নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারণ একজন মানুষ। বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। মনের ভাবনাগুলো তুলে ধরতে চাই। ভালো লাগে কবিতা, লিখা-লিখি আর ছবি তোলা, এইতো! https://prokashoni.net

ইফতেখার ভূইয়া

গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক

ইফতেখার ভূইয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে বেড়াতে যাওয়া

১৩ ই মার্চ, ২০২২ রাত ২:২২

করোনার মধ্যে আমার বাংলাদেশে আসার ইচ্ছে ছিলো না। কিন্তু আমার নবাব পুত্রের জন্মদিনের কথা মাথায় রেখে এক প্রকার আসতেই হলো। সন্তানের মায়া যে কি জিনিস ব্যাপারগুলো বেশ বুঝতে পারছি ভালোভাবেই। নভেম্বরের শেষ দিকে দেশের মাটিতে পা রেখেছি। বেশ ক'মাস চলে গেছে কিন্তু সামুতে ঘুরে গেলেও লিখার মতো সময় হয় নি। ঐ যে নবাব পুত্র!

আমি বরাবরই টার্কিশে ফ্লাই করি। অবশ্য ২০১৯ সালে বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনেস আসতে হয়েছিলো। অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো নয়। এবারও আসার আগে টিকিট পাচ্ছিলাম না মনমতো অন্যদিকে হাতে সময়ও কম ছিলো তাই এবারও অনেকটা ইচ্ছের বিরুদ্ধে সাউদিয়া এয়ারে এসেছি। যাথারীতি অভিজ্ঞতা ভালো নয়। আমি বরাবরই মধ্য প্রাচ্যের এয়ারলানইসগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি নানাবিধ কারনে।

নিউ ইয়র্ক থেকে যাত্রা করার সময় তেমন কোন অসুবিধা হয় নি। বিমান যথারীতি রিয়াদ এয়ারপোর্টে নামতেই দেখি দক্ষিণ এশিয়ার লোকজনদের প্রচুর আনাগোনা, তবে বাংলাদেশীই বেশী চোখে পড়েছে। এয়ারপোর্টের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মীগুলোর বেশীরভাগই বাংলাদেশী। এয়ারপোর্টে নামার পর আমাদের তাপমাত্রা চেক করা হলো সেই সাথে কোভিড পরীক্ষার সনদ। সুর্নিদিষ্ট একটা গেইট খুঁজছিলাম, হঠাৎ এয়ারপোর্টে বোরকা পরিহিত (আইডি ঝোলানো দেখে বুঝেছি উনি এয়াপোর্টের কর্মরত ব্যক্তি) একজনকে দেখলাম ক্রমাগত বাচ্চাদের মতো তার ফোন টিপেই যাচ্ছে, সেলফি তুলছে। তাকে জিজ্ঞেস করতেই আমাকে পথ দেখিয়ে দিলেন।

এয়ারপোর্টটা ঘুরে কিছু ভিডিও করা হলো, ছবি তোলা হলো। দীর্ঘ জার্নি করে এসে ভীষণ ক্লান্ত আমি। এবার অপক্ষোর পালা আরেক যাত্রার। বসে অপেক্ষা করছি আর একজন দু'জন করে স্বদেশী লোকজন আসা যাওয়া করছেন। তাদের বাহারী রঙের ড্রেস আর অদ্ভুত ড্রেসিং সেন্স, হাতে থাকা ক্যারী অন লাগেজ/ব্যাগের সাইজ দেখে ঠোঁটের কোনে কিছুটা হাসি এসে গিয়েছিলো, তবে সেটা খুব বেশীক্ষণ স্থায়ী হয় নি। কিছুক্ষণ পরে তাদেরই কেউএকজন, পাশে বসে কোন মাস্ক ছাড়াই উচ্চস্বরে ফোনে কথা বলতে শুরু করলো। খুব সম্ভবত তার আত্মীয়-স্বজন হবে, তার আসার ব্যাপারে কথা বলছে। দেশ থেকে মাইক্রোবাসে কে কে আসবে সে কথা হচ্ছে। তিনি আমার খুব কাছাকাছি বসে আছেন, কারন চার্জিং আউটলেটও আমার সীটের কাছে। কিছুক্ষণ পরেও তার কথা শেষ হতে না দেখে উঠে গেলাম, ভাবলাম একটু হেটে আসি।

বলে রাখা ভালো আমি বাসায় বা অফিসে থাকলে আমার ফোন সাইলেন্ট মোডে রাখতে পছন্দ করি। ফোনে রিং হওয়ার শব্দ আমার ভীষণ বিরক্ত লাগে। আমি আগেও লক্ষ্য করেছি, আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার লোকজন ফোনে অসম্ভব রকম উচ্চস্বরে কথা বলেন। প্রবাসে একটু কম হলেও বাংলাদেশে এর অবস্থা ভয়াবহ ও অস্বাস্থ্যকর। অনেকে পাবলিক প্লেসেও স্পীকারে কথা বলেন যা আশেপাশের অনেকেই শুনতে পান। বিষয়গুলো সবারই একটু ভেবে দেখা প্রয়োজন।

যাইহোক এসে দেখি, অবস্থা আগের চেয়েও খারাপ। এখন লোকজনের সংখ্যা আগের চেয়েও বেশী আর ফোনে উচ্চস্বরে চেঁচাচ্ছেন অনেকেই। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে রইলাম। প্লেনে চড়ে ঢাকা পর্যন্ত আসার অভিজ্ঞতাও ভালো নয়। প্লেন ল্যান্ড করার সাথে সাথে বাসের যাত্রীদের মতো একজন আরেকজনের গায়ে উঠে যাওয়ার উপক্রম হলো। আমি সিটে বসে আছি কারণ আমি সবার শেষে বের হবো। ইতোমধ্যেই একজন এসে তার ব্যাগ দিয়ে গুতো দিয়ে দিলেন। দোষ পড়লো পেছনের যদু-মধু'র। অনুরোধ করলাম ব্যাগটা সরিয়ে একটু সরে দাঁড়াতে। তীক্ষ্ম জবাব এলো, "এত বুঝেন তো সৌদী গেছেন ক্যান?" এর উত্তর আমার জানা ছিলো না। পাশের বাঙালী ভাই অবশ্য আমাকে চুপ থাকার অনুরোধ করলেন।

অনেক ধাক্কা-ধাক্কি পেড়িয়ে দেশে নেমে ট্যাক্সি পেতে বেগ পেতে হলো। ঘন্টাখানেকের বেশী দাঁড়িয়ে থেকে ট্যাক্সি পাওয়া গিয়েছিলো বটে তবে তার আগে কয়েক'শ মশার কামড় খেয়ে আমি খানিকটা বিরক্ত হলেও বাড়ি ফিরে নবাব পুত্রের বদন দেখে সব ভুলে গিয়েছিলাম।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৪:০৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: মিয়া ভাইয়ের সাথে যখন শেষ কথা হয়েছিলো, তখন আপনি বিবি খুঁজতেছিলেন। আর এর মধ্যে বাবুও পয়দা হয়ে গেছে। জেনে আনন্দ লাগলো। (হয়ত গেস করতে পারবেন যে আমি কে, পরিচয় বইলা দিয়েন না সবটেরে)।

আপনি যাচ্ছেনই বাংলাদেশে, বাংলাদেশী ভাইদের সাথে বসলে এমনটা হবে এটাই স্বাভাবিক ধরে নেওয়া যায়। সৌদীতে কতজনই বা শিক্ষিত মানুষ আসে বাংলাদেশ থেকে। আমাদেরও বিরক্ত হতে হয় যাওয়ার সময়। কিন্তু সব কিছু হাসি মুখে মেনে নেই। সব কিছুর পরে গিয়ে সবাই আমরা ভাই ভাই।

সৌদীরা প্রায় সবাই মোবাইলে ডুবে থাকতে পছন্দ করে। এয়ারপোর্টে যেই আপুনির সাথে দেখা হয়েছে, তিনিও তার ব্যতিক্রম নন।

আমি বেশী দেশের এয়ারপোর্টে যাই নাই। তবে যতগুলিতে গিয়েছি, তার মধ্যে আমার রিয়াদ ও যেদ্দার এয়ারপোর্টই ভালো লেগেছে। সাধারণ পরিবেশ খুবই চমৎকার। সৌদী লোকাল শহর গুলিতে সাধারণত সৌদীরাই বিমানে যাতায়াত করে; বিদেশীরা তেমন যায় না। তাই ডোমেস্টিকে আরও ভালো লাগে।

দুবাই এয়ারপোর্টে গিয়ে বিরক্ত হয়েছি। সবাই দেখি রাস্তার উপরে শুয়ে ঘুমায় আছে। এবং এই সবার মধ্যে মূলত ইউরোপ আমেরিকার লোকজনই বেশী। জায়গা পেলেই শুয়ে পড়ে, পরে পুলিশ এসে এদের উঠায়। দুবাই এয়ারপোর্টে বাংলাদেশী বা এশিয়ার লোকজন এমনটা করে না।

দুবাই এয়ারপোর্টে সব থেকে বেশী বিরক্ত হতে হয় ইউরোপ আমেরিকার পোলাপাইনের জন্য। এরা চিৎকার চেচামিচি করবে; কিন্তু বাপ-মায় কিচ্ছু কইবো না। ঝাপাঝাপি করে লোকজনের গায়ে পড়ে, এর এটা ফালায়, ওর ঐটা ফালায়। আবার কিছু বলা যাবে না!

১৩ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:২১

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: হুম বুঝলাম, আগামীতে ওদিকটায় আর যাওয়ার ইচ্ছে আপাতত আর নেই।

২| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:১৯

রানার ব্লগ বলেছেন: বাজে অভিজ্ঞতা !!!

১৩ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:২২

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: দুঃখজনক অবশ্যই।

৩| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: এখনও কি দেশে আছেন?
পরিবারকে নিজের কাছে নিয়ে যান।
এমিরাত এয়ারলাইন্স এঁর সার্ভিস ভালো । একবার ভ্রমন করে দেখুন।

১৩ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:২৪

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: জানুয়ারির শেষে চলে আসার কথা ছিলো, পরিবারের অনুরোধে টিকিট আবার মার্চের প্রথম দিকে কেটে চলে এসেছি। পরিবার নিয়ে যাবো অবশ্যই ইনশাআল্লাহ, সেটাই ভালো বলে মনে হয়। এমিরাতেও এখনো ভ্রমণ করিনি, পারতপক্ষে আমি মধ্যপ্রাচ্য এড়িয়ে চলতে চাচ্ছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.