নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অর্ধ অর্বাচীন

অর্ধ অর্বাচীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুমেরাং-সংগঠন পর্ব

২০ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯

একটি অতি সাধারণ গোয়েন্দা কাহিনী

------------------------অর্ধ অর্বাচীন





“ধ্যাত্তেরি!! দিল সকালের ঘুমের বারোটা বাজিয়ে ” – মনে মনে আরো যতো খিস্তি আছে সেগুলো আউড়ে চোখ মেলে উঠে বসলো রোহান । মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে ২১ টা মিসকল । সবগুলো তার ছোট ভাই ও তার সহকারি ফাহিমের । অবশ্য এতগুলো কল দেবার যথেষ্ট কারণ আছে । আজকে ওর ক্লাস শুরু হবার কথা সকাল ৮: ৩০ এ । এখন বাজে ৯:৩০ । ঘরের দরোজা লাগিয়ে ঘুমানোর কারণে কেউ তাকে জাগাতে আসেনি । সারাজীবন তার মা তাকে সময় মত ঘুম থেকে জাগিয়েছে । তাই ঘুম থেকে ওঠার ব্যাপারে তার কোন চিন্তা ছিল না কোন দিন । কিন্তু কিছুদিন আগে তার ছোট ভাই এর সাথে ঝগড়া করে আলাদা রুম নিয়ে তাতে দরজা লাগিয়ে ঘুমায়। তাই সময় নিয়ে ভালো ঝামেলায় পড়তে হয় । যাই হোক শেষ পর্যন্ত দরজা খুলে বাথরুমে দাঁত ব্রাশ করতে করতে ঢুকে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এল । বেরুতেই মা বলল

---- কিরে তোর না আজকে পরীক্ষা , যাসনি কেন ?

---- আমার পরীক্ষা পিছিয়েছে, আজকে কোন ক্লাস নেই । বিকালে একটা ল্যাব আছে , তখন যাব ।

---- ঠিক আছে , কিন্তু আমাকে জানাতে তো পারতি, তাহলে আর এত ঝামেলা করতে হতো না ।

---- ঠিক আছে এর পর থেকে বলবো ।

---- দেখ তো বাবা, আজকে বাজার থেকে কিছু সব্জি, মাছ, মসলা কিনে নিয়ে আয় । চুলায় রান্না চাপাতে হবে ।

---- ঠিক আছে মা যাচ্ছি ।

টাকা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল রোহান । আধঘণ্টা পরে ফিরে এসে দেখে তার বাসার সামনে পুলিশের গাড়ি । এটা অবশ্য নতুন কিছু না । বাইরে থেকে ঘরে ঢুকে হাতমুখ ধুয়ে ড্রয়িং রুমে এসে দেখে হেলাল ধর এসে বসে আছে । এখন হেলাল ধর সম্পর্কে কিছু জানিয়ে রাখি ।

নামঃ হেলাল ধর,

বয়সঃ ৫০+,

পেশাঃ পুলিশ অফিসার

বৈশিষ্ট্যঃ পান খাওয়া, এবং কথায় কথায় নিজেকে বড় বলে জাহির করার চেষ্টা করা।

যাই হোক রোহান সম্পর্কে কিছু বলে রাখি । তার বয়স ২৩, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর কম্পিউটার বিজ্ঞানের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র । তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হল সে শখের গোয়েন্দা । সাধারনত পুলিশ যে কেসগুলোর কোন কিনারা পায় না সেগুলোই তার কাছে আসে । এখনো সেটার কোন ব্যাতিক্রম হয় নি ।হেলাল ধর তাকে দেখতেই উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

---- ভাই আবার সমস্যার মধ্যে পড়ছি । হে হে । সাহায্য করতে হইব ।

---- এ আর নতুন কি? বলেন কি সমস্যা ।

---- পাশের মহল্লার শহীদ সাহেব তো খুন হইসে গত রাতে । জানেন না নাকি ।

---- না তো । আমি কি আপনাদের মত পুলিশ নাকি যে আমাকে সব খবর রাখতে হবে?

