নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...............

শ্রাবণধারা

" আমাদের মতো প্রতিভাহীন লোক ঘরে বসিয়া নানারূপ কল্পনা করে, অবশেষে কার্যক্ষেত্রে নামিয়া ঘাড়ে লাঙল বহিয়া পশ্চাৎ হইতে ল্যাজমলা খাইয়া নতশিরে সহিষ্ণুভাবে প্রাত্যহিক মাটি-ভাঙার কাজ করিয়া সন্ধ্যাবেলায় এক-পেট জাবনা খাইতে পাইলেই সন্তুষ্ট থাকে......."

শ্রাবণধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গবু-স্বৈরতন্ত্রের পতনের সন্ধিক্ষণে দাড়িয়ে - বিপুল তরঙ্গ রে!

০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



স্বৈরতন্ত্রেরও কিছু নিয়ম-কানুন থাকে, কিছু নৈতিকতা থাকে। চরম নির্লজ্জ হয়েও মুখরক্ষার জন্য হলেও রাষ্ট্রের কিছু প্রতিষ্ঠানকে স্বৈরাচার রক্ষা করে। কিন্তু যখন বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের মতো লোকদের দেখি, যখন দেখি যে এই দুর্বৃত্ত কোন রকম লজ্জার বালাই না রেখে টকশোর সঞ্চালককে 'রাজাকারের বাচ্চা' বলে গালি দেয়, তখন মনে হয় আমাদের পাড়ার নাপিত মানিকও তো আওয়ামী দুঃশাসনে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতির চেয়ে শিক্ষিত।

এই মানিকের বিচারপতি হয়ে ওঠার জন্য স্বৈরতন্ত্র যথেষ্ট নয়। এদের কে বিচারপতি বানানোর জন্য একটি 'গবুতন্ত্রের' প্রয়োজন হয়। গবুতন্ত্র হলো দুর্বৃত্তদের বানানো একটা ব্যবস্থা যেখানে মূর্খতা, লজ্জাহীনতা এবং অহমিকা প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতাকে দখল করে ক্ষমতাকে জনগনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। এই বেহায়াদের মুখরক্ষারও কোন বালাই নেই। গবুতন্ত্রের গবুরাণী সকল জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে ওঠে এক নৈরাজ্যময় মগের মুল্লকের জন্ম দেয়। এর সাথে স্বৈরতন্ত্রের মিশেলে তৈরি হয় 'গবু-স্বৈরতন্ত্র', যার পতনের সন্ধিক্ষণে আমরা এখন দাঁড়িয়ে আছি।

দুঃশাসন, নৈরাজ্য, গণহত্যা চিরস্থায়ী হতে পারে না। আওয়ামী লীগ একটি অচলায়তন যারা দিনের পর দিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান গুলোকে ধ্বংস করেছে। বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের মতো বিচারপতি নিয়োগের প্রহসন করে বিচার-ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। "খেলা হবে" বলে হেলমেট-হাতুড়ি বাহিনী দিয়ে ছাত্রদের রক্তাক্ত করে ধ্বংস করেছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। "টুপ করে পদ্মা ব্রিজ থেকে নদীতে ফেলে দেবার" দম্ভোক্তি এবং মূর্খতা দিয়ে ভয়াবহ এক নৈরাজ্যবাদ সমাজে প্রতিষ্ঠা করেছে এই গবু-স্বৈরতন্ত্রের রানীমা ও এর চাটুকার অমাত্যেরা।

২৫ জুলাই তারিখে লিখেছিলাম, গত ক'দিনে নতুন ইতিহাস রচিত হল। ট্যাক্সের টাকায় পালিত শাসক ও তার আজ্ঞাবাহী বাহিনীর হাতে উদ্দীপিত তরুণের রক্তমাখা লাশের ইতিহাস, জনগণের টাকায় কেনা গোলাবারুদ দিয়ে তাদেরই সন্তানের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও তাকে অন্ধকারে মাটি চাপা দেওয়ার ইতিহাস, মানুষের জীবন নিয়ে শাসকের ব্যঙ্গোক্তি ও শয়তানের পরিভাষা তৈরির ইতিহাস। শোক যে শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে, তা গবু-স্বৈরতন্ত্রের দলের লোকেরা বুঝতে পারেনি। বেতের আঘাত থেকে যখন নিজের পশ্চাৎদেশ রক্ষা করার কথা, সেটা না করে তারা হেলমেট-হাতুড়ি বাহিনী, পুলিশ ও সেনাবাহিনী দিয়ে গণহত্যা চালিয়ে গেছে।

লাশের স্তুপের উপরে দাঁড়িয়ে অনুভব করেছিলাম এই রক্তপাতের ইতিহাসের অধ্যয়ন ও বিশ্লেষণ যুগে যুগে করবে এদেশের মানুষ। যেভাবে ৫২-এর ভাষা আন্দোলন আমাদের আত্মপরিচয়ের সন্ধান দিয়েছিল, যেভাবে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল এবং যেভাবে ৯০-এর আন্দোলন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জনতার বিজয়গাথা রচনা করেছিল, তারই পরম্পরায় ২০২৪ সাল আমাদের আত্মোপলব্ধির নতুন বধ্যভূমি হয়ে আমাদের চেতনাকে তাড়া করে বেড়াবে।

