নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্টিগমা

রাফিন জয়

স্টিগমা

রাফিন জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক বছরেও মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়নি

২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪


আক্ষেপ করবো কি ভাবে জানি না। সময়ের পরিক্রমায় কেটে গেল একটা বছর। রাষ্ট্রের চোখে আমরা রাষ্ট্রদ্রোহী আজো। পুলিশ হত্যা চেষ্টার মিথ্যা মামলা (৩০৭)। আইনি ভাষায় আমাদের মামলার নাম রাষ্ট্র বনাম লিটন নন্দি গণ।

আমাদের ভুল ছিল একবুক সাসহ নিয়ে পচা-গলা, নষ্ট ও পথভ্রষ্ট সমাজের অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতি আপোষ না করে জং খাওয়া এই ইস্পাত শৃঙ্খল ভাঙ্গার দৃঢ় প্রত্যয়ের মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। ঘটনাটা ঘটে, গেল বছরের ২৬শে মে। হুম, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনের ন্যায় বিচারের প্রতীকী পুনঃস্থাপনের দাবিতে ঐদিন আমরা সমাবেত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম কোর্ট প্রাঙ্গনের দিকে। কারণ অবিদিত নয় হয়তো কারো কাছে। ক্ষমতালিপ্সু সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য হেফাজতের সাম্প্রদায়িক অন্যায় আবদারের কাছে মাথা নত করে মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনার বিরুদ্ধে আতাত করে কোর্ট প্রাঙ্গণের ন্যায় বিচারের প্রতীকী অপসরণ করে। যা ছিল শিল্প সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনার বিরুদ্ধে এক নগ্ন আঘাত। শুধু তাই করে হেফাজত ক্ষান্ত হয়নি। ওই দিনেরই বিকেলে (২৬শে মে) তারা আবার ঘোষণা দেয়, দেশে কোন মূর্তি থাকতে পারবে না।

এমন কোন ঘোষণা যে তারা করবে, তা আমাদের আগে থেকেই জানা ছিল। সরকার প্রধান যে অদূরদর্শী, তা মোটেই নয়। মুলত হচ্ছে ক্ষমতা লিপ্সা। যতটা মনে পড়ে ঘটনার সময়টা, মিছিল নিয়ে আমরা সুম্প্রিম কোর্টের দিকে যাচ্ছিলাম। স্লোগানে স্লোগানে রাজপথ মুখরিত। শিশু একাডেমীর সামনে যেতেই দেখি শিক্ষা চত্বরের সামনে ব্যারিকেড বাধা। সম্ভত ঋদ্ধ দা (ঋদ্ধ অনিন্দ্য, সহ-সাধারণ সম্পাদক, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা মহানগর সংসদ) আমার বাম পাশে ছিল। মিছিল থেকে আমার কয়েকজন বের হয়ে সামনে গেলাম। কিন্তু ব্যারিকেড অবধি যাওয়ার আগেই পুলিশ আমাদের দিকে তাক করে টিয়ারসেল আর জলকামান নিক্ষেপ করতে শুরু করলো। টিয়ারসেলের ঝাঁজালো গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসছিল (মুক্ত মেরুতে সরকার শ্বাস নিতেই বা কবে দিয়েছে!) চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না। জল কামানের লাল জলে স্নাত হয়ে টিয়ারসেল থেকে বাঁচার জন্য গাছের পেছনে আশ্রয় নিয়েছিলাম কয়েক জন। মিছিল ছত্র ভঙ্গ হয়ে পড়লো। সামনের দুটো রো'তে যারা ছিলাম, তারা নড়িনি সামনে থেকে। শতাধিক আহত হয়। দেখলাম কারো একজনের পায়ে হঠাৎ করে পুলিশ টিয়ারসেল মেরে দিলো। উনি রাস্তায় পড়ে গেল। সম্ভবত তপন দা ছিল সেটা। টিয়ারসেলের কারণে চোখে দেখতে পাচ্ছিলাম না। চশমাটাও লাল জলে লাল জলে ভেজা। লিটন দা (লিটন নন্দি) আর মরশেদ ভাই (মরশেদ হালিম) এক সাথে এরেস্ট হল। কিছুক্ষণ পরে আরিফ ভাইয়াও (আরিফ নূর)।

একটা সময় বাসদের মনিকা দি চিৎকার করে বলতে শুরু করলো পুলিশদের উদ্দেশ্য করে, "কি? কি?" পাশে থেকে সবাই স্লোগান শুরু করলো পুনরায়। তখন আবার টিয়ারসেল আর জলকামানের জল। স্পষ্ট মনে আছে, একজন পুলিশ বলছিল, "ওদের (মেয়েদের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে) বক্ষ বরাবর জলকামান মারো। তা না হলে যাবে না।" সত্যি যেতাম না আমরা। অনবরত টিয়ারসেল তখনো ছুড়ে যাচ্ছিলো পুলিশ। তখন আমি সামনে এগিয়ে ব্যারিকেড লাফিয়ে অতিক্রম করে পুলিশের বন্দুকের নল ধরে বুকে ঠেকিয়ে বললাম,"কত গুলি আপনাদের? We are ready to die. Come on shoot me. Shoot me, I said shoot me." আর কিছু শুনল না। শুট ও করলো না। প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে গেল।

