নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের পথ

প্রচেষ্টা

আসল নাম : ইলিয়াস আহমেদ পেশা : ব্যবসা অবস্থান : তালতলাবাজার, মুন্সিগঞ্জ। শখ : নেট এ ঘুরে বেড়ানো, ব্লগ লিখা।

প্রচেষ্টা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাহাবায়ে কেরামের রাসুল (সাঃ) প্রেম

২৫ শে আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২১

ঈমানের সাথে জীবদ্দশায় যিনি ক্ষনিকের জন্য হলেও রাসুলে মকবুল (সাঃ) এর সাক্ষাৎ লাভ ‎করেছেন,স্বচক্ষে দেখেছেন তাকেঁ সাহাবী বলে। কবির কবিতায়,প্রাবন্ধিকের প্রবন্ধে বা কোনো ‎গল্পকারের গল্পে সাহাবায়ে কেরামের রাসুলপ্রেমের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা সম্ভব কিনা তা আমার জানা ‎নেই। আমি এখানে যৎ সামান্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।

পবিত্র কোরআন-হাদিসে সাহাবায়ে কেরামের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। রাসুলে পাক (সাঃ) এর ‎ভালবাসায় সাহাবায়ে কেরামের দৃষ্টান্ত দ্বিতীয়টি আর সৃষ্টির ইতিহাসে খুজে পাওয়া যাবে না। সাহাবায়ে ‎কেরামের কয়েক লক্ষ চোখ সার্বক্ষনিক রাসুলে খোদা (সাঃ) এর জীবনপানে চেয়ে থাকত। গৃহের ‎অভ্যন্তরে প্রিয়নবীর কার্যক্রম গভীরভাবে লক্ষ্য রাখতেন ও সংরক্ষন করতেন ১১/১৩ জন ‎বিচক্ষন,বুদ্ধিমতি.প্রজ্ঞাবান ও মেধাবী রমণী (উম্মহাতুল মুমিনীন)। করণীয়-বর্জনীয় কিছু জানার বা ‎শোনার সাথে সাথেই সাহাবায়ে কেরাম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন কে কত আগে তা পালন করতে ‎পারেন। মা সন্তানের মায়া ত্যাগ করেছেন, সন্তান মায়ের মমতাকে তুচ্ছ করেছেন,স্বামী-স্ত্রীর ‎ভালবাসা,স্ত্রী-স্বামীর ভালবাসা জলান্জলি দিয়েছেন,ভাই-ভাইয়ের দরদ,বোন-বোনের মায়া সবই ত্যাগ ‎করেছেন রাসুল (সাঃ) এর ভালবাসার কারনে। সহায় সম্পদ সবকিছুই উৎসর্গ করেছেন রাসুল (সাঃ) ‎এর জন্য। বাপ-দাদার বসত বাড়ি,উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি, প্রভাব-প্রতিপত্তি সব কিছু ছেড়ে ‎অজানার পথে পাড়ি জমিয়েছেন মদিনার পথে। একটিবারের জন্য ফিরেও তাকাননি সেসবের দিকে। ‎জীবনে কোনদিন আক্ষেপও করেননি। কেবল আক্ষেপ আর যন্ত্রনা তখনই দেখিয়েছেন যখন রাসুল (সাঃ) ‎এর পছন্দ-অপছন্দ,আদেশ-নিষেধ পালনে গাফিলতি বা বিলম্ব হয়েছে। ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করেছেন ‎রাসুলে আকরাম (সাঃ) এর অপরুপ চেহারা মোবারক দর্শনে। রাসুলে আকরাম (সাঃ) মুখের থুথু ‎মোবারক পিঠ,হাত পেতে গ্রহণ করেছেন,পরম ভক্তি ও শ্রদ্ধায় মেখে দিয়েছেন দেহ অবয়বে। শত ‎অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন রাসুলে মকবুল (সাঃ) এর ভালবাসার জন্য । ‎সুন্দরী,রুপসী,ষোড়শী,তম্বী-তরুনী,অপরুপা নববিবাহীতা স্ত্রীকে নিয়ে বাসর সাজিয়েছেন,ডাক দিয়েছেন ‎প্রিয় নবী (সাঃ) জিহাদের। সেই অপরুপা স্ত্রীর দিকে একটিবারের জন্যও ফিরে তাকাননি। হাসিমুখে ‎বিলিয়ে দিয়েছেন জীবন। রাসুলে মাকবুল (সাঃ) এর প্রতি সাহাবায়ে কেরামের এমন নজিরবিহীন ‎ভালবাসায় আরশের মালিক আল্লাহ তায়ালা খুশি হয়ে নাযিল করেছেন অসংখ আয়াত। মহান আল্লাহ ‎তায়ালা বলেন-‎

لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنزَلَ ‏السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا

‎“আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা বৃক্ষের নীচে আপনার কাছে শপথ করল। আল্লাহ ‎অবগত ছিলেন যা তাদের অন্তরে ছিল। অতঃপর তিনি তাদের প্রতি প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং ‎তাদেরকে আসন্ন বিজয় পুরস্কার দিলেন।” (সুরা আল-ফাতহ-১৮)‎

وَالسَّابِقُونَ الأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالأَنصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسَانٍ رَّضِيَ اللّهُ عَنْهُمْ وَرَضُواْ عَنْهُ ‏وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ‎ ‎

‎“আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনছারদের মাঝে পুরাতন, এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে, ‎আল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তাদের জন্য ‎প্রস্তুত রেখেছেন কানন-কুঞ্জ, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত প্রস্রবণসমূহ। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। ‎এটাই হল মহান কৃতকার্যতা।”(সুরা-আত তওবা ০৮)‎

لِلْفُقَرَاء الْمُهَاجِرِينَ الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِن دِيارِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا وَيَنصُرُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُوْلَئِكَ ‏هُمُ الصَّادِقُونَ‎ ‎

‎“এই ধন-সম্পদ দেশত্যাগী নিঃস্বদের জন্যে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টিলাভের অন্বেষণে এবং ‎আল্লাহ তাঁর রসূলের সাহায্যার্থে নিজেদের বাস্তুভিটা ও ধন-সম্পদ থেকে বহিস্কৃত হয়েছে। তারাই ‎সত্যবাদী।” (সুরা-হাশর ০৮)‎

الَّذِينَ آمَنُواْ وَهَاجَرُواْ وَجَاهَدُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِندَ اللّهِ وَأُوْلَئِكَ هُمُ ‏الْفَائِزُونَ‎ ‎

যারা ঈমান এনেছে, দেশ ত্যাগ করেছে এবং আল্লাহর রাহে নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জেহাদ করেছে, ‎তাদের বড় মর্যাদা রয়েছে আল্লাহর কাছে আর তারাই সফলকাম।(সুরা-আত তওবা ২০)‎

وَمَا لَكُمْ أَلَّا تُنفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَا يَسْتَوِي مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ أُوْلَئِكَ ‏أَعْظَمُ دَرَجَةً مِّنَ الَّذِينَ أَنفَقُوا مِن بَعْدُ وَقَاتَلُوا وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَى وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ‏‎ ‎

‎“তোমাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কিসে বাধা দেয়, যখন আল্লাহই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের ‎উত্তরাধিকারী? তোমাদের মধ্যে যে মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে, সে সমান নয়। ‎এরূপ লোকদের মর্যাদা বড় তাদের অপেক্ষা, যার পরে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে। তবে আল্লাহ ‎উভয়কে কল্যাণের ওয়াদা দিয়েছেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।” (সুরা আল-‎হাদিদ ১০)‎ ‎ ‎



