![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি প্রেতরাজ। জন্ম-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে আমার বসবাস।
দৃশ্যত মনে হচ্ছে, ম্যাচ জেতার পর
দর্শকদের ধন্যবাদ দিয়ে মাশরাফিরা খুব
অন্যায় করে ফেলেছেন!
ঘটনাটা হল, ম্যাচ
শেষে বাংলাদেশের
খেলোয়াড়রা মাঠে একটা চক্কর
দিয়েছেন।
নিজেরা হাতে তালি দিয়ে দর্শকদের
ধন্যবাদ জানিয়েছেন, অভিনন্দন
জানিয়েছেন।
এই মাঠ চক্কর
দেওয়াকে লোকেরা ‘ভিক্টরি ল্যাপ’
বানিয়ে ফেলেছে।
আফগানিস্তানের মতো পুচকে দলের
বিপক্ষে হেরে গিয়ে বাংলাদেশ
কেন ‘ভিক্টরি ল্যাপ’ দেবে, এ
নিয়ে এখন বাংলাদেশের
‘শুভাকাঙ্খি’রা রীতিমতো সমালোচনার
ঝড় তুলছেন। ঝড়টা তুলেছেন আকাশ
চোপড়াসহ কয়েক জন ভারতীয় ক্রিকেট
বোদ্ধা!
আসলে সোশ্যাল মিডিয়াতেই এ
নিয়ে এক ঝড় শুরু হয়ে গেছে।
একদিকে তারা বলছেন, এই
ভিক্টরি ল্যাপ দিয়ে বাংলাদেশ
ইজ্জত হারিয়ে ফেলেছে। আরেক
দিকে বাংলাদেশ
সমর্থকরা বোঝানোর চেষ্টা করছেন
যে, এটা মোটেও ভিক্টরি ল্যাপের
মতো কিছু ছিল না; এটা স্রেফ ধন্যবাদ
দেওয়ার জন্য একটা ল্যাপ ছিল।
এই পক্ষের যুক্তিটাই
মেনে নেওয়া সঠিক।
খেলোয়াড়দের এই ল্যাপ
যারা দেখেছেন,
তারা বুঝতে পেরেছেন;
এতে ভিক্টরি ল্যাপের
কোনো বৈশিষ্ট্য ছিল না। ছিল
মাঠভর্তি বাংলাদেশকে সমর্থন
জানাতে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহর
থেকে ছুটে আসা প্রবাসীদের
প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর চেষ্টা।
এই কৃতজ্ঞতা জানানোটা জরুরী ছিল।
মনে রাখতে হবে, ক্যানবেরা শহরে এমন
বেশী কিছু বাংলাদেশী বসবাস
করেন না। এই
ম্যাচটা দেখতে যারা মাঠ
ভরিয়েছিলেন, সেই
বাংলাদেশীরা সিডনি-মেলবোর্ন
থেকে কয়েক
ঘন্টা গাড়ি চালিয়ে এসেছেন কষ্ট
করে। অবিরাম চিৎকার
করে দলকে সমর্থন দিয়ে গেছেন। এই
মানুষগুলোকে একটু সম্মান
জানানোটা দরকার ছিল।
বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ায়
খেলতে যাওয়ার সুযোগই পায় না।
ফলে এই প্রবাসীরা যে কষ্ট
করে তাদের খেলোয়াড়দের জীবনের
তরে দেখতে এসেছেন;
সেটাকে অবশ্যই সম্মান
জানানো দরকার ছিল।
ফলে প্রথমত এই
ল্যাপকে ‘ভিক্টরি ল্যাপ’ ভেবে খুব হইচই
করার কিছু নেই।
দিনশেষে মাশরাফি বিন
মুর্তজা পরিষ্কার বলেছেন, তারা এই
ম্যাচ জয়ে এমন বড় কিছু করে ফেলেছেন
ভাবছেন না; তাদের বড়
চ্যালেঞ্জগুলো বরং সামনে। এই
কথা দিয়েই বোঝা যায়, তথাকথিত
ভিক্টোরি ল্যাপ দেওয়ার অবস্থায়
বাংলাদেশ ছিল না।
এখন আমার কথাটা অন্য জায়গায়-
বাংলাদেশ ভিক্টরি ল্যাপ দিলেই
বা এই হইচই করার অধিকার আকাশ
চোপড়াদের কে দিলো!