আজ অনুভব করছি ২০২৪-এর ৫ই আগস্টের লংমার্চ একটি বিপুল তরঙ্গের মতো ধেয়ে আসছে। যদিও আজ শয়তান তার সব শক্তি নিয়ে মরার আগে মরণ কামড় দিতে প্রস্তুত হয়েছে। কিন্তু জনতার মিছিলের যে স্রোত, তার শক্তি বিপুল। তার তেজ এত প্রবল যে অনেক বড় শয়তানও এই স্রোতের সামনে খড়কুটোর মতো ভেসে যাবে। তীব্র ঘূর্ণিঝড়, প্রবল জলোচ্ছ্বাস যেমন সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়, এই লংমার্চ এই দুঃশাসন ও নৈরাজ্যকেও ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তবে এর জন্য যে রক্ত, যে প্রাণহানি, যে ক্ষতি, যে মূল্য দিতে হতে পারে, তার কথা ভেবে আমি ভীত ও শঙ্কিত বোধ করছি।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: ইতিমধ্যেই ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধের ঘোষনা দিয়ে দিয়েছে- ফের হয়তো আমরা সূদীর্ঘ কালো অধ্যায়ের মুখোমুখি হয়ে চলেছি ...

০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:৪১

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনাদের জন্য শুভকামনা। নিরাপদে থাকুন।

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১২:২২

নব অভিযান বলেছেন: যিনি কথায় কথায় ক্ষমতা ছেড়ে দেবার কথা বলেন তিনি কি করে এত রক্তের উপর পা দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাচ্ছেন ভাবতেই কষ্ট হয়!

০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৩৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: এদের কে এখন তাদের কাজের জন্য বিচারের আওতায় আনতে হবে। এদের জন্য ন্যয়বিচার নিশ্চিত করাটাও একটা বড় কাজ।

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৪৬

শেরজা তপন বলেছেন: এখন ফের এসেছে - সবাই এখন সেনাপ্রধানের জাতির উদ্দেশে ভাষণের অপেক্ষায়..

০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৩৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপডেট দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগুন জ্বালানোটা এতদিন কাজ ছিলো (উপমা হিসেবে), কিন্তু এখন আগুন নেভানোটা একটা বড় কাজ। আর একাজের নেতৃত্ব বড়দেরই দিতে হবে।

৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৪৭

করুণাধারা বলেছেন: লেখা ভালো হয়েছে। +++++++++

আর কিছু বলতে পারছি না। সেনাপ্রধানের ভাষণ শোনার জন্য উৎকণ্ঠিত অপেক্ষায় আছি।

০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৩০

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ।

আশা করি উৎকণ্ঠিত তৃষ্ণা মিটেছে আপু। এতদিন ছাত্ররা তাদের কাজ করেছে, এবার আমাদের কাজের পালা।
ছাত্রদের যোগ্যতা সম্পর্কে আমার মনে কোন দ্বিধাই ছিল না। তবে বুড়োদের যোগ্যতা সম্পর্কে আমার তীব্র সংশয় আছে।

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:০৮

সোনাগাজী বলেছেন:



লংমার্চে রক্ত যে ঝরবে এটা নিশ্চিত; আপনি ঢাকায় থাকলে, রক্তঝরার সম্ভবনাকে মাথায় রেখে, আপনি কি লংমার্চে যেতেন? শেরজা, করুণাধারা কি যাবেন?

০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:২৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনাকে গত এক মাস ধরে আমি অতি ধৈর্য্যের সাথে বারবার পুনর্বার বার্তা দিয়েছি, আপনি শোনেন নি। কেননা আপনি একজন নির্বোধ গোয়ার।

তবে ছাত্র অন্দোলন না বুঝলেও এর পরবর্তি প্রেক্ষাপট আপনি বুঝবেন বলে আমার ধারনা। আপনার মাঝে কিছু টেকনোক্রাটের গুনাবলী আছে যেটা সমাজের কাজে লাগবে।

৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:২৭

শেরজা তপন বলেছেন: আপডেটঃ সব রাজনৈতিক দলের সাথে সেনাপ্রধান আলোচনায় বসেছেন। ভাষন ৩টার সময়।
অপেক্ষায় রইলাম দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক কিছু শোনার অপেক্ষায়। এতক্ষন বাদে ছাত্রদের মিছিলের ছিবি টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। বাংলাভিশন লাইভ

০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৪২

শ্রাবণধারা বলেছেন: আমি এই বিজয়ের খবর শোনার জন্য মোটামুটি প্রস্তুত হয়ে ছিলাম। ভয়ে ছিলাম এর জন্য কি মূল্য দিতে হবে পারে সেটি ভেবে।
মিলিটারি বোধ হয় পুনরায় গণহত্যায় রাজি হয়নি, এ জন্য তাদের অনেক ধন্যবাদ।

৭| ০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৩৬

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: দ্বিতীয় বিজয় ৩৬ জুলাই।

০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ। এই বিজয় কে আরও বহুদুর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর সেটার জন্য বহু মানুষের বহু সাধনার প্রয়োজন হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.