নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্টিগমা

রাফিন জয়

স্টিগমা

রাফিন জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

রঘুনাথপুর এডভেঞ্চার

১১ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৩



ভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ইতি টেনে কোন বিলম্ব ছাড়াই সরাসরি কলকাতা থেকে রঘুনাথপুরের দিকে রওনা হলাম। রেলের ফার্স্ট ক্লাসের একটা ক্যাবিনের টিকেট করে রেখেছে আগেই অন্তরা দি আর জয়ন্ত কাকু। একসাথে অন্তরা দি, সীমা দি, হিমাদ্র দা, হৈমন্তী, জয়ন্ত কাকু, আমি এবং আমার সেমিস্টারের একটা বন্ধু মাহি (মেরি জেসিকা) সবাই মিলে একটা মোটা মোটি ব্যাটালিয়ন ফোর্স বলা চলে। ঠিক এক বছর পরে সবাই মিলে আবার কোথাও বের হলাম। হচ্ছে দারুণ বৃষ্টি। এ্যাডভেঞ্চার এ্যাডভেঞ্চার একটা ভাব।

রেলস্টেশনে আমি আর মাহি গিয়ে দাঁড়াতেই অন্তরা দি বলে উঠলো, “তোর মানিব্যাগে বুঝি এর ছবিই দেখেছিলাম, তাই না বাঁদর?”

মোটা মোটি লজ্জায় লাল আমি। মাথা নিচু করে ট্রেনে উঠে পড়লাম। বোঝানোর চেষ্টা করলাম না কিছু। দারুণ অনুভূতি, উদ্দেশ্য এবার রঘুনাথপুরের ফাল্গুনী দির বাড়ি। ট্রেনের ধেয়ে চলার সাথে আনন্দের দৌড় ও কম নয় আমাদের। বৃষ্টি হচ্ছে, অন্তরা আর সীমা দির কণ্ঠে গান হবে না, এটা কখনই সম্ভব না। ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে। সত্যিই বাদল দিন গানে মুখর হয়ে গেছে আমাদের ক্যাবিন। জানালা দিয়ে বাইরে দৃশ্য গুলো এতটাই চমৎকার ছিল যে এক বাক্যে Scrumptious moment we were watching! সপ্তরঙ্গা পাখি, কিচির মিচির শব্দ, পড়ন্ত বিকেল, স্বর্ণালী সূর্যালোক, গাঢ় সবুজে নব-পল্লব বাহ!

সময়ের অজুহাতে ফাল্গুনী দির কথা ভুলে গেলাম। কিন্তু ট্রেন তার যথাস্থানে এসে হুইসেল করলো। সে হয়তো আমাদের মত ভুলে খায়নি নিজের গন্তব্যের কথা। ততক্ষণে সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনীভূত হয়ে এসেছে। স্টেশনে আমাদের জন্য গাড়ি এসেছে। আমাদের আগমন বার্তা পেয়ে ফাল্গুনী দি নিজেই চলে এসেছে আমাদের নিতে। সাথে দাদা বাবু। সবাই মিলে স্টেশনে ফাল্গুনী দিকে জড়িয়ে ধরলাম। ওর বিয়ের ছয় বছর পর এই প্রথম দেখা আমার সাথে।

পর মুহূর্তে স্টেশন থেকে বের হয়ে পড়লাম। ফাল্গুনী দি’র বাড়িটা যে এতটা সুন্দর হবে তা ভাবতে পারিনি। চমৎকার বাগান ঘিরে রেখেছে সাদা রঙের ওর দোতলা দালানটা, সামনের দিকটা সম্পূর্ণ কাঁচে ঢাকা। দোতলা থেকে পুরো বাগানটা দেখা যায়। রাতে অনেক সময় আড্ডা দিলাম সবাই। পেট পুরে ইচ্ছে মত খাওয়া দাওয়া। আমি, হিমাদ্র দা আর জয়ন্ত কাকু’র দোতলার সামনের দিকের একটা কামরায় রাতে থাকবো সিদ্ধান্ত হল। কাঁচের জানালার সামনে দাঁড়িয়েই বাগানের সম্পূর্ণ সৌন্দর্যকে উপভোগ করা যায়। নামে মাত্র ঘুম, রাতের তিনটে অবধি গল্পই হচ্ছিলো! অন্তরা দি আর সীমা দি একটা কামরায় এবং মাহি আর হৈমন্তী আরেকটা কামরাতে।



পাশের ঘর থেকে তিন জনের গলা পাচ্ছিলাম। তিন ডাইনির! ইয়ে মানে, অন্তরা, সীমা আর ফাল্গুনী দি। তিন জনেই ভানুসিংহের অন্ধ ভক্ত। গীতবিতান যেন পুরো ঝাঁজরা মুখস্ত। কণ্ঠ ও দিচ্ছিল দারুণ। এমন করতে রাতের তিনটা প্রায়, কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম, তা আর বলতে পারছি না।

