![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কেন জানি মনে হয়, নিজেকে এখনও চিনতে পারিনি। প্রতিনিয়ত নিজেকে জানার চেষ্টা করছি।
লোকটিকে দেখে কি মনে হয় আপনাদের ?
উনার নাম হলধর নাগ। ১৯৫০ সালে উড়িষ্যার বরগড় জেলার এক হতদরিদ্র ঘরে জন্ম নেন। ক্লাশ থ্রি‘তে পড়ার সময় মাত্র ১০ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে জীবনযুদ্ধে নেমেছিলেন। বাধ্য হয়ে লেখাপড়ার পাঠ ক্লাশ থ্রি‘তেই চুকিয়ে ফেলেন।
তারপর.........সব গল্প !
* সম্প্রতি তিনি ভারতের তৃতীয় বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হয়েছেন।
* স্কুলের গন্ডি পার হতে না পারা এই কবির কবিতা গবেষণা করে পাঁচজন এরইমধ্যে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন, চৌদ্দজন স্কলার এখনও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
* উড়িষ্যা জেলার সাম্বালপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ‘হলধর গ্রন্থাবলী’।
* উনার লেখার কৌশল ‘হলধর ধারা’ নামে একটি নতুন কাব্যধারা হিসেবে পরিচিত।
১০ বছর বয়সে জীবন শুরু করেছিলেন বাসন মাজার কাজ করে। এরপর নিজ গ্রামেরই এক স্কুল হোস্টেলে রাঁধুনির কাজ পান। টানা ১৬ বছর ওই স্কুলেই করেছেন রান্নার কাজ। সেখানে রান্নায় সাহায্য করতে আসা মালতী নামের মেয়েটিকেই এক সময় ভালো লেগে যায় হলধর নাগের। ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে রান্না ঘরের দেয়ালে কয়লা দিয়ে কবিতা লেখা শুরু করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত হলধরের ভালোবাসার কাছে ধরা দেন মালতী, বিয়েও করেন তারা। ততদিনে রান্না ঘরের দেয়াল ভরে যায় হলধরের লেখা অসংখ্য কবিতায়।
বিয়ের পর নতুন জীবনকে অন্যভাবে শুরু করতে চেয়েছিলেন হলধর। তাই স্কুলের শিক্ষকদের পরামর্শে রাঁধুনির কাজ ছেড়ে দিয়ে স্কুল গেটের পাশেই বই-খাতার দোকান দিয়ে বসেন। কাগজে-কলমে সেই থেকেই কবিতা লেখার শুরু।
লোক কবি হলধর নাগ শুধু কবিই নন, তার চেয়ে বেশি কিছু। শুনলে অবাক হতে হয়- এই কবি যত কবিতা ও কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন, পুরোটাই তার মুখস্থ! কেউ যদি কোনো কবিতার নাম, চরিত্র বা দু-এক চরণ উল্লেখ করে তাকে ওই কবিতা বলতে বলেন, তাহলে না দেখেই হড়হড় করে পুরো কবিতা বলে দিতে পারেন তিনি। বিশ্বে অনেক কবি, মহাকবির নাম শুনেছি আমরা। কিন্তু এমন চারণ কবির নাম শুনেছি কি- যিনি নিজের লেখা প্রতিটি কবিতা এমন কি পুরো কাব্যগ্রন্থ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুখস্থ বলতে পারেন? হলধর নাগ তা পারেন। এ জন্য তাকে ‘অলৌকিক’ কবিও বলা যায়।
©somewhere in net ltd.