নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম। অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিচয়

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৫

পরিচয়

প্রথমে আমি ঈশ্বরকে এবং সব আত্মাকে আমি কোটি কোটি প্রণাম জানাই। আমি আমার স্মৃতির দরজা খুলে অনেকদূর পৌঁছে গিয়েছি। আমি জানাবো, মহারাজ নন্দকুমারের ফাঁসী কেন হয়েছিল? আর সেই সময় আমি কৃষ্ণকান্ত নন্দী কি করেছিলাম। মহারাজ নন্দকুমারের কাহিনী শেষ করার পর আমি আমার স্মৃতি থেকে সত্য ঘটনার কথা বলবো। তবু আগে থেকে একটুখানি বলে রাখি। নন্দকুমার কাউন্সিলের কাছে এক লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছিল। অথচ সেই অভিযোগের কোন বিচার হলো না, বরং জাল দলিলের অভিযোগে নন্দকুমারকে গ্রেপ্তার করে পরে তাকে ফাঁসী দেওয়া হয়েছিল। আর যে দলিলের অভিযোগে নন্দকুমারকে মরতে হলো, সেই দলিল প্রায় দশ বছর আগে জাল করা হয়েছিল। সত্য ঘটনা তাহলে কি? আমি আমার স্মৃতি থেকে বলছি- আমি কৃষ্ণকান্ত নন্দী। আমি ছিলাম ওয়ারেন হেস্টিংসের বেনিয়ান। আমার সহকর্মীদের মুখে শুনেছিলাম, নন্দকুমার কাউন্সিলে ওয়ারেন হেস্টিংসের নামে এক মারাত্মক অভিযোগ করেছে। সহকর্মীদের আলোচনা থেকে বুঝলাম, জেনারেল ক্লেভারিং গভর্ণর জেনারেল হবে। আর ওয়ারেন হেস্টিংসকে গভর্ণর জেনারেলের পদ থেকে সরে যেতে হবে। সহকর্মীরা আরও বলছিল, ক্লেভারিং গভর্ণর জেনারেল হলে নন্দকুমার ভালো কোন পদ পেতে পারে, আর সেখানে আমাদের চাকরি নাও থাকতে পারে। সহকর্মীরা বলছিল, ওয়ারেন হেস্টিংস খারাপ ব্যক্তি নন, কিন্তু ক্লেভারিং গভর্ণর জেনারেল হলে আমাদের কোন অসুবিধে নেই, তবে নন্দকুমার ক্লেভারিংকে বিপথে পরিচালনা করতেই পারে। আমি বুঝলাম যে, আর বেশীদিন আমি ওয়ারেন হেস্টিংসের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবো না। মনটা আমার খারাপ হয়ে গেলো। ১১ই মার্চ,১৭৭৫ সালে কাউন্সিলে নন্দকুমারের অভিযোগ পত্র পড়া হয়েছিল। সেখানে হেস্টিংস উপস্থিত ছিলেন। ওয়ারেন হেস্টিংস সন্ধ্যাবেলায় নিজের অফিসে ফিরে এসে আমাকে ডাকলেন। আমি কৃষ্ণকান্ত নন্দী ওয়ারেন হেস্টিংসের কাছে গেলাম। আমাকে বসতে বললেন। ওয়ারেন হেস্টিংস আমাকে দেখে বললেন, "কৃষ্ণকান্ত, তুমি আমাকে দুবার প্রাণে বাঁচিয়েছিলে। প্রথমবার সিরাজউদ্দৌলার সৈন্যরা আমাকে গ্রেপ্তার করলে, তুমি তিন হাজার টাকা দিয়ে আমাকে জামিনে মুক্ত করেছিলে। সেদিন তোমার সাথে আমার দেখা হয় নি। আমি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলাম। দ্বিতীয়বার সিরাজউদ্দৌলা আমাকে ধরবার জন্য সৈন্য পাঠালে আমি দৌড়ে পালাচ্ছিলাম। সেদিন