![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনার কিলিং'স, এ ধরনের জঘন্য হত্যাকান্ডের ব্যাপারে আমি জানতে পারি বেশ কয়েক বছর আগে । পরিবার বা গোত্রের সম্মানহানির দায়ে আপনজনকে হত্যা অনার কিলিং বলা হয়ে থাকে। সভ্যতার চরম শিখরে আরোহন করেও মানবজাতি যে এখনো রয়ে গেছে হাজার বছর পেছনে তা এ ধরনের ঘটনার খবর না জানলে কেউ বিশ্বাসই করতে চাইবে না । জাতি সংঘের একটি হিসাব মতে সারা বিশ্বে প্রতিবছর ৫০০০ এর মত এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয় ।
হত্যাকান্ডের পর আদালত চত্বরে ক্ষত বিক্ষত ফারজানা পারভিনের লাশ ।
অতি সম্প্রতি পাকিস্তানের লাহোরে ফারজানা পারভিন নামের একটি মেয়েকে প্রকাশ্য দিবালো্কে পিটিয়ে, ইটপাটকেল ছুড়ে হত্যা করে তারই বাবা, ভাই, চাচাত ভাই মিলে প্রায় ২০ জনের একটি দল । মেয়েটির অপরাধ ছিল পরিবারের অসম্মতিতে ইকবাল নামের একটি ছেলেকে ভালবেসে বিয়ে করা ।
পুলিশ কর্মকর্তা নাসিম বাট বলেন, প্রায় একবছর আগে ইকবাল নামের একজনকে বিয়ে করেন ফারজানা পারভিন । এ বিয়েতে ফারজানার পরিবারের সম্মতি ছিলনা । ফারজানার পিতা ইকবালের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে অপহরণের মামলাও করেছিলেন । সেই মামলা মোকাবেলা করতে ফারজানা তার স্বামীকে নিয়ে গত মঙ্গলবার আদালতে এসেছিলেন বলে জানান তার আইনজীবী মুস্তফা খারাল । আর এ বিষয়টি জানতে পেরে ফারজানাকে ছিনিয়ে নিতে তাঁরই পরিবারের সদস্যরা আদালতের সামনে অপেক্ষা করছিল । আদালত থেকে বের হয়ে ফারজানা ও ইকবাল যখন প্রধান ফটকের কাছে আসে ঠিক তখনই তারা আকাশে বন্দুকের গুলি ছুড়ে, এবং ফারজানাকে ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে পরে পিটিয়ে, ইটপাটকেল ছুড়ে তাকে হত্যা করে ।
সভ্যতার চরম শিখরে মানবজাতি এখন আরোহন করছে দাবি করলেও এ ধরনের মধ্যযুগীয় বর্বর ঘটনা বিশ্বের অনেক দেশেই ঘটছে বলে জানা যায় ।
৪ই ফেব্রুয়ারী ২০১০ লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকা একটি খবর ছাপে । তুরস্কে পুলিশ একটি ১৬ বছর বয়সী মেয়ের লাশ উদ্ধার করে । মেয়েটির অপরাধ ছিল ছেলেদের সাথে কথা বলা, সে জন্য তাকে জ্যান্ত কবর দেয় তার আত্মীয়রা । লাশটির দুই হাত বাধা ছিল। ময়নাতদন্তে মেয়েটির শরীরের ভিতরে প্রচুর পরিমাণ মাটি পাওয়া যায় যা থেকে বোঝা যায় তাকে জ্যান্ত কবর দেয়া হয়েছিল ।
তুরস্কে অনার কিলিং-এর মত কুপ্রথার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন নারী অধিকারবাদীরা
যেসব দেশে এ প্রথা অধিক প্রচলিত তাদের মধ্যে আছে পাকিস্তান, জর্ডান, লেবানান, মরোক্ক, সিরিয়ান রিপাবলিক ছাড়া ও অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশ । তবে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানীর মত দেশেও অনার কিলিং এর খবর পাওয়া যায় ।
২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে ৩জন মেয়েকে জ্যান্ত কবর দেয়া হয়, তাদের অপরাধ তারা নিজেরা তাদের স্বামী নির্বাচন করতে চেয়েছিল।
২০০৯ এর ফেব্রুয়ারীতে ভারতে অনার-কিলিং এর নামে ৮জনের শিরোচ্ছেদ করা হয়। পুলিশ লাশগুলো গঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার করে। একই মাসে জার্মানীতে ঘটে আরেক বিভৎস কাহিনী। আহমেদ নামক এক জার্মান-আফগান তার ১৬ বছর বয়সী বোনকে ২৩বার ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। বোনের অপরাধ ছিল সে নাকি পরিবার থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল ।
১৯৯৮ সালে শুধু পান্ঞাবেই ৮৮৮ জন নারী অনার-কিলিং এ স্বীকার হন । ১৯৯৭ সালে সিন্ধু প্রদেশে ৩০০ নারীর প্রাণ হরণ করা হয় ।