আমরা যারা বাংলাদেশী,
তারা হয়তো সমালোচনার অধিকার
রাখি। আমরা জাত্যাভিমানের
কারণে, অহংবোধের
কারণে আফগানিস্তানের
বিপক্ষে জিতে ভিক্টোরি ল্যাপ
দিলে রাগ করতে পারি।
আমরা বলতে পারি,
আমরা ভিক্টোরি ল্যাপ দেব
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে,
ভারতকে হারিয়ে;
যেটা আমরা দিয়েছিও। কিন্তু
যারা আসল হইচইটা করছেন, সেই আকাশ
চোপড়াদের কী এই অধিকার আছে?
ভারতীয় ক্রিকেটের একসময়ের বাতিল
ক্রিকেটার আকাশ চোপড়া এবং একজন
ক্রিকেট ধারাভাষ্যকারই মূলত এই
ভিক্টোরি ল্যাপ
নিয়ে বেশী আপত্তি করছেন।
তারা বোঝাতে চাইছেন,
আফগানিস্তানের
বিপক্ষে বাংলাদেশের রোজই
জেতা উচিত; ফলে আনন্দের কিছু নেই।
ম্যাচের আগে কোথায় ছিলেন, জনাব
আকাশ?
ম্যাচ জুড়ে সারাক্ষন
আপনি আফগানিস্তানের পক্ষে টুইট
করে গেছেন। তাতে অন্যায় নেই।
কিন্তু
প্রতিটা টুইটে আপনি বোঝাতে চেষ্টা করেছেন,
বাংলাদেশ ১৫ বছরে এক
ইঞ্চি উন্নতি করেনি, বাংলাদেশের
এই পর্যায়ে খেলার যোগ্যতাই নেই।
আপনার টুইটগুলো এক জায়গায়
করলে চোখে আঙুল
দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া সম্ভব, আপনার
ক্রিকেট জ্ঞান বলে বাংলাদেশের
চেয়ে আফগানিস্তান
ক্রিকেটে এগিয়ে গেছে।
এখন নিজের ফেলা থু থু
গিলে ফেলছেন?
আপনিই যাদের ‘পিছিয়ে থাকা’ দল
বলেছিলেন, সেই বাংলাদেশ
আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাহাড়
সমান ব্যবধানে জিতে যাওয়ার পর
আপনি বলছেন, এটাই স্বাভাবিক!
আসলে আপনারা কোনটা বলতে চান,
সেটা একটু পরিষ্কার করুন।
আপনাদের সব
সমালোচনা আমরা উড়িয়ে দেই না।
আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের অনেক
সমস্যা আছে। আমাদের ক্রিকেটের ১৫
বছরে যে উন্নতি করার কথা ছিল,
তা আমরা করতে পারিনি। সে জন্য এই
খেলোয়াড়রা যে দায়ী নয়;
দায়ী আপনাদের ভারতীয় বোর্ডের
চক্করে পড়া কর্মকর্তারা; সেটুকু
তো না বোঝার কথা নয়।
সেটাই যদি বোঝেন, তাহলে আমাদের
ক্রিকেটাদের ছোট করার এই
চেষ্টা করাটা যে অন্যায়,
তা তো না বোঝার কথা নয়।
আমরা বুঝি, আপনাদের রোমান্টিসিজম
বেচে খেতে হয়। তাই বলে যাকে একটু
আগে গালি দিলেন দুর্বল বলে, একটু পর
তাকেই শক্তিশালী দাবি করে হইচই
পাকানোর
মতো স্ববিরোধিতা করতে তো একটু
মান-সম্মানে বাঁধার কথা।
কী জানি, সেটা আছে কি না!
