নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

টিপু সুলতান

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৩৩

টিপু সুলতান ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা। তিনিএকজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি বীরত্ব সহকারে যুদ্ধ করেন। তিনি তাঁর শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর (মহীশূরের বাঘ) নামে পরিচিত ছিলেন। টিপু সুলতানকে ডাকা হতো শের-ই-মহীশূর; উপাধিটা ইংরেজদেরই দেয়া।বাবা হায়দার, ১৭৪৯ খ্রিস্টাব্দে টিপু নামে এক ফকিরের দোয়ায় এক পুত্রসন্তান লাভ করেন এবং আনন্দচিত্তে ঐ ফকিরের নামেই ছেলের নাম রাখেন "টিপু"।কেউ কেউ তাকে ধর্মরক্ষক বীর যোদ্ধা মনে করেন কেউবা অত্যাচারী স্বৈরশাসক বলে অভিহিত করেন। কেউ কেউ আবার টিপু সুলতানকে গাজী বা পীর বলেও মনে করেন।



দক্ষিণ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসক ছিলেন টিপু সুলতান৷ পিতা হায়দার আলী মহীশূর রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন৷ শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রামে কাবেরী নদীর একটি ব-দ্বীপে নির্মিত একটি দূর্গ থেকে রাজ্য শাসন করতেন৷ ছোটবেলা থেকেই টিপু, বাঘের গল্প শুনতে ভালোবাসতেন। বাবাই তাঁকে বাঘের গল্প শোনাতেন। কিশোর বয়সে টিপু সুলতান বাঘ পুষতে শুরু করেন। টিপু সুলতানের রাজ্যের প্রতীক ছিলো বাঘ। এই বাঘ ছিলো তাঁর অনুপ্রেরণার মতো। তাঁর রাজ্যের পতাকায় কানাড়ী ভাষায় লেখা ছিলো "বাঘই ঈশ্বর"। তিনি সিংহাসনে বসে মাঝে মাঝেই বলতেন:“ ভেড়া বা শিয়ালের মতো দু'শ বছর বাঁচার চেয়ে বাঘের মতো দু'দিন বেঁচে থাকাও ভালো ”



ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সঙ্গে যুদ্ধে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে নিহত হন। টিপুর এক সেনাপতি মীর সাদিক বিশ্বাসঘাতকতা করে ব্রিটিশদের সঙ্গে হাত মেলান৷ পরে তার পরিবারের মানুষজনকে ভেলোরের দূর্গে বন্দী করে রাখে ব্রিটিশ শাসকরা৷টিপু সুলতানের ৪জন স্ত্রী, ১৬জন পুত্র এবং কমপক্ষে ৮জন কন্যা সন্তান ছিল। কন্যাদের পরিচিতি অজানাই রয়ে যায়। টিপু সুলতান শুধু একজন শাসকই ছিলেন না, একাধারে তিনি ছিলেন উদ্ভাবক, বহু ভাষাবিদ এবং কবি।টিপু সুলতান বাঘ নিয়ে একটি মিউজিক্যাল খেলনা বানিয়েছিলেন, যা তখন পৃথিবী জোড়া খ্যাতি পায়। এই খেলনাকে "টিপুর বাঘ " (Tipus Tiger) বলা হত।বেশ কিছু ইতিহাসবিদরা মনে করেন টিপু সুলতান হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন।



টিপু সুলতান শাহি মসজিদ কলকাতার একটি বিখ্যাত মসজিদ। ১৮৪২ সালে টিপু সুলতানের কনিষ্ঠ পুত্র প্রিন্স গোলাম মহম্মদ এই মসজিদটি নির্মাণ করান। এটি কলকাতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আকর্ষণ। সকল ধর্মের মানুষের জন্য এই মসজিদের দ্বার উন্মুক্ত। টিপু সুলতান ১৭৫০ সালের ২০ নভেম্বর বর্তমান ব্যাঙ্গালোর থেকে ৩৩ কি.মি দূরে "দিভানাহালি " নামক স্থানে জন্ম গ্রহন করেন। টিপু সুলতান একবার তার ফরাসি বন্ধুর সাথে সুন্দরবনে শিকারে যান, একটি বাঘের সামনে পড়েন এবং তার বন্দুক কাজ করছিল না। তখন তিনি একটি ছোট্ট ছোড়া দিয়েই বাঘের উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং বাঘটিকে হত্যা করেন।