অনার কিলিং এর নামে বেশীরভাগ নারীকে হত্যা করে তাঁরই পরিবারের কোনো সদস্য । এরপর হত্যাকারী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জানায়, তাদের পরিবারের সম্মতিতে ও সম্মান রক্ষার্থের জন্যই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এবং এজন্য তাকে তার পরিবার ক্ষমা করে দিয়েছে । এরপর আদালতের আর কিছুই করার থাকেনা ।
কুশিক্ষা, অন্ধবিশ্বাস মানুষকে কোন পর্যায়ে নামাতে পারে এসব কাহিনী না শুনলে বিশ্বাস করা কঠিন ।
৩১ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:৩৮
রেদওয়ান-কামালী বলেছেন: '' বাংলাদেশে অনার নেই, অনার কিলিংও নেই; এবং তা আপনার জন্যও ভালো '' ।
আপনার মন্তব্যে আপনি ঠিক কি বুজাতে চেয়েছেন, আমি বুজতে পারিনি ।
২| ৩০ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এই সব মূর্খ ও বর্বর লোকেরাই ১৯৭১-এ ইসলাম ধর্ম কায়েমের নামে আমাদের ত্রিশ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে আর দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জত লুটেছে। ধিক, ধিক। আল্লাহর গজব এদের ওপর নাজিল হোক।
৩১ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:৩৩
রেদওয়ান-কামালী বলেছেন: '' কালেমার ঝাণ্ডা উঁচু রাখার জন্য রাজাকারদের কাজ করে যেতে হবে '' । এ মন্তব্যটি একাত্তরে কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযমের ।
তাদের কথিত কালেমার ঝাণ্ডা উঁচু রাখার জন্য একাত্তরে কি ধরনের জঘন্য অপরাধ এ বাংলায় তারা করেছে সেটা আমাদের সবার জানা । বাংলার মাটি থেকে ধর্মান্ধ, ধর্ম ব্যবসায়ী চিরতরে নির্মূল হোক এটাই আমরা চাই ।
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ ।
৩| ৩১ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:১৭
সকাল হাসান বলেছেন: এই অনার কিলিং এর কি কোন বিচার নেই?
যারা হত্যা করে তারা কি পার পেয়ে যায়।
এই বিষয়টা নিয়ে একটু বিস্তারিত বলবেন প্লিজ?
৩১ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:১৭
রেদওয়ান-কামালী বলেছেন: অনার কিলিংসের অপরাধীরা সব ক্ষেত্রে যে পার পেয়ে যায় এমন নয় । তবে ভিবিন্ন দেশ এবং আঞ্চলিক সামাজিক এবং বিচার ব্যবস্থা এ ধরনের অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে । পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, মধ্যপ্রাচ্যের ভিবিন্ন দেশ, যেখানে বিচার ব্যবস্থার মান প্রশ্নবিদ্ধ সেখানে এ ধরনের অপরাধের বিচারে অপরাধীরা সহজেই ছাড়া পেয়ে যায় ।
যেহেতু ভিক্টিমের পরিবার অপরাধীকে ক্ষমা করে দেয় সেখানে আদালতের তেমন কিছু করার থাকেনা । অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অপরাধীকে আদালতে নেওয়া তো দুরের কথা এ অপরাধের কথা পুলিশ পর্যন্ত পৌছায় না ।
উইকিপিডিয়ার একটি তথ্য মতে ১৫০টি কেইস স্টাডি করে দেখা গেছে মাত্র ৮ টি ঘটনায় অপরাধীরা সাজা পেয়েছে । বাকি গুলুতে অপরাধীরা খালাস পেয়েছে বা খুব অল্প সাজা পেয়েছে ।
তবে উন্নত বিশ্বে এ চিত্র ভিন্ন । ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের একটি আদালত ইফতেখার আহমেদ ও ফারজানা আহমেদ নামের এক দম্পতিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দণ্ডিত করে । তাদের অপরাধ ছিল তাদের ১৭ বছরের মেয়ে সাফিলা আহমেদ তাদের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে অস্মমতি জানালে বাবা মা মিলে ওই মেয়েকে হত্যা করা ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
৪| ৩১ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:৪৩
সকাল হাসান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই।
এই বিষয়টা নিয়ে খুব একটা জ্ঞান ছিল না - আপনার পোষ্ট করে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:১৬
পংবাড়ী বলেছেন: বাংলাদেশে অনার নেই, অনার কিলিংও নেই; এবং তা আপনার জন্যও ভালো