নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

sohel sodeshi

রযাবিডি

আমি সোহেল খন্দকার, মুক্ত চিন্তার অধিকারী। নিজে স্বাধীনতা পছন্দ করি, অন্যের জন্যও স্বাধীনতা আদায়ে সচেষ্ট।

রযাবিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

লং মার্চ এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:০৯

বর্তমান সরকার হেফাজতে ইসলামের লং মার্চ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। লং মার্চে যাতে দেশের কোন অঞ্চল হতে লোকজন আসতে না পারে সরকার তার সব ব্যবস্থা সফলতার সাথে করে ফেলেছে।সরকার যে এত করিৎকর্মা আজ এ সরকারের চার বছর পার হওয়ার পর টের পেলাম। অথচ এত তামাশার কি দরকার ছিল? সমাবেশের অনুমতি না দিলেই তো হতো। সমাবেশের অনুমোদন দিয়ে আবার প্রকাশ্যে হরতাল ডেকে হুমকি ধমকি দিয়ে যানবাহন বন্ধ করে, ট্রেন-জাহাজ বন্ধ করে দিয়ে এ কোন তামাশা সরকার করছে? বিরোধী মতবাদ যদি পছন্দ না হয় তবে সব রাজনৈতিক (শুধু ডানপন্থীদের), ধর্মীয় (শুধু মাত্র ইসলাম) কর্মসূচী নিষিদ্ধ করে, সভা-সমাবেশ বন্ধের ঘোষণা দিলেইতো পারে সরকার? শুধু শুধু জানমালের ক্ষতি করে লাভ কি? মানুষ কে শংকার ভিতরে রাখার কোন অধিকার সরকারের নেই।

যাই হোক অধিকার বা আইনের কথা বলে কোন লাভ নেই। কারণ সরকার আইন আদালতের কোন তোয়াক্কা করে না। আইন আদালতের তোয়াক্কা করলে সরকার আজ হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারতো না। হেফাজতে ইসলামের বিরোধিতা করতে গিয়ে সরকার আজ ইসলামের বিরোধিতা করছে। প্রমাণ স্বরূপ কিছু ঘটনা তুলে ধরছি । আজকের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখলাম আওয়ামী পন্থী মৌলানারা (আসলে এরা কিভাবে মৌলানা হয় জানি না) ফতোয়া দিলেন আল্লাহতালা কুরআনে বলেছেন যে, তিনি স্বয়ং কুরআন রক্ষা করবেন। সে ক্ষেত্রে এটি রক্ষা করার জন্য কোন ব্যক্তির প্রয়োজন নেই। মুনাফেকির চমৎকার লক্ষণ এখানে স্পষ্ট। আল্লাহ রক্ষা করবেন সেজন্য ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রন্ত চলছে, আল্লাহ-রাছুলের বিরুদ্ধে বিষোদাগার চলছে সেখানে মুসলমান হিসাবে আমরা বসে থাকবো।

ভালো কথা, কিন্তু একটা কথা উনাদের বক্তব্যে পরিস্কার হয়েছে ইসলামের বিরুদ্ধে যে চক্রান্ত চলছে তা সত্য এবং আল্লাহতালাই তা রক্ষা করবেন। ধন্যবাদ তাদের কে সত্য কিছুটা হলেও স্বীকার করেছেন এবং প্রমাণ করেছেন এই সরকারের আমলে ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড চলছে। কিন্তু পবিত্র কুরআনেতো বলা হয়েছে স্পষ্ট ভাবে ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এখানে কোন রাজনৈতিক, পারিবারিক বা সামাজিক কোন কিছু নেই। সব কিছুই নিয়ন্ত্রন করবেন ইসলাম। সেক্ষেত্রে কই কোন দিনতো ওদের কোন ফতোয়া পেলাম না। ভালো কাজ না করেন ভালো কাজের বিরোধীতা করবেন না। ইসলাম কে বিকৃত করার চেষ্টা এর আগেও অনেক বার করেছেন কেউ সফল হয় নি। সফল হতে পারবেন না। তাই সাবধান হয়ে যান, তওবা করুন ধর্মনিরপেক্ষতার স্থান ইসলামে সেই।

আবার বলছেন এটি আসলে হেফাজতে ইসলাম নয় হেফাজতে জামায়াত। সবই যদি বুঝেন তবে সমাবেশের অনুমোদন দিলেন কেন? মানুষকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ আপনাদের? শুরু থেকেই নিষেধ কওে দিতেন দেশে শুধু ইসলামের বিরোধীরাই মিছিল মিটিং করতে পারবে, ইসলামের নাম নিলে আর কেউ মিছিল মিটিং সমাবেশ করতে পারবে না।

পুরো রাজধানীকে আপনারা বাংলাদেশ হতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন। এতো ভয় পান কেন মানুষকে? মত প্রকাশ করতে দিলে কি থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে? সরকারী দলে থেকে হরতাল ডাকেন? এ কেমন ব্যবস্থা? কার বিরুদ্ধে হরতাল? জনগনের বিরুদ্ধে এই হরতাল? তাহলে আমরা সাধারণ জনগন কি সরকারের প্রতিপক্ষ? সরকার জনগনের বিরুদ্ধে হরতাল ডেকেছে?

