নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম। অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি আত্মা এবং ভূত

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২২

আমি আত্মা এবং ভূত

বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায়
নবানি গৃহ্নাতি নরঃ অপরাণি।
তথা শরীরাণি বিহায় জীর্ণানি-
অন্যানি সংযাতি নবানি দেহী।।

মানুষ যেমনভাবে জীর্ণ বা পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ করে নতুন বস্ত্র পরিধান করে, শরীরাণি বা আত্মাও ঠিক তেমনিভাবে জীর্ণ বা পুরানো শরীর পরিত্যাগ করে অন্য নতুন দেহ ধারণ করে বা অন্য নতুন দেহে প্রবেশ করে। এই শ্লোকটি কখনোই পুনর্জন্মের কথা বলে না। মানুষই এই শ্লোকের ভুল ব্যাখ্যা করেছে। যখনই কাউকে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, নতুন দেহটা কি? তখন সব মানুষই বলেছে, এটা আর এমন কি কথা, নতুন দেহ বা নতুন শরীর বলতে নতুন শিশু হয়ে জন্ম নেবে, কর্মফল অনুযায়ী আত্মা তার পুরানো দেহ পরিত্যাগ করে নতুন মানব শিশু কিংবা কোন পশু পাখী হয়ে জন্ম নেবে। অথচ এই শ্লোকে কোথাও কিন্তু জন্মের কথা উল্লেখ নেই। আজ এই শ্লোকের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একটা কথাই বলতে পারি যে, মানুষ বুদ্ধিমান নয়, বরং ঈশ্বরই বুদ্ধিমান। মানুষ এই শ্লোকের ভুল ব্যাখ্যা করায় পরের তিনটি শ্লোকের সঠিক ব্যাখ্যা করতে পারে নি। আমি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণ স্পর্শ করে ভক্তি এবং শ্রদ্ধা সহকারে আমি এই শ্লোকের ব্যাখ্যা করছি- মানুষ যেমনভাবে জীর্ণ বা পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ করে নতুন বস্ত্র পরিধান করে, শরীরাণি বা আত্মাও ঠিক তেমনিভাবে পুরানো বা জীর্ণ শরীর পরিত্যাগ করে অন্য নতুন দেহ ধারণ করে বা অন্য নতুন দেহে প্রবেশ করে। এখন প্রশ্ন এই নতুন দেহটা কি? সেটা কি মানব শিশু নাকি অন্য কিছু? আমি বলছি, মানুষ, বস্ত্র পরিত্যাগ করে এবং বস্ত্র গ্রহণ বা পরিধান করে। তাহলে এখানে দুটো জিনিসের কথা বলা হয়েছে- মানুষ এবং বস্ত্র। এখানে মানুষকে শিশু, কিশোর, যুবক কিংবা বৃদ্ধ বলা হয় নি। অর্থাৎ বৃদ্ধ, যুবক, কিশোর বা শিশু যাই হোক না কেন সে একজন মানুষ। কিন্তু বস্ত্রের ভেদাভেদ করা হয়েছে- জীর্ণ বা পুরানো বস্ত্র এবং নতুন বস্ত্র। মানুষ এবং বস্ত্রের মধ্যে তুলনা করার সময় মানুষকে কিন্তু পুরানো বা নতুন বলা হয় নি, একমাত্র মানুষ যে বস্ত্র পরিধান করে কিংবা ত্যাগ করে সেই বস্ত্রকে নতুন এবং পুরানো বলা হয়েছে। এই শ্লোক থেকে জানা যায়, মানুষ সব সময় নতুন বস্ত্র পরিধান করে, মানুষ কখনোই পুরানো বা জীর্ণ বস্ত্র পরিধান করে না। ঠিক তেমনিভাবে মানুষ সব সময় পুরানো বা জীর্ণ বস্ত্র পরিত্যাগ করে, মানুষ কখনোই নতুন বস্ত্র পরিত্যাগ করে না। তাহলে মানুষ, শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ যে কোন অবস্থাতে তার পুরানো বা জীর্ণ বস্ত্র পরিত্যাগ করতে পারে। ধরা যাক একজন শিশু তার জীর্ণ বস্ত্র পরিত্যাগ করলো, এবার শিশুটি নতুন বস্ত্র পরিধান করলো। এখানে একটা বিষয় লক্ষ্য করতে বলবো, বস্ত্র ত্যাগ এবং পরিধান করার পর শিশু কিন্তু শিশুই ছিল। সহজভাবে বলতে পারি মানুষের আকার নির্দিষ্ট থাকবে। তা সেই মানুষটি শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ যাই হোক না কেন। পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ এবং নতুন বস্ত্র পরিধান করার সময় কিছু