নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবি, লেখক, চিত্রকর

ব্রাত্য রাইসু

কবি, লেখক, চিত্রকর

ব্রাত্য রাইসু › বিস্তারিত পোস্টঃ

রচনা 1994, প্রকাশ 2005 ।। আমার একটা গল্প

১৪ ই মে, ২০০৬ দুপুর ২:৪৩

শুনো মোর প্রেমেরো কাহিনী *

----------------------



মিয়া চিঠি এত দেরি করলা! আমি তো খালি তোমার কথাই ভাবি। ভাবতে গিয়া দেখি খুব কিছু ভাবি না। ভাবি-তুমি। ভাবি-দেখা হইলে ভালো হয়।



কালকে মদ খাইলাম। তোমার দুঃখে। দুঃখটা এই রকম : আমি যা বোঝাইতে চাই তুমি খালি বেশি বেশি বোঝো। বানোয়াট কথা। এমনেই খাইলাম। তবে তোমার কথা তখন মনে হইল। মনে হইল তুমি যে কোন ক্লাসে পড়ো তা আমি জানি না।



তারপর ধরো তুমি এখন কেমন? তোমার নেপালী বন্ধুরা। আমি অবশ্য জানতে চাইতেছি না। এমনেই জিগ্যেশ করলাম। ওরা কি আগের চেয়ে বোকা হইছে? এমনিই জানতে চাইলাম। রাগ করলা না তো? তুমি রাগ করলে তো আমার আর কেউ থাকে কই?



কেরদানি করতেছি আসলে। লেখক না আমি! ক্ষমতার টের দেখতেছি। ভনিতা করতেছি। দেখি আবেগ হয় কিনা। হয় নাকি আপু? হইলেও তো আপনে বলবেন না। আপনে তো খালি আমারে দেখতে পারেন না। আমার সেই লাইগা কত দুঃখ। আমি তাই কান্ছি। আমার কান্না আর কে বুঝব। আমি তো আর অত কাঁদতে পারি কই? আমি সেই-যে না কানছিলাম তখন কত চাইছি তুমি আইসা বলো কান্দে না বাবু কান্দে না বাবু নেও দুদ খাও...। আমি তো দুদ খাই আর সে বলে পাগল, পাগল, এত জোরে টানে না! শেষে দুধ ছিঁড়া গেলে আমি দুধ পামু কই? আর তুমিই বা তখন কী খাইবা, তখন তো না খাইতে পাইয়া মারা যাইবা!



আমার তখন আরো কত দুঃখ। আমি মারা গেলে শেষে কত দুঃখ হইব! সেই দুঃখে আবারও কান্দি কান্দি তখন সে বলে আমার সোনা, আমার নুংকু!



আমি বলি সেইটা তো আমার। তোমার তো নাই।



সে খুব তখন বলে সিমন দ্য বভোয়া!



আমি বলি তাই?



সে বলে জটিল হইছে এতক্ষণে খুব জটিল হইছে!





2.

তো বাবু, তোমারে চিঠি লিখতে গিয়া সাহিত্য করতেছি। এ ভাবেই লিখে যেতে ভালো। তুমি পড়তে গিয়া কীভাবে নেও এই লেখা? তোমার কাছেই যে লিখতেছি তা কি মনে হইতেছে, অপরিচিত লাগতেছে না তো আমারে?



সে তো সবসোমায়ই লাগে।



তুমি এইভাবে কইতে পারলা?



না, বলি নাই তো। আর অপরিচিত বইলাই তো তোমারে এত ভালোবাসি।



বাসো?



হেঁ, বাসি।



ঘোঁট পাকাইতেছ?



পাকাইতেছি, মম রইছউদ্দিন!



মম কেন?



আমি জানি না রাইসু, আমি জানি না!





3.

বাবু দুপুর হইছে তো তাই ক্ষুধা লাগছে এখন খাইতে যাবো কালকে রাতে তো বাসায় ছিলাম না তাই এখন ক্ষুধা লাগছে তাই রাত্রে মদ খাইছি তো মনজুর ভাই মদ খাওয়াইছে তো খুব ভালো লাগতেছিল তখন তোমার কথাই কত ভাবতেছিলাম শেষে একটা কাগজের উল্টা পিঠে কী সব কী সব লিখলাম হয়ত ধরো লিখলাম আমি তোমার কাছে চিঠি লিখতে বসছি আর আমার তখন কত ভাল্লাগলো খালি মাথার দুই পাশে কান বন্ধ হয়ে আসছে চোখ বন্ধ করলে নিচের দিকে পড়ছি পড়ছি পড়ছি চোখ খুললে ঝাক্ করে হোঁচট, আবার লিখলাম 'বাবু', তাতেই কত ভাল্লাগলো মনে হইল বাবু খালি শরীরের কথা বলে কেন বয়স তো অপ্ল অত কেমনে বুঝব যথা মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক যথা সময় কাটানো যথা শিল্প যথা আমি যেভাবে তাকে গ্রাহ্য করি...।



তুমি আমারে গ্রাহ্য করো? চুদলাম না তোমারে! তুমি কে? হু আর ইউ? স্টুপিড! খুব জানুয়া হইয়া গেছো তুমি?