ভোরের তখন সাড়ে ছটার মত হবে, বাড়ির প্রধান দরজার করা নাড়ল কেউ। একটু পরেই ফাল্গুনী দির এক চিৎকার শুনতে পেলাম। এর পরে শুনতে পেলাম, “কি করে, আর কখন হল এসব?” জয়ন্ত কাকু টের পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে উঠে নিচে যাচ্ছিল। আমিও উঠলাম, পুলক দা’কে ডাকলাম, কিন্তু উঠলো না। দুবার কান ধরে টানলাম, তাও না। পাঁঠার মত মাথা নাড়িয়ে আবার ঘুম। একাই নিচে গেলাম জয়ন্ত কাকুর পিছু পিছু।

নিচে গিয়ে জানতে পারলাম, পাশের বাংলোর কেউ একজন মরে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। তাও ফাল্গুনী দির বাড়ির বাইরে, বাগানের কাঁটাতারের পাশ ঘেঁষে। যেন ফাল্গুনী দির পাশের বাংলোর ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়েছে। বাম কাত হয়ে শোয়া আর মাথার ডান দিকটাতে একটা বড় ক্ষত। হয়তো এই জন্যই মৃত্যু। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দিলো একজন বাড়ির ল্যান্ড লাইন থেকে। একটু বাইরে বের হলাম দেখার জন্য। শুধু মাথার পেছন দিকটাতে একটু ক্ষত দেখতে পেলাম।

একটু পরেই কাক ডাকা সকালের নরম রোদ গায়ে মেখে পুলিশ আসলো তার গাড়ি করে। ততক্ষণে আমরা নিজেদের মত বাড়িতে চলে এসেছি। যদিও এ তল্লাটে মানুষ জন তেমন একটা দেখা যায় না, তবে লাশটাকে ঘিরে জড়ো করেছে গোটা কুড়ি মানুষ হবে। পুলিশ তাদের কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আশেপাশের সবার থেকে একটু স্টেটমেন্ট নিয়ে সুত্র খুঁজে যাচ্ছে। সেই কারণে পুলিশ ফাল্গুনী দির বাড়িতেও আসলো। গত রাতে কোন চিৎকার বা অন্য কোন আওয়াজ পাওয়া গিয়েছিলো কিনা তা জিজ্ঞসা করলো দাদা বাবুর কাছে। উত্তরে বলল, “বৃষ্টির আওয়াজে কাল রাতে কিছু হলেও তা হয়তো এই অবধি শোনা যায় নি।”

একটু বাদেই উপর থেকে অন্তরা দি নিচে নেমে আসে এবং বলে, “পুলিশ দিয়ে কি এই রহস্যের সুরাহা করা সম্ভব হবে আদৌ?!”

ইন্সপেক্টর একটু বিরক্ত হয়ে বলল, “পুলিশি কাজ সম্পর্কে কতটুকুই বা আপনার ধারণা আছে? আমরা আমাদের কাজ ঠিক মতই করে যাই, আর আপনাদের মত নিন্দুকেরাও তাদের কাজ বা অকাজ যেটাই বলেন, তা ঠিক মত করে যায়। যাই হোক, নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চাইতে ভাল।”

অন্তরা দি, “আপনি ইন্সপেক্টর সুব্রত বসু, কলকাতায় জন্ম কলকাতাতেই বড়, ইউনিভার্সিটি অব কলকাতা থেকে এম.এ. কমপ্লিট, কয়েক মাস হল এখানে ট্রান্সফার হলেন, ঘুম আজ ঠিক ঠাক হয়নি, সকাল থেকে ইচ্ছে মত ধূমপান করা হয়েছে, এখানে ট্রান্সফার হয়ে এসে তা খুব বেশিই করা হচ্ছে, সকাল থেকে এ পর্যন্ত কিছু এখনো খাওয়া হয়নি। আমি ঠিক বললাম তো?‘’

বিষয়টা কি, ঠিক কিছুই বুঝলাম না। অন্তরা দিকে তাকিয়ে ইন্সপেক্টর যেন আকাশ থেকে পড়ল। কিছু বলার মত আর হয়তো তার কাছে কিছু ছিল না। আমরা তো মোটা-মোটি সবাই অবাক। তার একটু বাদেই ইন্সপেক্টর বলল,“অন্তরা চ্যাটার্জি?”

-জানতাম, প্রথম বার দেখে চিনতে পারবি না। তাই তোর বুদ্ধিশুদ্ধি নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ এখনো রয়েছে। তাই বললাম যে পুলিশ দিয়ে আদৌ কাজ হবে তো?
-এই যাহ, সেরেছে! সত্যিই চিনতে পারিনি। তা ঠিক কত বছর বাদে দেখা, বলতে পারিস কি?
পাশ থেকে সীমা দি জিজ্ঞাসা করলো, “তোমরা একে অন্যকে চিনতে নাকি?”

