নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক
আজ অনেকদিন পর লিখতে বসেছি। সামুতে ইদানীং খুব একটা আসা হয়না। কিন্তু প্রায়ই ঢুঁ দিয়ে সামুকে দেখে যাই। ভেবেছিলাম বাবা দিবসে আমার বাবাকে নিয়ে দু'কলম লিখবো কিন্তু হলো তার বিপরীতি। তবুও অসম্ভব রকম দুঃখবোধ থেকেই লিখতে বসলাম আজ বাবা দিবসে। ভেবেছিলাম অন্যান্য বারের মতোই বাবার স্মৃতিচারণ করেই কিছু লিখবো, হলোনা।
আজ লিখবো আমার দাদু'কে নিয়ে। আজ ১৬ই জুন, নিউ ইয়র্ক সময় ভোর রাত ৫টার দিকে হঠাৎ বড় ভাইয়ার ফোন পেয়ে রীতিমতো ভঢ়কে উঠেছিলাম। কলটা রিসিভ করতেই বড় ভাইয়া ওপাশ থেকে শুধু বললো, দাদু আর নেই। বলার মতো কিছু মুখ থেকে বের হলোনা। মাত্রই ঘুম থেকে উঠে এতবড় একটা দুঃসংবাদ শুনে মনে হচ্ছিলো কিছুক্ষণের জন্য বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু জিজ্ঞেস করলাম, কিভাবে? বড় ভাইয়া বললো সপ্তাহখানেক ধরেই নাকি খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। ডঃ দেখেও নাকি আশা ছেঁড়ে দিয়েছিলেন।
খুব বেশী কিছু আর বলতে পারলাম না। মনে হলো মুহূর্তের মধ্যেই আমি ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে গিয়েছিলাম অনেক অনেক আগের দিনগুলোতে। দাদু'র অনেক স্মৃতিই এখন আমার চোখে ভেসে আসছে। দেশ থেকে চলে আসার দিন আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করেছিলেন, বলেছিলেন, "দাদুভাই, তুমি আমাকে মাফ করে দিও যদি আর দেখা না হয়, আর পারলে খুব তাড়াতাড়িই একবার এসে ঘুরে যেও" কে জানতো যে দাদুর সাথে ওটাই আমার শেষ দেখা। এর মাঝে একবার দাদুকে স্কাইপিতে দেখেছিলাম, সে সময়ও একই কথা বলেছিলেন। ফোনে যে বার শেষ কথা হলো, তখনও তার বার বার একই কথা, "দাদু, দেশে কবে আসবা, আমাকে নাতবৌ দেখাবানা?"
ভাবতেই পারছিনা আর কিছু, সবকিছু এলোমেলো হয়ে আসছে। কি অসম্ভব রকম আদর আর ভালোবাসতেন আমাদের তা আর বলে বোঝানোর নয়। আমার বাবাও ছিলেন অসম্ভব রকম মা ভক্ত ছেলে। আমার দাদুকে দেখেছি, আমার বড় ভাইয়ার আর বাবাকে একসাথে মুখে তুলে খাইয়ে দিতে। এমন দৃশ্য ক'জন দেখেছেন জানিনা, কিন্তু আমার সৌভাগ্য হয়েছে। বাবা ওত বড় হওয়ার পরেও যেন সে তার মা'র সেই ছোট্ট ছেলেটিই ছিলো।
গ্রামের বাড়ীতে যখন বেড়াতে যেতাম, তখন দূর থেকেই দেখতাম দাদু যেন ঘর থেকে দৌড়ে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিত। বাবাকেও দেখতাম, কান্না করছে অঝোর ধারায়। মা-সন্তানের এই বাঁধন আমি আর দ্বিতীয়টি দেখিনি।
আজ বাবা দিবসে তাই বার বারই শুধু দাদীমার কথাই মনে পড়ছে। ভাবতেই পারছিনা দাদীমা আর নেই, আর কোনদিনও আমাকে নাতবৌ এনে দিতে বলবে না, আর কোনদিনও আমাকে দাদুভাই বলে জড়ায়ে ধরবেনা, আর কোনদিনও দেশে এসে শেষবার দেখে যাওয়ার কথা বলবেনা। বুক ফেঁটে কান্না আসছে।
সবাইকে শুধে বলে বেড়াতো আমার নাতী আমাকে অনেক আদর করে। একবার গাড়ী দূর্ঘটনায় দাদুর হাত ভেঙে গিয়েছিলো। হাসপাতালে দেখতে গেলেই আমি দাদীমাকে মুখে তুলে খাইয়ে দিতাম, সে কথা সে বলে বেড়িয়েছে মনে হয় পৃথিবীর সবাইকেই
আজ দাদীমা কেবলই স্মৃতি, তবুও বলবো, দাদীমা এই নশ্বর পৃথিবী ছেঁড়ে চলে গেছেন ঠিকই কিন্তু সে বেঁচে থাকবেন আমাদের সবার হৃদয়ে। আজ বাবা দিবসে তোমাকে অনেক মনে পড়ছে দাদীমা, আমি এই পৃথিবীতে আছি তোমার কারণেই । আমি বাবা পেয়েছি তুমি ছিলে বলেই। তুমি যেখানেই থাকো, অনেক অনেক ভালো থেকো। মন থেকে প্রার্থনা করি, মহান সৃষ্টিকর্তা তোমার মঙ্গল করুন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৪৩
পরিতোষ পাল বলেছেন: বাবা দিবসে দাদুকে নিয়ে? ঠিকই আছে। সেও তো একজনের বাবা। আপনার বাবার বাবা। লেখায় প্লাস