---- না না তা বলি নাই । যাই হোক আপনারে বড় স্যার যাইতে কইসে । চলেন ।

রোহানের ভিতর টা চনমন করে উঠলো । কেস তাও আবার খুনের । যেতে হয় তো !!

---- চলেন হেলাল সাহেব । মা , একটু বাইরে যাচ্ছি । একঘণ্টার মধ্যে এসে পড়ব ।

---- ঠিক আছে বাবা । ঝামেলা করিস না কোথাও ।

---- ঠিক আছে মা ।

বলেই গাড়িতে উঠে বসলো রোহান । সাইরেন বাজিয়ে হেলাল গাড়ি চালু করেই বলল...

---- ভাই স্যার আপনার কথা ইশপেশাল্লি কইসে । নাইলে আপনারে বিরক্ত করতাম না ।

---- আগে আমাকে এই কথা বলেন । শহীদ সাহেব কি করতেন ?

---- ভাই আমি তো এত কিছু জানি না । স্যার এর কাছে একটা ফাইল আছে । সেইটা খুলে দেখলেই বুঝবেন ।

রোহান বুঝলো ও আসলে কিছুই জানে না । উত্তেজনা চেপে রেখে চুপচাপ বসে রইল সে ।



তিন মিনিটের মাথায় ওরা পৌঁছে গেল ঘটনাস্থলে । গিয়ে দেখে অনেক মানুষের ভিড় । ঢুকতে বেশ বেগ পেতে হবে ভেবে হাঁটা দিতেই হেলাল মিয়া তার বাঁশি বাজিয়ে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া দিতেই লোকজন সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে গেল । আর যাবার একটা সুন্দর রাস্তা তৈরি হয়ে গেল । ভিতরে ঢুকতেই মিঃ মাসুদ তাকে ডাক দিলো “ অ্যাই রোহান । এইদিকে......”

এখানে বলে রাখি উনি হচ্ছেন রোহানের ক্লাসমেট তিন্নির বাবা । একদিন ক্লাস এর ঘটনা না বললেই নয় এখানে । তিন্নির বাবা রোহান কে কি ভাবে চিনল ।

রোহান তার প্রথম দিন ক্লাসে বশে ক্রসওয়ার্ড সল্ভ করছিল । হঠাৎ ক্লাস জুড়ে চিৎকার চেঁচামেচি তিন্নি নাকি চ্যালেঞ্জ দিয়েছে আজকে সে কি খেয়েছে সেটা বের করে দিতে পারলে বুফে খাওয়াবে । মাত্র তিনটা প্রশ্ন করা যাবে ।

ওর বন্ধুরা একের পর এক হাসিমুখ কালো করে ফিরছে । কেউ বলতে পারছে না তিন্নি কি খেয়ে এসেছে । রোহান ব্যাপারটায় মজা পেল । ওর অভ্যাস হচ্ছে নিজেকে জাহির করা । আর এইরকম সুযোগ পেলে আর কথাই নেই । রোহান ঠিক করল সে এই ধাঁধা সল্ভ করবে । তিন্নিকে গিয়ে প্রথম প্রশ্ন

---- তুমি কি যে কোন প্রশ্নের উত্তর দেবে?

---- হ্যাঁ । তোমার একটা প্রশ্ন কিন্তু শেষ... হিহি...আমার খাবার নিয়ে কোন প্রশ্ন না করলেই হল...

---- ঠিক আছে। আচ্ছা বলতো তোমার বাবা কি খান সকালে?

---- উনি তো ডায়বেটিস এর রোগী । আর মা সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাকে আগে খাওয়ায় ।

---- তুমি তোমার আম্মার কতক্ষন পরে ওঠ আর কয়টায় ওঠো ??

---- হবে না , দুইটা প্রশ্ন হবে না......

---- প্রথম টা প্রশ্ন ছিল না... যাই হোক তুমি তোমার আম্মার কতক্ষন পরে ওঠো?

---- ২০ মিনিট পরে...

---- তুমি আজকে সকালে রুটি আর ডিম ভাজা খেয়ে এসেছ ।

---- ব্যাখ্যা না দিলে হবে না... এমনিতেও উত্তর হয়নি... ব্যাখ্যা দাও...

