![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার লেখালেখির পেছনে চালিকাশক্তি- সর্বগ্রাসী পুঁজিবাদী সংস্কৃতির বিপরীতে মানবিক সমাজের আকাঙ্খা ও শ্রেনীদর্শন।
- বাবা বড় হয়ে তুমি কি হবা?
- আমি তো ডাক্তার হবো
- কেন?
- ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করবো ….
বড় হয়ে কি হবে এই প্রশ্নের খুব এমন একটি উত্তর এটি। ছোট বেলায় আমার অনেকেই এই ধরনের কথোপকথন প্রাকটিস করেছি। কিন্তু একটু বড় হওয়ার পড় বুঝলাম ডাক্তার হলে সেবা যতটুকুই করা যাক না কেন, কিন্তু মাল পানি আসে প্রচুর। বাবা মা’রাও গর্ব করে বলতো আমার ছেলেতো পরীক্ষায় খুব ভালো করেছে, ওকে তো আমরা ডাক্তার বানাবো। এভাবেই আমাদের মনজগতে ঢুকে যেতো ডাক্তার হওয়া মানেই সমাজের উচু একটা স্তরে উঠে যাওয়া। আর আমাদের সামনে উদাহরণ হিসেবে থাকতো শহরের বিভিন্ন নামকরা ডাক্তার যাদের চেম্বারে যাওয়ার আন্ত:ত তিনদিন আগে সিরিয়াল দেওয়া লাগতো।
যাই হোক ছোট বেলার লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের সময় আসে এইচএসসি পরীক্ষার পর। হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়, কার আগে কে ডাক্তার হবে। শুরু হয় যুদ্ধ, এর নাম ভর্তিযুদ্ধ। তবে এই যুদ্ধেও অনেকে এক্সট্রা লাইফ লাইন পায়। সেই লাইফ লাইন দেয় প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলো। চান্স পাওনি তাতে কি, আমরা আছি তোমার স্বপ্ন পুরনের জন্য।
সোনার হরিণ মেডিকেলেতো চান্স পাওয়া গেলো। এবার পালা ডাক্তার হওয়ার। কারণ ডাক্তার হলেই তো গুনধর বাবা মায়ের গুনধর পুত্র ও কন্যারা সোনার হাঁসের মতো সোনার ডিম প্রসব করবে। এখানেই শুরু হয় সমস্যা, যেই মেধাবী ছেলেটার হয়তো বিজ্ঞানী হওয়ার কথা ছিলো মেডিকেলের এনাটমি ও ফিজিওলজির প্যাচে পড়ে তার প্রাণ হয় উষ্ঠাগত। অপর দিকে সারা বছর হিন্দি সিরিয়াল দেখা ও বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজিতে ব্যস্ত থাকা ছেলেটা/ মেয়েটা বাপের টাকায় মেডিকেলে ভর্তি হয়ে অথৈ সাগরে পড়ে।
যাক শেষপর্যন্ত বহু ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে ডাক্তার তো হওয়া গেলো, এবার সময় সোনার ডিম পাড়ার। কিন্তু হায়! একি! সবাই দেখি অশ্বডিম্ব প্রসব করছে। আদতেই তাই। যে চকচকে সোনার ডিমের আশায় বাবা মা’রা সন্তানকে ডাক্তার বানান সেই সোনার ডিম এতো সহজে ধরা দেয় না। আমরা যেসব কোটি কোটি টাকা ওয়ালা ডাক্তার দেখি তাদের সংখ্যা কিন্তু আনুপাতিক হারে খুব কম। আর মেডিকেলর প্রফেশনের অবস্থাটাও এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। কারণ ব্যবসায়িক চিন্তা থেকে সারাদেশে এতোগুলো মেডিকেল কলেজ খোলা হয়েছে যে সরকার এখন ওদের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারছে না। বাড়ছে বেকার ডাক্তারের সংখ্যা। তার উপর আছে পোস্ট গ্রেজুয়েশনের ধাক্কা। যে ছেলে বা মেয়েটা শর্টকাটে টাকা কামানোর জন্য মেডিকেলে এসে ভর্তি হয়েছে সে যখন দেখে ভালো ডাক্তার হিসেবে নূন্যতম সম্মান পেতে হলে তাকে আরও বছর দশেক পড়াশোনা করা লাগবে তখন স্বভাবতই তারা চরম হতাশার মধ্যে পড়ে যায়। সাথে সাথে গোদের উপর বিশ ফোড়ার মতো আছে পারিবারিক চাপ। “কিরে ডাক্তার হইলি কিন্তু এখনও গাড়ি বাড়ি কিছুই করতে পারলি না” প্রতিনিয়ত শুনতে হয় এসব কথা। ফলাফল হতাশার গভীর থেকে গভীরে নিমজ্জন।
তাই মেডিকেলে পড়তে ইচ্ছুকদের জন্য পরামর্শ তোমরা যদি শর্টকাটে টাকা ও নাম কামানোর জন্য মেডিকেলে পড়তে চাও তাহলে এখন ই ইউটার্ন দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে অন্য রাস্তায় চলে যাও। আর যারা মনে করো না আমি মেডিকেলে পড়বোই তাহলে মনে মনে সারাজীবন পড়াশোনা ও সাধনা করার জন্য প্রস্তুত হও।
২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০০
আমিনুর রহমান বলেছেন:
ডাক্তার হতে ইচ্ছুকদের জন্য সৎ উপদেশ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালোই লিখেছেন ।
শুভেচ্ছা