তুমি আমাকে দেখতে পেয়ে তোমার ঘরে আমাকে ঢুকিয়ে তোমার ঘরে এক চৌকির তলায় আমাকে লুকিয়ে রেখেছিলে। আমাকে তুমি সেদিন পান্তা ভাত, চিংড়ি মাছ খেতে দিয়েছিলে। সেদিনও আমি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলাম। আর সেদিন আমি তোমাকে একটি আংটি দিয়েছিলাম। কিন্তু কান্ত, আজ আর তুমি আমাকে প্রাণে বাঁচাতে পারবে না।"
আমি বললাম, "কেন, স্যার? কি হয়েছে?"
হেস্টিংস বললেন,"নন্দকুমার আমার নামে এক মারাত্মক অভিযোগ করেছে, তাও আবার কাউন্সিলের কাছে। সেই অভিযোগে আবার তোমারও নাম রয়েছে। আমি তোমাকে যে রাণী ভবানীর বাহারবন্দ জমিদার দিয়েছি, সেই ব্যাপারেও নন্দকুমার অভিযোগ করেছে। কান্ত, এবার আমার মৃত্যু অবধারিত, তুমি আর আমাকে বাঁচাতে পারবে না।"
আমি বললাম, "স্যার, নন্দকুমারতো অভিযোগ করেছে মাত্র, তাতে কি হতে পারে?"
হেস্টিংস বললেন, " তারা আমাকে এখনই গ্রেপ্তার করতে পারে, জেলে ঢুকিয়ে দিতে পারে, তারপর বিচার করে আমার মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে।"
আমি বললাম,"স্যার,আপনি নিজেই তো কাউন্সিলে আছেন, আপনি নিজে কাউন্সিলের সভাপতি। তাহলে কি কাউন্সিলের অন্যান্য সদস্যরা আপনার বিচার করতে পারে?"
হেস্টিংস বললেন,"হ্যাঁ পারে।"
হেস্টিংস খুব চিন্তান্বিত হয়ে পড়লেন। আমি বললাম,"স্যার,কাউন্সিল ভেঙে দিলে তো আর অন্যান্য সদস্যরা এই অভিযোগের তো আর বিচার করতে পারবে না।"
হেস্টিংস বললেন, " তা পারবে না, কিন্তু আবার তো নতুন কাউন্সিল গঠন করতে হবে। সেখানে আবার এই অভিযোগের বিচার হতে পারে। অভিযোগ পত্র তাদের কাছে রয়েছে যে, অভিযোগ পত্রটাকে তো নষ্ট করা যাচ্ছে না।"
আমি বললাম, "কি আছে অভিযোগ পত্রে?
হেস্টিংস বললেন,"টাকার কথা উল্লেখ করেছে।"
আমি বললাম, "নন্দকুমার নিজে তো টাকা নিয়েছে, তাহলে আপনার অপরাধ কোথায়?"
হেস্টিংস বললেন, "আমি যে ভারতের গভর্ণর জেনারেল, আর নন্দকুমার তো সাধারণ ব্যক্তি।"
আমি হেস্টিংসকে বললাম, "স্যার, আপনি কাউন্সিল আগে ভেঙে দিন, কয়েকটা দিন সময় পাবো।"
হেস্টিংস বললেন, "কান্ত, এবার কি আর তুমি আমাকে বাঁচাতে পারবে?"
আমি হেস্টিংসকে বললাম,"স্যার, আমি অবশ্যই চেষ্টা করবো আপনাকে বাঁচাতে।"
হেস্টিংস ১৩ই মার্চ,১৭৭৫ সালে কাউন্সিল ভেঙে দিয়েছিলেন। তারপর নন্দকুমারের বিরুদ্ধে এক অভিযোগের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, কিন্তু সেই অনুযায়ী কাজ করা যায় নি।
হেস্টিংস ভেঙে পড়েছিলেন। আমি হেস্টিংসকে বললাম, " স্যার, আপনাদের দেশে কি ধরণের অপরাধ করলে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হয়।"