জানুয়া হই নাই তো বাবু। জানুয়া হই নাই। আমি ভালোবাসতে জানি না তো তাই এই রকম বলছি। তুমি অন্যভাবে নিও না।



তুমি সবসময় খোঁচা দিয়া কথা বলো। আমার দাঁত আছে, সেই লাইগা আমি হাইসা উড়াইয়া দেই। আর তুমি ভাবো ও তো শস্তা, ও তো আমার জন্য পাগল হইছে। থুঃ!



আমার তো ভালোবাসা নাই তাই এই রকম হয়।



নাই তো আমারে বলো কেন? সব কথাই তুমি আমারে বলো। আমি তোমার কে যে সব তুমি আমারেই বলবা!



না, আমি তো আরো লোকজনরে বলছি তো।



বলবাই তো। আমি তোমার চরিত্র জানি না! খালি ভালোবাসছি তাই...



সেই তো, আমার চরিত্র তুমি শুনবা? তোমার কাছেই বলি। তুমিই তো আমার একমাত্র বন্ধু। তখন কত আগে। অনেক আগে। আমার তখন বয়স চৌদ্দ হইছিল। তাই পাশের বাড়িতে গেছিলাম। তখন সন্ধ্যা হইছিল। তখন বারান্দায় সেই বাড়ির পিতা আর এক ভদ্রলোক কথা কয়। আমি ঘরের মধ্যে ঢুকছি। আমার বয়স অল্প ছিল যে তারা আমারে দেখতে পায় নাই। তারপর ঘরের মধ্যে গেলে আরেকটা ঘর ছিল। তখন ওইখানে দেখি দুইটা মেয়ে। ওরা রংপুর থাকে তো তাই বেড়াইতে আসছিল। ওরা সোজা সোজা হইয়া শুইয়া ছিল, ঘুমাইয়া ছিল। আমি তখন দুই জনের বুকের মধ্যে হাত দিছি। কিন্তু ওরা তো চোখ বন্ধ রাইখা মুখ খুললো। দেখি ওদের দাঁত লাল। ওরা ওইখানে বেড়াইতে আসছিল। রংপুর থাকে তো তাই বেড়াইতে আসছিল। ওদের চেহেরাও দেখি নাই ভালো কইরা। সত্যি! সত্যি!



তুমি ওদের দাঁতে হাত দেও নাই তো?



না, মাথা খারাপ! আমি তো ভয় পাইছিলাম তো।



এইসব তুমি আর করবা না। তোমার বুকে হাত দিতে ইচ্ছা করলে আমারে বলবা। দেখো না আমার কত বুক!



দেখি তো, দেখি...কিন্তু আমার যে অনেক খিদা লাগছে বাবু।



সে বলে, তোমার যে খিদা লাগছে আর কাউরে বলো নাই তো?



আমি বলি, না, বলি নাই।



সে বলে, আসো, আমার সঙ্গে আসো। আমি যাই। আমরা ঘুরতে ঘুরতে নিচে নামতে থাকি। সে আমারে ভাত খাওয়ায়। মুখে তুলে দেয়। বলে, বুঝছো? বুঝছো? তুমি যে বাচ্চা তাই এইভাবে তোমারে খাওয়াই। বুঝছো? রাগ করো নাই তো?



আমি বলি, না। তারপর ঘাড় কাৎ করি।



4.

সে, আমার ঘাড়ে কামড় দেয়।



ঢাকা, 1994

..............................................

* মাসরুর আরেফিনের একটা কবিতার শিরোনাম থিকা গল্পের নাম ধার্য্য করছি। কৃতজ্ঞতা।



গল্পটা এর আগে গদ্য সঞ্চালন থিকা 20/7/2005 তারিখে ইমেইল যোগে সঞ্চালিত হইছিল।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০০৬ ভোর ৫:০৫

শমিত বলেছেন: গদ্য সঞ্চালনে আগেই পড়েছিলাম ও ভালো লেগেছিলো ভাষা গঠন ; কাহিনীবিন্যাস ।

২| ১৫ ই মে, ২০০৬ ভোর ৫:০৫

শমিত বলেছেন: সুব্রত অগাস্টিনের পরিবার সম্ভবতঃ ওনার বাবার বাড়িতে ভ্রমন ও ওনার সঙ্গে কথোপকথনের ঢঙে লেখা আপনার একটি রচনার কথা মনে পড়ছে । উক্ত লেখাটির নাম মনে নেই , শুধু ছায়াশরীরের মতো ছেঁড়া ছেঁড়া লেগে আছে - লেখাটি কোথাও পড়তে পাওয়া যাবে আবার এই ব্লগে বা অন্য কোথাও ?

৩| ১৫ ই মে, ২০০৬ সকাল ৭:০৫

অতিথি বলেছেন: ওই গল্পটাও দেই তাইলে। সুব্রতর বাপের ছবি অবশ্য নাই আমার কাছে। সুব্রতর লগে ছবি আছে। দেখি, আপলোড করতেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.