![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সারাবিশ্বের সকল গুরু, গোঁসাই, পির, মুর্শিদ, ভক্ত আসেকান ও তরিকাপন্থী সকলের পবিত্র চরণে প্রেমভক্তি রইল। এই আইডির ও গুরু গৃহ পেইজের সকল পোস্ট বিষয় ভিত্তিক ও গবেষেণাধর্মী। এখানে সাধারণ কোনো পোষ্ট দেওয়া হয় না। তাই; সবাইকে বিশেষভাবে জানানো যাচ্ছে যে; কোনো জাতি, ধর্ম ও শাস্ত্রীয় মতবাদকে ছোট করা বা কারো ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা আমাদের লেখার উদ্দেশ্য নয়। তথাপিও; যদি; অজানতে আমাদের লেখার বিষয়বস্তু বা কোনো বাক্য কারো মতের বিপক্ষে যায়; সেক্ষেত্রে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। মনে রাখতে হবে; যেহেতু; আমাদের পোস্টগুলো বিষয় ভিত্তিক ও গবেষণাধর্মী। লেখকের লেখার উদ্দেশ্য সমাজ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন ও ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা; কাউকে হেওপ্রতিপন্ন করা নয়। তাই; সকলের প্রতি আবারও বিনীত নিবেদন; প্রতিটি পোস্টে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের করে লেখককে উৎসাহিত করবেন। যেহেতু; প্রতিটি পোস্ট তৈরিতে লেখকের প্রচুর মেধা ও শ্রম ব্যয় হয়। আর যদি তা না পারেন; তবে; খারাপ মন্তব্য করা হতে বিরত থাকবেন। লেখাতে তথ্যগত ভুল, অসংগতি ও ইতিহাস বিভ্রাট দেখা গেলে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন। গুরু গৃহ কর্তৃপক্ষ ও পরম কাঁইজি
“৮৪ ফের” এটি একটি ‘পৌরাণিক প্রকৃত মূলক সংখ্যা’। কারণ; এটি পৌরাণিক সংখ্যা সারণীতে বর্ণিত ৪০টি মূলক সংখ্যার একটি। তাই; অবশ্যই এর প্রকৃত মূলক সত্তা মানবদেহে বিদ্যমান। তবুও; হিন্দু সাম্প্রদায়িক ভাববাদিরা এর জলজ্যন্ত অপব্যাখ্যা প্রদান করেছে। ৮৪ ফের মূলক সংখ্যাটির আলোচনার পূর্বে বিশ্বের বিভিন্ন শাস্ত্রীয় মহাগ্রন্থের মধ্যে সংখ্যাটির ব্যবহার তুলে ধরা একান্ত প্রয়োজন। উল্লেখ্য; বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, ত্রিপিটক, বাইবেল, যাবুর, তোরাহ, গিলগামেশ, ইলিয়াড, ওডিসি, ঈনিদ, কুরান, হাদিস ও তাফসিরে ৮৪ সংখ্যাটির তেমন ব্যবহার দেখা যায় না। তবে; ভারতীয় পুরাণ, লালন ও বলন এ এর অধিক ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। এ হতে অনুমান করা যায় যে; পৌরাণিক সাহিত্যে এ মূলক সংখ্যাটির ব্যবহার সাম্প্রতিককালেই আরম্ভ হয়েছে। নিচে প্রমাণাদি তুলে ধরা হলো।
ইঞ্জিল হতে প্রমাণ
“তখন হান্নাহ নামে একজন রমণী অবতার ছিলেন। তিনি রস বংশের মণিপুরী মেয়ে ছিলেন। তার অনেক বয়স হয়েছিল। সাত বছর স্বামীর ঘর করবার পর চুরাশি বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বিধবার জীবন কাটিয়েছিলেন।” (ইঞ্জিল, লূক- ২/৩৬-৩৭)।