অবান্তর প্রশ্ন তো বটেই, না জানলে এতক্ষণ অবধি এতো তথ্য দুজন দুজনের সম্পর্কে কি করে বলল! মনে মনে গাধা বলে সীমা দিকে বকতে শুরু করলাম। এর পরে অন্তরা দি সবার সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে দিলো ইন্সপেক্টরকে। বলল, “ও আমার বন্ধু সুব্রত বসু। শুধু নামটাই সুব্রত, বাস্তবে একেবারেই নয়। আমরা একই ভার্সিটিতে ছিলাম।“

কিছুক্ষণ সুব্রত বাবু বসলেন এবং খানিক বাদে বের হয়ে পড়লেন। এর পরে দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামলো। ততক্ষণে আমরা গ্রামটা ঘুরে দেখার জন্য প্রস্তুত। দারুণ বন জঙ্গলে ঘেরা এই গ্রামটা। তবে প্রকৃতির এই সৌন্দর্যের মাদকতার মোহ একেবারেই তাক লাগিয়ে ছাড়বে যে কাউকে! অনেক পুরানো একটা মন্দিরের দর্শন পেলাম। দেখে ভালই লাগতে লাগলো। ততক্ষণে পড়ন্ত সূর্যের লাল আভা জানান দিতে শুরু করলো যে, সময় হাতে খুবি কম। এখানে সন্ধ্যা মানেই ঘুটঘুটে অন্ধকার। অন্ধকার তীব্র আকার ধারণের পূর্বেই বাড়ির দিকে রওনা হলাম। পথে মাহি আর অন্তরা দি একসাথে হাঁটছে। সামনে গিয়ে বললাম, “সব বুঝলাম যে সুব্রত বাবু তোর সাথে ছিল, তাই এতো সব জানিস। তবে কয়েকমাস হল এখানে এসেছে, সকালে খায়নি, সিগারেট বেশি খাচ্ছে, ঘুম হয়নি এসব জানলি কি করে?”

- এতো সকাল বেলায় কেইবা খাবার খেয়ে আসে? তাই নিশ্চিন্তে বলা যায় যে খায়নি। তার ওপরে রাস্তা ঠিক করে জানে না এ তল্লাটের। তার মানে বেশি দিন হয়নি এসেছে। ট্রান্সফার হয়ে মফঃস্বলের দিকে আসলে সবারই মন খারাপ থাকে, তার ওপরে বেচারা অবিবাহিত। তার মানে মন খারাপ, আর মন খারাপ থাকলে ধূমপান একটু বেশিই করা হয়। এই ভেবেই বলেছিলাম, তাই মিলে গেছে!

পাশ থেকে মাহি আর পুলক দা হাসতে শুরু করলো। সত্যিই মেধাবী। কথা একেবারেই কম বলে অন্তরা দি। ‘কথা কম কাজ বেশি’ বাক্যের সাথে ওকে একেবারেই মেলানো সম্ভব। তার পরে হাটতে হাটতে বাড়িতে পৌঁছলাম। রাতের খাবার খেয়ে রাতটা আবার গল্প করতে অর্ধেক শেষ করে ফেললাম।

সকাল বেলায় উঠে জলখাবার খেয়ে আবার একটু ঘুরতে হলাম সবাই। মধ্য পথে পুলিশের গাড়ি। ইন্সপেক্টর সুব্রত গাড়ি থেকে নামলেন। তারপরে বললেন, “কোথায় যাওয়া হচ্ছে সবাই মিলে?” অন্তরা দি বলল, “একটু বের হলাম। তো কোথায় চললি?”
-ভিক্টিমের স্বজনদের থেকে কয়েকটা স্টেটমেন্ট নিয়ে ফিরলাম ওই কেসটা সম্পর্কে।
-কি মনে হল ওটা নিয়ে?
-সাধারণ দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে।
-তোরা যে তাই ধরে নিবি খুনটাকে আগেই সন্দেহ করেছিলাম!
জয়ন্ত কাকু বলল, “কি করে খুন বুঝলি? আত্মহত্যাও তো হতে পারে।”
আমি। –আত্মহত্যা হলে মুখ থুবড়ে পড়তো বটে, তবে মাথার পিছনে ডান দিকে ক্ষত থাকতো না। তো সুইসাইড বলা যায় না। তবে যদি আদৌ ভিক্টিম ছাদ থেকে দুর্ভাগ্য বসত উলটে পড়ে যায়, তবে তার মাথায় পিছনে ডান দিকে ক্ষত থাকা স্বাভাবিক। তবে তখন কিন্তু তার মুখ থুবড়ে পড়ে থাকার কথা না। কিন্তু সে মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল।
অন্তরা দি। –বাহ বাদর! বুদ্ধি তো তোর পুরো খুলে গেছে।
সুব্রত বাবু। -তবে পড়ে গিয়ে উনি হয়তো ছটফট করতে করতে পাশ মুড়েছিল।
মাহি। -দারুণ পয়েন্ট। তবে দিভাই, তোমার কেন মনে হচ্ছে এটা খুন?
আমি। -যদি আদৌ ভিক্টিম ছাদ থেকে পড়ে যেত, তবে লাশটা এতো দূরে গিয়ে পড়তো না। সাধারণ যদি কেউ আত্মহত্যা করতে চায়, তবে সে ছাদ থেকে একটু শক্তি নিয়ে লাফ দেয় এবং এর ফলে একটু দূরে পড়ে। কিন্তু লাশের পজিশন আর ক্ষত দেখে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে ভিক্টিম আত্মহত্যা করেনি। আর দুর্ভাগ্য বসত যদি সে ছাদের থেকে পড়ে যেত, তবে লাশটা এতো দূরে থাকার কথা ছিল না।

