নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক
ক'দিন আগেই একটা লিখা লিখেছিলাম ই-বে'তে কেনাকাটার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে। আজ শেয়ার করছি এ্যামাজনের ছোট্ট একটা অভিজ্ঞতা।
মাসখানেক ধরেই ভাবছি, আমার কম্পিউটারটির মেমরি বাড়িয়ে নেয়ার জন্য। কম্পিউটারটি তৈরী করার সময় ২০১৮ সালে অনেক কিছু না ভেবেই কোরসেয়ারের ১৬ গি.বা. (৩০০০ মেগাহার্টজ) মেমরি অর্ডার করেছিলাম ২০০ ডলার দিয়ে। ওভারক্লকিং করিনা বিধায় ৩০০০ মেগাহার্টজ এর মেমরি আমার প্রয়োজন নেই ২৬৬৬ মেগাহার্টজ-ই মূলত আমার মাদারবোর্ডের জন্য প্রয়োজন। এখন তুলনামূলকভাবে মেমরির দাম কমে যাওয়ায়, সপ্তাহখানেক আগে স্যামসাং ব্র্যান্ডের ৩২ গি.বা. (২x১৬) মেমরি (২৬৬৬ মেগাহার্টজ) কিট অর্ডার করেছিলাম এ্যামাজন থেকে ১৫০ ডলারে। কিছুক্ষন পরেই দেখতে পেলাম সম গতির মেমরি ক্রুশাল ব্র্যান্ড বিক্রি করছে ১১৩ ডলারে। সাথে সাথে স্যামসাং মেমরির অর্ডার ক্যান্সেল করার রিকোয়েস্ট পাঠালাম। পরদিন দেখলাম তারা আর অনুরোধে অর্ডার ক্যান্সেল করেছে আর আমার কার্ডেও কোন চার্জ হয় নি। খুশি মনে ক্রুশাল মেমরির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আজ দুপুরে বাসার সামনে গিয়ে দেখি দুটো ছোট বক্স এসেছে। কিছুটা অবাক হলাম।
বাসায় এসে বক্স খুলে দেখি দুটো মেমরি-ই এসে হাজির! স্যামসাং এর দুটো আর ক্রুশালের দুটো। সব মিলিয়ে চারটি মেমরি এসে হাজির। মনে মনে কিছুটা খুশি হলেও এই ভেবে খারাপ লাগছিলো যে কারো হয়তো কিছুটা ক্ষতি হয়ে গেলো। দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার সময় বারবারই মনে হচ্ছিলো মেমরিটা ফেরত দেয়া উচিত। বিবেকের তাড়নায় না পেরে শেষ পর্যন্ত স্যামসাং মেমরি এর বিক্রেতার কন্টাক্ট খুঁজে বের করতে হলো কষ্ট করে। কারণ অর্ডার ক্যান্সেল হওয়ার কারণে ঐ বিক্রেতার কন্টাক্ট পেইজ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। যাইহোক শেষ পর্যন্ত, তাদের মেসেজ পাঠিয়েছি। তাদের উত্তরের অপেক্ষায় আছি।
এরকম আরো কয়েকবার হয়েছে। একবারতো বিক্রেতাকে খুঁজে না পেয়ে এ্যামাজনে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা সততায় মুগ্ধ হয়ে আমাকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি ১০ ডলার ক্রেডিট দিয়েছিলো। বেশ ভালো লেগেছিলো এই ভেবে যে, কখনো কখনো সততার পুরস্কারও পাওয়া যায়! সততার মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি কখনো কখনো আর্থিক প্রশান্তিও পাওয়া যায় দেখছি।
এরকম কাকতালীয় বিষয় ছাড়াও স্বাভাবিকভাবে এ্যামাজনে কেনাকাটার অভিজ্ঞতা আমার বেশ ভালো। আপনি কি এ্যামাজনে কেনাকাটা করেছেন? করে থাকলে আপনার এরকম মজার অভিজ্ঞতা থেকে থাকেলে তাও শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