লালন হতে প্রমাণ
১. “অনুমানে জানা গেল, চুরাশি ফের পড়ল, আর কবে তুই হবি ভালো, রঙমহলে কখন পড়বে হানা।” (পবিত্র লালন- ৪৯০/৩)।
২. “একে নিরীক্ষ যার, হতে ভবনদী পার, সে তরী কভু টাল খাবে না, পাঁচপীরে চলনÑ চলে লালন, চুরাশি করে আনাগোনা।” (পবিত্র লালন- ৩৬৩/৪)।
৩. “কারণ সমুদ্রের পাড়ে, গেলে পায় অধর চান্দেরে, লালন বলে নইলে ঘুরে, মরবি চুরাশি।” (পবিত্র লালন- ৮৫৪/৪)।
৪. “চিনলাম না গুরু কী ধন, জানলাম না সেবা সাধন, ঘুরতে বুঝি হলোরে মন, চুরাশি।” (পবিত্র লালন- ১৪৩/৩)।
৫. “সমঝে সাধন করো ভবে, এবার গেলে আর কী হবে, লালন কয় পড়বি তবে, চুরাশি ফেরেতে।” (পবিত্র লালন- ৬৩৩/৪)।
৬. “সে গোলা শূন্য ধামে, রসের খেলা রাত্রি দিনে, শাস্ত্র দুষি- আর চুরাশি, পরশ হয় তার পরশনে।” (পবিত্র লালন- ৭১৮/২)।
বলন হতে প্রমাণ
১. “আপনারে চিনতে যে পারে, নিজেরে চিনতে যে পারে, ওসে ঘরে বসে অচিন চিনে, পড়ে না চুরাশি ফেরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২১)।
২. “আমার দ্বারিন্দ্র নয় জনা, কারো কথা কেউ মানে না, চুরাশি তল এ ঘরখানা, রক্ষা বুঝি হলো না।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৭০)।
৩. “ওরে পাঁচশত বছরে ঝরে পাতালে মেঘের বারি, ধরো তারে কৌশল করে সহস্র বছর পাঞ্জা লড়ি, বলনের বচন হলে মরণ, পড়বি চুরাশি ফেরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৪৫)।
৪. “গুরু কৃপায় পার না হবে, পারে শত বিপদ ঘটিবে, চুরাশি ফের পড়িবে, ঘুরবে জন্ম-জন্মান্তরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১০৮)।
৫. "দয়াল মুক্ত কর গো আমারে, দিও না চুরাশি ফেরে, সহস্র বছর খাড়া দ্বারে, খুলে দাও দুয়ারখানি।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৬০)।
৬. “পঞ্চাশ সহস্র বছর ঘুরে, ত্রিরিশ সহস্র পারাপারে, চুরাশি ফের পড়িলে, কাটবে না এক জনমে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১১০)।
৭. “পড়লে ধরা পারাপারে, পড়ে এক জনমের ফেরে, চুরাশি পূর্ণের দায়ে, আবার ধরে দেহাধার, দশ দেবতা ষোল সাথী, একদেহে করে বসতি, আবার হইয়া যায়রে মতি, বলন কয় সে জলধর।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৩১)।
৮. “বলন কাঁইজি কয় পারাপারে, পড়িয়া চুরাশি ফেরে, ঘুরি এ ভবের পরে, স্বরূপ সাধন হলো না।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২২৪)।
৯. “বাহাত্তর স্পন্ধকী ঘড়ি, সাতাত্তর পালা ধড়ি, মরো না বাতাসে চড়ি, চুরাশি ফের খাটি।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২১১)।
