নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রকৃতির সাথে একাত্ম হওয়া

প্রকৃতির রহস্যময়তা আমাকে বিমোহিত করে। তাই এর সাথে একাত্ম হয়ে সবার হৃদয়ে বেঁচে থাকতে চাই।

কামরাজ

প্রকৃতির সাথে একাত্ম হওয়াই আমার চেষ্টা

কামরাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংস্কৃতির অবরোহণ

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ৮:৪৫

আজ শুক্রবার। সুমন অপেক্ষা করছে তার বাল্যবন্ধু জাবেদের জন্য। সপ্তাহের এই একটা দিন তাদের দু’জনের দেখা হয়। জাবেদ আসে শহর থেকে গ্রামের বাড়িতে তার আব্বা আম্মাকে দেখার জন্য। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত একসাথে লেখাপড়া করেছে ওরা। দু’জনই এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করলেও সুমনকে গ্রামের কলেজে লেখাপড়া করতে হয়েছে। সুমন পরিবারের বড় ছেলে। ছেলেকে শহরে পড়তে পাঠালে রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়তে পারে এই ভয়ে সুমনের মা কোনভাবে সুমনকে শহরে যেতে দিল না। তাছাড়া শহরের কলেজে মিছিল মিটিং আন্দোলন এসবতো লেগেই থাকে। সুমনদের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। শহরে তেমন কোন আত্মীয়ও নেই। বাবার চাকরিটা চলে যাওয়ার পর থেকে সুমন গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে টিউশন করে সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করছে। হঠাৎ শহরে চলে গেলে টিউশনগুলি হারাতে হবে। শহরের কলেজের ভর্তির ফিও বেশি। কলেজের প্রভাষক হারাধন স্যার তাকে ডেকে বলেছিল- সব মেধাবী ছেলেরা শহরে চলে গেলে গ্রামের কলেজগুলো মেধাশুন্য হয়ে যাবে। সে যদি এখানকার কলেজে ভর্তি হয় তবে স্যার তাকে বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ করে দেবে। সে চাইলে স্যার তাকে পড়ার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করবে। স্যার তাঁর কথা রেখেছিলেন। উচ্চ মাধ্যমিকের সব বইও স্যার সৌজন্য সংখ্যা যোগাড় করে দিয়েছিলেন। ঐ কলেজ থেকেই বিএসসি পাশ করে এখানকারই একটা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছে সুমন। জাবেদ চলে গিয়েছিল শহরে। ভর্তি হয়েছিল শহরের স্বনামধন্য সরকারী কলেজে। মাসে মাসে তার জন্য বাড়ি থেকে টাকা পাঠানো হতো। অনার্স মাস্টার্স শেষ করে সে যোগদান করলো একটা সরকারী চাকরীতে। কেউ স্বীকার করুক বা না করুক অর্থ জীবনে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে।



সুমন খুব একটা খারাপ নেই। শিক্ষক হিসেবে তার যথেষ্ট সুনামও আছে। আদর্শ শিক্ষক হিসেবে ছাত্র ছাত্রীরা তাকে শ্রদ্ধা করে। আবার এই আদর্শটাই তাকে অনেক সমস্যায় ফেলে। শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতি নিয়ে সে কথা বলেছিল তাই এখন স্কুলের কোন মিটিংয়ে তাকে ডাকা হয় না। ছাত্র ছাত্রীদের কোচিং করতে বাধ্য করার বিরুদ্ধে কথা বলেছিল তাই তাকে কোচিং ক্লাস থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ছুটির পরে রহিম মাষ্টার শ্রেনীকক্ষে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করায় সে আপত্তি জানিয়েছিল তাই তাকে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস থেকে সরিয়ে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও কৃষি বিজ্ঞান পড়াতে দিয়েছে। একটা সংঘবদ্ধ দল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আসা সব সুবিধা তাদের মনোনীত কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে দিতে থাকায় সে প্রতিবাদ করেছিল সেজন্য তার জেএসসি ও এসএসসি’র খাতা পরীক্ষা করার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। আগে যে প্রধান শিক্ষক ছিল তাকে ষড়যন্ত্র করে তহবিলের অর্থের অপব্যবহার করেছে দেখিয়ে অনেকটা অপদস্ত করে বের করে দেয়া হলো। তারপর যে প্রধান শিক্ষক এলেন তিনি মাদ্রাসা থেকে পাশ করা। তিনি আসার পর প্রায় সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ হলো। আগে বছরে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হতো। এসব নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকতে হতো সুমনকে। ছোট বেলা থেকে গান বাজনার প্রতি ঝোঁক ছিল তার। মন্দিরে সপ্তাহে একদিন কীর্ত্তন হতো। সন্ধ্যায় সমবেত প্রার্থনা হতো। সে কখনো হারমোনিয়াম, কখনো মৃদঙ্গ, কখনো তবলা, কখনো জুড়ি, কখনো বাঁশি, যখন যেটা পেত সেটাই বাজাতো। খুব ভালো না হলেও একদম খারাপও হতো না। কণ্ঠেও সুর ছিল। মাষ্টার পায় নি। গাইতে গাইতে গায়েন। স্কুলে বার্ষিক প্রতিযোগিতায় প্রতিবছর সে একটা পুরষ্কার পেতোই। দলীয় সঙ্গীতে সে নেতৃত্ব দিতো। দরাজ কণ্ঠে গাইতো- তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিবো রে। অথবা নোঙ্গর তোল তোল সময় যে হোল হোল এইসব দেশাত্মবোধক গান।