অন্তরা দি কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “সত্যিই তোর মস্তিষ্ক আজ খুলে গেছে।” সুব্রত বাবুর দিকে তাকিয়ে এর পরে বলল, “যাই হোক সুব্রত, ভাল মত ইনভেস্টিগেশন চালিয়ে যা। যাচ্ছি তবে এখন।”

কিছুক্ষণ ঘুরে দেখতে দেখতে সৌন্দর্যের মাদকতায় আবার আচ্ছন্ন হলাম। এর মধ্যেই মাহি অন্তরা দিকে জিজ্ঞাসা করলো, “খুন কেন মনে হল তোমার?” একই প্রশ্ন আমিও করলাম। অন্তরা দি বলল, “একটা এঙ্গেল থেকে দেখছিস কেন? খুনটা যে ছাদ থেকে পড়ে হতে হবে এমনটা কি কেউ বলেগেছে?”

থতমত দুজনেই...

আর কোন শব্দ না করে সবাই নিঃশব্দে চলতে লাগলাম। সীমা দির প্রস্তাবে ত্রিনয়ন পুরের খুব পুরানো একটা সুড়ঙ্গ গুহা দেখার জন্য সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম। তবে সবচে বেশি কাট খড় পুড়িয়েছে পুলকদা আর হৈমন্তী জয়ন্ত কাকু আর ফাল্গুনী দিকে মানাতে। অবশেষে যাওয়া হয় দীর্ঘ ৯ মাইল দূরের প্রাচীন সুড়ঙ্গটা দর্শনে। আমাদের বাড়িতে পৌছতে পৌছতে অন্ধকার একদম জমাট বেঁধে ফেলেছিল। তৃতীয় রাতটাতেও যথা নিয়মে সন্ধ্যার পর থেকেই সবাই একসাথে বসে গল্প করছিলাম। তবে পুলক দাকে একটু আনমনা দেখাচ্ছিল। জয়ন্ত কাকু বলল আগামিকাল শুধু রঘুনাথপুরে আছি। হঠাৎ একটা কল আসলো ল্যান্ড লাইনে। ফাল্গুনী দি ফোন তুলে অন্তরা দিকে ডাকল। বলল সুব্রত’র ফোন। অন্তরা দি একমিনিটের মত কথা বলল। তার পরে রেখে দিলো।

হৈমন্তী তখন গভীর মনোযোগে একটা এডভেঞ্চার বই পড়ছিল। পুলকদা জিজ্ঞাসা করলো, “মোটিভটা আগে জানা প্রয়োজন নাকি ঘটনাটা?”