১০. “বাহান্ন হাট তিপ্পান্ন গলি, তেষট্টি বাই ছিষট্টি তলি, তেয়াত্তর পাকে চলি, চুরাশি ফের কাটল না।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৭০)।
১১. “শক্তি সাঁই আত্মা ইন্দ্র, রিপু কর্ম ভাব কেন্দ্র, নভঃ ভূমি সূর্য চন্দ্র, চল্লিশ গুণ চুরাশি।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৫৬)।
১২. "ষড় ভুজা চৌদ্দ ভূবন, চুরাশিতে অধঃপতন, না জানিলে ষোল নিয়ম, করবিরে হায়ঃ হায়ঃ।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১০৭)।
১৩. “ষোলকলা চামকুঠরি, দশ দশায় রইল ঘিরি, একেঈশ্বর অটল সাধন, আশি জনে কাঁন্ধে করে- চুরাশি ফেরে ঘুরে, বলন কয় শোনরে মন।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৪৯)।
১৪. “সাধক বলন কাঁইজি বলে, ঐ সত্তর চুরাশি হলে, পড়বে সাঁইয়ের কোপানলে, ঘুরবে নাগরদোলায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৮)।
১৫. “সেথা ঘাটরাণী সর্বনাশে, জোয়ার ভাটা বারো মাসে, বলন কয় বাউল বাতাসে, পড়িয়া চুরাশিপাকে” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৯৮)।
এবার ৮৪ ফের পৌরাণিক মূলক সংখ্যাটির ব্যবহার লক্ষ্য করলে দেখা যায়; কেবল “চুরাশি, চুরাশি তল, চুরাশি পাক” চুরাশি ফের ও চুরাশি বছর” এরূপ ব্যবহৃত হয়েছে। ওপরোক্ত ব্যবহারাদির মধ্যে কোথাও যোনির ব্যবহার নেই। তাহলে; এবার সন্দেহাতীতভাবে চুরাশি তল, চুরাশি পাক, চুরাশি ফের ও চুরাশি বছর দ্বারা কেবল চুরাশি পৌরাণিক মূলক সংখ্যাকেই বুঝানো হয়েছে। তাই; যোনির ব্যবহার যে ভারতীয় পৌরাণিক ভাববাদী ও মূর্খ গোঁসাই-গুরুদের মনগড়া আবিষ্কার তা পরিষ্কার করেই বলা যায়।
ভারতীয় পৌরাণিক ভাববাদীদের নিকট ৮৪ পৌরাণিক মূলক সংখ্যাটির অনেক মনগড়া ব্যাখ্যা রয়েছে। তারমধ্যে; শ্রীচরণ দাসের মনগড়া ও ভিত্তিহীন ব্যাখ্যাটি বর্তমানে বাঙালী ও হিন্দি বাউলদের মধ্যে মরণব্যাধির রূপলাভ করেছে। ক্রমান্বয়ে এটি লালন ঘরানার মূর্খ সাঁইজিদেরও আক্রমণ করে ফেলেছে। তাই; বর্তমানে তারাও সাঁইজির ঐসব ৮৪ পৌরাণিক সংখ্যা যুক্ত বাণীগুলোর ব্যাখ্যা শ্রীচরণ দাসের মতো করেই প্রদান করে থাকেন। এককথায় বলা যায়; চুরাশি যোনিবাদী সবাই কেবল শ্রীচরণ দাসের নির্ধারিত উক্ত গণনাটির ধারক ও বাহক ভিন্ন নন। এবার চুরাশি লক্ষ যোনির ভারতীয় পৌরাণিক ভাববাদী শ্রীচরণ দাসের একান্ত মনগড়া ও ভিত্তিহীন ব্যাখ্যাটি তুলে ধরা হলো;
“পুরাণি শাস্ত্রে যাহা আছে বর্ণন
শুন সে চুরাশি লক্ষ যোনি বিবরণ।
ত্রিশ লক্ষ বার বৃক্ষ যোনিতে জনম
তাতে যত কষ্ট হয় অশেষ করণ।
ত্রিশ লক্ষ বার বৃক্ষ যোনিতে ভ্রমিতে