আপডেট (আগস্ট ৮, ২০২০): বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করার পর বিক্রেতা স্বীকার করেছে যে, তারা ভুল করে পণ্যটি আমার কাছে পাঠানো হয়েছে। আমি তাদেরকে জানানোর কারণে তারা ধন্যবাদ দিয়ে পণ্যটি ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করেছে। পণ্যটি ফেরত পাঠানোর জন্য আমাকে রিটার্ন লেবেল পাঠালেও তা প্রিন্ট করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তাদেরকে অনুরোধ করেছি যাতে তারা আমাকে একটি খালি প্যাকেট লেবেলসহ পাঠিয়ে দেয় যাতে আমি পণ্যটি ফেরত পাঠাতে পারি। এ ব্যাপারে এ্যামাজনের সাথে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি তাদের অবহিত করেছি এবং এ্যামাজন আমাকে আশ্বস্ত করেছে যে, তারা-ই বিক্রেতাকে অনুরোধ করবে যেন তারা আমার বাসায় কুরিয়ার সার্ভিসের লোক পাঠায় যাতে আমি পণ্যটি ফেরত পাঠাতে পারি।
আপডেট (আগস্ট ১০, ২০২০): পণ্য বিক্রেতা মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়েছে যে, তারা শুধুমাত্র পণ্য ফেরত পাঠানোর লেবেল পাঠাতে পারবে এর চেয়ে বেশী কিছু নয়। তারা এও জানিয়েছে আমি নিজের খরচে লেবেল প্রিন্ট করে পণ্য ফেরত না পাঠালে তারা আমাকে পন্যের দাম চার্জ করবে। আমি তাদের মেসেজ এর উত্তর এ এটাই বলেছি যে, আমি নিজ খরচে পণ্য ফেরত পাঠাচ্ছি না। আমি এ্যামাজনের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তারাও জানিয়েছে আমাকে কোন পদক্ষেপ নিতে হবে না। বিক্রেতা আপনার কাছে কুরিয়ার সার্ভিসের লোক পাঠিয়ে পণ্য ফেরত না নিলে আপনাকে পণ্য ফেরত পাঠাতে হবে না। বিক্রেতা আপনাকে টাকা চার্জ করলে আপনি এ্যামাজনের সাথে যোগাযোগ করবেন, এ্যামাজন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে এবং আপনার টাকা ফেরত দেয়া হবে। আগামী ৪৮ ঘন্টা আপনি তাদের মেসেজ এর দিকে লক্ষ্য রাখুন, দেখুন তারা কুরিয়ার সার্ভিসের লোক পাঠায় কি না বা অন্য কোন ব্যাবস্থা নেয় কি না।
আপডেট (আগস্ট ১৬, ২০২০): এ মাসের ১২ তারিখে আমি ব্যক্তিগতভাবে প্যাকেজটি পোস্ট অফিসে গিয়ে "আর.টি.এস." বা রিটার্ন টু সেন্ডার লিখে দিয়ে এসেছিলাম। আজ অনলাইনে চেক করে দেখলাম পণ্যটি এখনো পথে আছে তবে তা নিউ ইয়র্ক ছেড়ে অন্য স্টেটে চলে গেছে বা প্রেরকের ঠিকানায় ফেরত যাচ্ছে। দু'দিন আগেই আমি প্রেরক-কে এ ব্যাপারে মেসেজ দিয়ে জানিয়েছি। গতকাল শনিবার হওয়া সত্ত্বেও প্রেরক আবারও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:০১
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:৩০
দারাশিকো বলেছেন: অ্যামাজনে কখনও কেনাকাটা করিনি। কিন্তু আপনার অভিজ্ঞতা জেনে খুবই ভালো লাগলো। এ ধরনের ভুল হয়তো আমাদের দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোও করে। আপনার মতো কেউ ফেরত দিয়েছে - এরকম ঘটনা শুনিনি। বরং, প্রোডাক্ট মেরে দিয়েছে, টাকা কম দিয়েছে - ইত্যাদি ঘটনা অনেক শুনে ফেললাম।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:০৪