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে ঐতিহ্য মন্ডিত দল বাঙ্গালীর স্বাধিকার আন্দোলনেরএকাধিকবার নেতৃত্ব দানকারী দল। কিন্তু আজ কোন পথে তারা? মুষ্টিমেয় কিছু মানুষকে খুশী করতে দিয়ে সরাসরি ইসলামের বিরোধিতা করছে? কাদের ইন্ধনে? কাদের সাথে নিয়ে? মুষ্টিমেয় কিছু বামপন্থীদের নিয়ে? কারা এই বামপন্থী? যাদের ডাকে রাজপথে ১০০ মানুষও হবে না? যাদের যোগ্যতা নেই ওয়ার্ড পর্যায়ের ভোটে অংশ গ্রহণ করার শুধুমাত্র নৌকা মার্কা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাথে থাকায় নির্বাচনে এদের জামানত হারায়নি সেই তাদের এমপি-মন্ত্রী বানিয়ে তাদেও সন্তুষ্টির জন্য ইসলামের বিরোধীতা করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই বামপন্থীরা ধ্বংসের শেষ প্রান্তে এসে নৌকার উপর ভরসা করে পার পেতে চাচ্ছে। আওয়ামী লীগের বুঝা উচিত। এই বামপন্থীরাই কিন্তু স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধীতা করেছিল। এরাই কিন্তু গণবাহিনী সহ বিভিন্ন বাহিনী করে আওয়ামী লীগ কর্মী ও সাধারণ মানুষ মেরেছে। এই বামপন্থীরা কিন্তু সাম্যবাদেও কথা বলে এখন গরীব ও ধনীর ব্যবধান ভুলে গেছে, ভুলে গেছে তাদেও আদর্শ। আজ গাড়ী-বাড়ী ও ক্ষমতা পেয়ে বিবেক, আদর্শ সব বিসর্জন দিয়ে বসেছে এরা। এই তথাকতিথ বামপন্থীদের ভূত কাধ হতে নামিয়ে ফেলুন।

প্রত্যেক হরতালে ট্রেন সহ বাস-ট্রাক চালানোর একটা প্রতিযোগীতা দেখা যায় সরকারের কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু এই হরতালে। সরকার সব ধরনের পরিবহণ হুমকি-ধমকি দিয়ে বন্ধ করাচ্ছে। কিন্তু মনে রাখা উচিত জনগন এখন আর আগের মতো বোকা নয় তারা অনেক সচেতন এবং বিবেচক। সময় প্রায় শেষ জনগণে কাছে প্রত্যেক দলের আসার সময় হয়েছে। এবার জনগন পুংখানুপংখ রুপে হিসাব নিবে এবং এর সমুচিত জবাব ব্যালটের মাধ্যমে দিবে।