কত যুগ যুগান্তর যাবে ক্রমেতে।
মৎস্যে কূর্মে নয় লক্ষ বার জন্ম হয়
ভ্রমিতে পাড়িতে জীব কত কষ্ট পায়।
নয় লক্ষ বার জন্ম হয় ধীরে ধীরে
ঘরবাড়ি ঠিন নাই যথা তথা ফিরে।
কৃমি জন্ম দশ লক্ষ ভ্রমিয়া বিশেষে
একাদশ লক্ষ বার পক্ষী যোনি শেষে।
বিশ লক্ষ বার জন্ম পশুর যোনিতে
নানা রূপে কত কষ্ট পায় অবনীতে।
অবশেষে; গো যোনিতে জন্ম লয়
এর চেয়ে উত্তম জন্ম পশুকুলে নাই।
গো যোনির শেষে পশু যোনি নাই
মানুষ্য যোনিতে জন্ম গো যোনি ছাড়াই।
মানব কুলেতে জন্ম চার লক্ষ বার
অপরূপ সে বারতা কহি সবিস্তার।
জন্মিয়া মানবকুলে আত্মা না উদ্ধারে
পুনঃ সে চুরাশি লক্ষ যোনি পথে ঘুরে।
বার বার জন্মলাভে কত কষ্ট পায়
শ্রীচরণ দাসে বলে নাইকো উপায়।
” শ্রীচরণ দাসের মতে; পাপী বা অপরাধীরা নিম্নোক্ত পরিমাণ যোনি খেটে অবশেষে মুক্তিলাভ করে মানব জন্মলাভ করবে।
৩০,০০,০০০ বৃক্ষকুল
৯,০০,০০০ মৎস্যকুল
১০,০০,০০০ কৃমিকুল
১১,০০,০০০ পক্ষিকুল
২০,০০,০০০ পশুকুল
৪,০০,০০০ মানবকুল = ৮৪,০০,০০০ জনম
তবে; কেবল এর এতটুকু ব্যাখ্যা করা যায় যে, শ্বরবিজ্ঞানে ও পৌরাণিক সাহিত্যে কুল চার প্রকার। যথা; ১. পশু কুল ২. মানব কুল ৩. দেবতা কুল ও ৪. গুরু কুল বা ঈশ্বর কুল। এখানে; বৃক্ষকুল দেহ, মৎস্য ও কৃমিকুল শুক্রাণু-ডিম্বাণু ও পক্ষিকুল কানাই। অতঃপর; পশু রূপে জন্ম। তারপর; আত্মতাত্ত্বিক জ্ঞানার্জন করে মানব কুল লাভ করা।
অথবা শূন্য (০) ফেলে দিয়ে,
৩০ বৃক্ষকুল
৯ মৎস্যকুল
১০ কৃমিকুল
১১ পক্ষিকুল
২০ পশুকুল
৪ মানবকুল = ৮৪ জনম
৩০ বছর যৌবনকাল, ৯ দ্বার, ১০ ইন্দ্র, ১১ রুদ্র, ২ যুগল (দাম্পত্য) ও ৪ চন্দ্র। এভাবেই পড়া যায়। যেহেতু; বলন কাঁইজির পৌরাণিক সংখ্যা সূত্র হলো;
মহাধীমান বলন কাঁইজির পৌরাণিক সংখ্যা সূত্র
(Mythological number formula of omniscient lordship Bolon)
২.১.০. পৌরাণিক মূলক সংখ্যা সূত্র
(Mythological radical numbers formula)
“মানুষে বিদ্যমান বিষয়বস্তু ও ইন্দ্রিয়াদির পরিমাণ জ্ঞাপক সংখ্যা দ্বারা পৌরাণিক সংখ্যা নির্মাণ সূত্রকে ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা সূত্র’ বলে।” যেমন; মানবের দশটি (১০) ইন্দ্রিয় হতে ‘১০ ভাই’।
অনুসিদ্ধান্ত (Corollary)
“মানুষে বিদ্যমান বিষয়বস্তুর পরিমাণ জ্ঞাপক সংখ্যা দ্বারা নতুন ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’ সৃষ্টি করা যায়।”
২.২.০. পৌরাণিক রূপক সংখ্যা সূত্র
(Mythological metaphor number formula)
‘পৌরাণিক সংখ্যা সারণী’তে বর্ণিত ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’ যোগ, গুণ, স্থাপন এবং ভিতরে ও ডানে শূন্য দিয়ে নতুন রূপক সংখ্যা নির্মাণ সূত্রকে ‘পৌরাণিক রূপক সংখ্যা সূত্র’ বলে।