হেস্টিংস বললেন, "ব্যাঙ্কের চেক এবং টাকা জাল করলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।"
আমি বললাম,"স্যার, আপনার দেশের ঐ আইন আমার দেশে প্রয়োগ করুন।"
হেস্টিংস বললেন, "ঐ ধরণের আইন গ্রেট ব্রিটেনে প্রচলিত, তাও আবার ব্রিটিশদের জন্য। ভারতবর্ষে ভারতীয়দের জন্য ঐ আইন প্রচলিত নয় যে।"
আমি বললাম,"স্যার,আপনি ভারতের গভর্ণর জেনারেল, আপনি ইচ্ছা করলে ঐ আইন ভারতীয়দের ওপর প্রয়োগ করতে পারেন। জাল করার অভিযোগে আপনি কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতেই পারেন।"
হেস্টিংস বললেন,"মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করবো? না, কান্ত। তার চেয়ে বরং নন্দকুমারকে সারা জীবন জেলে রাখার ব্যবস্থা করতে পারি। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড চাই না।"
বললাম, "স্যার, আপনি কি অভিযোগ পত্র সরাতে পারবেন?"
হেস্টিংস বললেন, " না, পারবো না।"
বললাম, "স্যার, নন্দকুমার বেঁচে থাকলে, ঐ অভিযোগ পত্রের বিচার হবে, আর সেখানে আপনার মৃত্যুদণ্ড হবে।"
এবার হেস্টিংস বিষয়টি বুঝলেন। হেস্টিংস আমাকে বললেন,"কান্ত, তুমি পারবে? আমাকে প্রাণে বাঁচাতে পারবে?"
বললাম,"স্যার, আমি কথা দিচ্ছি, আমি আপনাকে প্রাণে বাঁচাবো।"
আমি নিজের ঘরে এলাম। ভাবতে থাকলাম। নবাব সিরাজউদ্দৌলার হাত থেকে ওয়ারেন হেস্টিংসকে দুবার প্রাণে বাঁচিয়েছি। নন্দকুমার এক সাধারণ ব্যক্তি। যেখানে নবাবের হাতে হেস্টিংসকে মরতে দিই নি, সেখানে নন্দকুমারের মতো একজন সাধারণ ব্যক্তির হাতে হেস্টিংসকে মরতে দিতে পারি না।
মোহনপ্রসাদ এবং কামালউদ্দিন আলি খাঁর সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। ওয়ারেন হেস্টিংসকে বাঁচানোর কথা বললাম। তখন কামালউদ্দিন আমাকে নন্দকুমারের জাল দলিলের কথা বললেন। সবাই জানেন এই জাল দলিলের অভিযোগে নন্দকুমারের ফাঁসী হয়েছিল। ওয়ারেন হেস্টিংস বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু হেস্টিংস যখন ১৭৮৫ সালে ভারতবর্ষ ছেড়ে চলে যান, তখন হেস্টিংস আমাকে বললেন,"কান্ত, আর বোধ হয় তোমার সাথে দেখা হবে না। আমার নিজের দেশে আমার বিচার হবে। এবার আমার মৃত্যু অবধারিত। কান্ত, আর তুমি আমাকে বাঁচাতে পারবে না।"
বলেছিলাম, "স্যার, ভয় নেই, দেখবেন সেখানে আপনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। নির্দোষ প্রমাণিত হলে আপনি আমায় খবর দেবেন।"
হেস্টিংস বললেন,"কান্ত, তোমার কথা যেন সত্য হয়।"
হেস্টিংস নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিলেন। কিন্তু আমাকে আর জানাতে পারেন নি। কারণ আমি ১৭৯৪ সালে ১০ই জানুয়ারীতে মারা গিয়েছিলাম।