إِنَّ الَّذِينَ سَبَقَتْ لَهُم مِّنَّا الْحُسْنَى أُوْلَئِكَ عَنْهَا مُبْعَدُونَ‏‎ ‎

‎“নিশ্চয় যাদের জন্য প্রথম থেকেই আমার পক্ষ থেকে কল্যাণ নির্ধারিত হয়েছে তারা দোযখ থেকে দূরে ‎থাকবে।” (সুরা-আম্বিয়া ১০১)‎

مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاء عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاء بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا ‏سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ السُّجُودِ ذَلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَمَثَلُهُمْ فِي الْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ ‏فَاسْتَوَى عَلَى سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا‎ ‎



“মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর ‎সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সেজদারত দেখবেন। ‎তাদের মুখমন্ডলে রয়েছে সেজদার চিহ্ন । তওরাতে তাদের অবস্থা এরূপ এবং ইঞ্জিলে তাদের অবস্থা ‎যেমন একটি চারা গাছ যা থেকে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর তা শক্ত ও মজবুত হয় এবং কান্ডের ‎উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে-চাষীকে আনন্দে অভিভুত করে-যাতে আল্লাহ তাদের দ্বারা কাফেরদের অন্তর্জালা ‎সৃষ্টি করেন। তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও ‎মহাপুরস্কারের ওয়াদা দিয়েছেন।” (সুরা-আল-ফাতহ ২৯)‎



এ সমস্ত আয়াতে প্রিয়নবীর অনুসারী ও মুহিব্বিনের নিদর্শনসমূহ বর্ণিত হয়েছে। এমনি আরও অসংখ্য ‎আয়াতে মহান রাব্বুল আলামিন সাহাবায়ে কেরামের ত্যাগ,আল্লাহ-রাসুলের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসার ‎বিবরণ দিয়েছেন।

প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরামের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। নিম্নে সাহাবায়ে ‎কেরামের মর্যাদা সম্পর্কে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হল। ‎



‎“ হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেছেন; আমার ‎সাহাবীদের তোমরা মন্দচারী বলোনা। তোমাদের কেউ যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ন আল্লাহর রাস্তায় ‎দান কর ,তবে আমার সাহাবীদের এক মুদ(এক সেরের মত) পরিমান বা তার অর্ধেক পরিমান দানের ‎সওয়াব পাবে না।” (বুখারী-মুসলিম)‎

‎“ হযরত ইমরান ইবনে হুছাইন (রা) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসুলে মাকবুল (সাঃ) এরশাদ করেছেন ‎উম্মতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট মানুষ আমার যুগের লোকজন অর্থ্যাৎ সাহাবায়ে কেরাম। অতঃপর তৎপরবর্তী ‎যুগের লোকজন (তাবেয়ীগণ) অতঃপর তৎপরবর্তী যুগের লোকজন (তাবে তাবেয়ীগণ) অতঃপর ‎তোমরা তাদে;র পরে এমন সম্প্রদায়কে পাবে,যাদের কাছে স্বাক্ষ্য চাওয়া হবে না কিন্ত তারা স্বাক্ষ্য দিবে। ‎খেয়ানত করবে-আমানতদার হবে না।” (বুখারী-মুসলিম)‎



হযরত জাবের (রা) হতে বর্ণিত,তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন,যে ‎জীবদ্দশায় (ঈমানের সাথে) আমাকে দেখেছে (অর্থ্যাৎ সাহাবীগণ) তাকেঁ জাহানানমের আগুন স্পর্শ ‎করবে না, যে জীবদ্দশায় (ঈমানের সাথে) এমন ব্যক্তিকে দেখেছে যে আমাকে জীবদ্দশায় দেখেছে ‎‎(অর্থ্যাৎ তাবেয়ীগণ) তাকেঁও জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না।” (তিরমিযী শরীফ)‎