পৌরাণিক রূপক সংখ্যার সংজ্ঞা
(Definition of mythological metaphor number)
১. মানুষে বিদ্যমান বিষয়বস্তু বা ইন্দ্রিয়াদির পরিমাণ জ্ঞাপক কোনো মূলক সংখ্যা আড়াল করে তার যে কৃত্রিম সংখ্যা ছোটকি, উপমা ও পৌরাণিক চমৎকারে ব্যবহার করা হয় তাকে ‘পৌরাণিক রূপক সংখ্যা’ বলে। যেমন; ৩২,০০০ সৈন্য (৩২ ফুল হতে)।
২. মানুষে বিদ্যমান বিষয়বস্তু ও ইন্দ্রিয়াদির পরিমাণ জ্ঞাপক কোনো মূলক সংখ্যাকে আড়াল করে তার সম্পর্কে কিছু বলার জন্য সৃষ্ট কৃত্রিম সংখ্যাকে ‘পৌরাণিকি রূপক সংখ্যা’ বলে। যেমন; ষাট হতে ‘ষাইট্যা’।
অনুসিদ্ধান্ত (Corollary)
“একাধিক ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’র যোগ, গুণ, স্থাপক কিংবা শূন্যক পদ্ধতি দ্বারা সৃষ্ট নতুন ‘পৌরাণিক সংখ্যা’ কে ‘পৌরাণিক রূপক সংখ্যা’ বলে।”
২.২.৩.০. পৌরাণিক যোজক রূপক সংখ্যা সূত্র
(Mythological adder metaphor number formula)
‘পৌরাণিক সংখ্যা সারণী’তে বর্ণিত ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’ যোগ করে নতুন রূপক সংখ্যা নির্মাণ সূত্রকে ‘পৌরাণিক যোজক রূপক সংখ্যা সূত্র’ বলে।
অনুসিদ্ধান্ত (Corollary)
“শ্বরবিজ্ঞানে বিভিন্ন ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’-সহগ যোগ করে নতুন ‘পৌরাণিক যোজক রূপক সংখ্যা’ সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু গণিতে করা যায় না।” যেমন; ৫৩ গলি।
২.২.৪.০. পৌরাণিক গুণক রূপক সংখ্যা সূত্র
(Mythological multiplier metaphor number formula)
‘পৌরাণিক সংখ্যা সারণী’তে বর্ণিত ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’ গুণ করে নতুন রূপক সংখ্যা নির্মাণ সূত্রকে ‘পৌরাণিক গুণক রূপক সংখ্যা সূত্র’ বলে। যেমন; ২৮।
অনুসিদ্ধান্ত (Corollary)
‘পৌরাণিক সংখ্যা সারণী’তে বর্ণিত এক বা একাধিক ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’ গুণ করে নতুন ‘পৌরাণিক গুণক রূপক সংখ্যা’ সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’র কোনো পরিবর্তন হয় না।”
২.২.৫.০. পৌরাণিক স্থাপক রূপক সংখ্যা সূত্র
(Mythological installer metaphor number formula)
‘পৌরাণিক সংখ্যা সারণী’তে বর্ণিত ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’ বিভিন্নভাবে স্থাপন করে নতুন রূপক সংখ্যা নির্মাণ সূত্রকে ‘পৌরাণিক স্থাপক রূপক সংখ্যা সূত্র’ বলে। যেমন; ৯৯৯।
অনুসিদ্ধান্ত (Corollary)
“পৌরাণিক সংখ্যা সারণীতে বর্ণিত এক বা একাধিক ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’ বিভিন্নভাবে স্থাপন করে নতুন ‘পৌরাণিক স্থাপক রূপক সংখ্যা’ সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’র কোনো পরিবর্তন হয় না।”