আমি ছিলাম কৃষ্ণকান্ত নন্দী, আমার প্রথম জীবন। দ্বিতীয় জীবনে আমি রাজা কৃষ্ণনাথ রায়। আর তৃতীয় জীবনে আমি ছিলাম বিজয় কৃষ্ণ দুলাল পাল, মাত্র পাঁচ বছর বয়সে আমার মৃত্যু হলো। সোমেন চন্দ্র নন্দী আমাকে ধাক্কা দিয়ে পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছিল। আমার মৃত্যু হলো ১৯৪৩ সালে। আমার মা বিষ্ণুপ্রিয়া আমাকে নিয়ে অনেক সিনেমা দেখেছিল। শেষ ছবি আমি দেখেছিলাম মায়ের সাথে, সেই শেষ ছবি হলো -"পরিচয়।"
সেই সিনেমার একটি গান আমার খুব প্রিয় ছিল। আমি অনুকরণ করে সেই গান গাইতাম। মা আমাকে নিয়ে ভোজেশ্বর গ্রামে গিয়েছিল। মা আমাকে বললো,"খোকা, তুমি তোমার দাদু দিদিমাকে ঐ গানটি গেয়ে শোনাও।" আমি বললাম,"মা,আমি গাইবো না।" মা আমাকে আবার বললো, "খোকা একবার গেয়ে শোনাও।"
বললাম,"বারান্দায় উঠে গাইবো।" মা বললো,"তাই গাও।"
আমি বারান্দায় উঠে হাতে তীর ধনুক নিয়ে গাইতে লাগলাম, "আমার নাম অঞ্জনা, শিকারীর জাতি,
বাঘ মারলাম, সিংহ মারলাম, মারলাম কত হাতি।
পাহাড় পর্বত নদীনালা দিয়ে মোরা পাড়ি,
শিকারের লাগি শুধু দেশে দেশে ঘুরি রে,
দেশে দেশে ঘুরি।
তাক্‌ করেছি তাক্‌ তাক্‌, তাক করেছি তাক্‌,
লাগ্‌ নিশানা লাগ্‌ লাগ্‌, লাগ নিশানা লাগ্‌।


