![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি প্রেতরাজ। জন্ম-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে আমার বসবাস।
কি ব্যাপার হাসান সাহেব আপনাকে এতো নার্ভাস দেখাচ্ছে কেন?
কি হয়েছে?
কি হয় নাই সেইটা বলেন।
আরেকটুর জন্য হলেই তো আপনার ভাবী বিধবা হতে যাচ্ছিল।
কি বলেন এইসব হেয়ালী টাইপের কথা বার্তা।খোলাসা করে বলেন তো।
আরে বইলেন না রহমান সাহেব, বড় ভাইকে এয়ারপোর্ট এ পৌছায়া দিয়া ফিরতাছি গুলিস্তান এর উদ্দেশ্যে সাথে গ্রাম থেকে আসা আমার ভাইয়ের ছেলে।সালসাবিল এর শেষের দিকে দুইটা সিট পাইয়া বইসা পড়লাম।বাস লিংক রোডের মোড়ে আসা মাত্রই ধুম কইরা একটা শব্দ হইয়া বাস থাইমা পড়ল।
তারপর কি হইল?কয় জন মারা গেছে?
আপনার কিছু হয় নাই তো হাসান সাহেব আর আপনার ভাতিজা কই?
আরে না রহমান সাহেব, আপনি যা ভাবতেছেন তা নয়।
তাহলে?রহমান সাহেব প্রশ্ন করলেন।
ধুম কইরা শব্দ হওয়ার পর তো পেট্রোল বোম পড়ছে বইলা যে যেভাবে পারতাছে বাস থেইকা নামতাছে।আমার ভাতিজা ও বাসের জানালা দিয়া দিসে এক লাফ।আর আমার তো শরীরের যে অবস্থা আমি না লাফ দিতে পারতাছি না দৌরাইতে পারতাছি।
তারপর?
তারপর আর কি কোন রকম দোয়া দুরুদ পইরা চোখ বন্ধ কইরাআল্লাহ্র কাছে পার্থনা কইরা কইলাম আল্লাহ আমার পরিবার কে দেইখো।
তারপর কি অইলো?
এরপর চোখ খুইলা দেখি সবাই আমার দিকে তাকাইয়া আছে।
নিচ থেকে একটা লোক জিজ্ঞাসা করল কি ভাই খুব ভয় পাইছেন নাকি?
বোম টোম কিছু না ইঞ্জিন নষ্ট হইয়া গেসে।ওইহান থেইকাই ধোঁয়া বাইর অইতেছিল।
কি যে শান্তি পাইতেছিলাম এই কথা টা শুনে,আপনারে বুঝাইতে পারব না রহমান সাহেব।
না মইরা ও নতুন করে বাঁচার স্বাদ গ্রহন করলাম।
ভাতিজা টা তো এতোই ভয় পআইসে আর বাসেই উঠতে চাইছিল না।আমাকে বলল কাকা চল আমরা হেঁটেই মালিবাগ মোড়ে চলে যাই।
ওর দিকে একটা মুচকি হাসি দিয়া আবার বাসের পেছনে দৌড়ায়া বাসে উঠলাম আর ভাতিজা টারে মালিবাগ মোড় থেকে গুলিস্তান এর উদ্দ্যেশে ছাইড়া আসলাম।আল্লাহ ভালোয় ভালোয় যেন ওরে গ্রামে পোছায়া দেয়। এইভাবে যদি দেশের অঅবস্থা চলতে থাকে তাহলে তো পেট্রোল বোমায় না পুরলেও হার্ট ফেল কইরা ঠিকই মইরা যামু।আল্লাহ আর দুই নেত্রী যে কবে আমাদের কে এই অসহায় অবস্থা থেকে রক্ষা করবে তা এক মাত্র তারাই জানে।
এই বইলা
একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস আর অজানা আশঙ্কা নিয়ে আসি বলে হাসান সাহেব পুনরায় তার অনিশ্চিত একটি দিনের পথে পা বাড়ায়।
আর রহমান সাহেব অসহায় দৃষ্টিতে হাসান সাহেবের গন্তব্যের দিকে তাকিয়ে থাকেন।
হাসান সাহেব আর রহমান সাহেব তো মাত্র ষোল কোটি মানুষের মধ্যে দুইজন মানুষ।বর্তমানে হাসান সাহেবের মত কয়েক লাখ মানুষ প্রতিদিন হাতের মুঠোয় নিজেদের প্রাণ ভোমরাকে নিয়ে রাজপথে বের হয় শুধুমাত্র জীবন আর জীবীকার তাগিদে। কেউ বলতে পারে না কখন তাদের প্রান ভোমরা তাদের ফাঁকি দিয়ে উড়ে চলে যায়।আর রহমান সাহেবের মত তাদের কাছের মানুষগুলো অসহায় দৃষ্টি আর এক অনিশ্চিত সম্ভাবনা নিয়ে প্রহর গুনে কখন তাদের আপনজন তাদের কাছে ফিরে আসবে।।।।।
©somewhere in net ltd.