টিপু সুলতান পরবর্তী জীবনে তার নামের প্রমান রেখেছেন তার কাজের মাধ্যমে। তিনি ছিলেন বাঘের মতো সাহসী, ক্ষিপ্র এবং তেজী। এছাড়া বাঘের প্রতি তার ছিল অনেক ভালোবাসা। ছোটবেলায় বাবা হায়দার আলীর কাছে বাঘের গল্প শোনার জন্য টিপু বায়না করতেন। এমনকি কিশোর বয়সে টিপু একটি বাঘ পুষতে শুরু করেন। বাবার মৃত্যুর পরে টিপু নতুন সিংহাসন তৈরী করেন, যদিও সিংহাসনে সিংহ নয় বরং বাঘের প্রতিকৃতি ছিল।টিপু সুলতান হিন্দু এবং খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জোর করে মুসলমান ধর্মে ধর্মান্তর করেন।টিপু সুলতান ২৭টি ক্যাথলিক চার্চ ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। ১৭৯৯ সালের ৪ই মে ৪৮ বছর বয়সে টিপু সুলতান ব্রিটিশদের হাতে নিহত হন।



টিপু সুলতান ওমান, পারস্য, অটোমান এবং ফ্রান্সে নতুন দূতাবাস খোলেন এবং কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তিনি অটোমানের সুলতান প্রথম আব্দুল হামিদ এর কাছে ব্রিটিশদের পরাজিত করতে সামরিক সাহায্য চান, কিন্তু অটোমান সম্রাজ্য তখন অস্ট্রো-অটোমান যুদ্ধে ব্যস্ত এবং নতুন করে রাশিয়ার সঙ্গেও তখন যুদ্ধাবস্থার সম্মুখিন হয়। তাই অটোমানরা টিপু সুলতানকে কোন সাহায্য দিতে পারেনি।১৭৮৬ সালে টিপু সুলতান ৭২ কামানের ২০ টি যুদ্ধ জাহাজ এবং ৬২ কামানের ২০টি রণতরী (frigates) দিয়ে তার নৌবাহীনিকে সুসজ্জিত করেন। ১৭৮৯ সালের ভেতরই টিপু সুলতানের প্রায় সকল জাহাজেই তামার পাটাতনে উন্নীত করা হয়। ১৭৯০ সালে তিনি কামালুদ্দিনকে তার "মীর বাহার" পদে নিযুক্ত করেন এবং জামালাবাদ এবং মাজিদাবাদে সুবিশাল ডকইয়ার্ড নির্মান করেন।



টিপু সুলতানের পুরো জীবনটাই যুদ্ধ; যুদ্ধের মাঝে জন্ম, বেড়ে উঠা, যুদ্ধেই মৃত্যু। বাবা হায়দার আলীরও সারা জীবন কেটেছে যুদ্ধে। টিপু সুলতান যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন ইংরেজদের তাড়িয়ে বেড়িয়েছেন,দেশের স্বাধীনতা আগলে রেখেছেন।কিন্তু তিনি শাহাদাত বরণ করলে শুধু হিন্দুস্থানই নয়,গোটা মুসলিম বিশ্ব যেন স্বাধীনতার এক অতন্দ্রপ্রহরী হারিয়ে অভিভাবক হারা অবস্থায় পড়ে যায়। তাই টিপু সুলতান ছিলেন ভারতবাসীর জন্য একজন চিরস্মরণীয় বীর।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৪৪

রিফাত হোসেন বলেছেন: + দিলাম।

ব্যক্তি টিপুকে জানি না । তবে নির্ভীক সুলতান কে চিনি । :)

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:২৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মহীশুরের বাঘকে লাল সালাম।তথ্যবহুল ইতিহাসভিত্তিক পোস্টে ভাললাগা জানিয়ে গেলাম্

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৪৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

পোষ্ট সরাসরি প্রিয়তে নিয়ে রাখছি সাথে ++++++++++++++

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:১১

ঝড়-বাতাসের কথা... বলেছেন: টিপু সুলতান হিন্দু এবং খ্রিস্টানদের জোর করে ধর্মান্তরিত করেন এটি ভারতের শিবসেনারা বলে থাকে। কারণ তাদের প্রভু খ্রিস্টানরা টিপু সুলতান উনার প্রতি বিদ্বেষবশত এরকম মিথ্যা ইতিহাস প্রচার করেছে।

৫| ১৭ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৫০

কালোপরী বলেছেন: +++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.