নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পক্ষপাতদুষ্ট

সত্যের প্রতি পক্ষপাতিত্ব প্রকট

পক্ষপাতদুষ্ট › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহবাগের গণজাগরণ স্বার্থক হোক। হাজারো সালাম বিপ্লবী ব্লগারদের.......।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৪

(রি-পোস্ট....)

শাহবাগ এখন আর কোন স্থানের নাম নয়, ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল বিজয়স্তম্ভ আজ শাহবাগ।

বাংলার প্রতি প্রান্তরে সকল হৃদয় গহীনে যার নাম এখন গণ-জাগরণ মঞ্চ। প্রগতির ধারক নতুন প্রজন্মের যে ব্লগার এবং অন-লাইন এক্টিভিস্ট গণ এই অভূতপূর্ব জাগরণের ডাক দিয়েছেন তারা আমাদের জাতীয় বীর, নতুন প্রজন্মের বীরশ্রেষ্ঠ। তাদের জানাই লাল সালাম।

৪১ বছরে আমরা যা করতে পারিনি এরা সে দু:সাধ্য কে বাস্তবতায় রুপ দিয়ে আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের অসীম ব্যর্থতায় মানুষ যখন হতাশাগ্রস্থ, রাজাকারদের নিয়ে চলছে আপোষ মীমাংসা এবং ক্ষমতায় যাবার হিসাব-নিকাশ তখন নতুন এক বিপ্লবের ডাক দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ব্লগাররা। আজ বিপ্লবের ধারকদের সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি আমি ধিক্কার জানাই ঐ সকল কাপুরুষ, কাপালিকদের যারা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিজয় ও ক্ষমতার প্রভূত অধিকারী হয়েও কাদের মোল্লা বা এ জাতীয় লোকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বর্তমান সময়ে একজন মন্ত্রী’র বিরুদ্ধে যখন দূর্নীতির অভিযোগ ওঠে অযুত ক্ষমতার অধিকারী (ধরা যাক সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত) কিংবা বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সিনিয়র রাজনীতিবিদ হয়েও তাকে পদত্যাগ করে জনারন্য থেকে সাময়িক সময়ের জন্য আড়ালে থাকতে হয় সেখানে আমি কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারিনা, কাদের মোল্রার মত একজন গণ-হত্যাকারী যাকে কসাই কাদের নামে ডাকা হতো সে কিভাবে স্বাধীনতা পররর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে পারে এবং সেখানে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়? কিভাবে সে বিশ্ববিদ্যালয় এর নিকটবর্তী উদয়ন স্কুল এবং বাংলাদেশ রাইফেলস্ স্কুল এন্ড কলেজে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করে ? কিভাবে সরকারী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশনে সে চাকুরী পায়? কিভাবে স্বাধীন বংলাদেশে সে প্রেসক্লাবের মত সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়? এগুলো যতই ভাবী আমার রক্ত টগবগ করে উঠে। ১৯৭২-৭৫ সালে দালাল আইনে যখন হাজার হাজার রাজাকার কে গ্রেফতার করা হয়েছিল তখন কেন কাদের মোল্রা কে গ্রেফতার করা হয়নি? কেন তার বিরুদ্ধে কোন মামলা না করে তাকে সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানে আরামে চাকুরী করতে দেয়া হলো? তাই গণ-জাগরণ মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ ও জয়বাংলা শ্লোগান কে ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক সম্পদ বানানো এ সকল কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের শুধু বোতল নিক্ষেপ’ই যথেষ্ট নয় এদের সবার মুখে থু থু এবং প্রয়োজনে হালকা গণ-ধোলাই দেয়া যেতে পারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর জামাত কে নিষিদ্ধ করে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে গেলেও নিজ দলীয় বে-ঈমান দের কারণে ৭৫ সালে হৃদয়বিদারক নৃশংস হত্যার শিকার হন। নিজ দলের দালালদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে রাজাকারদের ক্ষমা করা এবং ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে পাকিস্তান সরকারের কাছে হস্তান্তর কি দূ:খজনক নয়। নিষিদ্ধ জামাত ৭২-৭৭ এর মধ্যে তলে তলে গড়ে তোলে তাদের আদর্শিক রাজনীতির শক্ত ভিত। জিয়াউর রহমানের ঘাড়ে বন্দুক রেখে পরবর্তীতে আবার স্ব-মুর্তিতে আবির্ভূত হয় তারা। এসব ভাবলে মনটা গভীর ব্যথায় কুকড়ে উঠে। এত জল্পনা কল্পনার পর, দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যুদ্ধাপরাধের জন্য যে ট্রাইবুনাল হল তা নিয়ে কত না বিতর্ক। দূ:খ শুধু মনকেই পীড়া দেয় এজন্য যে, এত কষ্ট করে যে ট্রাইবুনাল গড়ে তোলা হয়েছে তারা কিভাবে এ রায় দেয় যে, সব অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হবার পরও কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন হয়। আমি ট্রাইবুনাল এবং প্রসিকিউশন এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই যদি তাদের কোন দুর্বলতা এবং অবহেলার জন্য যুদ্ধাপরাধীরা বেচে যায় একদিন তাদের কে জনতার আদালতের মুখোমুখি অবশ্যই দাড়াতে হবে। তরুণ প্রজন্ম আজ জানিয়ে দিয়েছে তাদের বার্তা। তাদের কাছে দল বা গোত্র বড় নয়। কাদের মোল্রার রায় নিয়ে সংসদে যখন মহাজোটের শরীক কোন কোন নেতা আপোষের গন্ধ অনুমাণ করলেন তখনই তরুণদের গায়ে আগুন ধরে গেল। নিজামীর সাথে মিটিং করা সাজেদা চৌধুরী, মওদুদ, সুরঞ্জিতরা যাতে গণজাগরণ কাছে ভিড়তে না পারে। যদি আসেও তারা যাতে জনতার ঘৃণার তরঙ্গে জর্জরিত হয়। বাবার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আদালতে স্বাক্ষী না দিয়ে গণ-জাগরণ মঞ্চে এসে ড. জাফর ইকবাল স্যার যেন বেশী কথা না বলেন, বিনয়ে বা লজ্জায় মাথা যেন হেট করে রাখেন। সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খানের মত রাজাকার নন্দনরা যাতে গণ-জাগরণ মঞ্চে অন্তত ম্রিয়মান থাকেন। আমি এদের কয়েকজনের প্রতীকি নাম নিলাম মাত্র। কারণ মুখে একরকম বাস্তবে ভিন্ন এজাতীয় লোকদের ৪১ বছরের ব্যর্থতা আমাদের চিনতে আর বাকী নেই। ছাত্র-যুবকদের তিল তিল কষ্টে গড়ে তোলা গণজোয়ারে এসে যখন এরা বলেন ৪১ বছর ধরে এদিনটির জন্য আমরা অধীর অপেক্ষায় ছিলাম তখন এসকল ভন্ড প্রতারকদের আমার কাছে নব্য রাজাকার মনে হয়। আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় স্বাধীনতার পর আওয়ামীলীগ ২ মেয়াদে ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল, ৯ বছর ক্ষমতায় ছিল তাদের জোটভুক্ত জাতীয় পার্টি। ১৯ বছর যাদের হাতে ছিল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তারা বা তাদের সঙ্গীয়রা কিভাবে বলে আজকের এ দিনটির জন্য তারা অপেক্ষায় ছিল ? ভালোভাবে খুজলে এদের