![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'তুই যে বাবা আমারে দেইখা হাসোস, এইডাই আমার ভালো লাগে' - হান্নানের মা এই কথাগুলো বলল আমাকে। উনি অবশ্য হ্যালার মা নামে বেশি পরিচিত। গরিব কাজের বুয়ার ছেলেকে হান্নান বলাটা বড়ই বেমানান।হ্যালা নামটা যুত্সই।গরিব গরিব লাগে। আমাদের বাসায় কাজ করত প্রায় পনেরো থেকে বিশ বছর আগে।আমরা অনেক ছোট ছিলাম।তাদের কষ্ট খুব বেশি বুঝতাম না।তার ছোট ছেলে মান্নান সারাক্ষণ খাবার খেতে চাইতো।কেউ কিছু খাচ্ছে দেখলে বলত - "কি খাছ? কি খাছ? দ্যা দ্যা"।দে বলতে পারতোনা।আমরা ওকে নিয়ে মজা করতাম।কিছু মুখে না নিয়েই মুখ নাড়াতাম ওর সামনে।আর ও বলে উঠত - "কি খাছ? কি খাছ? দ্যা দ্যা"।ভাবলেই এখন লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যায়।সেই মান্নান মারা গেল বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে।বৃষ্টির মধ্যে খেলতে খেলতে বৈদ্যুতিক খুটি স্পর্শ করেছিলো।কি মর্মান্তিক মৃত্যু! হ্যালার মা এরপর অনেকদিন কারো বাসায় কাজ করেনি।কিভাবে চলেছে কে জানে।হান্নানের বাবা ছিল নেশাসক্ত।সেও টাকা না পেয়ে নিরুদ্দেশ হলো।আমাদের এলাকার এক ছোটখাটো সন্ত্রাসীর(এখন ভালো, শুধু গাজা খায় ) মা তাকে আশ্রয় দিল।হান্নান একটু বড় হয়ে চাকরি করতে চলে গেল ঢাকার বাইরে।আমি তাকে আর দেখি নি।হান্নানের মা একাই থাকেন।রাস্তায় বসে পিঠা বানান।নিজের জন্য বাচেন।কোনো স্বপ্ন নেই।শুধু বেচে থাকা।আমি তার সামনে গেলে কিছু বলেনা।ভাবে এক রাস্তার পিঠাওয়ালা মহিলা আমার সাথে কথা বললে আমার সম্মান কমে যাবে কি না! তাই চুপ করে থাকে, কিছু বলেনা। আমি নিজেও গুছিয়ে, মানুষকে খুশি করে কথা বলতে সাহস পাই না।দেখা যায় উল্টো সে আমার কোথায় কষ্ট পায়। তাই আমিও চুপ করে থাকি, শুধু এক গাল হাসি।আজ দেখলাম ইফতার তৈরী করেছেন উনি বিক্রির জন্য।অন্য একটা দোকান থেকে বুন্দিয়া নেয়ার পর উনার সাথে দেখা হওয়ায় বললাম - "আজ আপনার থেকে কিছু নিতে পারলাম না।" উনি বললেন "তুই যে বাবা আমারে দেইখা হাসোস, এইডাই আমার ভালো লাগে"।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২৭
এন ইউ এমিল বলেছেন: হাসি দিয়ে যে সম্মান টুকু আপনি ওনাকে করেন সেটুকুতে ওনি অনে খুশি, উনি নিশ্চই অনেক ভাল মানুষ