সংগৃহীত :-priyo.com
লিখেছেন:-দেবব্রত চট্টোপাধ্যায়
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪
প্রেতরাজ বলেছেন: হুম আসলেই জ্বলন।
একদম রিয়েল জ্বলন
২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪৮
শফিক আলম বলেছেন: ঐ চক্কর বা ল্যাপ দেওয়ার দরকার ছিল না। ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য তো খেলা শেষের অনুষ্ঠানই যথেষ্ঠ। যেখানে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সব দর্শককে ধন্যবাদ দেওয়া যায়। সবাই তা-ই করে। আমরা একটু বেশিই করি। আফগানিস্তান বা স্কটল্যান্ডের সংগে জিতলেও যেমন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী নেত্রী সবাই অভিনন্দন জানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, যার কোন প্রয়োজন নেই। এতেই বুঝা যায় আমরা কোন পর্যায়ে আছি।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬
প্রেতরাজ বলেছেন: মাইক্রোফোন এ ধন্যবাদ দিলে ক্যানবেরা মাঠের দর্শকমহল গুলো বোধ হয় এতোটা উচ্ছ্বসিত হত না যত টা গতকাল হয়েছে।
৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২৮
এই আমি সেই আমি বলেছেন: পাকি জারজ রমিজ রাজার বচন পড়ুন । পাকি বচন অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় ম্যানুকা ওভালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মধ্যকার ক্রিকেট ম্যাচে ধারাভাষ্যকার প্যানেলে ছিলেন- পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার রমিজ রাজা, ভারতের সুনীল গাভাস্কার, সৌরভ গাঙ্গুলী ও হারশা ভোগলে এবং অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন।
ধারাভাষ্যকারদের মধ্যে পাকিস্তানি রমিজ রাজার কথাবার্তা ছিল রীতিমত বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের প্রতি অবহেলা, উন্নাসিকতা, জ্বালাধরা টাইপ এবং পক্ষপাতিত্বের দোষে দুষ্ট। খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, এমনকি পুরস্কার বিতরণীতেও তিনি তার বাংলাদেশ বিরোধী মনোভাব গোপন করেননি।
পক্ষান্তরে পাকিস্তানি কানঢাকা রমিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে একাই লড়েছেন প্রিন্স অব কলকাতা সৌরভ গাঙ্গুলী।
টসে জিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং বেছে নিল। যথারীতি মাঠে এবং মাঠের বাইরে সারা পৃথিবীর বাংলাদেশিরা গলা ফাটানো চীৎকারে উল্লাস প্রকাশ করছে। টিভি ক্যামেরা মাঠের দর্শকদের দিকে মনোযোগী হলে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তুলছে। মাঠে উপস্থিত পনেরো ষোল হাজার দর্শকের মধ্যে ৮০% থেকে ৯০%ই বাংলাদেশি। গ্যালারি জুড়ে শুধু লাল-সবুজের উপস্থিতি।
অতঃপর টাইগারদের মতো করে বুকে হাত রেখে জাতীয় সংগীত গাইলো ষোল কোটি বাংলাদেশি। বলার অপেক্ষা রাখে না, ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশিদের জন্য মর্যাদার লড়াই। ভীষণ আবেগের দিন। কারণ একে তো বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ, জয় দিয়ে একটি শুভ সূচনার প্রত্যাশার চাপ, তাছাড়া গত এশিয়া কাপে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আফগানিস্তানের কাছে পরাজয়ের প্রতিশোধ স্পৃহা।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়, দর্শক, সাংবাদিক সবার মধ্যে স্নায়ুবিক চাপ ছিল উল্লেখ করার মতো। মাঠের দর্শক মাঠে আর বাইরের দর্শক টেলিভিশনের পর্দা থেকে চোখ, ধারাভাষ্য থেকে কান সরাতে পারেনি, এক মুহূর্তের জন্যও। আমি মাঠের বাইরের দর্শক, সিংগাপুর থেকে টেলিভিশনে খেলা দেখেছি।