জয়ন্ত কাকু -ঘটনার সূত্র ধরেই উদ্দেশ্য জানা যায়।
অন্তরা দি -কাকু, আর দুটো দিন থাকা যায় কি?
জয়ন্ত কাকু -কেন? কোন প্রয়োজন আছে কি?
অন্তরা দি –আরও একটা খুন হয়েছে। একই ভাবে। এটা হয়েছে গতকালকের ভিক্টিমের অফিসের দ্বাররক্ষীর সাথে। আর এবার সুব্রত আমাকে কেসটার সুরাহা করতে বলছে। এর আগেও এমন আরও দুটো খুন হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে পরস্পর কোন সম্পর্ক নেই নিজের ব্যবসা বাদে।
জয়ন্ত কাকু –ওকালতি ছেড়ে এবার গোয়েন্দাগিরি। ভালই প্রমোশন হয়েছে তোর। সেলুকাস!
অন্তরা দি –কাকু, বোঝার চেষ্টা করো।
হৈমন্তী হঠাৎ করে বইয়ের উপর দিয়ে মাথা তুলে বলল, “দারুণ একটা এডভেঞ্চার হবে কিন্তু, এটাই চেয়েছিলাম। এবার হয়তো এই ভ্রমণটা সার্থক হতে যাচ্ছে।
অন্তরা দি হৈমন্তীর বইটা হাতে নিয়ে মাথায় হাল্কা একটা করে “রাখ তোর এডভেঞ্চার” বলেই হৈমন্তীর পেটে কাতুকুতু দিতে আরম্ভ করলো। হৈমন্তীর খিক খিক শব্দ করে হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়ছিল। ওর হাসির আওয়াজে যেন বাড়িটা ভেঙ্গে পড়ছিল।
পরক্ষনেই ফাল্গুনী দি –তোর ওসব করতে হবে না। পুলিশ ঠিক বুঝে নিবে। এসব ঝুঁট ঝামেলায় পড়ার কি দরকার অন্তু!
দাদা বাবু –আহা, বাধা দিচ্ছো কেন? দাওনা ওকে ওর কাজ করতে।
ফাল্গুনী দি –তুমিও ওর পক্ষ নিচ্ছো...
জয়ন্ত কাকু এবার রায় দিয়ে বলল –মাত্র কিন্তু দুটো দিন। মনে থাকে যেন দস্যিনী।

দস্যিনী মানে আমাদের দস্যি দিদি অন্তরা। ও সেই শর্তেই রাজি হল এবং বলে দিলো যেন এই বিষয়টা বাইরের কেউ না জানে। গুরুগম্ভীর ভাবে আমরা সায় দিলাম। একটু বাদেই অন্তু দি আবার হৈমন্তীকে কাতুকুতু দিতে আরম্ভ করলো। ঘরের নিস্তব্ধতাকে টুকরো টুকরো করে দিলো হৈমন্তীর হাসি। ততক্ষণে হাতে একটা বই নিয়ে দোতলার রুমটাতে গিয়ে আমিও পড়তে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ বাদে ফাল্গুনী, সীমা এবং হৈমন্তী আবির্ভুত।

ফাল্গুনী দি –মেয়েটা কে?
আমি –কোন মেয়েটা?
সীমা দি আমার কান ধরে টেনে –ভোলা সাজতে হবে না আর। সত্যি করে বল।
আমি –উফ, বলবে তো কার কথা বলছো।
হৈমন্তী –আহা, সবাই হাত ধুয়ে পড়লে কেন? দাদা তো রাঙ্গে হাত পাকড়ে গায়ি।
আমি –রাঙ্গে হাত? ধুয়ে ফেললে তো চলে যায়। আচ্ছা গত পরশু রাতে ঠিক কয়টা অবধি বৃষ্টি হচ্ছিলো?
ফাল্গুনী দি –গুল্টু, এড়িয়ে যাচ্ছিস তুই!
আমি –উফ, বল না।
ফাল্গুনী দি –শুরু হল তোর আবার। রাত দুটো অবধি ছিল বৃষ্টি।

আর কোন কথা বলে সরাসরি দৌড়ে অন্তু দির কামরায় যাচ্ছিলাম। সীমা দি বলছিল, এই বাদর দাঁড়া। কিন্তু কোন কথার উত্তর দেইনি। অন্তু দির রুমে তখন পুলক আর দিভাই দুজন দুটো বই পড়ছিল। গিয়ে বললাম, “আচ্ছা, ভিক্টিমের লাশটা দেখে ঠিক কতক্ষণ আগের কথা মনে হয়েছিলো?”

অন্তরা দি -হবে দু এক ঘণ্টা। রক্ত গুলো দেখে বেশিক্ষণ হয়েছিলো বলে মনে হচ্ছিলো না।
আমি -অবশ্যই খুন এটা। যদি পরেই যেত, মাথার পিছে ক্ষত এবং তা মাটিতে পরেই হয়, তবে মাথা পিছনে কেন মাটি লেগেছিল না? বৃষ্টি তো রাত দুটো অবধি ছিল। ধুয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
পুলক দা –আমিও ধরেছিলাম। তবে...
আমি –কি তবে?
পুলক দা –দি ভাই কি ভাবছে জানি না।
আমি অন্তরা দির দিকে তাকিয়ে বললাম –তোর কি মনে হচ্ছে দিভাই?

