![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাচ্চা সাংবাদিক।
ফেইসবুকে যারা জান্নাতের শর্ট-কার্ট রাস্তা পেয়েছেন তাদের বলছি ।
জান্নাত কি এতো-ই সহজলভ্য ? কখনো-ই না, যদি তাই হতো যুগে যুগে অনেক নবী রাসুলগণ এসেছেন , যদিও তারা আল্লাহর পছন্দের তালিকায় ছিলেন এবং তারা জানতেন ও আল্লাহ তায়ালা তাদের পছন্দ করেন, কিন্তু তার পরেও তারা আল্লাহর দরবারে বারংবার ক্ষমা চেয়েছেন, ইচ্ছায় বা অ-ইচ্ছায় যে সকল পাপ তার দ্বারা হয়েছে বা হচ্ছে তার জন্য । কিন্তু আমরা কি করছি ?
সুপ্রিয় পাঠক , শুরু করবো একটি গল্প দিয়ে, বিড়ালের সেই গল্প টা মনে আছে আপনার ? আচ্ছা মনে করিয়ে দেয়, একটি বিড়াল সারাজীবন বহু ইঁদুরের সর্বনাশ করে শুধুমাত্র একবার হজ্জ করে তার সব পাপ ঘোচাতে চেয়েছিল, গল্পের শেষটি আপনি জেনে থাকবেন আশা করি । কতিপয়, আমার কিছু ফেইসবুক বন্ধুদের মধ্যে আমি সেই ধরনের কিছু প্রবণতা খুব লক্ষ্য করছি, আমার কোন ক্ষতি নেই যদি শর্ট-কার্টে জান্নাতে যাওয়া যায় । কিন্তু আমার জ্ঞান খুব সীমাবদ্ধ, আর তা থেকেই আমি যা বুঝি যে বিষয়টি অতো সহজ না । আচ্ছা আমরা সারাদিনে জান্নাতে যাওয়ার মত কতটি কাজ করছি? হয়তো বা যেটুকু করেছি তা দিয়ে আসলে ফরজ কাজগুলোও পরিপূর্ণ করতে পারিনি, আর যেটা [ফরজ] বাদ দিয়ে জান্নাত তো দুরের কথা, বরং জাহান্নামের কোন অংশে গিয়ে ঠেকবো তার ও কোন ঠিক নেই । আমরা আসলে মুল কাজে নজর অতটা না দিয়ে ফাউ কাজে বেশি খেয়াল রাখি , আমরা আসলে কি করছি? রাতে বাসায় ফিরলাম অতঃপর ফেইসবুক লগইন করলাম কিছু বুঝে না বুঝে , জান্নাতে যাওয়ার [শর্ট-কার্ট] একটা দোয়া নিজে পড়লাম এবং অন্য বন্ধুদের কে ও আকুতি অনুরোধ করলাম যেন [শর্ট- কার্টে] আমার বন্ধুটি-ও
জান্নাতে যেতে পারে , বন্ধুর উপকার করলাম আর কি, আর যে বন্ধু এটি পড়লো না ? তাকে কি তাহলে শর্ট-কার্ট জাহান্নামের টিকেট পাইয়ে দিলেন?
এ প্রসঙ্গে , আরও একটি গল্প মনে পরে গেল গল্পটি আমাদের বন্ধু মহলে এক সময় খুব চলতো , গল্পটি একটি প্রশ্নের এক কথায় হ্যাঁ/না উত্তর দেওয়ার গল্প,
প্রথম বন্ধুঃ কিরে তোর বাবা কি জেল থেকে ছাড়া পাইছে?