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: একটা সুস্থ এবং স্বাভাবিক সমাজের জন্য নৈতিকতা অত্যাবশ্যক। বিক্রেতা আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেইল পাঠিয়েছে এবং এটাও স্বীকার করেছে যে ওটা তাদের ভুল ছিলো। খুব শীঘ্রই ফেরত পাঠাতে পারবো বলে মনে হচ্ছে। আমার মেইলের উত্তর দিতে দেরী করায়, আমি সরাসরি এ্যামাজনে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা বলেছে, বাসায় কোন কুরিয়ারের লোক পাঠাবে যাতে আমাকে কষ্ট করে বাইরে গিয়ে পাঠাতে না হয়। কথার শেষে এ্যামাজনের ভদ্র মহিলা ধন্যবাদ দিতেও ভুলে যান নি। যাইহোক দেখা যাক।
৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:২৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার সততা ও নিষ্ঠায় মুগ্ধ হলাম। সবার জন্য এটা শিক্ষণীয়। আমাদের সবার মনোভাবই এমন হওয়া জরুরি।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:১১
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আসলে মূল বিষয় ছিলো আত্মতুষ্টি। বাবা প্রায়ই বলতেন, "মানুষের উপকার করার চেষ্টা করবে সবসময়, না পারলেও অন্তত যেন তোমাকে দিয়ে কারোর ক্ষতি না হয়। কারণ দিন শেষে অসৎ প্রমাণিত হলে সবাই মানুষের পিতা-মাতা বা পরিবারকে দোষারোপ করবে, আর সৎ হলে হয়তো তোমার কারণে আমাকেও তারা মনে মনে একটা ধন্যবাদ দেবেন। বড় হয়েছো, এখন থেকে আমাদের সম্মানও তোমাদের হাতেই থাকবে। যেটাই করোনা কেন, ভেবে-চিন্তে করো।" দেশ ছেড়ে আসার আগের দিন বিছানায় শুয়ে বাবার বলা ঐ কথাগুলো আমি ভুলিনি। আজ বাবা নেই, তবুও তার দেয়া উপদেশগুলো আমি ধারন করেই বাঁচতে চাই। কোন কারণে তার অসম্মান হোক এটা আমি কখনোই চাইনা, এটাই মূল কথা। ধন্যবাদ।
৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:২৬
ঢুকিচেপা বলেছেন: আপনার গল্প পড়ে ভাল লাগলো।
সততার পুরস্কার অবশ্যই পাওয়া যায় তবে কোন কোন ক্ষেত্রে একটু দেরি হয় এই যা।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:১৫
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আসলে পুরষ্কার কখনো কখনো পাওয়া যায়, কখনো যায় না, কখনো বা উল্টোটাও ঘটে। তবু সততার একটা আপন মহিমা আছে, একটা শক্তি আছে। এটা এতটাই শক্তিশালী যে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার সামনে দাঁড়িয়েও আপনি বলতে পারবেন যে আপনি সৎ ছিলেন। পৃথিবীতে তার মূল্যায়ন হোক বা না হোক সেটা একদিন অবশ্যই মূল্যায়িত হবেই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ দিন দিন অনলাইনের দিকে ঝুকছে। ঘর থেকে বাইরে পা ফেললেই বড় বড় শপিং মল। তবু কেন মানুষ অনলাইনে অর্ডার দেয়!!
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৫১
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: বাংলাদেশের অবস্থা জানিনা। আমেরিকাতে ব্যপারটা মোটেও তেমন নয়, বরং উল্টো। কম্পিউটার যন্ত্রাংশ সম্পর্কিত দোকানগুলো সব বন্ধ হয়ে গেছে। এ্যামাজন, ইবে, নিউএগ এসে সব ব্যবসার চাট্টি-পাট্টি গোল করে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ ভোর ৬:৫৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।