![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২ টাকায় ধরা পড়বে ফল-সবজির ক্ষতিকারক রঙ
একে তো টমেটো লাল। আলোয় আরো উজ্জ্বল। বিক্রিতেও বাজিমাত। কিন্তু বাজারের এই টমেটোতে মেশানো ক্ষতিকারক কৃত্রিম রঙ। একই অবস্থা সবজি পণ্য গাজর থেকে বিভিন্ন ফলফলাদির।
খাদ্যে বিষক্রিয়ার খবর প্রায়ই উঠে আসে গণমাধ্যমে। কোথাও কোথাও ঘটে প্রাণহানি। এই যেমন: কুষ্টিয়াতে গত বছর মৌসুমি ফল তরমুজ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। দিনাজপুরে লিচু খেয়ে অকালে প্রাণ যায় ১৩ শিশুর।
সমুদ্রের উপরে ‘উড়ে’ বেড়াচ্ছে মানুষ, দেখুন ভিডিওসুবহান আল্লাহ! শিশুর কান্নায় জেগে উঠলেন মৃত মা ! (ভিডিওসহ)
এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা লাল ও হলুদ বর্ণের ফল এবং সবজিকে ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয় করতে ব্যবহার করছেন কাপড়ে দেয়া ক্ষতিকারক রঙ। এর মাধ্যমে তারা কাঁচা বা অর্ধ-পাকা ফলকে পাকা দেখানোর কৌশল নেন।
এসব রঙ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এতে ক্যান্সার, কিডনি বিকল, অর্টিজম ছাড়াও বিষক্রিয়ায় ডায়রিয়া, বমিসহ নানা প্রাণঘাতি রোগের সৃষ্টি হয়। খালি চোখে সাধারণ ক্রেতারা বাজারের এসব কৃত্রিম রঙ মেশানো ফল কিংবা সবজি সনাক্ত করতে পারেন না।
তবে আশার কথা হলো- স্বল্প খরচে সহজে এসব ক্ষতিকারক রঙ সনাক্তের নিরাপদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ফারুক বিন হোসেন ইয়ামিন।
এর আগেও তিনি মাটির রস পরীক্ষার যন্ত্র, পেট্রোল বোমা প্রতিরোধী প্রযুক্তিসহ অনেক উপকারী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন।
বিজ্ঞানী মো. ফারুক বলেন, ‘কিট ব্যবহার করে ক্যারোটিনয়েড ও লাইকোপিন পিগমেন্ট সমৃদ্ধ লাল ও হলুদ বর্ণের ফল এবং সবজিতে কৃত্রিম রঙ ব্যবহৃত হয়েছে কিনা তা তাৎক্ষনিকভাবে জানা সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘তরমুজ, টমেটো, চেরি এবং গাজরের ক্ষেত্রে এ কিট ব্যবহার করে সঠিকভাবে ব্যবহৃত কৃত্রিম রঙের উপস্থিতি নির্ণয় করা সম্ভব।’
কিটের ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে উদ্ভাবক ফারুক জানান, তরমুজ, টমেটো, চেরি বা গাজর থেতলে তার ৫ মিলি পরিমাণ রস চামচ বা কাঁচের টিউবে নিয়ে ২ ফোঁটা দ্রবণ দিয়ে হালকা ঝাঁকুনি দিলে বর্ণ পরিবর্তন হয়ে গাঢ় সবুজ হলে নিরাপদ এবং বর্ণ বেগুনী, পিংক বা অন্য যে কোনো রঙ হলে অনিরাপদ।
তিনি বলেন, বেগুনী, পিংক বা অন্য যে কোনো রঙ ধারণ করলে ক্ষতিকর কৃত্রিম রঙের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যাবে। ব্যবহৃত কৃত্রিম রঙের মান, পরিমাণ এবং রকম ভেদে বিভিন্ন বর্ণ ধারণ করবে।
জানা গেছে, উদ্ভাবিত দ্রবণটি ক্যারোটিনয়েড ও লাইকোপিন পিগমেন্টের সঙ্গে বিক্রিয়া করে গাঢ় সবুজ বর্ণ ধারণ করে। দ্রবণটি সাধারণত কৃত্তিম রঙের সঙ্গে বিক্রিয়া করে না বা করলেও সবুজ ব্যতীত অন্যান্য বর্ণ ধারণ করে।
প্রতিটি টেস্টের জন্য খরচ হবে ২ থেকে ৩ টাকা মাত্র। ব্যবহারকালীন ব্যবহারকারীর হাতে বা শরীরে পড়লে কোনো রকম ক্ষতি হবে না। কারণ এটি সম্পূর্ণরুপে এসিড মুক্ত। এতে প্রচলিত অন্যান্য কিটের মত অতি ঘন মাত্রায় এসিড ব্যবহার করা হয়নি।
কম খরচের কার্যকরি এই কিটটি জনসাধারণসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ব্যবহার করলে সহজেই ফল ও সবজিতে ক্ষতিকর কৃত্রিম রঙ ব্যবহারকারী অসাধু ব্যবসায়ী চিহ্নিত করা যাবে। আর মানুষের জন্য ক্ষতিকর ফল এবং সবজি সনাক্তে সুবিধা হবে।
মো. ফারুক আশা করেন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এই কিটটি দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে এগিয়ে আসবেন। তাহলে হয়তো ফল খেয়ে প্রিয়জন মৃত্যুর আর কোনো দুঃসংবাদ আমাদের শুনতে হবে না।
©somewhere in net ltd.