যথাসময়ে তামিম ইকবাল এবং আনামুল হক বিজয় ব্যাট হাতে মাঠে নামলেন। চারদিকটা আবার ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠলো। টেলিভিশনে তখন রমিজ রাজা ধারাভাষ্য দিচ্ছেন। তিনি আফগানিস্তান টিমের প্রশংশায় যারপরনাই পঞ্চমুখ। তিনি আফগান ক্যাপটেন মোহাম্মদ নবী সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলতে বলতে আফগান টিমের প্রশংসায় মুখে ফেনা তুলছেন, কিন্তু বাংলাদেশ সম্পর্কে লক্ষনীয় ভাবে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু বলেননি। ভাবখানা এমন যে, এই ম্যাচে আফগানিস্তানই বিরাট ফেবারিট।
সাকিব-তামিম বিহীন বাংলাদেশ দলের এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে হেরে যাওয়াটাই যেন কানঢাকা রমিজের কাছে এক বিরাট মওকা। বারবার এশিয়া কাপের কথা তুলে বাংলাদেশকে দুর্বল প্রতিপক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করাই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান।
হঠাৎ বাংলাদেশের কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই তিনি বললেন, ‘ওহ! ঢাকায় ভয়ংকর ট্রাফিক জ্যাম, ম্যাচ শুরুর অনেক আগে মাঠে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিতে হয়েছিল’ (ওহ! বাংলাদেশ, টেরিবল ট্রাফিজ জ্যাম ইন ঢাকা। উই হ্যাড টু স্টার্ট...’)।
আমার পাশে বসা এক দর্শক সাথে সাথে দিলেন এক গালি, ‘আরে ঐ হালার পুত, তোর কাছে কেউ ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম কেমন, তা জিজ্ঞেস করছে? কাবুলে প্রতিদিন তালেবানরা কয়টা বোমা ফাটায়, তুই তা কইছোস? তোর দেশ পাকিস্তানে তো পৃথিবীর কোনো দেশের টিম এখন খেলতেই রাজি হয় না। একমাত্র তোরাই বিদেশি ক্রিকেটারদের উপর গুলি চালিয়েছিস।’
সৌরভ গাঙ্গুলী অবশ্য সাথে সাথেই রমিজ রাজাকে মনে করিয়ে দেন, ঢাকার মিষ্টি বিকেল এবং উৎসবপ্রেমী মানুষের কথা।
কানঢাকা রমিজ রাজা তার ধারাভাষ্যের পুরো সময়টা যখন যেভাবে পেরেছেন, আফগানিদের হিরো বানিয়েছেন। বাংলাদেশিদের ব্যাপারে ছিলেন নেতিবাচক সমালোচনামুখর, উদাসীন, মাঝে মাঝে বাংলাদেশিদের ব্যাপারে অপ্রাসঙ্গিক কথাও বলেছেন। তার অপ্রাসঙ্গিকতার একটি উদাহরণ- বাংলাদেশের ওপেনার আনামুল হক এর নামে কেন আবার ‘বিজয়’ লাগানো? এ ধরনের ‘পেট নেইম’ নাকি শুধু বাংলাদেশেই দেখা যায়।
এবার আমার পাশে বসা আরেকজন বললেন, ‘নামের ব্যাপারে তুই কি জানোস? তুই এখন যে মাঠে বসে আছিস, তার গ্যালারির একটা স্ট্যান্ডের নাম ‘বব হুক স্ট্যান্ড’। এই ‘বব’ মানে কি জানিস? ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতে রবার্টকে পেট নেইম হিসেবে ‘বব’ ডাকা হয়। ‘উইলিয়াম’কে ‘বিল’ ডাকা হয়, উইলিয়াম জেফারসন ক্লিনটনকে তাই সংক্ষেপে বিল ক্লিনটন বলা হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে ‘ভিক্টরিয়া’ কে ডাকা হয় ‘ভিকি’। নেলসন ম্যান্ডেলার ডাক নাম ‘মাদিবা/মাডিবা’। আবারও সৌরভ গাঙ্গুলী সাথে সাথে রমিজ রাজাকে বুঝিয়ে দেন ‘বিজয়’ মানে ‘ভিক্টরি’।