রাষ্ট্র আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিলো। জেলের মাঝে তো আরও অনেক কষ্টের গল্প রয়েছে। তবে জেলে একটা সুষ্ঠু শৃঙ্খল আছে, বাইরে তা নেই। তিন দিন পরে কারামুক্তি পাই তো বটে, মামলা নিষ্পত্তির এই অবধি রাষ্ট্র কোন ভূমিকা পালন করেনি। চার্জশীট অবধি আসেনি এখনো। এখন প্রতিদিন সহ্য করতে হচ্ছে মানসিক নির্যাতন। হত্যা চেষ্টার মিথ্যা মামলার বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছি। জীবনের মোড় আর উদ্দেশ্য দুটোই বদলে গেছে। তবে আমি তা ইতিবাচক ভাবেই দেখি। রাষ্ট্রের টনক নড়েছিল ঐদিন। তাই তো ভাস্কর্যটাকে আমরা বাঁচাতে সক্ষম হয়েছি।

পরিশেষে কথা,
"নীলিমায় সূর্যাস্ত হয়ে আসে কালো রাত,
পুব গগণে রবির আলোয় আসে নব প্রভাত!!"
--রাফিন জয়

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১৯

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: "সরকার যখন জনগণকে ভয় করবে বুঝে নিবে দেশে তখন গণতন্ত্র আছে, আর জনগণ যদি সরকারকে ভয় করে তখন বুঝবে দেশে রাজতন্ত্র চলছে।" কথাটা কে যেন বলেছিল মনে নেই। তবে বাংলাদেশের অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে সরকার ক্ষমতা টেকানোর জন্য সব কিছুই করতে প্রস্তুত। জানিনা দেশে এখন কোনটা চলছেঃ গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র না পিশাচতন্ত্র!

ব্লগে আমি নতুন। আসা করি সময় পেলে আমার ব্লগে একটু ঘুরে আসবেন। দাওয়াত রইলো।

২| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশ তো আমাদের না। যারা ক্ষমতায় থাকে এই দেশ শুধু তাদের।

৩| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:১৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অমাবস্যা নামে ঘনঘোর আঁধিয়ায়
কুচকুচে কাল, খুনিয়ারা লাল মিলেমিশে একাকার
মত প্রকাশ, ধর্ম, বাক স্বাধীনতা, গণতন্ত্র
হারিয়ে যায়: অজ্ঞানতা, গুম, খুন, স্বৈরচারিতায়।

বিহবল জনতা ‘নিব্বাক’ স্তব্ধতায় মূঢ়
মাথাগোজ করে চলে জীবন! বাঁচার স্বপ্নে নয়
মরে না যাবার দু:স্বপ্ন শেষে ক্লিনিক্যালি বেঁচে রয়;
যাপিত জীবনে নাভিশ্বাস ওঠে- অসহায়তায়।

স্বাধীনতার মানে কে খোঁজে?
সইতে সইতে সাধারন, ভুলেছে জুলুমের নিকেষ
ভিনদেশী-স্বদেশী জালিমে তফাত কই!
চেনা মুখগুলোই অচেনা মনে হয়- সত্যায়নায়।

বিক্রীত, বিকৃত চেতনা- দলান্ধতায় হাবুডুবু খেলে
কেঁদে ওঠে তিরিশ লাখ শহীদান
কাঁদে স্ব-অধিন মন; ইতিহাসে কালরাত চক্রায়ত
দিন বদলায়, রয় নির্যাতিতের কালরাত নিত্যতায় !

আলো চাই আলো, চোখ ধাঁধানো উজ্জ্বল ঝকমকে আলো
দেশ আর মানবতার প্রেমের দিশায় প্রোজ্জ্বল
বাতিঘর দিশা: দেখাবে পথ অন্ধকারে
মুক্তির, স্বাধীনতার, মুক্তমনের- সত্যজ্ঞানায়নায়।।

৪| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪২

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: দরকারি জিনিষ বাদ দিয়ে ফালতু একটা মুর্তি নিয়ে দুই পক্ষের কামড়াকামড়ি।

এদের সবাইকে সাইজ করা দরকার।X(

২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৪

রাফিন জয় বলেছেন: মূর্তি আর ভাস্কর্যের পার্থক্য আগে বুঝতে শেখেন। আর ফালতু মানে? শিল্প কি? উত্তর দিবেন আগে।

৫| ২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আপনারা ম্যাওপ্যাও বাহিনী! হেফাযতেরা আরো আবাল!!

দেশে যদি ন্যায় বিচারই না থাকে, বালের ভাষ্কর দিয়ে কি হবে?
ওটাতো এখনো আছে, যান ধুয়ে পানি খান!!X(

৬| ২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১১

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: @"তাই তো ভাস্কর্যটাকে আমরা বাঁচাতে সক্ষম হয়েছি।"

থেমিস দেবী তো আছেই! তবুও "এক বছরেও মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়নি" কেন???


ম্যান??
আবেগ দিয়ে দেশ চলে না!!!
ন্যায় বিচার থাকলে মূ তি লাগে না! কিন্তু হাজারটা ভাষ্কর থাকলেও জাস্টিসের প্রয়োজন!!(অ্যাম আই রাইট, অর অ্যাম আই......)
ঐ লাইন চারবছর আগেই পার করেছি!
সুবোধকে চেনেন???
দে আর মাই ফ্রেন্ড!!;)

৭| ২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২২

সনেট কবি বলেছেন: দেবীর জন্য আমাদের দরদ কেন? তা আবার ভিনদেশী দেবী! মনগড়া কিছু একটার প্রতি আবেগ দেখালে সে আবেগের কি ভেলু?

৮| ২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এটা অহেতুক একটা আন্দোলন ছিল। বলা নেই, কওয়া নেই আচানক ঐ মূর্তি/ভাস্কর্য ওখানো স্থাপনেরই বা দরকার কী পড়ল? আবার সরানোতেও এত উতলা হওয়ার কী আছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.