নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রীতম ব্লগ

প্রীতম ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারত: যেখানে দাঙ্গা বারবার কাঁদায় মুসলিম নারীদের

১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৮





চোখের সামনে নিজের কিশোরী মেয়ের ওপর প্রতিবেশী হিন্দু সন্ত্রাসীদের পাশবিক অত্যাচারের কথা মনে পড়ে আর বুকটা ভারী হয়ে ওঠে ফাতিমার। গত সেপ্টেম্বরে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুজাফফরনগরে মুসলিম নিধনে দাঙ্গার সময় গণসম্ভ্রমহরণের শিকার হয় তার ১৭ বছরের মেয়েটি।

মুজাফফরনগরের ওই দাঙ্গায় শুধু ফাতিমা একা নন, এমন পাশবিক নির্যাতনের দুঃস্মৃতি বুকে বয়ে বেড়াচ্ছেন আরো অনেকে। বিচারহীনতা আর লোকলজ্জার ভয়ে তারা আইনের আশ্রয় নেননি। আবার এই ক্ষত উপশমের উপায়ও নেই তাদের কাছে। তাই বারবার তাদের বুকে কান্না উথলে উঠে, আর চোখের পানিতে হাহাকার ঝরে।

সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনাকে ভারতীয় মিডিয়ায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বলা হয় বটে, আসলে এর শিকার ও ক্ষতিগ্রস্ত কেবল মুসলমানরাই। আর এই দাঙ্গা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও ইন্ধন থেকে মুক্ত ছিল না। অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ওইমেন অ্যাসোসিয়েশনও (এআইডিডব্লিউএ) তেমনটি মনে করে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুধা সুন্দরারমণ বলেছে, “ওই দাঙ্গার সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক রয়েছে এবং কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতা নরেন্দ্র মোদির ডান হাত অমিত শাহ ওই দাঙ্গার জন্য দায়ী।”

গতকাল রেডিও তেহরান ও মঙ্গলবার ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ মুজাফফরনগর দাঙ্গার ওপর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে ওই দাঙ্গায় মুসলমান নারীদের ওপর চলা নির্যাতনের নানা চিত্র উঠে আসে।

ওই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার ফাতিমা আশ্রয় নিয়েছেন একটি ত্রাণকেন্দ্রে। তিনি অশ্রুভরা চোখে বলেন, “তারা ছিল ছয়জন। তারা আমাকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে চোখের সামনে আমার মেয়ের ওপর একের পর এক চড়াও হয়। আমি তার সতিত্ব রক্ষা করতে পারিনি।”

আজও সেই দুঃসহ পাশবিকতার কথা পুলিশকে জানাতে পারেননি ফাতিমা। একদিকে আরো বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা, অন্যদিকে লোকলজ্জার ভয় তাকে মামলা করা থেকে বিরত রেখেছে। ফাতিমা বলেন, “আমার মেয়ে গণসম্ভ্রমহরণের শিকার হয়েছে এ কথা জানতে পারলে কে তাকে বিয়ে করবে বলুন? সমাজ তাকে নষ্টা মেয়ে বলে প্রত্যাখ্যান করবে।”



মুজাফফরনগর দাঙ্গার পর উত্তর প্রদেশের মালাকপুর ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১০ হাজার মুসলমান। তাদেরই একজন ফাতিমা। ৭ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া তিন দিনের দাঙ্গায় যে শুধু মুসলমানদের হত্যা ও তাদের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে তাই না, সেই সঙ্গে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ফাতিমার মেয়ের মতো অসংখ্য মুসলিম নারী। ওই দাঙ্গায় মুসলমানকে শহীদ করে হিন্দু সন্ত্রাসীরা।

ওই দাঙ্গার ঘটনায় পুলিশের কাছে ফৌজদারি অপরাধ জমা পড়েছে মাত্র ২৮২টি। এর মধ্যে সম্ভ্রমহরণের অভিযোগ রয়েছে মাত্র পাঁচটি। বেশির ভাগ আক্রান্ত মানুষ যে বিচার চাইতে পুলিশের দ্বারস্থ হননি, তার একটি ছোট উদাহরণ হলো ফাতিমার সাত সদস্যের পরিবার। তারা জানেন, পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে আরো অনেক বেশি হেনস্তা হতে হবে, সমাজে মাথা কাটা যাবে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না। ১১ বছর আগের গুজরাট দাঙ্গার প্রধান অভিযুক্ত নরেন্দ্র মোদি আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী।

