নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাভারতের গপ্পো - ০০৪

২৪ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:১৩

রুরু-প্রমদ্বারা
ভৃগুর পুত্র চ্যবনের স্ত্রীর নাম সুকন্যা, তাদের পুত্র প্রমতি। প্রমতির ঔরসে ঘৃতাচীর গর্ভে তাদের পুত্র রুরু জন্ম নেয়।



গন্ধর্বরাজ বিশ্বাবসুর সাথে সহবাসের ফলে স্বর্গের গায়িকা ও নর্তকী মেনকা গর্ভবতী হয়। মেনকা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে তাকে স্থুলকেশ মুনির আশ্রমের পাশে নদীর তীরে ফেলে যায়। মহর্ষি স্থুলকেশ সেই শিশু কন্যাটিকে দেখতে পেয়ে তাকে নিজের আশ্রমে এনে লালন-পালন করেন। মহর্ষি তার নাম রাখলেন প্রমদ্বারা



রুরু সেই প্রমদ্বারাকে দেখে বিয়ে করতে চাইলেন। কিছুদিন পরে বিয়ের কয়েকদিন আগে প্রমদ্বারা তার সখীদের সঙ্গে খেলা করার সময় না দেখে একটি সাপের গায়ে পা দিয়ে ফেলেন। সাপটি তাকে দংশন করলে প্রমদ্বারা বিষের কারণে মারা গেলো।

রুরু তখন মনের দুঃখে বনে গিয়ে বিলাপ করতে লাগলো। রুরুর বিলাপ শুনে দেবতারা একজন দূত পাঠালেন। দেবদূত রুরুকে জানালো প্রমদ্বারার আয়ু শেষ হয়েগেছে। তবে রুরু যদি প্রমদ্বারাকে নিজের আয়ুর অর্ধেক দান করে তাহলেই কেবল প্রমদ্বারা জীবন ফিরে পেতে পারে। রুরু তার অর্ধেক আয়ু প্রমদ্বারাকে দিয়ে দিতে রাজি হলেন।

প্রমদ্বারার পিতা গন্ধর্বরাজ বিশ্বাবসু দেবদূতের সঙ্গে যমের কাছে গিয়ে রুরুর অর্ধেক আয়ু প্রমদ্বারাকে দেয়ার কথা জানালেন। যম বিষয়টি মেনে নিয়ে তখনই প্রমদ্বারাকে জীবন ফিরিয়ে দিলো। মহানন্দে বর কন্যার বিবাহ হয়ে গেলো।



ডুন্ডুভ
এই ঘটনায় রুরু অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হয়ে সাপের বংশ নিশ্চিহ্ন করার প্রতিজ্ঞা করলেন এবং সকল প্রকার সাপই মারতে শুরু করলেন। একদিন তিনি বনে গিয়ে দেখলেন এক বৃদ্ধ ডুন্ডুভ (ঢ়োরাসাপ) শুয়ে আছে। রুরু তখনই তাঁকে মারতে গেলেন। তখন-
ডুন্ডুভ বললেন- "আমি কোনও অপরাধ করিনি, তবে কেন আমায় মারতে চান?"
রুরু বললেন- "আমার স্ত্রীকে সাপে কামড়ে ছিল, সেজন্য প্রতিজ্ঞা করেছি সাপ দেখলেই মারব।"
ডুন্ডুভ বললেন- "যারা মানুষকে দংশন করে তাঁরা অন্যজাতী সাপ, আপনি ধর্মজ্ঞ হয়ে বিষহীন ঢ়োরাসাপ হত্যা করতে পারেন না।
রুরু বললেন- "তুমি আসলে কে?"
ডুন্ডভ বললেন- "আমি সহস্রপাৎ নামে ঋষি ছিলাম। আমার এক ব্রাহ্মণ বন্ধুর নাম ছিলো খগম। একদিন তিনি অগ্নিহোত্র যজ্ঞ করছিলেন। সেই সময়ে আমি দুষ্টমি করে একটি বিষহীন নকল সাপ নিয়ে তাকে ভয় দেখিয়েছিলাম। সেটি দেখে তিনি ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফিরে পেয়ে তিনি প্রচন্ড রেগে গিয়ে বললেন, "নির্বিষ সাপ দিয়ে আমাকে যেমন ভয় দেখিয়েছো, আমার শাপে তুমিও নির্বিষ সাপ হবে। তবে প্রমতির পুত্র রুরুর দর্শন পেলে তুমি শাপমুক্ত হবে
তুমি সেই রুরু, আজ আমি শাপ মুক্ত হয়ে পূর্বের রূপ ফিরে পাবো।