অন্তরা দি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল –তেমন কিছু না। এটা সূত্র ধরা যেতে পারে। তবে তোরা কি এটা দেখছিস, লোকটা এতো বড় একটা দালানে একা থাকতো। ছেলে মেয়ে আছে। তবে কেন একা থাকতো এই প্রশ্নে বাড়ির লোক ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে সুব্রত বলল। লাশ বাড়ির বাইরে ছিল, তবে বাড়ির দরজায় ভেতর থেকে তালা। বের হওয়ার মত ছাদের দরজাটাই খোলা ছিল।

আমি –তার মানে ছাদ টাই রয়েগেল এবার। সব গুলিয়ে যাচ্ছে কেন জানি।
পুলক দা –হুম, একদম তাই।
অন্তরা দি –আরও বড় রহস্য হচ্ছে এই যে আজকে যেই খুন হয়েছে, সে মৃত্যুর আগে অফিসের গার্ডেনের মাটিতে রক্তের মধ্যে লিখে গেছে find there, Always-Remember-Me. (অন্তরা দি নিজের বইয়ের মধ্যে লিখাটা লিখে আমাদের দেখায়।)। তাকে দেখেও মনে হচ্ছিলো ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু। তবে ক্ষত একই রকম।
পুলক দা –এই কেমন সেন্টেন্সরে বাবা।
আমি –কোন হেঁয়ালি?
অন্তরা দি –হতে পারে, তবে তোরা এখন একটু যা তো। হৈমন্তী আসার আগেই একটা সিগারেট ধরাবো।

আমি আর পুলক দা বাইরে দিয়ে দরজাটা চাপিয়ে চলে গেলাম নিজেদের রুমে। তবে মাথায় একটাই বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে। find there, Always-Remember-Me.। রাতে আর ঠিক মত ঘুম হবে না বুঝতে পারলাম। তাই হাতে সপ্তপদী উপন্যাসটা তুলে নিলাম। এক বসাতে ৪৭ তম পৃষ্ঠা প্রায় শেষ। তখন কাঁচের জানালা দিয়ে দেখতে পেলাম, পাশের বাড়ির বাগান থেকে কেউ একজন টর্চ হাতে নিয়ে দরজার দিকে যাচ্ছে। পড়ে বুঝতে পারলাম, একজন নয়, দুজন সেখানে। ফলো করতে চেষ্টা করলাম এবং দেখলাম কিছুক্ষণ পরে তারা বের হয়ে যাচ্ছে। মেঘ গর্জন করছিলো এবং বিদ্যুৎ চমকাতেই অশনির রশ্মিতে বুঝতে পারলাম সেটা আমাদের দস্যিনী। তবে সাথে একজন কেউ ছিল, তাকে ঠিক বুঝতে পারলাম না।

একটু ভীতু হয়ে পড়লাম। তবে পুরো ভরসা রয়েছে অন্তরা দির প্রতি।
তবুও একটু থতমত...

বাইরে বের হয়ে অন্তরা দির ঘরটার সামনে গেলাম। দেখি দরজা চাপানো। একটু বাদে পায়ের শব্দ পেলাম। একটু সতর্ক হয়ে আড়ালে দাঁড়িয়ে পড়লাম। অন্তরা দি খুব সাবধানে নিজের ঘরে ঢুকে পড়লো। আমি ঠিক তখনো বাইরে দাঁড়িয়ে। একটু পরে আমাদের কামরায় ঢুকে ঘুমনোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু তা খুব দ্রুত আর হল না।

সকালে উঠতেই হৈমন্তী সামনে এসে বলল, “বের হতে হবে চল।”

কোন কথা না বলে দ্রুত বেরোবার প্রস্তুতি নিলাম। বের হয়ে দেখলাম, শুধু তিন জন যাচ্ছি। আমি, সুব্রত দা আর অন্তরা দি। উদ্দেশ্য দ্বাররক্ষীকে যেখানে খুন করা হয়েছে, সরেজমিনে পরিদর্শন করতে যাওয়া। পুলিশের গাড়িতে এই প্রথম বারের মত ওঠা হল। অন্তরা দিকে জিজ্ঞাসা করলাম, “কাল রাতে কি খুঁজে পেলি?”
অন্তরা দি -সেটা আজকে অফিসটা ঘুরে দেখে বলতে পারবো।
আমি -অফিস ঘুরে বাড়ির ঘটনা বলবি? যাই হোক, লোকটার কি কাজ করতো?
অন্তরা দি -Archaeologist (প্রত্নতত্ত্ববিদ)। খুব পুরানো কালেকশন যাদুঘরে সংরক্ষণ করে।