সময় লাগবে। কিন্তু কোন মানুষ তার পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ করে উলঙ্গ হয়ে অন্যত্র বা দোকানে কিংবা অন্যের বাড়িতে যাবে না। যেখানে থেকে মানুষটি তার পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ করেছিল, সেখানেই নতুন বস্ত্র পরিধান করবে। তাহলে বলতেই হয়, মানুষটি তার জীর্ণ বস্ত্র পরিত্যাগ করার আগেই নতুন বস্ত্র কাছে এনে রাখবে, তবেই মানুষটি তার পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ করতে পারবে। নতুন বস্ত্র আগে থেকে কাছে না থাকলে মানুষটি কখনোই তার পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ করতেই পারবে না। মানুষ তার শরীরের আকার অনু্যায়ী নতুন বস্ত্র পরিধান করবে। পুরানো বস্ত্রের সাথে নতুন বস্ত্রের মিল নাও থাকতে পারে। মানুষের পরিধানে ছিল জামা ধুতি, মানুষটি তার পুরানো জামা ধুতি পরিত্যাগ করে দামী জামা প্যাণ্ট পরিধান করলো। এখানে মানুষের আকার কিন্তু নির্দিষ্ট থাকবে, কেবল মানুষের রূপের পরিবর্তন হবে। আবার এই বস্ত্র পরিত্যাগ এবং পরিধানের মধ্য দিয়ে মানুষের লিঙ্গের কোন পরিবর্তন হবে না। যুবক অবস্থায় কোন মানুষ তার পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ করে নতুন বস্ত্র পরিধান করলে ঐ যুবকটি কিন্তু যুবকই থাকবে, ওই যুবকটি শিশু হয়ে যাবে না কিংবা বৃদ্ধ হয়ে যাবে না। এই হলো মানুষ এবং বস্ত্রের মধ্যে তুলনা।
এবারের তুলনা মানুষ এবং আত্মার মধ্যে। আগে তুলনা করা হয়েছিল মানুষ এবং বস্ত্রের মধ্যে। বস্ত্র দু ধরণের ছিল- পুরানো বা জীর্ণ এবং নতুন। সেখানে কিন্তু মানুষকে পুরানো কিংবা নতুন বলা হয় নি। এবার এখানে মানুষ এবং আত্মার মধ্যে তুলনা করা হয়েছে। তাহলে এখানেও আত্মাকে নতুন কিংবা পুরানো বলা হয় নি। আর আত্মার পোষাক বা বস্ত্র হলো রক্ত মাংসে গড়া মানুষ। তাহলে শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সকলের দেহে আত্মাই আছে। দেহের যে কোন অবস্থাতেই মৃত্যু ঘটতে পারে। শিশুর দেহে আত্মা আছে। আর এই আত্মার বস্ত্র হলো শিশুর দেহ। তেমনিভাবে বলতে পারি কিশোর দেহে আত্মা আছে আর এই আত্মার বস্ত্র হলো কিশোর দেহ। অনুরূপভাবে যুবক দেহে আত্মা আছে, আর এই আত্মার বস্ত্র হলো এই যুবক দেহ কিংবা বৃদ্ধ দেহে আত্মা আছে, আর এই আত্মার বস্ত্র হলো বৃদ্ধ দেহ। মৃত্যুর কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। যে কোন সময় মানুষের মৃত্যু হতে পারে। মানব শরীরের মৃত্যুর অর্থই হলো আত্মা তার বস্ত্র পরিত্যাগ করলো। আত্মা যখনই তার পুরানো শরীর ত্যাগ করলো, তখনই আত্মাকে নতুন শরীর বা নতুন দেহ ধারণ করতেই হবে। পুরানো দেহ ত্যাগ করার পর আত্মা কিন্তু উলঙ্গ হয়ে অন্যত্র বা বাইরে কোথাও যাবে না। আত্মা যেখানে থেকে পুরানো দেহ ত্যাগ করলো, সেখানে থেকেই আত্মাকে নতুন দেহ গ্রহণ করতে হবে। তাহলে প্রশ্ন এই নতুন দেহটা কি? আগে মানুষ তার পুরানো বস্ত্র পরিত্যাগ করার আগে নতুন বস্ত্র কাছে এনে রেখে দিতো, কিন্তু এখানে আত্মা তার নতুন দেহ কিভাবে কাছে এনে রাখবে? রাখাটা সম্ভব নয়। মৃত্যু কখন হবে সেটা আত্মার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। কোন যুবকের দেহে আত্মা আছে, এই আত্মার বস্ত্র হলো যুবক দেহ। যুবক দেহের মৃত্যু হলো অর্থাৎ আত্মা তার বস্ত্র 'যুবক দেহ' পরিত্যাগ করলো। আর তখনই আত্মাকে নতুন বস্ত্র বা নতুন দেহ 'যুবক দেহ' ধারণ করতে হবে। আর এই দেহটাই হবে রক্ত মাংসহীন বায়বীয় দেহ, এটাই নতুন দেহ, এটাকেই আমরা ভূত বলে থাকি।

নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি নৈনং দহতি পাবকঃ।
ন চৈনং ক্লেদয়ন্তি আপঃ ন শোষয়তি মারুতঃ।।

এখন পর্যন্ত মানুষ এই শ্লোকের এইরূপ ব্যাখ্যা করেছে- আত্মাকে অস্ত্রের দ্বারা কাটা যায় না, আগুনে পোড়ানো যায় না, জলে ভেজানো যায় না, অথবা হাওয়াতে শুকানোও যায় না।
আর আমি বলছি - এই শ্লোকে কোথাও কিন্তু আত্মা শব্দ ব্যবহৃত হয় নি। ন এনম্‌ এর অর্থ হলো না একে। না একে বলতে আত্মা নয় বরং এই নতুন দেহটা সম্বন্ধে বলা হয়েছে। আত্মা তার পুরানো বা জীর্ণ দেহ ত্যাগ করে এই যে নতুন রক্ত মাংসহীন বায়বীয় দেহ ধারণ করলো, সেই দেহটাকে কোন অস্ত্র দিয়ে কেটে দেহ এবং আত্মাকে আলাদা করা যায় না, আত্মা এবং দেহ একত্রিত অবস্থায় থাকে। জীবিত অবস্থায় আত্মা এবং রক্ত মাংসের দেহ একত্রিত থাকে, এখানে যে কোন অস্ত্র দিয়ে রক্ত মাংসে দেহকে খণ্ড খণ্ড করা যাবে, ফলে দেহের মৃত্যু ঘটবে এবং দেহ থেকে আত্মা আলাদা হয়ে যাবে। কিন্তু দেহের মৃত্যুর পর আত্মা যে বায়বীয় দেহ ধারণ করবে, সেখানে অস্ত্র দিয়ে দেহ এবং আত্মাকে আলাদা করা যাবে না। ন এনম্‌ দহতি পাবকঃ অর্থাৎ আগুন এই আত্মা বা দেহকে দাহ করতে পারে না। অর্থাৎ আগুন এই দেহটাকে পুড়িয়ে ছাই করতে পারে না কিংবা দেহ আর আত্মাকে কোনভাবেই আলাদা করতে পারে না। জীবিত অবস্থায় আগুন এই রক্ত মাংসের দেহ পুড়িয়ে ছাই করে দেয়, আর সেখানে দেহের মৃত্যু ঘটে, ফলে দেহ আর আত্মা আলাদা হয়ে যায়। জীবিত অবস্থায় আগুনের বা আলোকের বা তাপের প্রয়োজন আছে, অন্যথায় মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু দেহের মৃত্যুর পর আত্মা যে ধরণের বায়বীয় নতুন দেহ ধারণ করলো, সেখানে এই দেহের জন্য বাইরের আগুন বা আলোক বা তাপের কোন প্রয়োজন নেই। ন চ এনম্‌ ক্লেদয়ন্তি আপঃ- না একে জল ভেজাতে পারে না। এই কথা দিয়ে সত্যই কিছু বোঝা গেলো না। এর প্রকৃত অর্থ তাহলে কি? জীবিত অবস্থায় আমরা যখন পিপাসার্ত হই, তখন আমাদের গলা শুকিয়ে যায়। জল তখন আমাদের প্রয়োজন হয়, জল পান করে আমরা তখন গলা ভিজিয়ে নিই। অর্থাৎ জল ছাড়া আমরা কখনোই বাঁচবো না। অথচ দেহের মৃত্যুর পর আত্মা যে নতুন দেহ ধারণ করলো, সেই দেহের গলা ভেজানোর জন্য জলের প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ এই দেহের জল পিপাসা লাগে না। জল ছাড়াই এই দেহ জীবিত। ন শোষয়তি মারুতঃ- বাতাস শোষিত হয় না। জীবিত অবস্থায় আমরা বাতাস গ্রহণ বা শোষণ করি, অর্থাৎ জীবিত অবস্থায় শ্বাস-প্রশ্বাস চলে। কিন্তু দেহের মৃত্যুর পর আত্মা যে নতুন দেহ ধারণ করলো, সেই দেহ কখনোই বাতাস গ্রহণ করে না বা বাতাস শোষণ করে না। অর্থাৎ এই দেহের শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রয়োজন নেই। বাতাস ছাড়াই এই দেহের অস্তিত্ব আছে। দেহের মৃত্যুর পর আমি আত্মা যে নতুন দেহের অধিকারী হলাম, সেই নতুন দেহের জন্য আগুন, জল, বাতাসের কোন প্রয়োজন নেই। জীবিত অবস্থায় আগুন না থাকলে আমি বাঁচবো না, আগুন না থাকলে আলো কিংবা তাপ আমি পাবো না। আমি যদি তাপ না পাই, যদি আলো না পাই, যদি আগুন না পাই আমি বাঁচবো না। তেমনিভাবে জল এবং বাতাস ছাড়া আমি বাঁচবোই না। অথচ মৃত্যুর পরে আগুন, জল, বাতাস আমার আর কোন প্রয়োজনে লাগছে না। এটাই ভূতের শরীর। ভূতের না আছে শ্বাস-প্রশ্বাস, না আছে তার ক্ষুধা-তৃষ্ণা।