ঋষি সহস্রপাৎ নিজের আসল রূপ ফিরে পেয়ে বললেন-

অহিংসা পরমোধর্মঃ সর্বপ্রাণভৃতাং স্মৃতঃ।।
তস্মাৎ প্রাণভুতঃ সর্বান্ন ন হিংস্যাদ ব্রাহ্মণঃ ক্বচিৎ।

অর্থ- সর্ব প্রাণীর অহিংসাই পরম ধর্ম; অতএব, ব্রাহ্মণ, কখনও কোনও প্রাণীর হিংসা করবেন না।

সহস্রপাৎ বললেন- "অতীতে জনমেজয়ের সর্পযজ্ঞে সমস্ত সাপেরা মারা পরছিলো। কিন্তু তপোবলসম্পন্ন আস্তীক মুনি সাপদের রক্ষা করেছিলেন। এই বলে তিনি চলে গেলেন। তারপর রুরু আশ্রমে এসে তার পিতার কাছে সর্পযজ্ঞের কাহিনী শুনলেন।

====================================================================

বিশেষ ঘোষণা : হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ মহাভারতের কথা আমরা সকলেই জানি। আমি এটিকে পড়ছি একটি কল্পকাহিনীর সাহিত্য হিসেবে, ধর্মগ্রন্থ হিসেবে নয়। এই গ্রন্থে প্রচুর উদ্ভট কল্পকাহিনী রয়েছে। সেগুলিই আমি এই সিরিজে পেশ করবো। যারা মহাভারত পড়েননি তারা এখান থেকে ধারাবাহিক ভাবে সেগুলি জেনে যাবেন।

লেখার সূত্র : কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস কৃত মহাভারত : অনুবাদক - রাজশেখর বসু।
ছবির সূত্র : এই সিরিজে ব্যবহৃত সকল ছবি বিভিন্ন সাইট থেকে সংগৃহীত।


====================================================================

সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
মহাভারতের গপ্পো - ০০১, মহাভারতের গপ্পো - ০০২, মহাভারতের গপ্পো - ০০৩

====================================================================

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৩৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর।+

২৪ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৫২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৪৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা করেছেন। কিন্তু মূর্তির হাত, পা কি আপনি ভেঙ্গেছেন? :) নাকি পোশাকের কারণে অন্য কেউ ভেঙ্গেছে।

২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি ভাঙ্গি নাই, আমি মহাভারতে হাত রেখে শপথ করে বলতে পারি ঐ মূর্তির হাত-পা ভাঙ্গায় আমার কোনো হাত নাই। ডান হাতও নাই বাম হাতও নাই, এমনকি অজুহাতও নাই।
পোশাকে কারণে হাত-পা ভাঙ্গা হইতে পারে!!! কারণ মেনকা ম্যাডাম ঐখানে কিছু অলংকার ছাড়া অন্যকোনো পোশাক পরিধান করেছেন বলে পরিলক্ষিত হয় না!!!

৩| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সোমনাথ মন্দির কে ভেঙ্গেছিল? :)

এই ব্যাপারে একটা কৌতুক আছে। জানা থাকলে একটু হেসে নেন।

২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:২৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ঐটাও আমি ভাঙ্গিনাই। আপনি শুধু শুধু আমাকে সন্দেহ করতেছেন। আমি ঐ মন্দিরের ধারে কাছেও কখনো যাই নাই।

সোমনাথ মন্দিরের কৌতুক জানা নাই। তবে সন্দেহ করি একই টাইপের অন্য কৌতুক শুনেছি।
সোমনাথ মন্দিরের কৌতুকটা বলে ফেলেন, হেসে নেই।

৪| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: গ্রামের এক স্কুল পরিদর্শন করতে গেলেন এক পরিদর্শক। ক্লাসে ঢুকে এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, বল তো সোমনাথের মন্দির কে ভেঙেছে?
ছাত্র বল্লো আমি ভাঙিনি স্যার!
পরিদর্শক রেগে গিয়ে ক্লাসের শিক্ষক কে বল্লো এই সব কি বলছে আপনার ছাত্র।
শিক্ষক বললেন, স্যার আমি জানি, ও মন্দির ভাঙার মত ছেলে না।
পরিদর্শক হেড মাস্টারের রুমে গিয়ে বললেন, আপনার ছাত্র শিক্ষক এ সব কি বলছে! সোমনাথের মন্দির নাকি তারা ভাঙেনি।
হেড মাস্টার বললেন, জি স্যার আমি জানি আমার ছাত্র শিক্ষকরা এমন কোনো কাজ করেনি।
পরিদর্শক ফিরে গিয়ে ওই মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীকে বিস্তারিত জানিয়ে ওই স্কুল বাতিল করার জন্য সুপারিশ করলেন। মন্ত্রী সব শুনে বললেন, সামান্য একটা মন্দির ভাঙার জন্য কেন এত হইচই করছেন। টাকা নিয়ে যান। নতুন করে একটা বানিয়ে দিন