কোটি টাকা খরচ করে মাওলানা মাসউদের সমাবেশ সফল করার ব্যর্থ চেষ্টা সরকার করলো, যেখানে শ্রোতার চেয়ে স্টেজে বক্তার সংখ্যাই বেশী ছিলো। অথচ হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ যেখানে স্বঃতস্ফ’র্ত ভাবে মানুষ অংশ গ্রহণ করতে আগ্রহী সেখানে এত বাধা কেন? কারণ সরকারের জারিজুরি ফাস হয়ে গেছে। এই ভদ্র শান্ত-শিষ্ট মাওলানারা তাদের ঈমানী দায়িত্ব পালন করতে এসেছেন। তারা সংবিধানে আল্লাহর প্রতিবিশ্বাস ও আল্লাহর নাম সংযোজন করে তবে ছাড়বেন। আল্লাহর উপর ভরসা ছাড়া কোন মূসলমানের ঈমান থাকে কিভাবে? এই ঈমানী দায়িত্ব পালন করতে এগিয়ে এসেছেন হেফাজতে ইসলাম। এতে সমর্থন রয়েছে দেশের আপামর মুসলিম জনতার। তাইতো সরকার ভীত। মূসলমান যখন পরিপূর্ন ঈমানের অধীকারী হয় তখন সে শুধুমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পায় না এবং ইসলামের জন্য জীবন দান করতে বিন্দুমাত্র ভয় পায় না। তেমনি এক জন ইসলামের এ যুগের বীর সেনানী মাওলানা শাহ আহমদ শফী যিনি বড় হুজুর নামে অধিক পরিচিত। সারা জীবন ইসলামের জন্য কুরবান করে গেছেন। দ্বীন ইসলামের জন্য নিয়ত কারিগর তৈরি করে গেছেন, যার ফলে এখনো ঈমানদার ব্যক্তি বাংলাদেশে খুজে পাওয়া যায়। ইসলামের জন্য কারো সাথে কোন ধরনের আপোষ এ লোকের অভিধানে নেই। সেই ইসলামের বীর সেনানী এবার ডাক দিয়েছেন জিহাদের। সরকার কেন এই জিহাদ সমাজ সংস্কারের, এই জিহাদ মৃত প্রায় মুসলিম সমাজের আবার সোজা হয়ে দাড়ানোর জিহাদ, ক্ষয়ে যাওয়া আমাদের বাঙ্গালী মুসলমানের ঐতিহ্য সংরক্ষনের জিহাদ, এই জিহাদ দেশ রক্ষার জিহাদ, ইসলামের জাগরণে জিহাদ, এ জিহাদ দূর্নিতীর বিরুদ্ধে জিহাদ, এই জিহাদ নাস্তিক-মুরতাদদেও বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জিহাদ, আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) বিরোধীতাকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদ। কেউ এর বিরোধীতা করে পার পাবেন না। আল্লামা শফী তার অনুসারী ও ছাত্রদের নিয়ে মূলত এই জিহাদ তথা লং মার্চে ডাক দিয়েছেন। সাধারণ মূসলমানদের আহবান করেছেন এ জিহাদে শরীক হওয়ার। এর সাথে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক কোন গোষ্ঠির সাথে নেই। আজ পর্যন্ত যে অবস্থা তাতে সাধারণ জনগনের সর্বাত্মক সহযোগীতা ও সমর্থন তারা পাচ্ছেন এবং যতদিন এ জিহাদ চলবে তা অব্যাহত থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। মূসলমান নামধারী যারা বিরোধীতা করছেন তারাতো মুনাফিক । এরা মুখে বলে এক করে অন্য রকম।

সবচেয়ে হাসির ব্যাপার হলো আওয়ামী ওলামা লীগ নামে যখন কোন সংগঠন থাকে। ধর্মনিরপেক্ষ দলের আবার ধর্মীয় সংগঠন কেন? এট্ াকোন ধরনের রসিকতা? যদি দলের মূলনীতি যদি সেক্যুলারিজম হয় তবে আবার সেখানে মাওলানারা কি করেন? এসব সংগঠনের মাওলানারা কি কিছুই বুঝেন না নাকি টাকার জন্য সব জায়েজ। আমার পরিচিত এক মাওলানা সারা বছর ডানপন্থী থেকে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বর্তমানে একটি জেলার ওলামা লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সবাই কি এ রকম? তাহলে এদের তো ঈমানই নাই তাহলে এরা মাওলানা হলেন কি করে? তাছাড়া যে দল সংবিধান হতে আল্লাহর প্রতি আস্থা তুলে দিতে পারে সে দলে থেকে ঈমান থাকে কেমননে? আল্লাহর প্রতি আস্থা না থাকলে মূসলমান হয় কি করে?

শুরু করেছিলাম লং মার্চ নিয়ে। সরকারের প্রতি আবেদন সাধারণ জনগনকে নিয়ে আর খেলবেন না। এর পরিণতি ভালো হয় না। জনগন আপনাদের শিক্ষা দিয়েছে তা হতে শিক্ষা নিন। ২০০২ সালে আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মাত্র ৬২ আসন পেয়েছিল এবং ২০০৮ সালে এসে বিএনপি পেয়েছে মাত্র ৩২টি আসন। তাই সময় থাকতে সতর্ক থাকুন দুনিয়ার কোন শক্তি সে যদি পরাশক্তিও হয় তবে আপনাদের ক্ষমতায় রাখতে পারবে না। আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখুন সেই সাথে জনগনকে বিশ্বাস করুন এবং জনগনের জন্য ভালো কিছু করুন। লংমার্চ শুষ্ঠু ও সুষ্ঠুভাবে করতে দিন। বিরোধী মতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখুন। সবার আগে দেশের জন্য ভাবুন। সবার মত প্রকাশের সুযোগ দিন। কাউকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সুবিধা দিবেন আবার কাউকে কষ্টের সর্বোচ্চ সীমায় নিয়ে যাবেন এ নীতি পরিহার করুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.