কুরাইশ দুত ওরওয়াহ ইবনে মাসউদ ছাকাফী মুসলমান হওয়ার পুর্বে হুদাইবিয়ার সন্ধিকালে গোয়েন্দা ‎হিসেবে সাহাবায়ে কেরামের অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষনের জন্য মদিনায় আসেন। অতঃপর ‎কুরাইশদের নিকট গিয়ে রাসুল (সাঃ) এর প্রতি সাহাবায়ে কেরামের ভক্তি-শ্রদ্ধা-ভালবাসার যে অনন্য ‎ছবি একেছিলেন তা তার বর্ণনাতেই দেখুন, ‎

‎“ হে আমার জাতি! আল্লাহর কসম,আমি তোমাদের দুত হিসেবে রোমের সম্রাট,ইরানের ‎শাহানশাহ,আবিসিনিয়ার নাজ্জাশির দরবারে গিয়েছি। আল্লাহর কসম কোন রাজা-বাদশাহর প্রতি তার ‎প্রজা বা সভাসদগণকে এমন ভক্তি-শ্রদ্ধা-সম্মান করতে দেখিনি,যেরুপ মুহাম্মাদের সাহাবীগণ মুহাম্মদের ‎প্রতি করে। আল্লাহর কসম করে বলছি তাদেঁর অবস্থা হলো এই যে,যখন তিনি (রাসুল সাঃ) তাঁর মুখের ‎থুথু ফেলেন তখন তাঁর থুথু কারো না কারো হাতেই পড়ে। অতঃপর সেই ঐ থুথু পরম ভক্তিতে মুখে ‎শরীরে মেখে নেয় । যখন তিনি কোন কাজের আদেশ করেন, তখন তারা কার আগে কে করবে তা নিয়ে ‎হুড়োহুড়ি করতে থাকে। যখন তিনি ওজু করেন তখন তাঁর ওজুতে ব্যব্হত (অতিরিক্ত) পানিটুকু নিয়ে ‎কাড়াকাড়ি করতে আরম্ভ করে, আর যখন তিনি কথা বলেন তখন তারা চুপ করে থাকে। তাকে এতই ‎সম্মান করে যে,তার প্রতি পুর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতেও কেউ সাহস করে না।” (বুখারী শরীফ) সুবহান আল্লাহ!‎



খলিফাতুল মুসলিমিন হযরত উমরের ছেলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) মদিনা হতে হজ্জের সফরে ‎রওয়ানা করলে মক্কায় যাওয়ার সময় রাসুলে মাকবুল (সাঃ) যেসব স্থানে বিশ্রাম নিতেন তিনিও তথায় ‎বিশ্রাম নিতেন,যেসব স্থানে নামাজ পড়তেন তিনিও সেসব স্থানে নামাজ পড়তেন, যে গাছের নিচে বসে ‎আরাম করতেন তিনিও সে গাছের নিচে বসে আরাম করতেন, প্রাকৃতিক প্রয়োজনে যেখানে অবতরন ‎করতেন তিনিও সেখানে অবতরন করতেন,তার প্রাকৃতিক প্রাকৃতিক প্রয়োজন না থাকলেও তিনি ‎অবতরন করে আবার চলতেন। কারো প্রতি ভালবসার এমন দৃষ্টান্ত কেউ কোনদিন দেখাতে পারবে কি ?‎



তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণে সামান্য গড়িমসির জন্য হযরত কা’ব বিন মালেক (রা) সহ আরো তিনজন ‎সাহাবীকে প্রিয়নবী অবরোধ দিলেন (ক) তাদের সাথে কেউ কথা বলবে না । (খ) সালাম দিবে ‎না,তাদের সালামেন জবাব দিবে না। (গ) তাদের ডাকে সাড়া দিবে না। (ঘ) তাদের স্ত্রীদেরকে বলা হলো ‎তাদের বিছানায় যাবে না। (ঙ) অন্যদের জন্য প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞা স্ত্রীদের জন্যও বলবৎ করা হলো। স্ত্রীরা ‎স্বামীর দিকে একবারের জন্য ফিরে তাকালেন না । দুইজন অসুস্থ হওয়ায় স্বামীদের সেবা করার অনুমতি ‎চাওয়া হলো রহমরে নবী কেবল অত্যাবশ্যকীয় সেবাদানের অনুমতি দিলেন। কা’ব বলেন,প্রতিদিন ‎নামাজের জামায়াতে এমন স্থানে দাড়াতাম যেন প্রিয়নবীর মুখখানা দেখা যায়। অপলক নয়নে শুধু চেয়েই ‎থাকতাম-কা’ব বলে কখন ডাক দেন! মুখের দিকে তাকাতাম আমার দিকে তাকিয়ে হাসেন কিনা ? ‎চাহনীর দোলখেলায় ফাকে ফাকে দেখতাম আড়চোখে এমনভাবে আমার দিকে তাকান,আমি যেন বুঝতে ‎না পারি যে তিনি আমার দিকে তাকিয়েছেন। নবী প্রেমের কি অপুর্ব খেলা ! এভাবে ৪০ দিন অতিবাহিত ‎হলো । মদিনার প্রভাবশালী নেতা কা’ব বিন মালিক । তাই অবরোধের সংবাদ বিদ্যুৎবেগে আশপামের ‎বিভিন্ন দেশেও ছড়িয়ে পড়ল।



মুসলমানদের সাথে কাফিরদের তখন তুমুল যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছে। অমুসলিম ‎রাষ্ট্রের শক্তিধর অধিপতিগণ মুহাম্মাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করার প্রস্তাবসহ কা’ব বিন ‎মালিকের কাছে দুত পাঠাল। প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় মেহমান হিসেবে তাদের দেশে চলে আসার আমন্ত্রনও ‎জানানো হলো। কা’ব বলেন’৪০ দিনের অবরোধে যত না কষ্ট পেয়েছি তারচেয়েও অনেক বেশী কষ্ট এ ‎জন্য পেয়েছি যে আমার কাছে এমন প্রস্তাব আসল কিভাবে? নিশ্চয় কাফেররা আমার আচরণ লক্ষ্য ‎করেছে যে আচরণে আমি রাসুলের অবরোধে সন্তুষ্ট নই বলে তাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।



যাইহোক,এভাবে ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আল্লাহ সুবহানুতায়ালা তাদের তওবা কবুল করার ‎ঘোষনা দেন এবং প্রিয়নবী (সাঃ) অবরোধ প্রত্যাহার করেন। (বিস্তারিত বুখারী শরীফ,কিতাবুল মাগাযী)‎



এমনি আরও অসংখ্য হাদিস আছে সাহাবী কেরামের শানে । সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা ও রাসুলে ‎কারীম (সাঃ) এর প্রতি তাদের ভালবাসার যৎ সামান্য বর্ণনা এখানে উল্লেখ করলাম। কাউকে ‎ভালবাসা,সম্মান দেখানোর এমন দৃষ্টান্ত কি কেউ দেখাতে পারবে কোনদিন ? হে আল্লাহ আমাদেরকে রাসুল (সাঃ) কে সঠিক পন্থায় ভালবাসার তৌফিক দান তরুন। আমিন



প্রথম প্রকাশ

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:২৩

ঠোঁট কাটা বন্ধু বলেছেন: প্রাকৃতিক প্রয়োজনে যেখানে অবতরন ‎করতেন তিনিও সেখানে অবতরন করতেন,তার প্রাকৃতিক প্রাকৃতিক প্রয়োজন না থাকলেও তিনি ‎অবতরন করে আবার চলতেন।


মানে কি? হাগা না ধরলেও ঐ জায়গায় গিয়া হাগার জন্য বইসা থাকতেন? =p~ =p~ =p~ =p~

এইরাম প্রেম তো জীবনেও দেখি নাই। কি শুনাইলেন ভাই!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.