( বি দ্রঃ সোমনাথ মন্দির ভাঙ্গা সম্পর্কে ইতিহাসের বইয়ে অনেক বর্ণনা আছে। এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। )

২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি ঠিক এইটাই আশা করছিলাম। এর আরো একটা ভার্শন আছে একটু এদিক ওদিক করে। -


একবার জেলা শহর থেকে দূরে একটি স্কুলে পরিদর্শক আসেন।তিনি বিভিন্ন ক্লাস ঘুরে দেখেন।একটা ক্লাস রুমে প্রবেশ করে একটু গম্ভীরভাবে তিনি জিজ্ঞাস করলেন,

পরিদর্শক: সোমনাথ মন্দির কে ভেঙ্গেছে?
সবাই চুপ।কেউ কোন উওর দিচ্ছে না।তখন তিনি ক্লাস ক্যাপ্টেনকে জিজ্ঞাস করলেন,

পরিদর্শক: সোমনাথ মন্দির কে ভেঙ্গেছে?
ক্যাপ্টেন: স্যার, আমি ভাঙ্গিনি।
পরিদর্শক এবার রেগে গেলেন।তিনি ক্লাসের সবাইকে বললেন,

পরিদর্শক: কেউ কি বলতে পারো না সোমনাথ বন্দির কে ভেঙ্গেছে?
পাশে ইতিহাসের শিক্ষক ছিলেন।তিনি বললেন,

শিক্ষক: স্যার, এরা একটু দুষ্টু হতে পারে।কিন্তু বদমাইশ নয়।এরা কেউ সোমনাথ মন্দির ভাঙ্গেনি।
পরিদর্শক এবার অবাক হয়ে গেলেন।পরে প্রধান শিক্ষককে বললেন,

পরিদর্শক: আপনাদের স্কুলের শিক্ষকরা ভাল না।এরা কেউ বলতে পারছে না যে সোমনাথ মন্দির কে ভেঙ্গেছে।
প্রধান শিক্ষক: এদের সবাইকে তাহলে বরখাস্ত করতে হবে।এত করে বলি ছাত্রদের উপর ভাল করে নজর রাখতে তারপরও এরা জানেনা সোমনাথ মন্দির কে ভেঙ্গেছে।

সূত্র : কৌতুকডটকম

৫| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:০৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



মহাভারত একটি পড়ার মতো ইতিহাস। মহাভারতের সাথে তুলনা করার মতো কি আর কোনো ইতিহাস বা কল্পকাহিনী বা উপন্যাস আছে?

২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:২৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: মহাভারত সম্ভবতো ইতিহাস ও কল্পনার মিশেল এক মহাকাব্য।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

৬| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



মেনকার মেয়ের নাম তো শকুন্তলা!

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: শকুন্তলার কাহিনীও আসছে সমনে।

৭| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৫

শোভন শামস বলেছেন: সুন্দর+

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ

৮| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:০৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: চলুক সিরিজ....

+++

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
চলবে সিরিজটা আশা করি।

৯| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

তার পেরেতে কি হইলো
শুনতে আমার ইচ্ছা রইলো!
মহাভারত আর আরব্য রজনী
দুইটি বোধ হয় প্রাণ সজনী!!

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৩৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
তারপরের কাহিনী তৈরি আছে প্রায়।

১০| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: মহাভারত একটি পড়ার মতো ইতিহাস। মহাভারতের সাথে তুলনা করার মতো কি আর কোনো ইতিহাস বা কল্পকাহিনী বা উপন্যাস আছে?

ঠাকুর ভাই আরব্য রজনীর কথা বিস্মৃ্ত হলেন কি ভাবে !!

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৩৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: হা, কথা সত্যিতো!!!

১১| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৯

অপু তানভীর বলেছেন: গল্প চলুক সামনে এগিয়ে ।

প্লাস রইলো !

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য এবং + এর জন্য।
গল্প চলবে অনেক দিন

১২| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: এর আগের পোষ্টে লিখেছিলাম।এগুলো রুপকথা।
একজন আমাকে জানিয়েছেন এগুলো রুপকথা নয়। সারা ভারতের ভিবিন্ন জায়গায় প্রমান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কেউ যদি মনে করেন এগুলি রূপকথা নয় তাহলে সেটা একান্তই তার নিজস্ব বিশ্বাস। আমি রূপকথা হিসেবেই পড়ছি।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

১৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৫১

জুন বলেছেন: এর আগে ব্লগার দীপান্বিতা মহাভারতের অনেকগুলো পর্ব লিখেছিল। নিয়মিত পড়তাম। তারপর কই যে সে হারিয়ে গেল আর খবর নেই। আপনার লেখাও ভালো হচ্ছে।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
আমি নিয়োমিতই লিখে যাওয়ার ইচ্ছে রাখি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.