এআইডিডব্লিউএর উদ্ধৃতি দিয়ে এই ধরনের আরো কিছু বর্বর ঘটনা বর্ণনা করে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’। ৬০ বছর বয়সী একজন বর্ণনা করেন কীভাবে তার ছেলের বউকে সম্ভ্রমহরণ করা হয়। তিনি বলেন, “আমার ছেলের বউকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে পাশের আখক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয়। ছয়জন তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।”

‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ ৩০ বছর বয়সী একজনের একই রকম ঘটনার বর্ণনা দেয়। ওই ব্যক্তি বলেন, “আমার স্ত্রীকে পাশের জঙ্গলে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় একদল লোক। এরপর তাকে গণসম্ভ্রমহরণ করে।” হাসপাতাল কৃর্তৃপক্ষ ও পুলিশও তার স্ত্রীকে হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এই ধরনের পাঁচটি ঘটনার বর্ণনা করে আইডিডব্লিউএ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৫

বাংলার অপরূপ বলেছেন: কোন মন্তব্য নেই কেন? যদি আমাদের হিন্দুদের উপর এমন অত্যাচার হতো, তাহলে দলে দলে বিচার দিতে ভারত যেত আমাদের নেতারা।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯

প্রীতম ব্লগ বলেছেন: সহমত। আপনার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক।

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯

আমার দেশ বাংলাদেশ বলেছেন: মানবতাবাদীরা মুখে কুলুপ এটে থাকে।
অপরাধীদের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি না থাকলে তারা এসব নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী হয়না।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৪১

প্রীতম ব্লগ বলেছেন: একচোখা দানব কথাটা শুনেছিলাম এখন নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি।

৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:১২

গান পাগলা বলেছেন: কেমনে দেখবো, এগো এক চোখ কানা, অন্য চোখেও কালো ঠুসি পরা, বাংলাদেশে হিন্দুদেরকে আমরা কত সম্মান করি এগুলো হওয়ার প্রশ্নই আসেনা, তার পরেও ভারতের কিছু জারজ দাদা আছেন হিন্দুদের কেউ ভাত রান্নার জন্য চুলায় আগুন দিলেও কয় মুসলমানরা হিন্দুদের ঘর জালিয়ে দিয়েছে।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৯

প্রীতম ব্লগ বলেছেন: এখন অবশ্য মানবাধিকারের লংঘন হয় না।

৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৪

এম আর ইকবাল বলেছেন: দাঙ্গার প্রতিবাদ করার মত মানবতাবাদী মানুষ সব দেশেই আছে ।কলকাতার দাঙ্গার প্রত্যক্ষ অভিঙ্গতার কথা আমি আমার মা বাবার কাছে শুনেছি । দাঙ্গা সব সময় অমানুষের কাজ ।
আমাদের দেশের দাঙ্গাও মারাত্মক ।
আপনি বাসে আছেন বাস জ্বালিয়ে দিচ্ছে, আপনার গাড়ী জ্বালিয়ে দিচ্ছে । নারী পুরুষ বাচ্চা কারো রেহাই নেই । ককটেল ফুটছে ।
পাকিস্হান , ইরাক. আফগান
রাস্তাঘাট, মসজিদ, জানাজা সব জায়গায় বোমা ফুটছে ।
মরছে কাতারে কাতারে ।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৫

প্রীতম ব্লগ বলেছেন: শুধুমাত্র মুসলমান হওয়ার কারণে মুসলমানদের গণসম্ভ্রমহরণ, গণহত্যা করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রগুলি, ভারত তাদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।

কত প্রমাণ চান? কত প্রমাণ আপনার দরকার?

নিন আপনার পছন্দের একজন মহাপুরুষের (!!!!!!!) জীবনি দিলাম
Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.