নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আলেন্দে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতীক,জীবন দর্শন ও হত্যাকাণ্ডের মধ্যে মিল।

১৪ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:১৪

আলেন্দে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতীক,জীবন দর্শন ও হত্যাকাণ্ডের মধ্যে মিল।
-----------------------------------------------------------------------
বিশ্ব ইতিহাসে এমন কিছু নেতার নাম চিরউজ্জল, যাঁরা শুধু রাজনীতির মঞ্চে নয়, জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন তাঁদের আদর্শ, ত্যাগ ও নেতৃত্ব দিয়ে। সালভাদর আলেন্দে (চিলি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (বাংলাদেশ) এই দুই নেতা তাঁদের নিজ নিজ জাতির মুক্তির কাণ্ডারী ছিলেন।আলেন্দে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতীক,জীবন দর্শন ও হত্যাকাণ্ডের মধ্যে মিল। আমি আলেন্দেকে পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছে আমি যেনো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জীবনী পড়ছি। কিন্তু তাঁদের উভয়ের জীবনের পরিণতি হয়েছিল নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই দুই হত্যাকাণ্ডে রয়েছে কিছু গভীর মিল, যা বিশ্ব রাজনীতির একটি করুণ চিত্র ফুটিয়ে তোলে।
রাজনৈতিক উত্থান ও আদর্শ
সালভাদর আলেন্দে ছিলেন চিলির প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সমাজতন্ত্রী প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৯৭০ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদের জাতীয়করণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার শুরু করেন। একইভাবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের স্বাধীনতার প্রতীক। ১৯৭০ সালের পাকিস্তান জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন এবং ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রপ্রধান হন। বঙ্গবন্ধুও জাতীয়করণ, কৃষি ও শ্রমজীবী মানুষের উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিতে চেয়েছিলেন।
বিদেশি হস্তক্ষেপ ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির ষড়যন্ত্র
এই দুই নেতার ক্ষেত্রেই একটি সাধারণ বিষয় লক্ষণীয় তাঁদের সমাজতান্ত্রিক নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ জাতীয়করণের উদ্যোগ বিদেশি, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আলেন্দের বিরুদ্ধে সিআইএ (CIA) সরাসরি সামরিক অভ্যুত্থান সংগঠনে ভূমিকা রাখে। বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রেও তাঁর স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি, ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং পুঁজিবাদবিরোধী অবস্থান দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে।
নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও শাসন পরিবর্তন
১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, চিলির সেনাপ্রধান অগুস্তো পিনোচের নেতৃত্বে এক ভয়াবহ সামরিক অভ্যুত্থানে সালভাদর আলেন্দে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসেই নিহত হন। একইভাবে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে এক নির্মম অধ্যায় পৃথিবীর জগন্যতম হত্যাকান্ড। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয় সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী সদস্যের হাতে। উভয় হত্যাকাণ্ডই ছিল পূর্বপরিকল্পিত, সামরিক শক্তি ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর যৌথ প্রয়াস।
উত্তরাধিকার ও প্রভাব
এই দুই নেতার মৃত্যুর পর উভয় দেশেই দীর্ঘ সময় ধরে সামরিক বা স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের সূচনা হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের অবদান পুনর্মূল্যায়ন শুরু হয়। আজ সালভাদর আলেন্দে লাতিন আমেরিকার বামপন্থী আন্দোলনের অনুপ্রেরণা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা হিসেবে চিরস্মরণীয়।
উপসংহার
আলেন্দে ও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড ছিল কেবল দুটি পৃথক দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নয়, বরং তা ছিল তৃতীয় বিশ্বের গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের বিরুদ্ধে একটি বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ার অংশ। তাঁরা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন আদর্শের জন্য সংগ্রাম কখনও বৃথা যায় না। তাঁদের রক্তে ইতিহাস লেখা হয়েছে, তাঁদের আদর্শে ভবিষ্যতে নিপীড়ন নির্যাতনের মুক্তির দিশা।
সালভেদর আলেন্দে নিজেই নিজের বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।তবে এটাও সত্য, এই আত্মহত্যা ঘটেছিল সেনাবাহিনীর চাপে ও ঘেরাও অবস্থায়, তাই অনেক ইতিহাসবিদ একে রাজনৈতিকভাবে বাধ্যতামূলক আত্মহত্যা হিসেবেও দেখেন। আর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল বিদেশী শক্তির এদেশীয় কিছু সামরিক বাহিনীর উগ্র জোয়ান দ্বারা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০২৫ রাত ২:৫৫

কামাল১৮ বলেছেন: শেখ মুজিব একজন মহান জাতিয় নেতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.