---- তুমি আন্টির ২০ মিনিট পরে ওঠো আর ধরে নিচ্ছি তার ১.৩০ মিনিট পরে তোমার ক্লাস শুরু হয় । এর মধ্যে রাতে জিনিস যদি গরম না করা হয় তাহলে রুটি বানানো সম্ভব আর ডিম ভাজা সম্ভব । আর আমার যতদূর ধারণা আঙ্কেল আন্টি ডায়াবেটিস এর রোগী... তারা রাতে তেমন কিছু খান না । তাই সকালে রাতের কিছু থাকার কথা না । এবং রুটি ডিম ভাজি কেন সম্ভব তা আগেই বলেছি । তাহলে তোমার একমাত্র choice হচ্ছে রুটি আর ডিম ভাজি ।

--- উম্মম্মম্মম্মম... আসলেই ঠিক ধরেছ... কিন্তু বুফে আজকে খাওয়াতে পারব না।। অন্য আরেক দিন খাওয়াবো... আর তোমার নাম কি?

---- আমার নাম রোহান। আমার নাম তো জানতে পারলে, এবার ত্মার নাম তা বলো।

---- আমার নাম আমার কাছেই আছে, এখন বলবো না।

---- যাই হোক তোমার নাম আমি জানি। বলার দরকার নাই।

---- আচ্ছা! ভালো তো !! বলতো আমার নাম কি?

---- তোমার নাম তিন্নি। এখন জিজ্ঞেস কর না যেন আবার কিভাবে জানলাম।

---- দাড়াও আমাকে অনুমান করতে দাও। উম্ম কেউ তোমাকে আমার নাম বলেছে অথবা কাউকে আমার নাম বলতে শুনেছ।

---- নাহ আমি অন্যের কথায় কান দেই না। তবে তোমার ব্যাগের কোণায় কেউ একজন সম্ভবত তোমার ছোট ভাই বা বোন কলম দিয়ে তি কথাটা লিখেছে। এবং পুরোটা লিখে শেষ করতে পারেনি। এর আগেই তুমি ধরে ফেলেছ। এবং এই নামের আদ্যক্ষর দিয়ে শুধু মাত্র কয়েকটা নাম হয়। এর মধ্যে তিন্নি নাম টা সম্ভাব্বতায় সবার আগে তাই ওটা বললাম।

---- হুম। বুঝলাম। তোমার মত লোক আমার বাবার খুঁজছে। তোমার ফোন নাম্বারটা দাও বাবাকে দেব।

---- ঠিক আছে। (খসখস করে কাগজে লিখে) এই নাও।

----ঠিক আছে। পরে কথা হবে।বাই।

---- বাই ।



ঠিক এমন ভাবেই তিন্নির সাথে তার পরিচয়। এর পরে তিন্নির বাবা তাকে ডেকে পাঠান । তিনি রোহানের রীতিমত একটা পরিক্ষা নেন। এর পর বলেন তার মত ছেলে পুলিশ ফোর্সে দরকার। যদি সে মনে করে যে পুলিশ ফোর্সে যোগ দেবে তাহলে তাকে যেন জানায়। রোহান বিনীত ভাবে বলে যে তার ওখানে যোগ দেবার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে কোন দরকারে সে সাহায্য করতে পারবে। এই বলে সে চলে আসে।



হঠাৎ গাড়ির ব্রেক করার পর সে বাস্তবে চলে আসে। মাসুদ সাহেব বললেন,

---- রোহান কি চিন্তা করছ??

---- না স্যার কিছু না। আমাকে ফাইল টা দিয়ে ১৫ মিনিট সময় দিন। আমি দেখছি।

---- ঠিক আছে। এই নাও ফাইলের কপি আর ১০ মিনিটের সময় দিলাম। দেখে নাও।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২৯

অর্ধ অর্বাচীন বলেছেন: আমি সাজেশনের জন্য উন্মুখ। নতুন লিখছি, দয়া করে শুধরে দেবেন কোথাও ভুল হলে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.