আফগানিস্তান টিম সম্পর্কে এতো কথা বলার পর রমিজের ফেবারিট টিম ১০৫ রানের বিরাট ব্যবধানে বাংলাদেশের কাছে হেরে গেল। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ প্রস্তুত। কানঢাকা রমিজ মঞ্চে হাজির। তিনি প্রথমেই ডাকলেন, আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীকে।
রমিজ রাজা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার নবী একজন বিরাট ক্রিকেটার, বিরাট হিরো, বিরাট স্টার বলতে থাকলেন। কিন্তু নবীর মধ্যে তেমন কোনো বাড়াবাড়ি ছিল না। নবী মঞ্চ থেকে প্রস্থান করলে এবার কানঢাকা রমিজ বললেন, ‘এখন আমার চাকরি বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তুজাকে ডাকা।’ (নাউ ইটস মাই ডিউটি টু কল দি ক্যাপ্টেন অব বাংলাদেশ, মাশরাফি বিন মোর্তুজা)। ভাবখানা এমন যে, চাকরি করে বলে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ককে ডাকতে হচ্ছে, নইলে জীবনেও ডাকত না।’ যথারীতি আমার পাশের দর্শকরা গালি দিতে শুরু করেছেন, ‘তোরে চাকরি দিছে কোন শালায়? তোরে জানি আর না দেখি...।’
উল্লেখ্য, ইতোপুর্বে ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার নভোজ্যত সিং সিধু তার ধারাভাষ্যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। শাস্তিস্বরূপ তাকে ইএসপিএন ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। আইসিসি’র বর্তমান সভাপতি একজন বাংলাদেশি, জনাব লোটাস কামাল।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকমের মাধ্যমে বাংলাদেশের লাখো কোটি মানুষের এই ক্ষোভের কথা কি তার কাছে পৌঁছুবে? উদ্ধ্যত এই ধারাভাষ্যকারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা কানঢাকা পাকিস্তানি রমিজ রাজাকে বাংলাদেশের কোনো ম্যাচে ধারাভাষ্যকার হিসেবে দেখতে চাই না।
১৮ ফেব্রুয়ারি (২০১৫) অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় ম্যানুকা ওভালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মধ্যকার ক্রিকেট ম্যাচে ধারাভাষ্যকার প্যানেলে ছিলেন- পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার রমিজ রাজা, ভারতের সুনীল গাভাস্কার, সৌরভ গাঙ্গুলী ও হারশা ভোগলে এবং অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন।
ধারাভাষ্যকারদের মধ্যে পাকিস্তানি রমিজ রাজার কথাবার্তা ছিল রীতিমত বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের প্রতি অবহেলা, উন্নাসিকতা, জ্বালাধরা টাইপ এবং পক্ষপাতিত্বের দোষে দুষ্ট। খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, এমনকি পুরস্কার বিতরণীতেও তিনি তার বাংলাদেশ বিরোধী মনোভাব গোপন করেননি।
পক্ষান্তরে পাকিস্তানি কানঢাকা রমিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে একাই লড়েছেন প্রিন্স অব কলকাতা সৌরভ গাঙ্গুলী।
টসে জিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং বেছে নিল। যথারীতি মাঠে এবং মাঠের বাইরে সারা পৃথিবীর বাংলাদেশিরা গলা ফাটানো চীৎকারে উল্লাস প্রকাশ করছে। টিভি ক্যামেরা মাঠের দর্শকদের দিকে মনোযোগী হলে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তুলছে। মাঠে উপস্থিত পনেরো ষোল হাজার দর্শকের মধ্যে ৮০% থেকে ৯০%ই বাংলাদেশি। গ্যালারি জুড়ে শুধু লাল-সবুজের উপস্থিতি।
