নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম। অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রদীপ রায়

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২২

প্রদীপ রায়

"মা, সোমেন আমার ছেলে বিজয়কে জলে ডুবিয়ে মেরেছে। আমি কিছুতেই বিজয়কে ভুলে থাকতে পারছি নে। আমার মনে হচ্ছে বিজয় যেন আমার চারপাশে ঘুরছে। বিজয় আমাকে মা মা বলে ডাকতো। আমি বিজয়কে কত শাসন করতাম। মা, আমি এখন কি নিয়ে বাঁচবো? আমার আর কিছুই ভালো লাগছে না। মা, আমার ছোট ভাই প্রদীপকে নিয়ে কলকাতার রাজবাড়িতে যাবো। সোমেনকে একা রাজবাড়ির সম্পত্তি ভোগ করতে দেবো না। মা, তুমি মৃণালিনী রায়। মণীন্দ্র নন্দীর তুমি ছোট মেয়ে। শ্রীশের ছেলে সোমেন যদি মনিদাদুর সম্পত্তি ভোগ করতে পারে, তাহলে মনিদাদুর সম্পত্তি আমাদের ভোগ করতে বাধা কোথায়? আমি ভাই প্রদীপকে কলকাতার রাজবাড়িতে রেখে দেবো।"
মৃণালিনী আমার মা বিষ্ণুপ্রিয়াকে বললো- "না, আমার ছেলে প্রদীপকে ওখানে নিয়ে যাস নে। আমার নাতি বিজয়কে সোমেন পুকুরের জলে ডুবিয়ে মেরেছে। আবার যদি সোমেন আমার ছেলেকে মেরে ফেলে? "
বিষ্ণুপ্রিয়া বললো- "মা, আমি ভাইকে কাশিমবাজারে নিয়ে যাবো না। ভাইকে কলকাতার রাজবাড়িতে নিয়ে যাবো।"
প্রদীপ রায়। বিষ্ণুপ্রিয়ার ছোট ভাই। প্রদীপ বিজয়ের সমবয়সী।
বিষ্ণুপ্রিয়া তার ভাই প্রদীপকে বললো- "প্রদীপ,আমার সাথে কলকাতায় যাবি।" প্রদীপ তার দিদিকে বললো- "দিদি,আমি কলকাতায় যাবো না। আমি কলকাতায় গেলে সোমেনদাদা আমাকে মেরে ফেলবে। আমি যাবো না দিদি। বিজয়কে সোমেন পুকুরের জলে ডুবিয়ে মেরেছে,আমি যাবো না দিদি,সোমেন তাহলে আমাকেও পুকুরের জলে ডুবিয়ে মারবে। আমি যাবো না দিদি।" প্রদীপ কাঁদতে থাকে।
বিষ্ণুপ্রিয়া ভাইকে বোঝাতে লাগলো। "প্রদীপ, তোকে, সোমেন পুকুরের জলে ডুবিয়ে মারবে নারে। কলকাতার রাজবাড়িতে কোন পুকুর নেই। আর আমিও তোর সঙ্গে থাকবো। কোন ভয় নেই প্রদীপ। তোকে কলকাতার রাজবাড়িতে থাকতে হবে। আমি সোমেনকে একা ঐ সম্পত্তি ভোগ করতে দেবো না।"
মৃণালিনী তার মেয়ে বিষ্ণুপ্রিয়াকে বললো- "ছেলেকে সাবধানে রাখিস। সোমেনকে বিশ্বাস নেই।" বিষ্ণুপ্রিয়া তার মাকে আশ্বাস দিল। কোন ভয় নেই। ফরিদপুর জেলার ভোজেশ্বর গ্রাম থেকে বিষ্ণুপ্রিয়া তার ছোট ভাই প্রদীপকে নিয়ে কলকাতার কাশিমবাজার হাউসে নিয়ে এলো।
গ্রামের বাড়ির কথা বার বার মনে পড়ছিল। তবু প্রদীপ নিরুপায়। দিদিকে বলতে থাকলো- "দিদি,আমি এখানে থাকবো না। সোমেনদাদা আমাকেও মেরে ফেলবে। আমি বাড়ি যাবো।" বিষ্ণুপ্রিয়া প্রদীপকে বোঝালো। "প্রদীপ,কোন ভয় নেই। সোমেন তোকে মেরে ফেলবে না।"
হঠাৎ একদিন সোমেন কলকাতার রাজবাড়িতে উপস্থিত। সোমেনের আসার কথা শুনে প্রদীপ ভয়ে কাঁপতে থাকলো। প্রদীপ তার দিদিকে বলতে থাকলো- "দিদি, সোমেনদাদা এসে গেছে,আমাকে মেরে ফেলবে।" দিদি ভাইকে ভরসা দিল,কোন ভয় নেই।