একটা অদ্ভুত গুমোট পরিস্থিতির জন্ম নিলো। কোন সুরাহা করতে পারছিলাম না। আধঘণ্টা লাগে গাড়িতে করে অফিসে পৌঁছতে। রঘুনাথপুরে যে এতো বড় অফিস থাকবে, তা ভাবতে পারিনি। অফিসটার চার পাশে ঘুরে দেখলাম তিন জনে। সব কিছুই ঠিক, শুধু চোখে পড়ার মত পেলাম কিছু ছোট ছোট গোল দাগ, যা মাটিতে পড়ে ছিল। মনে হচ্ছিলো কেউ হাল্কা মোটা কোন লাঠি লম্বা করে ধরে মাটিতে আঘাত করে এমন দাগ করেছে। কিছুটা গর্ত গর্ত হয়ে রয়েছে। এর থেকে কয়েক হাত দূরে একটা জায়গা দেখে মনে হল ছাদের থেকে হয়তো কেউ বড় কিছু একটা ফেলেছিল। বৃষ্টির কারণে কাদামাটিতে তা স্পষ্ট চিহ্ন ফেলেগেছে। তবে দাগ গুলো দেখে কেন যেন মনে হচ্ছিলো কোন একটা প্রাণীর পায়ের ছাপ ছিল সেটা। একটা রিদম নিয়ে দাগ গুলো সামনে বাড়ছিল। যেমন করে মানুষ হাটে।
অন্তরা দি বলল, “ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে”।
আমি –মানে?

অন্তরা দি একজন ভদ্র লোকের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে আমায় বলল, ওই লোকটা হচ্ছে প্রথম দিন যে খুন হয়েছিলো, তার মেঝো ছেলে। লোকটার হাতে হাল্কা ব্যান্ডেজ। হয়তো পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিলো। পায়েও হয়তো খানিকটা চোট লেগেছিল। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছিল। একটু সন্দেহ হচ্ছিলো আমার। এতো ব্যথা পাওয়া সত্ত্বেও লোকটা অফিসে কেন।

তবে যাই হোক, অফিসেও যে এতো চমৎকার করে কেউ বাগান করে, তা ওই প্রথম দেখেছি। যতটুকু জানতে পেরেছি, তাতে বুঝতে পেরেছিলাম যে দ্বাররক্ষীর বাগান পরিচর্যা করার খুব শখ ছিল। পুরো বাগানটা উনিই দেখতো। তবে আমি কিছুটা বিরক্তি আর হতাশা নিয়েই অন্তরা দির দিকে তাকিয়ে বললাম যে, “ঠিক বুঝতে পারছি না যে কি হচ্ছে!”
অন্তরা দি –সুরাহা হয়ে গেছেরে সুব্রত।
সুব্রত দা –কি? কিভাবে? কে দোষী।
অন্তরা দি বলল যে মাটিতে রক্ত পাওয়া গেছে কিছুটা। সম্ভবত খুনি পালানোর সময় আঘাত পেয়েছিলো। তার রক্তের ডিএনএ টেস্ট করে সাস্পেক্ট লিস্টের সবার সাথে মিলিয়ে দেখা যেতে পারে। তবেই খুনি ধরা পড়বে।

সুব্রত দা বলল, তার একটা বন্ধু ফরেনসিক এক্সপার্ট। আধঘণ্টার মধ্যেই রিপোর্ট বের করতে পারবে। তাকেই ডাকা যেতে পারে। পুলিশ ফোর্স ফরেনসিক এক্সপার্টকে নিয়ে আসে ২০ মিনিটের মধ্যেই। তবে ফরেনসিক এক্সপার্ট আসার আগেই আমাকে একটু বের হতে হয়েছিলো। সীমা দির নির্দেশ ছিল যেন বেলা ১১টা বাজে ওর সাথে দেখা করি।

ঘটনা ক্রমে যা হয়েছিলো তা হচ্ছে, দুজন ফরেনসিক এক্সপার্টের মধ্যে একরাশ লম্বা চুল আর দাড়িগোঁফে ঢাকা একজন এবং অন্য আরেকজন আটাশ বছরের একন তরুণী গিয়ে পৌঁছে কিছু স্যাম্পল নিয়ে কাজ শুরু করে। অফিসের সবার থেকেই এক ফোঁটা ব্লাড স্যাম্পল নিয়ে দুজন রিপোর্ট করার জন্য আবার বের হলেন। ঠিক এক ঘণ্টা পরে এসে বলল, ভিক্টিমের বড় ছেলে বলাই পাউলের ব্লাড স্যাম্পলের সাথে মাটিতে পাওয়া রক্তের ডিএনএ মিলেছে।

