![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রফেসর আলতাফ হোসেন সরকার, একজন শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিক্ষক, ব্যাকপেইন বিশেষজ্ঞ, সমাজকর্মী, স্বাস্থ বিষয়ক কলাম লেখক, বাংলাদেশ ফিজিেথেরাপি এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা উপদ্রেষ্টা, বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি প্রতিষ্ঠাতার প্রধান সম্পাদক, ব্যাকপেইন চিকিৎসায় উন্মোচন করেছেন এক নতুন দিগন্ত, সরবপরি আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা।
প্রফেসর আলতাফ হোসেন সরকার
স্যার টমাস ব্রাউনি বলেছেন, 'পৃথিবীকে আমি পান্থশালা মনে করি না। তবে এটি এমন একটি হাসপাতাল, যেখানে মানুষ বাঁচতে পারে না।' মানুষ মরণশীল এ কথা আমরা সবাই জানি। তারপরও আমরা যত দিন বাঁচি, সুস্থভাবে বাঁচতে চাই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভালো থাকতে চাই। চিকিৎসাবিজ্ঞানের নিত্যনতুন আবিষ্কার আমাদের জীবনকে করেছে স্বস্তিময়। আর এর সুবাদেই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা- স্পাইন, কোমর ও ঘাড় ব্যথায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা হিসেবে আজ পৃথিবীতে সমাদৃত। সুপ্রিয় পাঠক, আশা করি আমার এ লেখা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।
ব্যথা নেই বা জীবনে একবার কোমর ব্যথা হয়নি- এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের ৮০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক লোক জীবনের কোনো না কোনো সময় কোমর ব্যথায় ভুগে থাকেন। এমন কোনো পরিবার নেই, যে পরিবারের কোনো না কোনো সদস্যের কোমর বা মাজা ব্যথা নেই। শিরদাঁড়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিরদাঁড়া ছাড়া আমরা দাঁড়াতে পারি না। শিরদাঁড়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্পাইনাল কর্ড থাকে। শিরদাঁড়া আমাদের শরীরের ওজন বহন করে এবং কাজ করতে সাহায্য করে। ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ মাজার ব্যথার কারণ মেকনিক্যাল। শিরদাঁড়ার গঠন অনুযায়ী প্রথমে মাসলই বেশি ইনজুরি হয়। ব্যাকপেইন হওয়ার প্রধান কারণ বেশি সময় বসে কাজ করা, বসে এবং সামনে ঝুঁকে কাজ করা ও বসে-সামনে ঝুঁকে ডান বা বাম দিক থেকে কোনো কিছু নেয়া কিংবা হঠাৎ করে নিচু হয়ে ভারি বস্তু ওঠানো। এছাড়া ডিঙ্রে অসুস্থতা, শিরদাঁড়ায় টিউমার, ইনফেকশন এবং হাড়ভাঙার জন্যও মাজা বা কোমরে ব্যথা হতে পারে। তবে এসব কারণে যে ব্যথা হয়_ সে রকম রোগীর সংখ্যা খুবই কম। কোমর ব্যথা সাধারণত কোমরে থাকে, আবার কখনও কখনও ব্যথা কোমর থেকে হাঁটু বা পায়ের দিকে যায়। কোনো কোনো রোগীর বসে থাকলে বেশি ব্যথা হয় আবার কখনও কখনও হাঁটলে বেশি হয় এবং কখনও কখনও হাঁটলে আবার কমেও যায়। কোমর ব্যথার চিকিৎসা দুইভাবে করা হয়। তবে অপারেশন ব্যতীত বা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাই অন্যতম। কোমর ব্যথা রোগীদের অপারেশনের দরকার হয় খুব কম। যেমন- শতকরা তিন থেকে চারজনের অপারেশন দরকার হতে পারে।
ফিজিওথেরাপি শুরুর আগেই রোগীর সঠিকভাবে শারীরিক অ্যাসেসমেন্ট এবং ল্যাবরেটরি পরীক্ষা প্রয়োজন। কারণ সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা একমাত্র সঠিক অ্যাসেসমেন্ট এবং অন্যান্য পরীক্ষার ওপরই অধিকাংশ সময় নির্ভর করে। সঠিক শারীরিক পরীক্ষাই বের করে দেয় রোগীর কী কী অসুবিধা আছে বা কোনো মাসল, লিগামেন্ট, ডিঙ্ বা কোন কোন স্ট্রাকচারে অসুবিধা। ৩৪ বছরের অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি, সঠিক সমস্যা নির্ণয়ের মাধ্যমেই প্রকৃত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা করা সম্ভব।
আমি ফিজিওথেরাপি করি অ্যাভিডেন্স বেসড বা প্রমাণসাপেক্ষ। চিকিৎসার প্রয়োজনে রোগীর সমস্যাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন- অল্প দিনের অসুস্থতা এবং বেশি দিনের অসুস্থতা। আর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার জন্য আমি সম্পূর্ণ শিরদাঁড়াকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করি। অল্প দিনের অসুস্থতা বা কষ্টের জন্য অল্প বিশ্রাম, প্রাথমিকভাবে ব্যথানাশক ওষুধ, মাংসপেশি শিথিল করার জন্য মাসল রিলাকজেন্ট এবং এর সঙ্গে ভিটামিন সিডেটিভ ও ক্যালসিয়ামজাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। বিশ্রাম এবং ওষুধের সঙ্গে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অত্যাবশ্যক। অনেকেই বলে থাকেন, ব্যথা থাকা অবস্থায় ব্যায়াম করবেন না। কিন্তু আমি বলব, সঠিক ব্যায়াম ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। শুধু সঠিক ব্যায়ামই দ্রুত কোমর ব্যথা কমাতে তাৎক্ষণিক সাহায্য করে, তা প্রমাণিত।
ব্যাকপেইন বিশেষজ্ঞ
লেজার ফিজিওথেরাপি সেন্টার, পান্থপথ, ঢাকা ০১৭৬৫৬৬৮৮৪৬
©somewhere in net ltd.