অতঃপর টাইগারদের মতো করে বুকে হাত রেখে জাতীয় সংগীত গাইলো ষোল কোটি বাংলাদেশি। বলার অপেক্ষা রাখে না, ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশিদের জন্য মর্যাদার লড়াই। ভীষণ আবেগের দিন। কারণ একে তো বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ, জয় দিয়ে একটি শুভ সূচনার প্রত্যাশার চাপ, তাছাড়া গত এশিয়া কাপে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আফগানিস্তানের কাছে পরাজয়ের প্রতিশোধ স্পৃহা।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়, দর্শক, সাংবাদিক সবার মধ্যে স্নায়ুবিক চাপ ছিল উল্লেখ করার মতো। মাঠের দর্শক মাঠে আর বাইরের দর্শক টেলিভিশনের পর্দা থেকে চোখ, ধারাভাষ্য থেকে কান সরাতে পারেনি, এক মুহূর্তের জন্যও। আমি মাঠের বাইরের দর্শক, সিংগাপুর থেকে টেলিভিশনে খেলা দেখেছি।
যথাসময়ে তামিম ইকবাল এবং আনামুল হক বিজয় ব্যাট হাতে মাঠে নামলেন। চারদিকটা আবার ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠলো। টেলিভিশনে তখন রমিজ রাজা ধারাভাষ্য দিচ্ছেন। তিনি আফগানিস্তান টিমের প্রশংশায় যারপরনাই পঞ্চমুখ। তিনি আফগান ক্যাপটেন মোহাম্মদ নবী সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলতে বলতে আফগান টিমের প্রশংসায় মুখে ফেনা তুলছেন, কিন্তু বাংলাদেশ সম্পর্কে লক্ষনীয় ভাবে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু বলেননি। ভাবখানা এমন যে, এই ম্যাচে আফগানিস্তানই বিরাট ফেবারিট।
সাকিব-তামিম বিহীন বাংলাদেশ দলের এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে হেরে যাওয়াটাই যেন কানঢাকা রমিজের কাছে এক বিরাট মওকা। বারবার এশিয়া কাপের কথা তুলে বাংলাদেশকে দুর্বল প্রতিপক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করাই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান।
হঠাৎ বাংলাদেশের কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই তিনি বললেন, ‘ওহ! ঢাকায় ভয়ংকর ট্রাফিক জ্যাম, ম্যাচ শুরুর অনেক আগে মাঠে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিতে হয়েছিল’ (ওহ! বাংলাদেশ, টেরিবল ট্রাফিজ জ্যাম ইন ঢাকা। উই হ্যাড টু স্টার্ট...’)।
আমার পাশে বসা এক দর্শক সাথে সাথে দিলেন এক গালি, ‘আরে ঐ হালার পুত, তোর কাছে কেউ ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম কেমন, তা জিজ্ঞেস করছে? কাবুলে প্রতিদিন তালেবানরা কয়টা বোমা ফাটায়, তুই তা কইছোস? তোর দেশ পাকিস্তানে তো পৃথিবীর কোনো দেশের টিম এখন খেলতেই রাজি হয় না। একমাত্র তোরাই বিদেশি ক্রিকেটারদের উপর গুলি চালিয়েছিস।’
সৌরভ গাঙ্গুলী অবশ্য সাথে সাথেই রমিজ রাজাকে মনে করিয়ে দেন, ঢাকার মিষ্টি বিকেল এবং উৎসবপ্রেমী মানুষের কথা।
কানঢাকা রমিজ রাজা তার ধারাভাষ্যের পুরো সময়টা যখন যেভাবে পেরেছেন, আফগানিদের হিরো বানিয়েছেন। বাংলাদেশিদের ব্যাপারে ছিলেন নেতিবাচক সমালোচনামুখর, উদাসীন, মাঝে মাঝে বাংলাদেশিদের ব্যাপারে অপ্রাসঙ্গিক কথাও বলেছেন। তার অপ্রাসঙ্গিকতার একটি উদাহরণ- বাংলাদেশের ওপেনার আনামুল হক এর নামে কেন আবার ‘বিজয়’ লাগানো? এ ধরনের ‘পেট নেইম’ নাকি শুধু বাংলাদেশেই দেখা যায়।