কিছুদিন থেকে একটা ছাত্র সংগঠন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের বই পড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। অবশ্য সব বই একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে লিখিত। তারা বাদ্যযন্ত্রবিহীন একধরণের গান প্রতিযোগিতারও আয়োজন করছে। সৃষ্টিকর্তার প্রশংসাসূচক সেসব গান সুমন মন দিয়ে শুনেছে। খুব ভালো লেগেছে তার। তার মনে হয়েছে সেগুলোতেও একটা সুর ও লয় আছে। শুধু বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয় না। অবশ্য প্রধান শিক্ষক হালিম স্যার বলেছেন বাদ্যযন্ত্র নাকি নিষিদ্ধ। সেই যাই হোক। তিনি জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি গানটি গাওয়ার পক্ষপাতী নন। কারণ এটা একজন হিন্দু কবির রচিত। তাঁর মতে জাতীয় সঙ্গীত হওয়া উচিৎ কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান। তবে চল চল চল গানটিতে মহাশ্মশান শব্দটি ছাপানোর ভুল বলে তিনি মনে করেন। তাঁর ধারণা শব্দটি হবে গোরস্থান। সুমন চিন্তা করে একইতো অর্থ, শব্দ যেটাই হোক তাতে সমস্যা কি। ছাত্রীদের পোশাকের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন এনেছেন তিনি। যারা ইসলাম ধর্মাবলম্বী তাদের অবশ্যই বোরখা পড়তে হবে। অন্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে মাথায় ওড়না দিয়ে চলাফেরা করতে হবে। হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষিকা এ বিষয়টা মেনে চলেননি বলে তাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হলো। সুমনের চাকরিটা খুব দরকার। এটা হারালে তাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। তাই এখন তাকে ঐ শিক্ষিকার অভাবজনিত ধর্মের ক্লাসগুলোও নিতে হচ্ছে। অবশ্য ওদের বেঁধে দেওয়া নিয়ম কানুন মেনে।



জাবেদ গাড়ি থেকে নেমে দোকানে ঢুকল। দু’কাপ চা দিতে বললো। চা শেষ করতে করতে জাবেদ সুমনকে জিজ্ঞাসা করলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে সুমনের কী ধারণা। জাবেদ তার চিন্তা সুমনকে জানালো। সেই সাথে বললো তার বোনের মেয়ে মুক্তির কথা। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর মুক্তির সাথে তার যে কথা হয়েছে সেইসব। মুক্তি বলেছিলো- আচ্ছা মামা কখনো পরীক্ষা করে দেখেছো তোমার মধ্যে দেশপ্রেম আছে কি না। আর আমার মধ্যেও সেটা কতটা আছে তা কী করে বুঝতে পারবো। যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, যারা যুদ্ধ করেনি, যারা যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তাঁদের সবারইতো দেশপ্রেম ছিল। তবে একেক জনের একেক রকমের। এখন যারা হরতাল, অবরোধ, ভাঙচুর করে, যারা জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন করে, যারা এত কিছুর পরও ক্ষমতা আগলে ধরে রাখে, যারা ধর্মের নামে রাজনীতি করে, মানুষের বাড়িতে আগুন দেয়, যারা সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, পুঁজিবাদ, ফ্যাসিবাদের মদদ দেয় তারাওতো দেশপ্রেম থেকেই তা করে। অথচ এক দেশপ্রেমীর কাছে অন্যজন দেশদ্রোহী হয়ে যায়। ইতিহাস কখনো নবাব সিরাজ-উ-দৌল্লাকে বিলাসী বানায়, কখনো তাকে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের সম্মান দেয়। স্বাধীনতার জন্মকথায়ও এরকম অনেক এলোমেলো বিষয়, অনেক বিকৃতি স্থান পাচ্ছে। তাহলে কিসের মাপকাঠিতে দেশপ্রেম মাপবে মামা।



