![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিউবায় গিয়ে ফিদেল ক্যাস্ত্রো ও চে গুয়েভারাকে, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে নেলসন ম্যান্ডেলাকে, ভিয়েতনামে গিয়ে হো চি মিনকে আর চীনে গিয়ে মাও সেতুংকে দেখতে হয় না, যদি আমরা বাংলাদেশে শুধু বঙ্গবন্ধুকে দেখি।
কিউবায় গেলে ফিদেল ক্যাস্ত্রো ও চে গুয়েভারার বিপ্লবী চেতনা দেখতে হয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলে নেলসন ম্যান্ডেলার সংগ্রাম, ভিয়েতনামে গেলে হো চি মিনের নেতৃত্ব, আর চীনে গেলে মাও সেতুংয়ের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে যদি আমরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে দেখি, তাহলে অন্য কোথাও যেতে হয় না কারণ তার একক নেতৃত্বে, সংগ্রাম ও আদর্শে একটি সম্পূর্ণ জাতির মুক্তির ইতিহাস রচিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব: এক জাতির মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা
ফিদেল ক্যাস্ত্রো, ম্যান্ডেলা, হো চি মিন বা মাও সেতুং এরা সবাই তাদের নিজ নিজ জাতির জন্য স্বাধীনতা বা শোষণমুক্তির সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি রাষ্ট্র গঠন করেননি, তিনি বাঙালি জাতিকে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় এনে দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং আত্মপরিচয়ের ভিত্তি গড়ে তুলেছে।
বঙ্গবন্ধু বনাম বিশ্বনেতারা: তুলনার বাইরের অনন্য নেতৃত্ব
• ফিদেল ক্যাস্ত্রো ও চে গুয়েভারা: কিউবায় সাম্রাজ্যবাদবিরোধী বিপ্লব পরিচালনা করেছেন, কিন্তু তারা একটি উপনিবেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি।
• নেলসন ম্যান্ডেলা: দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, কিন্তু তাকে স্বাধীন দেশ গড়তে হয়নি।
• হো চি মিন: ফরাসি উপনিবেশবাদ ও মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, কিন্তু বাংলাদেশর মতো নিরস্ত্র জনগণের বিপ্লব ঘটাননি।
• মাও সেতুং: চীনে কমিউনিস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, কিন্তু তার লড়াই ছিল দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে।
বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুই মুক্তির প্রতীক
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ছিল উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামের এক অবিচ্ছেদ্য ইতিহাস।
• ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর থেকেই তিনি পূর্ব পাকিস্তানের নিপীড়িত জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন।
• ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে নেন।
• ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় লাভ করে, যা বাঙালির স্বাধীনতার পথে শেষ ধাপে পরিণত হয়।
• ১৯৭১ সালে তিনি স্বাধীনতার ডাক দেন, যার ফলে বিশ্বের মানচিত্রে নতুন একটি দেশ, বাংলাদেশ, আত্মপ্রকাশ করে।
বিশ্বনেতাদের চোখে বঙ্গবন্ধু
ফিদেল ক্যাস্ত্রো একবার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলেন ---
"আমি হিমালয় দেখিনি, তবে শেখ মুজিবকে দেখেছি।"
এই উক্তি প্রমাণ করে যে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্ব কতটা অসাধারণ ছিল।
উপসংহার
আমাদের ইতিহাস এত সমৃদ্ধ যে কিউবা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভিয়েতনাম বা চীনে গিয়ে বিপ্লবী নেতাদের খুঁজতে হয় না। শুধু বঙ্গবন্ধুকে জানলেই বাঙালির সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও বিজয়ের পূর্ণ চিত্র পাওয়া যায়। একদল চৌকস সহযোগী সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু ছিলেন একক নেতা, যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে একটি জাতি স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধুর জীবন, আদর্শ ও সংগ্রাম জানা মানেই বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতাকামী সব জাতির সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি দেখা। বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশের মুক্তির প্রতীক। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
- সালাউদ্দিন রাব্বী
©somewhere in net ltd.