিষয়কে এড়ানো যায়না বলেই তা ঘটে, কিন্তু যে ক্ষত তৈরী করে সময়ের শরীরে, তার সাক্ষী থেকে যায় যুগ থেকে যুগান্তরে। আপনার কামরার ওই বয়ষ্ক মানুষটাও সে ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন। এতদিন পরে এসে আমরা শুধু সহানুভুতিই জানাতে পারি, এমনকি সমানুভূতিও নয়।

ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.