অনেকেরই রাজাকার দের সাথে আত্মীয়তা, ব্যবসা-বাণিজ্য, লেন-দেন এবং সখ্যতা’র দলিল পাওয়া যাবে। পরিবেশ এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন দাবী তোলা না গেলেও সরকার এবং বিরোধী দলের চিহ্নিত রাজাকারদের তালিকাও এক সময় এই মঞ্চে ঘোষনা করতে হবে। সরকারের কাছ থেকে অঙ্গীকার আদায় করতে হবে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। সরকার যদি পাশ কাটাতে চায় তাহলে অন্তত: জনগণ কে শপথ করাতে হবে মহিউদ্দিন খান আলমগীর, এডভোকেট কামরুল, আশিকুর রহমান জাতীয় চিহ্নিত রাজাকার দের বয়কট করার জন্য। গণ-জাগরণ মঞ্চের চাইতে পবিত্রতর স্থান এখন বোধকরি বাংলাদেশে ২য় টি নেই। সব অন্তর গুলো কে একসূত্রে গাথার এর চাইতে সুবর্ণ সুযোগ আর কি কখনো আসবে ? দল-মতের উর্ধে উঠে রাজাকারদের বিচার এখন ছাত্র জনতার প্রাণের দাবী। সতর্ক থাকতে হবে এ মঞ্চের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। গত কয়দিন যাবত বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে বিজয়ের বরেণ্য নায়ক ব্লগারদের প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনারা কতদুর যাবেন? কোথায় গিয়ে আন্দোলন আপনাদের শেষ হবে ? আমি খুবই আশান্বিত হয়েছি ব্লগার আন্দোলনের সংগঠকদের জবাব শুনে। তারা বলেছেন এটা জনগণের আন্দোলন জনগণই ঠিক করবে। আমার মনে হয় ইতিমধ্যে কারো কারো মনের ভেতর ভয় ঢুকে গেছে। ব্লগার রা না অন্য কোন দাবী করে বসে। কারণ এখন শাহবাগে যা-ই উচ্চারণ করা হবে জনগণ তাকেই স্বাগত জানাবে। জনগণের এই আন্দোলন কে বিতর্ক মুক্ত রাখতে বিতর্কিত ব্যক্তিবর্গ কে এড়িয়ে চলতে হবে। চলমান সময়ের নির্মম সত্য হলো মানুষ সরকার এবং বিরোধীদল উভয়ের প্রতি চরম বিরক্ত। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে সরকার এবং ছাত্রলীগের ইমেজ সাধারণ ছাত্রদের কাছে খুবই প্রশ্নবিদ্ধ। অহরহ গুম খুনের কথা না হয় বাদই দিলাম, ঢাকার রাজপথে বিশ্বজিত কে যেভাবে জঘন্য অমানবিক-বর্বরোচিত কায়দায় ছাত্রলীগের ছেলেরা হত্যা করলো, পদ্মা সেতু নিয়ে যে দূর্নীতির মহাকাব্য রচিত হলো, শেয়ার বাজার কেলেংকারী যেভাবে নি:স্ব করলো লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে তারা কিন্তু ঘৃনায় ফুসে আছে সরকারের বিরুদ্ধে। শাহবাগে সরকারী লোকদের ঘনিষ্ঠতার ইস্যু তুলে কোন কারণে বিরোধীদল যাতে এই আন্দোলন কে বিতর্কিত করতে না পারে তা সবসময় মাথায় রাখতে হবে। বাংলার মানুষ আজ সত্যিই আশান্বিত। এই আত্মত্যাগী নি:স্বার্থ ছাত্র-যুবকরা যদি এই মুহুর্তে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করে কিংবা তাদের হাতে দেয়া হয় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে অন্যরকম বাংলাদেশ দেখবে মানুষ। ১৯৭১ যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল আমাদের ২০১৩ সত্যিকার মুক্তির সন্ধান এনে দিবে এটা হলফ করে বলতে পারি। আগামী দিনে যদি একটি দল গঠন করা হয় যার নাম হবে বাংলাদেশ গণ-জাগরণ দল। আমি হবো সেই দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মী এই প্রত্যশায় গণ-জাগরণের নায়কদের জানাই সালাম, হাজারো সালাম।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.