![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সারাবিশ্বের সকল গুরু, গোঁসাই, পির, মুর্শিদ, ভক্ত আসেকান ও তরিকাপন্থী সকলের পবিত্র চরণে প্রেমভক্তি রইল। এই আইডির ও গুরু গৃহ পেইজের সকল পোস্ট বিষয় ভিত্তিক ও গবেষেণাধর্মী। এখানে সাধারণ কোনো পোষ্ট দেওয়া হয় না। তাই; সবাইকে বিশেষভাবে জানানো যাচ্ছে যে; কোনো জাতি, ধর্ম ও শাস্ত্রীয় মতবাদকে ছোট করা বা কারো ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা আমাদের লেখার উদ্দেশ্য নয়। তথাপিও; যদি; অজানতে আমাদের লেখার বিষয়বস্তু বা কোনো বাক্য কারো মতের বিপক্ষে যায়; সেক্ষেত্রে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। মনে রাখতে হবে; যেহেতু; আমাদের পোস্টগুলো বিষয় ভিত্তিক ও গবেষণাধর্মী। লেখকের লেখার উদ্দেশ্য সমাজ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন ও ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা; কাউকে হেওপ্রতিপন্ন করা নয়। তাই; সকলের প্রতি আবারও বিনীত নিবেদন; প্রতিটি পোস্টে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের করে লেখককে উৎসাহিত করবেন। যেহেতু; প্রতিটি পোস্ট তৈরিতে লেখকের প্রচুর মেধা ও শ্রম ব্যয় হয়। আর যদি তা না পারেন; তবে; খারাপ মন্তব্য করা হতে বিরত থাকবেন। লেখাতে তথ্যগত ভুল, অসংগতি ও ইতিহাস বিভ্রাট দেখা গেলে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন। গুরু গৃহ কর্তৃপক্ষ ও পরম কাঁইজি
পরম কাঁইজি·WEDNESDAY, 8 AUGUST 2018
লেখকের কথা (Authors speak)/ ‘يتكلم مؤلف’ (ইয়াতাকাল্লামু মুয়াল্লিফ)
আজ হতে প্রায় ছয় হাজার বছর পূর্বে ভারতীয় সাধু ও সন্ন্যাসীগণ আধ্যাত্মিক সাধনবলে মানবদেহের মধ্যে স্রষ্টার অস্তিত্বের সন্ধানলাভ করেন। অতঃপর; তার নামকরণ করেন ‘ব্রহ্মা’। অন্যদিকে; গ্রিকরা প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে মানবদেহের মধ্যে স্রষ্টার অস্তিত্বের সন্ধানলাভ করেন এবং তার নাম দেন ‘ঈশ্বর’। তারপর; পারসিকরা প্রায় দুই হাজার পাঁচশত বছর পূর্বে মানবদেহের মধ্যে স্রষ্টার অস্তিত্বের সন্ধানলাভ করেন এবং তার নাম দেন ‘তানরি’। তারপর; আরবরা মাত্র দেড় হাজার বছর পূর্বে মানবদেহের মধ্যে স্রষ্টার অস্তিত্বের সন্ধানলাভ করেন এবং তার নাম দেন ‘আল্লাহ’।
প্রায় চার হাজার বছর আগে ও পরের ব্যবধানে বাংভারতীয় সাধু ও সন্ন্যাসীগণের আবিষ্কার ‘ব্রহ্মা’ এবং আরবীয় অলি ও আব্দালগণের আবিষ্কার ‘আল্লাহ’। উভয় বলয়ের সাধু-সন্ন্যাসী ও অলি-আব্দালগণের এ অবিস্মরণীয় স্রষ্টা আবিষ্কারের ওপর ভিত্তি করে; স্বস্ব সম্প্রদায়ের শিষ্যদেরকে অধর সত্ত্বা উদ্ঘাটনের পদ্ধতির প্রশিক্ষণ প্রদান আরম্ভ হয়। এ কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিশিষ্ট মহা গ্রন্থগুলো নির্মিত হয়। উল্লেখ্য যে; বিশ্বের সব আধ্যাত্মিক মহাকাব্যের বাচনভঙ্গি, উপমা নির্মাণশৈলী একই; কেবল ভাষার ব্যবধান মাত্র। এছাড়াও; সাধুগণ ‘ব্রহ্মা’ নামক এ অধরা-সত্তাকে আহরণের লক্ষ্যে সারাবিশ্বের প্রায় সব ভাষাতেই ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় আকারের পুস্তক-পুস্তিকা নির্মাণ করে গেছেন।
একবিংশ শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত সারা বিশ্বে অসংখ্য ভাষায় নির্মিত প্রায় ৪,৩০০টিরও অধিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রদায়ের সন্ধান পাওয়া যায়। সর্বক্ষেত্রেই দেখা যায় যাজক বা প্রবর্তকের প্রয়াণের পর তার সহচার্যপ্রাপ্ত একান্ত শিষ্যদের মধ্যে যাজকের প্রবর্তনকৃত মতবাদের সঠিক শিক্ষা মাত্র দুয়েক শতাব্দী টিকে থাকে। অতঃপর; মূল আধ্যাত্মিক শিক্ষা হতে বিচ্যুতি হয়ে অনুসারীরা সাম্প্রদায়িক নীতিমালা প্রণয়ন করতে আরম্ভ করে। আধ্যাত্মিক নীতিমালা প্রণয়নের অভাবে এবং সাম্প্রদায়িক নীতিমালা প্রণয়নের প্রভাবে অনুসারীরা ক্রমে ক্রমে সাম্প্রদায়িক নীতিমালার প্রতি উদ্বুদ্ধ ও উজ্জীবিত হতে থাকে। এক সময় তা দল বা সম্প্রদায় রূপে আত্মপ্রকাশ করে। অর্থাৎ; সাম্প্রদায়িক নীতিমালা মান্যকারী জনগোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক সম্প্রদায় রপে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমান বিশ্বে প্রায় ৪,৩০০টি সম্প্রদায়ের সন্ধান পাওয়া যায়। বর্তমান বাংলাদেশেই প্রায় ৫০টির অধিক সাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠীর সন্ধান পাওয়া যায়। মূল শ্বরবিজ্ঞান হতে বিচ্যুতি হওয়ার কারণে কোনো সময়ই বিশেষ কোনো একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সব মনীষী স্ব-সাম্প্রদায়িক মতবাদের অনেক বিষয়ের ওপর একমত হতে পারে না। ফলে; যুগে যুগে প্রতিটি সম্প্রদায়ের মধ্যে গড়ে ওঠে অসংখ্য শাখা-প্রশাখা ও দল উপদল। বরাবরই এসব মূল হারানো দল উপদলের মতানৈক্যের দ্বারা আত্মঘাতী সংঘর্ষে সাগর সাগর রক্তহানি ও লাখ লাখ প্রাণহানি হয়ে আসছে। এ হতে বলা যায়; মূল শ্বরবিজ্ঞান হারিয়ে যার যার ঠুনকো মতবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত আগাছা ও পরগাছা দল উপদলের সংখ্যা সব মতবাদ মিলিয়ে কয়েক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু শ্বরবিজ্ঞান পূর্বেও যা ছিল; এখনও ঠিক তাই রয়েছে। এখনও একজন বাঙালী সাধু, ভারতীয় সন্ন্যাসী, আরবীয় অলি, নেপালীয় ভিক্ষু ও বার্মিস শ্রমণদের মধ্যে পরিচ্ছদ, চুল, দাড়ি, পথ, মত, আশা, আকাঙ্ক্ষা, ওঠাবসার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তাই; সাধু, সন্ন্যাসী, অলি, ভিক্ষু ও শ্রমণ সবাই একত্রে বসে সভা করতে, সেবা করতে ও ঘুমাতে কোনো সমস্যা হয় না। কারণ; আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র একটি তা হলো ‘মানবদেহ’। ফলে; বিশ্বের সব সাধু এক ও অভিন্ন। অন্যদিকে; প্রপক নির্ভর সম্প্রদায়গুলো ভিন্ন ভিন্ন। এজন্য; ভিন্ন ভিন্ন সাম্প্রদায়িক মনীষী একত্রে বসে আহার ও বিহার করতে পারে না। এক সাম্প্রদায়িক মনীষী অন্য সাম্প্রদায়িক মনীষীকে বলে যবন। সাম্প্রদায়িক মনীষীরা সবাই স্বস্ব সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মতবাদকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মনে করে। এছাড়াও; তারা অন্যান্য সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মতবাদকে ঘৃণা করে। এ হতেই সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক উগ্রবাদ বা সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি হয়।
যদি সারা বিশ্বের সব সাম্প্রদায়িক মতবাদের মানুষের এক বাতাস, এক আগুন ও একই জল হতে পারে; এমনকি; একই মোবাইল হতে পারে তবে কেন এ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে প্রপক হতে রূপক এবং রূপক হতে মানবদেহের একই মূলকে প্রবেশ করতে পারা যাবে না? অবশ্যই পারা যাবে। যখনই পুরাণের রূপক বর্ণনার মৌলিক উপাদান মূলক পরিভাষা ও ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’য় প্রবেশ করা হবে; তখনই সারাবিশ্বের সব পুরাণকে এক ও অভিন্ন দেখতে পাওয়া যাবে। তখনই স্থান, কাল ও পাত্র ভেদে সারাবিশ্বের সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক নীতিমালা এবং সাম্প্রদায়িক ও সাম্প্রদায়িক সংস্কার এক ও অভিন্ন বলে মনে হবে। স্থূল দৃষ্টিতে যদিও সামান্য পার্থক্য দেখা যায়। তখনই সাম্প্রদায়িক সর্বপ্রকার সংঘর্ষ ও সংঘাত এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে। তখনই দূর করা সম্ভব হবে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ ও আতঙ্কবাদ হতে মুক্তিলাভ করতে না পারলে; কখনই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। আমাদের এ গ্রন্থটি সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক, পারম্পরিক মতবাদ ও নীতিমালায় ব্যবহৃত পরিভাষা ও সংস্কারগুলো সঠিক বিশ্লেষণ করার দ্বারা মানুষকে শ্বরবিজ্ঞানে পদার্পণে করতে সহায়তা করলে শ্রম ধন্য বলে মনে করব।
বাকিটা পরের পোষ্টে দেখুন
তথ্যসূত্রঃ আধ্যাত্মিকবিদ্যা পরিচিতি ; লেখকঃ বলন কাঁইজি
©somewhere in net ltd.