পুলিশের কড়া পাহারার কারণে লোকটা পালাতে পারছিল না। তার ওপরে পা ভাঙ্গা। তবে তাকে পুলিশ জেরা শুরু করলে সে বলে, “ওই রক্ত আমার নয়।”
অন্তরা দি –তো ডিএনএ কি করে ম্যাচ করে? আর আপনার হাতেই বা ব্যান্ডেজ কেন?
বলাই রেগে গিয়ে –আহ, ও রক্ত আমার হতেই পারে না। আমার তো কেবল হাত আর মচকেছে।
অন্তরা দি –তার মানে আপনি বলতে চাইছেন যে আপনি শুধু পড়ে গিয়ে হাত মচকেছেন, আর কিছু নয়।
বলাই –হুম।
অন্তরা দি –তো খুনটা আপনি করেছেন তা স্বীকার করছেন না কেন? পড়ে গিয়ে হাতের চামড়া হাল্কা ছিলেছে। তাই ব্লাড স্যাম্পল মিলছে। রাতেই আপনি ব্যান্ডেজ করাতে তা আর লক্ষ্য করেন নি।
বলাই এবার কোন কথা না বলে একটু ভীতু হয়ে কাঁদতে শুরু করলো। এবং একটু বাদে বলে ফেললো যে হ্যা, সে খুন করেছে। তবে হীরাটা সে খুঁজে পায়নি।
অন্তরা দি –আপনি সবটা খুলে বলুন। আপনি যদি সবটা এখন সত্যি বলেন, তবে আমরা চেষ্টা করবো আপনার শাস্তি কিছুটা কমিয়ে আনতে। কিসের হীরে, আপনার সাথে আর কারা রয়েছে?
বলাই –আমার বাবা একজন Archaeologist গত কয়েকদিন আগে বাবা তার কাজ করতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছে খুব প্রাচীন একটা হীরে। যার বর্তমান বাজার দাম এক কোটিরও বেশি। বাবাকে আমি বলেছিলাম যেন সেটা সরকারের কাছে সোপর্দ না করে। কিন্তু সে আর তার কলিকরা তা করেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমি আর আমার দুজন বিশ্বস্ত বন্ধু মিলে তাদের খুন করি। তবে হীরে আমরা পাইনি ওই দ্বাররক্ষী রামুর জন্য!

অন্তরা দি সুব্রত দার দিকে তাকিয়ে বলল, “সুব্রত এদের নিয়ে যা। আর তুই চুল দাড়ি খুলে ফেল বাদর।(ফরেনসিক এক্সপার্টের দিকে তাকিয়ে)”
হ্যা, কোন ফরেনসিক এক্সপার্ট নয়, সেটা ছিলাম আমি নিজে এবং সীমা দি। এটা ছিল একটা সাজানো নাটক। সত্য বের করার জন্য অন্তরা দি এই নাটকটা সাজিয়েছিল। আর কোন ব্লাড স্যাম্পল ও মাটিতে ছিলনা। সবটাই বানোয়াট একটা নাটক ছিল। হঠাৎ সুব্রত দা জিজ্ঞাসা করলো, “আচ্ছা অন্তরা, তুই কি করে বুঝলি যে খুনি ওই লোকটা?”
অন্তরা দি -সদর দরজা বন্ধ, ভেতরে যাওয়ার আর কোন রাস্তা নেই ছাদ ছাড়া। তাও ছাদে ওঠার মত তেমন কোন সুযোগ নেই। উঠতে পারবে সেই, যার পা দুটো খুব খুব খুউউব লম্বা। এটাই ছিল আমার সুত্র।
আমি –তার মানে রনপা?
অন্তরা দি –হুম, দাগ গুলো দেখে সন্দেহ হয়েছিলো। আবার বড় একটা দাগ দেখে মনে হয়েছিলো, যে রনপায় হাঁটছিল, সে হয়তো কাদায় পিছলে পড়ে গিয়েছিল বৃষ্টির কারণে। ব্যাস, তখনি বলাই ব্যান্ডেজ নিয়ে আবির্ভূত!
সুব্রত দা –তো হীরেটা।
অন্তরা দি –সেটাও পেয়েছি। সেন্টেন্সটা মনে আছে কি?
আমি –হুম, find there, Always-Remember-Me ।
অন্তরা দি –So find there my dear little brother.
আমি –কি করে কি করবো! বল কিছু।
অন্তরা দি –উফ, কিছু তো একা একা করতে শেখ! সেন্টেন্সটা নেতিবাচক করে দেখতো।
আমি – find there, never forget me. ওহ, বিষয়টা তো Forget-Me-Not ও হতে পারে!
সীমা দি –অর্থাৎ Forget-Me-Not ফুল গাছের আশে পাশেই আছে হীরেটা!
অন্তরা দি –ঠিক তাই। সেখানেই তো খুঁজতে বলেছে।
সীমা –যাহ বাবা! লোকটা (দ্বাররক্ষী) তো দারুণ মেধাবী ছিল।
অন্তরা দি –ঠিক তাই রে, কিন্তু এই ধণলিপ্সার মোহে একটা চমৎকার মেধাবীকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি!

যদিও একটু খারাপ লাগলো, তবে আমরা যে সফল হয়েছিলো, এটা নিয়েও একটু আনন্দ হল। তার পরে হীরেটাও খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল যথাস্থানে। এবং এর পরদিন আবার পুরো ব্যাটালিয়ান ফোর্স নিয়ে কলকাতায় ফিরেছিলাম। তবে ফেরার সময় খুব খারাপ লেগেছিল ফাল্গুনী দির চোখের জল দেখে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.