অচ্ছেদ্যঃ অয়ম্‌ অদাহ্য অয়ম্‌ অক্লেদ্যঃ অশোষ্যঃ এব চ।
নিত্যঃ সর্বগতঃ স্থাণুঃ অচলঃ অয়ম্‌ সনাতনঃ।।

অচ্ছেদ্য এর অর্থ হলো আলাদা করা যাবে না। মৃত্যুর আগে আমার যে ধরণের দেহ ছিল, মৃত্যুর পরে আত্মা সেই একই ধরণের দেহ গ্রহণ করবে। এই পুরানো এবং এই নতুন দেহ একই রকমের হবে, আলাদা করা যাবে না। অদাহ্য অয়ম্‌ - এই দেহটাকে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করা যাবে না, দেহ এবং আত্মাকে আলাদাই করা যাবে না। অক্লেদ্য - জল দিয়ে এই দেহটাকে ভেজানো যাবে না, কিংবা এই দেহটাকে জলে ডুবিয়ে রাখলেও এই দেহের মৃত্যু ঘটবে না, জল এই দেহটাকে দ্রবীভূত করতে পারবে না। অশোষ্য- বাতাস এই দেহটাকে শোষণ করতেই পারবে না। বাতাস দেহটাকে নষ্ট করতেই পারবে না। এই দেহটাই ভূত। ভূতের দেহটাকে আগুন, জল, বাতাস কোনভাবেই নষ্ট করতে পারবে না। এই দেহটা কিন্তু চিরস্থায়ী। সর্বব্যাপ্ত। অপরিবর্তনীয়। কোন যুবকের মৃত্যু হলে আত্মা যুবক দেহ ধারণ করবে। এই নতুন যুবক দেহটি অপরিবর্তনীয় থাকবে, এই যুবক দেহের আর কোন পরিবর্তন হবে না। এই দেহটি স্থির হবে। এই দেহের আর কোন পরিবর্তন হবেই না। অচল - অর্থাৎ এই নতুন দেহটা তার পূর্বের রূপ অপরিত্যাগী। দেহের মৃত্যুর আগে দেহের যে রূপ ছিল, মৃত্যুর পর আত্মা যে নতুন দেহ ধারণ করলো তার রূপ পূর্বের দেহের রূপই হবে। এই নতুন দেহ নিত্য বর্তমান। এই নতুন দেহটাই ভূত। আর এই ভূতের দেহটাকে বৃষ্টির জল ভেজাতে বা নষ্ট করতে পারে না। আগুন বা তাপও এই ভূতের দেহটাকে নষ্ট করতে পারে না। অস্ত্র বা বন্দুকের গুলিও ভূতের শরীরটাকে নষ্ট করতে পারে না। বাতাস বা ঝড় এসেও ভূতের শরীরটাকে নষ্ট করতেই পারে না।

অব্যক্তঃ অয়ম্‌ অচিন্ত্যঃ অয়ম্‌ অবিকার্যঃ অয়ম্‌ উচ্যতে।
তস্মাৎ এবম্‌ বিদিত্বা এনম্‌ ন অনুশোচিতুম্‌ অর্হসি।।

এই শ্লোকের অর্থ হলো- এই আত্মা অব্যক্ত, অচিন্ত্য ও অবিকারী বলে শাস্ত্রে উক্ত হয়েছে। অতএব এই সনাতন স্বরূপ অবগত হয়ে দেহের জন্য তোমার শোক করা উচিত নয়।
আসলে এই শ্লোকের অর্থ এইরূপ হবে- শ্লোকে কোথাও কিন্তু আত্মা শব্দ নেই। বরং অয়ম্‌ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। অয়ম্‌ শব্দের অর্থ নিশ্চয় আত্মা নয়, বরং হবে এই বা এই দেহ। এই দেহ অব্যক্ত, অর্থাৎ অপ্রকাশিত বা ইন্দ্রিয়াদির অগোচর। সেইকারণে আমরা সবাই ভূতকে দেখতে পাই না। এই দেহ কেমন তা চিন্তার অতীত। এই দেহ অবিকার্য অর্থাৎ অপরিবর্তনীয়। এই নতুন দেহের আর কোন পরিবর্তন হবেই না। এত কিছু জানার পরেও পুরানো দেহের জন্য তোমার শোক করা উচিত নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.