২.২.৬.০. পৌরাণিক শূন্যক রূপক সংখ্যা সূত্র
(Mythological depletory metaphor number formula)
‘পৌরাণিক সংখ্যা সারণী’তে বর্ণিত ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’র ভিতরে ও ডানে শূন্য দিয়ে নতুন রূপক সংখ্যা নির্মাণ সূত্রকে ‘পৌরাণিক শূন্যক রূপক সংখ্যা সূত্র’ বলে। যেমন; ৪০।
অনুসিদ্ধান্ত (Corollary)
১. ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’য় শূন্য (০) হ্রাস-বৃদ্ধি করলে; গাণিতিকভাবে দশগুণ পরিবর্তন হয়, কিন্তু; শ্বরবিজ্ঞানে ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’র কোনো পরিবর্তন হয় না।”
২. “পৌরাণিক সংখ্যা সারণীতে বর্ণিত ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’র ভিতরে ও ডানে শূন্য হ্রাস-বৃদ্ধি করে নতুন ‘পৌরাণিক শূন্যক রূপক সংখ্যা’ সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’র কোনো পরিবর্তন হয় না।”
“৮৪ লক্ষ্য যোনি ভ্রমণ” সমস্যাটির যাদুর গিট্টু খোলার জন্য সর্ব প্রথম বাঙালী মহাসাধক মহাধীমান বলন কাঁইজির নির্মিত ৪০টি পৌরাণিক মূলক সংখ্যা অবলোকন করা একান্ত প্রয়োজন। বলন কাঁইজির ৪০ পৌরাণিক মূলক সংখ্যা হলো;
৪০ পৌরাণক মূলক সংখ্যা (40 mythological radical number)
'٥٢ عدد جذري' (ইসনানি ওয়া খামসিয়িনা আদাদ জিযরি)
১. এক নিরীক্ষ ২. দুই ফল ৩. তিন তার ৪. চার চন্দ্র ৫. পঞ্চ বাণ ৬. ছয় রিপু ৭. সাত কর্ম ৮. আট অঙ্গ ৯. নয় দ্বার ১০. দশ ইন্দ্রিয় ১১. এগারো রুদ্র ১২. বারো নেতা ১৩. তের নদী ১৪. চৌদ্দ ভুবন ১৫. পনের চল ১৬. ষোলকলা ১৭. আঠারো ধাম ১৮. ঊনিশ রক্ষী ১৯. বিশ কর্মী ২০. একুশ দিন ২১. তেইশ জোড়া ২২. চব্বিশ পক্ষ ২৩. পঁচিশ গুণ ২৪. সাতাশ নক্ষত্র ২৫. ত্রিশ বছর ২৬. বত্রিশ ফুল ২৭. তেত্রিশ দেবতা ২৮. ছত্রিশ রবি ২৯. বাহান্ন হাট ৩০. চুয়ান্ন মাথা ৩১. বাহাত্তর স্পন্দন ৩২. আশি কর ৩৩. চুরাশি ফের ৩৪. দুইশত ছয় জন ৩৫. তিনশত দশ অব্দ ৩৬. তিনশত ষাট মূর্তি ৩৭. পাঁচশত সৈন্য ৩৮. ছয়শত ছেষট্টি ‘প্রপাচ’ এবং ছয় হাজার ছয়শত ছেষট্টি ‘প্রপারিচ’ ৩৯. হাজার মাস ও ৪০. কোটি ঊর্ণ।
১১ সহযোগী মূলকসংখ্যাঃ
১. চল্লিশ তলা (যোজক) ২. তিপ্পান্ন গলি (যোজক) ৩. পঞ্চান্ন ধারা (যোজক) ৪. ষাট হাত (শূন্যক) ৫. তেষট্টি বাই (স্থাপক) ৬. ছেষট্টি তল (স্থাপক) ৭. সত্তর জন (শূন্যক) ৮. সাতাত্তর পালা (স্থাপক) ৯. নব্বই ভাগ (শূন্যক) ১০. নিরানব্বই নাম (স্থাপক) ও ১১. শতদল (শূন্যক)।
বলন কাঁইজি ৮৪ এর সহগ শব্দ গ্রহণ করেছেন ‘ফের’। সেজন্য; সংখ্যাটির নাম হয়েছে ‘চুরাশি ফের’।