জাবেদ কোন উত্তর দিতে পারে নি। সে মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। তবে সে শুনেছে মুক্তিযুদ্ধের কথা। বইয়ে পড়েছে এর ইতিহাস। কয়েকটি চলচিত্রে, প্রামাণ্য চিত্রে, আলোকচিত্রে যেটুকু ধরা পড়েছে তার প্রায় সবটাই দেখার চেষ্টা করেছে অতি আগ্রহে। এতেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা, যাঁরা যুদ্ধ করতে পারেনি কিন্তু যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে, সম্ভ্রম হারিয়েছে তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা, যারা সংগ্রামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তাদের প্রতি প্রচণ্ড ঘৃণা জন্ম নিয়েছে তার মনে। কিন্তু তার শিক্ষা-দীক্ষা আরোপিত শিক্ষার মতো নয়। প্রচলিত ধ্যান ধারণাকে যাচাই বাছাই করে তবে সে সবকিছু গ্রহণ করে। তাই সে মাঝে মাঝে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নিজের ভূমিকা নিয়ে তার স্বকল্পিত স্বকীয় কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা চালায়। এসব চিন্তা তার মানসপটে এক ঝড়ের সৃষ্টি করে। এঁকে দেয় এক বিপর্যস্ত ছবি। এই সময় ও সেই সময়ের একটা সমীকরণ মেলাতে চেষ্টা করে সে। । ভাবে যুদ্ধের সময় যদি তার বয়স ষাট কিংবা সত্তর হতো। তাহলে তো সে যুদ্ধ করতে পারতো না। ট্রেনিং নিয়ে এসে কোন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সদস্যকে গুলি করে ধরাশায়ী করতে পারতো না। বরং একদিন জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক এসে গ্রামে ঢুকতো। আর কয়েকজন মিলেটারি গাড়ি থেকে নেমে ঘর থেকে বের করে এনে তাকে বুড়া বুড়া বলে গুলি করে ফেলে রেখে চলে যেতো। তাহলে যুদ্ধে কী ভূমিকা থাকতো তার। যদি সে হতো গুলিবিদ্ধ নিহত সে বৃদ্ধ পিতার যুবক সন্তান। তাহলে হয়তো পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিতো। ট্রেনিং নিয়ে সম্মুখ সমরে গুলি করে একজন মিলেটারিকে পরাস্ত করে চিৎকার করে বলে উঠতো-পিতা! আমি তোমার হত্যার বদলা নিয়েছি। সেটা কি দেশের জন্য যুদ্ধ হতো। নাকি হত্যার বদলে হত্যার উদ্দেশ্যে একের পর এক মিলেটারি ক্যাম্প বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকতো তার চেতনা। যদি সে প্রাণ হারাতো তাকে কি কোন উপাধি দেওয়া হতো এই যুদ্ধের জন্য। অথবা বেঁচে থাকলে সে কি কোন মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতার মাধ্যমে প্রজন্মের মনে সৃষ্টি করতে পারতো কোন চেতনা। নাকি মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম তুলে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটায় পাওয়া বিভিন্ন সুবিধা আদায়ের চেষ্টায় ব্যস্ত থাকতো।





অথবা যদি সে হতো এক উচ্ছল কিশোর। চাওয়া নাই, পাওয়া নাই, পিছুটান নাই। একদিন দেখল দলে দলে লোক শহর ছেড়ে গ্রামে চলে আসছে। রাতের আঁধারে দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ শরণার্থী শিবিরে। দাউ দাউ করে জ্বলছে ঘর বাড়ি। মরছে মানুষ অকাতরে। মরছে ছাত্র, জনতা, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবি। রেডিওতে শোনা যাচ্ছে- দেশের মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে এই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে। শোনা যাচ্ছে জাগরণের গান। প্রাণটা বড়ই উথাল পাতাল। কিছু একটা করতে হবে দেশের জন্য। এভাবে চুপ করে বসে থাকা যায় না। সবার অলক্ষ্যে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়ে রাইফেল কাঁধে ঝাপিয়ে পড়তো হায়েনার হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য। শুধুই সময়ের প্রয়োজনে। এক চরম উপলব্ধি থেকে, দেশাত্মবোধ আর দেশপ্রেম থেকে। হয়তো বুকপকেটে থাকতো একটা চিঠি-মাগো! ওরা বলে, তোমার কোলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না। বল মা তাই কি হয়! তাইতো আমার দেরি হচ্ছে। মাত্রতো আর কটা দিন। তোমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে তবেই না বাড়ি ফিরবো। অথবা প্রাণে বাজতো একটা গান- মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি। মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি। আর যুদ্ধ শেষে পা হারিয়ে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রজন্মের চোখে অবহেলিত, সরকারের তালিকার বহির্ভূত, সব রকম সুবিধা বঞ্চিত, শুধু স্বাধীনতা আসবে এই চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে চুপচাপ মুখ লুকিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন চুরি হতে দেখে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতো। আর স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী দেখার আগেই শেষ নিশ্বাসটুকুও শেষ হয়ে যেতো।



সব শুনে সুমন এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে এই কি ছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন। স্বাধীন দেশের অবস্থা কি এমন হওয়ার কথা ছিল। তাহলে ভুলটা কোথায়? হৃদয় ভেঙে যায় কাঁচের টুকরার মতো। হায়রে একাত্তর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.