এবার আমার পাশে বসা আরেকজন বললেন, ‘নামের ব্যাপারে তুই কি জানোস? তুই এখন যে মাঠে বসে আছিস, তার গ্যালারির একটা স্ট্যান্ডের নাম ‘বব হুক স্ট্যান্ড’। এই ‘বব’ মানে কি জানিস? ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতে রবার্টকে পেট নেইম হিসেবে ‘বব’ ডাকা হয়। ‘উইলিয়াম’কে ‘বিল’ ডাকা হয়, উইলিয়াম জেফারসন ক্লিনটনকে তাই সংক্ষেপে বিল ক্লিনটন বলা হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে ‘ভিক্টরিয়া’ কে ডাকা হয় ‘ভিকি’। নেলসন ম্যান্ডেলার ডাক নাম ‘মাদিবা/মাডিবা’। আবারও সৌরভ গাঙ্গুলী সাথে সাথে রমিজ রাজাকে বুঝিয়ে দেন ‘বিজয়’ মানে ‘ভিক্টরি’।
আফগানিস্তান টিম সম্পর্কে এতো কথা বলার পর রমিজের ফেবারিট টিম ১০৫ রানের বিরাট ব্যবধানে বাংলাদেশের কাছে হেরে গেল। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ প্রস্তুত। কানঢাকা রমিজ মঞ্চে হাজির। তিনি প্রথমেই ডাকলেন, আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীকে।
রমিজ রাজা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার নবী একজন বিরাট ক্রিকেটার, বিরাট হিরো, বিরাট স্টার বলতে থাকলেন। কিন্তু নবীর মধ্যে তেমন কোনো বাড়াবাড়ি ছিল না। নবী মঞ্চ থেকে প্রস্থান করলে এবার কানঢাকা রমিজ বললেন, ‘এখন আমার চাকরি বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তুজাকে ডাকা।’ (নাউ ইটস মাই ডিউটি টু কল দি ক্যাপ্টেন অব বাংলাদেশ, মাশরাফি বিন মোর্তুজা)। ভাবখানা এমন যে, চাকরি করে বলে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ককে ডাকতে হচ্ছে, নইলে জীবনেও ডাকত না।’ যথারীতি আমার পাশের দর্শকরা গালি দিতে শুরু করেছেন, ‘তোরে চাকরি দিছে কোন শালায়? তোরে জানি আর না দেখি...।’
উল্লেখ্য, ইতোপুর্বে ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার নভোজ্যত সিং সিধু তার ধারাভাষ্যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। শাস্তিস্বরূপ তাকে ইএসপিএন ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। আইসিসি’র বর্তমান সভাপতি একজন বাংলাদেশি, জনাব লোটাস কামাল।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকমের মাধ্যমে বাংলাদেশের লাখো কোটি মানুষের এই ক্ষোভের কথা কি তার কাছে পৌঁছুবে? উদ্ধ্যত এই ধারাভাষ্যকারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা কানঢাকা পাকিস্তানি রমিজ রাজাকে বাংলাদেশের কোনো ম্যাচে ধারাভাষ্যকার হিসেবে দেখতে চাই না।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:২০
প্রেতরাজ বলেছেন: আমরা ও চাই এইসব কানঢাকা,চোখঢাকা ধারাভাষ্যকার দের বিরুদ্ধে আই সি সি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করুক।আর বাংলাদেশী খেলোয়ারদের বিরুদ্ধে অবহেলা সুচক কথাবার্তা বলার দরুন তাকে ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে বহিঃষ্কার করা হোক।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪০
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: জ্বলন - - - - - - - - - - -