আমাদের আলোচ্য ৮৪ ফের পৌরাণিক মূলক সংখ্যাটির ৪টি আত্মতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা রয়েছে। যথা; ৮৪ বছর, ৮৪ কর ভূত, ৮৪ ঘণ্টা ও ৮৪ কম্প। এগুলোকেই বিভিন্ন রূপকার বিভিন্ন পরিভাষায় পৌরাণিক সাহিত্যে ব্যবহার করে থাকেন।
১. ৮৪ বছর (রূপক)
ব্যাখ্যাঃ (সাধারণ শাস্ত্রীয় ও সাম্প্রদায়িক আউল বা ধার্মিকদের জন্য)।
সাধারণত ১,০০০ শ্বাসকে পৌরাণিক সাহিত্যে ১,০০০ মাস বলা হয়। আর এ সূত্র হতে ১,০০০ মাসকে বছরে রূপান্তর করলে ৮৩.৩৩ হয় কিন্তু বয়সের ক্ষেত্রে ভাংতি মাস গ্রহণযোগ্য নয় বিধায় ৮৩.৩৩ বছরকে গাণিতিক নিয়মে ৮৪ বছর হয়।
২. ৮৪ করভূত
ব্যাখ্যাঃ (ত্বরিক্বাপন্থী বাউল, নাড়া বা মাজ্জুবদের জন্য)।
= (৮০ কর+ ৪ ভূত)।
= (এক হাতের ১৯টি কর এবং কবজি = ২০ কর। দুই হাতের ৪০ কর। তেমেই; দুই পায়ের ৪০ কর। অর্থাৎ; দুই হাত ও দুই পায়ের মোট ৮০টি কর। এবং আগুন, জল, মাটি ও বাতাস)।
৩. ৮৪ ঘণ্টা
ব্যাখ্যাঃ (সাঁইজি বা বৈষ্ণব বা নায়িবে রাসুলদের জন্য)।
রজস্বলাদের রজকালীন সাড়েতিন দিন সময়। ১ দিন সমান ২৪ ঘণ্টা বিধায় সাড়েতিন দিন = ৮৪ ঘণ্টা। অর্থাৎ এক রজকালে স্বরূপ সাধন করা সম্ভব না হলে; আবার ৮৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এবার স্বরূপ সাধন করা সম্ভব না হলে; আবারও ৮৪ ঘণ্টা সময় অপেক্ষা করতে হয়।
৪. ৮৪ কম্প
ব্যাখ্যাঃ (কাঁইজি বা ব্রাহ্মণ বা ব্রহ্মচারী বা খলিফাতুল্লাহ বা ওলিউল্লাহদের জন্য)।
সুস্থ্য মানুষের স্বাভাবিক হৃদকম্প প্রতি মিনিটে প্রায় ৭০ হতে ৭২টি। কিন্তু মানুষ যখনই; কামকেলি আরম্ভ করে; তখনই; ঐ হৃদকম্প ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। যখন; হৃদকম্প আশিতে যায়; তখন শরীর ঝাঁকি দিয়ে রক্ত থেকে শুক্র পৃথক হয়ে যায়। অতঃপর; হৃদকম্প চুরাশিতে গেলে শুক্র নিক্ষেপণ পেশি জাগ্রত হয়ে থাকে। অতঃপর; উক্ত পেশি শুক্রকে বাইরে নিক্ষেপ করে। আত্মতাত্ত্বিক দার্শনিক মনীষিদের মতে; সাধক হৃদকম্প ৮০ নিচে রেখে কামনদি পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করলে কখনই শুক্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
এবার এ চারটি আত্মতাত্ত্বিক ব্যাখ্যার সাথে ওপরোক্ত উদ্ধৃতিগুলো মিলিয়ে দেখুন। আশা করি সব মিলে যাবে।
উপসংহারে এসে বলা যায় যে; প্রকৃত বাস্তবতা কোথায়? আর মানুষ অন্বেষণ করে কোথায়? এভাবেই রূপকের আড়ালে প্রকৃত আত্মতাত্ত্বিক শিক্ষা ক্রমে ক্রমে কালের অতল গহব্বরে বিলিন হয়ে যেতে বসেছে (সংক্ষিপ্ত)।
(তথ্যসুত্র
চমৎকার বা মু’জিযার ইতিবৃত্ত
লেখক; বলন কাঁইজি।
©somewhere in net ltd.