নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম। অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমিই কৃষ্ণকান্ত নন্দী (৪র্থ খণ্ড )।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৪

আমিই কৃষ্ণকান্ত নন্দী
------------------------

১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলার গভর্ণর এবং ফোর্ট উইলিয়ামের প্রেসিডেন্ট হলো।
কৃষ্ণকান্ত নন্দী একসময়ে হেস্টিংসকে কাশিমবাজারে নবাবের হাত থেকে রক্ষা করেছিল। কান্তবাবু তখন খুব গরিব ছিল। হেস্টিংসকে পান্তাভাত, লবণ এবং চিংড়ি মাছ খেতে দিয়েছিল। হেস্টিংস চলে যাবার সময় কান্তবাবুকে তার হাতের আংটি উপহার হিসাবে দিল। হেস্টিংস কান্তবাবুকে বললো - "আমি ওয়ারেন হেস্টিংস, এই আংটি তোমাকে দিলাম। কলকাতায় গেলে আমার সাথে দেখা করবে। তোমার নাম কি?" কান্তবাবু বললো - আমি কৃষ্ণকান্ত নন্দী।
কলকাতায় ফিরে হেস্টিংস কান্তবাবুর খোঁজ করলো। অনেকে কান্তবাবু সেজে হেস্টিংসের কাছে গেলো,কিন্তু কেউ আংটি দেখাতে পারলো না। হেস্টিংস গঙ্গাগোবিন্দকে পাঠালো কান্তবাবুকে খুঁজে আনার জন্য। কান্তবাবু কলকাতায় গিয়ে হেস্টিংসের সাথে দেখা করলো। হেস্টিংস তাকে সম্পত্তি দিতে চাইলো। কিন্ত কান্তবাবু সম্পত্তি নিতে চাইলো না,বরং বললো যে তার অধীনে একটি চাকরি চায়। হেস্টিংস তাকে সম্পত্তি দিল এবং তাকে তার বেনিয়ান হিসাবে নিযুক্ত করলো।
১৭৭৫ সালে ১১ মার্চ নন্দকুমার কাউন্সিলের কাছে অভিযোগ করলো হেস্টিংসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল যে, হেস্টিংস মিরজাফরের স্ত্রী মনি বেগমের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল।
হেস্টিংস রাণী ভবানীর বাহারবান্দ পরগণা কান্তবাবুকে প্রদান করলো।
রাণী ভবানী এবং তার স্বামী রাজা রামকান্ত, রামকৃষ্ণকে দত্তকপুত্র নিয়েছিল। রাণী ভবানীর মৃত্যু হলো ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৮০২ সাল।
১৭৭৫ সালে ৬ মে নন্দকুমারকে গ্রেপ্তার করা হলো। সুপ্রীম বোর্ডের কাছে কান্তবাবু কাস্ট কাটছাড়ির ওপর ইন্টারভিউ দিলো। জেনারেল ক্লাভারিং কান্তবাবুর ইন্টারভিউ নিলো।
১৭৭৫ সালে ১৬ জুন নন্দকুমারকে দোষী সাব্যস্ত করা হলো। সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিল স্যার এলিজা ইমপে। ১৭৭৫ সালে ৫ আগস্ট নন্দকুমারের ফাঁসি হলো।
১৭৭৫ সালে ১৬ আগস্ট হেস্টিংস, কৃষ্ণ জীবনকে একটি হাতে লেখা চিঠি দিয়ে কান্তবাবুর কাছে পাঠালো। তার কোন পদবি না লেখায়,কান্তবাবু ১৭ আগস্ট তাকে এক হাজার টাকা দিলো এবং তার পদবির ক্ষেত্রে লিখলো - কৃষ্ণ জীবন নয়াসদাগর,বরানগর।
কর্ণেল মনসন ১৭৭৬ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর মারা গেলো। ১৭৭৭ সালে ৮ আগস্ট হেস্টিংস দ্বিতীয়বার বিয়ে করলো ডিভোর্সি মারিয়ান ইমহোফকে। ১৭৭৭ সালে ৩০ আগস্ট ক্লাভারিং দেহত্যাগ করলো।
হেস্টিংস মারাঠা এবং চৈত সিংহের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য কান্তবাবুকে ব্যবহার করেছিল। রাজবল্লভ এবং মহম্মদ রেজা খাঁর সাথে কান্তবাবুর বন্ধুত্ব ছিল।
হেস্টিংসের হিসাবপত্র কান্তবাবু দেখতো। এমনকি ১৭৮৫ সালে হেস্টিংস ভারতবর্ষ ছেড়ে চলে যাবার পরও কান্তবাবু হেস্টিংসের হিসাবপত্র দেখতো। তারপর উইলিয়াম লারকিন্স হিসাবপত্র দেখতো। লারকিন্স ইংল্যাণ্ডে চলে যাবার পর চপমান হিসাবপত্র দেখতো।