অপর বন্ধুঃ খুব বিব্রত বোধ করছে সে ভাবছে সে কি উত্তর দিবে যদি সে বলে হ্যাঁ, তাহলে প্রমান হল ওর বাবা জেলে ছিল , আর যদি বলে যে, না তাহলে বোঝা গেলো যে সে এখনো জেলে আছে, খ্যাপানোর সুযোগটা আরও বেড়ে গেলো । আসলে ওর বাবা কোনদিন জেল তো দূরে থাক তার আশেপাশে ও কোনদিন গিয়েছে কিনা সন্দেহ আছে । পাঠক গল্পটি এই জন্যই বললাম যেন আমার কথা বুঝতে আরও সুবিধে হয় , আমি-ও খুব বিব্রতবোধ করেছি ফেইসবুকে আমার কিছু ফ্রেন্ডদের পোষ্টে এক বন্ধু একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন, তিনি জান্নাতে যাওয়ার একটি দোয়া শেয়ার করেছেন যা কিনা জান্নাতে যাওয়ার দোয়া,[শর্ট-কার্ট] আর কি এবং তিনি অনুরোধ করেছেন যেন আমিও পোস্টটি লাইক, ও শেয়ার দেয় , পাঠক আমি একজন মুসলিম আমার কি করা উচিৎ অবশ্যই পড়া, এবং লাইক,শেয়ার দেয়া ? কিন্তু যদি আমি , দোয়াটা না পড়ি লাইক,শেয়ার না দেয় তাহলে স্বভাবতই কি দাঁড়াচ্ছে বিষয়টা? কি আমি জান্নাতে যেতে চাইনা ? আদতে কিন্তু তা না , তাহলে কেন আপনি ঐ জেলে যাওয়া গল্পের অপর চরিত্রে দাড়করাচ্ছেন আমাকে ? নাকি এটা আপনার কাছে বন্ধুদের আড্ডা জমানো, কোন খোশগল্প মনে হচ্ছে ? পৃথিবীর সবাই তো জান্নাতে যেতে চায় , কিন্তু সেটা কি এতো-ই সহজলভ্য মনে হচ্ছে আপনার কাছে ? আমাদের মনে রাখা দরকার , একজন মুসলিম বাক্তির রাজনৈতিক,সামাজিক,অর্থনৈতিক,এবং পারিবারিক, জীবনের সকল ক্ষেত্রে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার পরে-ও আছে তার ধর্মীও এবাদত বন্দিগির ব্যাপার , আর তার পরেও কি আপনি/আমি/আমরা কেউ কি বলতে পারবেন যে আপনার জীবনে কয়টা আমল আল্লাহ্র দরবারে কবুল হয়েছে ? এটা পৃথিবীর কেউ বলে যেতে পারেনি , আর জান্নাতে যেতে ভালো আমলের পাহাড় লাগবে যেমন, গুনাহের পাহাড় আমাদের কাঁধে কাছে নিশ্চিত ভাবে , কতো কেজি ভালো আমল আছে আপনার কাছে? আর আপনি নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখেন তো আপনার জানামতে কতটা গুনাহের পাহাড় গড়েছেন ? ভেবে দেখেছেন আপনি /আমি/ আমরা কি জান্নাতের যোগ্য কি না ? তাই আসুন সবাই জান্নাতের এই
শর্ট-কার্ট রাস্তার আশা ছেড়ে , জান্নাতে যাওয়ার মুল পথে চলার চেষ্টা করি , আসুন কীভাবে পাপ কম করা যায় আমরা সেই চেষ্টাটা করি , আসুন আমরা দাওয়াত দেয় সেইসব কাজের যা জান্নাতে যাওয়ার জন্য খুব জরুরী , সর্বশেষ, আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি এই আবোলতাবোল লেখনীর জন্য , এবং সবার কাছে দোয়া কামনা করছি যেন , যা যা আমি এই লেখাতে বলেছি সব যেন আমি নিজে মধ্যে আয়ত্ত করতে পারি এবং মানতে পারি ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল কে জান্নাতে যাওয়ার সঠিক পথের বুঝ দান করুন,আমীন ।
©somewhere in net ltd.