পরিচয় বইতে গানটি যেভাবে গাওয়া হয়েছিল, আমি সেইভাবে গাইতাম। আমি "লাগ্‌ নিশানা" বলার সময় বাম চোখ টিপতাম।
দাদু দিদিমা হেসে গড়াগড়ি।

তেমনি আমার মা বিষ্ণুপ্রিয়াও একটা কলসী কোমরে রেখে তারপর দুহাতে কলসীটাকে মাথার ওপর তুলে, কোমর দুলিয়ে নাচতো আর গান গাইতো-
"ছল্‌ ছল্‌ ছল্‌ নদীরই জল বড়ই উছলে
ছল্‌ ছল্‌ ছল্‌ নদীরই জল বড়ই উছলে,
সেখানে কলসী কাঁখে যাবো কি জল আনিতে
সেখানে কলসী কাঁখে যাবো কি জল আনিতে।
ঘাট যে বড় পিছল পিছল রে
ছল্‌ ছল্‌ ছল্‌ নদীরই জল বড়ই উছলে।


আমার দিদিমা মৃণালিনী রায় মায়ের মুখে গান শুনে আর নাচ দেখে খুব আনন্দ করতো। আমি মায়ের সাথে থাকতাম।

ঈশ্বরকে আমার প্রণাম। আমার স্মৃতির দরজা খুলে যাচ্ছে।

দ্বিতীয় জীবনে ছিলাম রাজা কৃষ্ণনাথ রায়। আত্মহত্যা করার পরেও আমার অস্তিত্ব ছিল। আমি যে ঘরে আত্মহত্যা করেছিলাম, সেই ঘরেই আমি থাকতাম। আমি আমার স্ত্রী স্বর্ণময়ীর সাথে কথা বলতাম। সেদিন স্বর্ণময়ী আমাকে বললো, রাজা, তোমার বন্ধু জন ডায়েড হার্কলোট্‌স্‌ এই ভাউচারগুলো দিয়েছে, তুমি একবার দেখে দাও।"
আমি ভাউচারগুলো দেখে বললাম,"স্বর্ণময়ী, এগুলো ফল্‌স্‌ ভাউচার ( False Voucher )। তুমি সহি করো না।"
স্বর্ণময়ীকে বললাম, "হার্কলোট্‌স্‌ ভাউচার পাঠালে তুমি সহি করবে না।"
স্বর্ণময়ী আমাকে না জানিয়ে কোন কাজই করতো না।
সেদিন আমি অফিসের মধ্যেই প্রেতাত্মা হয়ে ঘুরছিলাম। কেশব সরকারকে দিয়ে হার্কলোট্‌স্‌ অনেকগুলো ফল্‌স্‌ ভাউচার বানালো। তারপর আমার বন্ধু হার্কলোট্‌স্‌, শ্রীনাথ চ্যাটার্জীকে ভাউচারগুলো দিয়ে রাণী স্বর্ণময়ীর কাছে পাঠালো। আমি হার্কলোট্‌স্‌-এর পাশে ছিলাম। আমাকে কেউ দেখতে পাচ্ছিল না। শ্রীনাথ চ্যাটার্জী দোতলায় উঠে দরজায় কড়া নাড়া দিলো। স্বর্ণময়ী দরজা খুলে শ্রীনাথের হাত থেকে ভাউচারগুলো নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। শ্রীনাথ দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। স্বর্ণময়ী আবার দরজা খুলে ভাউচারগুলো শ্রীনাথকে দিলো। আমি তখনও হার্কলোট্‌সের পাশে ছিলাম। হার্কলোট্‌স্‌ দেখলো যে, শ্রীনাথ ভাউচারগুলো নিয়ে দোতলা থেকে নামছে। শ্রীনাথ হার্কলোট্‌সের কাছে এসে ভাউচারগুলো দিলো। হার্কলোট্‌স্‌ জিজ্ঞাসা করলো,"রাণী স্বর্ণময়ী ভাউচারগুলোতে সহি করেছে কি?" শ্রীনাথ বললো, "না, রাণীমা বললেন, ফল্‌স্‌ ভাউচার (False Voucher)।"
হার্কলোট্‌স্‌ এই কথা শুনে চমকে উঠলো। ভাউচারগুলো নিয়ে বলে উঠলো,"স্বর্ণময়ী কি করে জানলো,এগুলো ফল্‌স্‌ ভাউচার (False Voucher)। আমি স্বর্ণময়ীকে কোনদিন দেখি নি, স্বর্ণময়ীও আমাকে কোনদিন দেখে নি। তাহলে স্বর্ণময়ী কি করে জানলো যে এগুলো ফল্‌স্‌ ভাউচার ( False Voucher)? এই ফল্‌স্‌ ভাউচার তৈরী করেছে কেশব সরকার, আর সে তো অফিস ঘরে আছে। ভাউচারের ব্যাপারে শ্রীনাথ কিছুই জানে না। স্বর্ণময়ীর ঘরে শ্রীনাথ ঢোকে নি। স্বর্ণময়ী তো একাই তার ঘরে থাকে। স্বর্ণময়ী কি করে জানলো?"
আমি স্বর্ণময়ীর কাছে গেলাম। স্বর্ণময়ী আমাকে বললো,"কিছুক্ষণ আগে তোমার বন্ধু কিছু ভাউচার শ্রীনাথকে দিয়ে পাঠিয়েছিল, আমি সহি করি নি, শ্রীনাথ এখনই ভাউচারগুলো সহি করে দিতে বলছিল। আমি ঘরে তোমার দেখা পেলাম না, আমি শ্রীনাথকে ভাউচার ফেরৎ দিয়ে বলেছি এগুলো ফল্‌স্‌ ভাউচার (False Voucher)। আমি কি আবার ভাউচার চেয়ে পাঠাবো?"
আমি স্বর্ণময়ীকে বললাম,"না, তুমি যা করেছো, ঠিকই করেছো।"

আজ ফিরে এসেছি। কিন্তু স্বর্ণময়ীকে পেলাম না।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

গেম চেঞ্জার বলেছেন: চালিয়ে যান দাদা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.