১৭৯৪ সালে ১০ জানুয়ারি কান্তবাবু দেহত্যাগ করলো। চপমান হেস্টিংসকে কান্তবাবুর মৃত্যুর কথা লিখে চিঠি লিখলো। লোকনাথ নন্দী হেস্টিংসকে তার বাবার মৃত্যুর কথা লিখে জানালো। কিন্তু হেস্টিংসের কাছ থেকে কোন উত্তর এলো না। ১৭৯৫ সালে হেস্টিংস ভারতে এলে লোকনাথ তাকে তার বাবার মৃত্যুর কথা জানালো,কিন্ত হেস্টিংসের কাছ থেকে কোন উত্তর এলো না। কান্তবাবু হেস্টিংসের বেনিয়ান ছিল ১৭৫৬ সাল থেকে ১৭৬৫ এবং সাইকেসের বেনিয়ান ছিল ১৭৬৫ থেকে ১৭৬৯,এবং আবার হেস্টিংসের বেনিয়ান ছিল ১৭৭২ থেকে ১৭৮৫।
১৭৭৩ সালে ডিসেম্বর মাসে কান্তবাবু সুতানুতিতে তিন বিঘা আট কাঠা জমি সমেত একটি পাকা বাড়ি কিনলো শিবচন্দ্র শর্মার কাছ থেকে। চিৎপুরের এই বাড়িতে ৩১ অক্টোবর, ১৮৪৪ সালে রাজা কৃষ্ণনাথ নাথ রায়ের মৃতদেহের উপর বেলা তিনটা নাগাদ জন ডায়েডরিক হার্কলোটস বন্দুক থেকে গুলি করেছিল।
বেনারসের রাজা বলবন্ত সিংহ। তার পুত্র ছিল চৈত সিংহ। হেস্টিংস চৈত সিংহকে নিজের নিয়ন্ত্রণে অনতে পারছিল না। হেস্টিংস সিদ্ধান্ত নিলো,হয় চৈত সিংহ তাকে প্রাপ্য টাকা দেবে,নয়তো তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। ১৭৮১ সালে ১৪ জুলাই নদীপথে হেস্টিংস মুর্শিদাবাদ থেকে বেনারসের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো। ১৪ আগস্ট হেস্টিংস বেনারস পৌঁছালো। হেস্টিংসের নির্দেশে কান্তবাবু অনেক আগেই বেনারস পৌঁছেছিল। চৈত সিংহের ভকিল আব্দুল্লা বেগের সাথে বিভিন্ন বিষয়ের উপর কান্তবাবু আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবার চেষ্টা করেছিল।
হেস্টিংস চুনার দুর্গে আশ্রয় নিলো। চৈত সিংহের দেওয়া অল্প টাকা হেস্টিংসকে আঘাত করলো। হেস্টিংস বেনারসের রেসিডেণ্ট উইলিয়াম মারখামকে আদেশ দিলো চৈত সিংহকে গ্রেপ্তার করতে। এবং মেজর পপহামকে হেস্টিংস নির্দেশ দিলো চৈত সিংহকে গ্রেপ্তার করতে। শিবালা ঘাটে বেনারসে চৈত সিংহকে গ্রেপ্তার করা হলো। চৈত সিংহ পালিয়ে গেলো এবং উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হলো। অনেকে নিহত হলো।
লুতিফপুরে মৌলবি নিহত হলো। কান্তবাবু বিজয়গড়ে প্রায় এক মাস ছিল। চৈত সিংহের মা পান্নাকে বোঝানোর জন্য কান্তবাবু হেস্টিংসের পক্ষ থেকে বিজয়গড় দুর্গে গিয়েছিল। হেস্টিংস বেনারস শহরটাকে নিজের অধীনে রাখলো। ২৮ সেপ্টেম্বর বেনারসের রাজা হলো মহিপ নারায়ণ। হেস্টিংস চৈত সিংহকে গ্রেপ্তার করার জন্য চেষ্টা করলো। মেজর পপহাম বিজয়গড়ে ক্যাম্প বসালো ১৮ অক্টোবরের মধ্যে। রাণী পান্না বিজয়গড় দুর্গ ছেড়ে দিতে সম্মতি দিলো। মহিলাদের নিরাপদে বেনারসে পৌঁছানোর জন্য পাল্কি,উট,হাতি আনা হলো। ছয়টা পাল্কি বিজয়গড় দুর্গ থেকে বের হবার সময় কোনো রকম পরীক্ষা করা যাবে না। পপহাম রাণী পান্নাকে ১৭৮১ সালে ১২ নভেম্বরের মধ্যে বিজয়গড় দুর্গ ছেড়ে দিতে বললো। রাজপরিবারের মহিলারা যে ছয়টা পাল্কিতে থাকবে সেগুলো ব্রিটিশরা পরীক্ষা করবে না।
১৭৮১ সালে ১৫ নভেম্বর শীতের রাতে কান্তবাবু চৈত সিংহের রাজ পরিবারের মহিলাদের নিয়ে বিজয়গড় দুর্গ থেকে যাত্রা শুরু করলো। সবাই নিরাপদে বেনারসে পৌঁছালো ১৭৮১ সালে ১৮ নভেম্বর। ছেলেমেয়ে ছাড়া প্রায় তিনশো মহিলাকে বিজয়গড় দুর্গ থেকে বেনারসে নিয়ে আসা হলো। বিজয়গড় দুর্গ থেকে রাণী পান্না কান্তবাবুকে লক্ষ্মীনারায়ণ শিলা দিলো,সেইসাথে একমুখী রুদ্রাক্ষ এবং দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ তাকে দিলো। কান্তবাবু সেগুলো সঙ্গে করে কাশিমবাজারে নিয়ে এলো এবং কাশিমবাজারে প্রতিষ্ঠা করে পূজা করা শুরু করে দিলো।
কৃষ্ণকান্ত নন্দীর এক পুত্র সন্তান লোকনাথ নন্দী। আর দুই কন্যা সন্তান - যমুনামনি এবং গঙ্গামনি। যমুনামনির স্বামী বৃন্দাবনচরণ পাল। তাদের সন্তান ব্রজানন্দ পাল। গঙ্গামনির স্বামী গদাধর নন্দী। তাদের সন্তান বংশীধর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.