সকালবেলায় বিষ্ণুপ্রিয়া ভাইকে বললো- "প্রদীপ,সোমেন বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। দরজার কাছে গিয়ে সোমেনকে একবার সোমেনদাদা বলে ডাক।" প্রদীপ তবু তার দিদিকে বলে,"সোমেনদাদা বিজয়ের মতো মেরে ফেলবে না তো?" দিদি বললো- "ভয় নেই,আমি আছি তো, যা একবার দাদা বলে ডাক।" প্রদীপ বলে- "পারবো না দিদি। তুমি তো বিজয়ের কাছে ছিলে,তাহলে বিজয় মারা গেলো কেন? আমি সোমেনের কাছে যাবো না। দিদি আমি যাবো না। তুমি আমাকে বাঁচাতে পারবে না। আমি বাড়ি যাবো। তুমি বিজয়কে বাঁচাতে পারো নি। আমি মার কাছে যাবো। তুমি আমাকে মেরে ফেলার জন্যে এনেছো। আমি বাড়ি ফিরে মাকে সব বলে দেবো। আমাকে মেরে ফেলার জন্যে এখানে এনেছো। আমি বাড়ি যাবো।"
প্রদীপ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে।
দিদি প্রদীপকে বোঝাতে থাকে। "বিজয় সব সময় আমারই কাছে থাকতো। কিন্তু বিজয় যেদিন মারা গেলো, সেদিন আমিই বিজয়কে পুকুরঘাটে একা ফেলে রেখে রাজবাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভাই এখানে তুই তো আমারই সাথে আছিস। আমি তোকে একা ছেড়ে দেবো না। আমাকে বিশ্বাস কর ভাই। তুই একবার দরজার কাছে গিয়ে সোমেনকে দাদা বলে ডাক।"
প্রদীপ দরজার কাছে গেলো। ডাকলো- "সোমেনদাদা।"
সোমেন ঘরে চলে এলো। জিজ্ঞাসা করলো- "তোর নাম কি?" প্রদীপ উত্তরে বললো- "প্রদীপ রায়।" সোমেন বললো- "প্রদীপ? বা,খুব ভালো নাম। তুই তাহলে আমাদের এখানে থাক।"
বিষ্ণুপ্রিয়া বললো- "সোমেন, ভাই আবার ভোজেশ্বরে চলে যাবে বলছে।" সোমেন প্রদীপকে বললো- "প্রদীপ,তোকে আমার খুব ভালো লেগেছে। তোকে যেতে দেবো না।"
প্রদীপ কলকাতার রাজবাড়িতে থেকে গেলো। দিদি তার ভাইকে বললো- "প্রদীপ, আমার ছেলে বিজয় কৃষ্ণ দুলাল পাল পুনর্জন্ম নিয়ে এই রাজবাড়িতে এলে, তুই তাকে সব বলে দিস। আমার ছেলেকে সাহায্য করিস। সোমেনের ব্যাপারে সব বলে দিস । আমার ছেলে কিন্তু আসবে।"
প্রদীপ বললো-"দিদি ,বিজয় ফিরে এলে আমি সব বলে দেবো।"
প্রদীপের তখন বয়স ছিল পাঁচ বছর। আজ প্রদীপের বয়স সাতাত্তর বছর। তার স্ত্রীর নাম অঞ্জলী রায়। তার বয়স চুয়াত্তর বছর। তাদের কোন সন্তান নেই। বাঁকুড়া জেলার মেয়ে অঞ্জলী। দাদা অমিয় মণ্ডল।
পুনর্জন্ম নিয়ে আমি আজ প্রদীপ হালদার। আমি পারি নি কলকাতার রাজবাড়িতে ঢুকতে। দেখা করতে পারি নি প্রদীপ রায়ের সাথে। আশিষ নন্দী আমাকে জানালো যে, প্রদীপ রায় এবং তার স্ত্রী অঞ্জলী রায় মারা গিয়েছে। প্রদীপ রায় ২০১৩ সালে মারা গিয়েছে। শুনে দুঃখ পেলাম। ভাবলাম, সত্যি কি প্রদীপ রায় মারা গিয়েছে? জানা নেই। ঈশ্বর আমাকে কোন্‌ পরীক্ষায় ফেললো? তাহলে কোনটা সত্য? প্রদীপ রায় মামার সাথে আমার কি আর দেখা হবে না?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:২০

গেম চেঞ্জার বলেছেন: না আর দেখা হইপে না।

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৯

বাংলার ফেসবুক বলেছেন: অনেক সুন্দর পোষ্ট। পড়ে ভাল লাগলে । ভাল লাগা রেখে গেলাম সেই সঙ্গে আমার আইডিতে চায়ের নিমন্ত্রণ রইল। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.