নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাহেন রঙ্গন

আমার কবিতা - কোন জীবনদর্শন বা সত্যানুসন্ধানের জন্য নয়, বরং আমার জীবনের সামগ্রিক দর্পণ। আমার আবেগানুভূতির স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ। আমার ছুটে চলা, হোঁচট খাওয়া আবার উঠে দাঁড়াবার কাব্যিক বিবরণ, দ্যোতনা। যার প্রত্যেকটি বর্ণ সত্য। কেননা ঐ মুহূর্তে এর চে' বড় কোন সত্য আমার জানা ছিল না।

রাহেন রঙ্গন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিলভার ক্রাইসিস : পাতালের সভা

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৬

ক্রিপ রাগে ফুঁসছে পাতালপুরীতে। দুষ্টু মামুছকে ওরা ক্রিপ নামে ডাকে।



এদিকে আমাকে ঘিরে সভা বসেছে। শ্যাওলাপরা পোড়াবাড়ির ধ্বংসস্তূপের ভিতরে একটা হলঘরের মত। ফসফরাসের আলোতে আবছায়ার মত, সবকিছু কেমন ভূতুড়ে দেখাচ্ছে। আমি বাঁচার আশা ছেড়ে দিইনি তবু। মনে মনে ম্যাগডকে ডাকছি।

সেলুলুজ আমার দিকে তর্জনী উঁচিয়ে দেখালো। ভালো মামুছকে এভাবেই ডাকছে সবাই।



- ম্যাগড স্বয়ং এই ম্যামালকে পাঠিয়েছে আমাদের কাছে। আমাদের প্রায়শ্চিত্তের সুযোগ করে দিতে। আমাদের কাজ হলো নিজেদের স্বার্থে একে বাঁচিয়ে রাখা। একটা ম্যামালে আমাদের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হবে না।



আমি শিউরে উঠলাম। ঠান্ডা পানিতেও যেন আমার রক্ত ফুটতে লাগল।

সেলুলুজ বলে চলেছে, মোহগ্রস্হ কিন্তু দৃঢ়তার সাথে মহান নেতার মত,

- সিলভারের খোঁজ না পেলে আমরা রাহুমুক্ত হতে পারবো না। নদীর দেবতা রিগডকে তুষ্ট করতে ম্যামালের সাহায্য ছাড়া আমাদের গতি নেই।



লম্বা দু’টো দাঁড়ি নাড়তে নাড়তে বুড়ো মাগুছ হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠলো, আমার কাছে আজকের বেঁচে থাকা বেশি জরুরী। রাহুমুক্তি আশায় থেকে না খেয়ে মরার কোন মানে হয় না। মাগুরের মত বৃদ্ধ মামুছ ক্রোধে কাঁপতে কাঁপতে আমার দিকে এগিয়ে এলো। আমি ভয়ে চোখ বুঁজে ম্যাগডের নাম জপতে লাগলাম।



সেলুলুজ রাগে অন্ধ হয়ে আরো জোরে চিৎকার করে উঠলো, তুমি চেষ্টা করে দেখতে পারো। মেজবান বলে তোমাকে আমি সম্মান করি ঠিকই, কিন্তু ভেবো না তোমার সম্মান সবার স্বার্থের চেয়ে বড়। তুমি ওকে ছুঁবার আগেই বাঁকি সবাই ম্যামালকে খেয়ে ছিঁড়ে খাবে। তুমি এক টুকরোও ভাগে পাবে না। আমার ভাগটুকু না পেয়ে আমি যদি তোমাকে কামড়ে সাবাড় করি - , দাঁতে দাঁত পিষে কথা বলছিল সেলুলুজ। কথা শেষ হলো না।



আমি ভয়ে ভয়ে চোখ খুললাম। পানিতে আমার ঘামের গন্ধ মিশে যাচ্ছে। অর্থব মাগুছ ভয়ে লেজ গুঠিয়ে পিছিয়ে এলো। মৃত্যু যেন এক পলকের জন্য তাঁর চোখে প্রোটিন হয়ে ধরা দিলা। লেলুলুজ কী যেন ভেবে থেমে গেলো। ঝট করে দাঁত দিয়ে নিজের কোমড় থেকে এক টুকরো প্রোটিন বুড়ো মাগুছের দিকে ছুঁড়ে দিলো। মাগুছ ভয়ে ভয়ে দু’কদম পিছিয়ে প্রোটিনটুকু চুষতে লাগলো। ভাবলাম খাবারটাকে দীর্ঘ সময় ধরে উপভোগ করবে বলে এমন করছে। কিন্তু না। মাগুছের চোখে অসহায়ত্ব ফুটে উঠলো। তার ক্ষুধাকে ছিঁড়ে খাবার মত একটা দাঁতও অবশিষ্ট নেই। চোয়াল দিয়ে অনেকক্ষণ চিবিয়ে মুখের মধ্যে গিলে ফেলার চেষ্টা করছিল। ছোঁ মেরে একটি গজারুছ তার মুখের খাবার ছিনিয়ে নিলো। মাগুছ অভিসম্পাত দিতে দিতে হাল ছেড়ে পিছিয়ে এলো। সেলুলোজ অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। কোমড়ের তাজা রক্তে পানি লালচে হয়ে উঠলো। ঘাম, ঘৃণা, আক্রোশ ও রক্তে মাখা পানিতে আমার দম বদ্ধ হয়ে এলো। আমি জ্ঞান হারালাম।



হুঁশ ফিরতে দেখি মামুছগুলো পানি থেকে রক্ত চুষে চুষে খাচ্ছে। লেজে লেজে বাড়ি দিয়ে ভুজুজেলার মত শব্দ করে ওরা আমাকে ঘিরে নেচে চলেছে।



আমি আবার জ্ঞান হারালাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.