নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথের কোনো বিকল্প নাই- ৮৪

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:২১

তিনটি উপাধি নিয়তির মতো জড়িয়ে আছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামের সঙ্গে—‘বিশ্বকবি’, ‘কবিগুরু’ ও ‘চিরআধুনিক’। বাঙালির কপটতার সম্ভবত সবচেয়ে বড় শিকার রবীন্দ্রনাথ। অবশ্য এর আগে পাশ্চাত্য তাঁকে শিকার করে ছেড়ে দিয়েছে কলকাতার মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজে; তারা তা করেছে বুঝেশুনে আর বাঙালি একই কাজ করেছে নির্বোধের মতো, বছরের পর বছর ধরে। ‘বিশ্বকবি’ উপাধি দেওয়ার আগে বিশ্বের তো বটেই, ইংরেজি কবিতাই তারা ঠিকমতো পড়েনি; হয়তো ভালো করে পড়েননি রবীন্দ্রনাথও।রবীন্দ্রনাথকে সব সময়ের জন্য ব্যবহারযোগ্য মনে হয়েছে বাঙালির, নজরুলকেও; এই দুই কবির জন্ম না হলে হয়তো বিহারীলালকে বেছে নেওয়া হতো, জীবনানন্দকেও।



রবীন্দ্রনাথ কোনো রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সচেতন এবং সমাজ বৈষম্য নিধনকারী, পবিরর্বতনকামী নাগরিক। তিনি চেয়েছেন মানুষের মধ্যে ঐক্য ও উদার মানবিকতার প্রতিফলন ঘটুক। তিনি সমাজ বদলের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। সমাজের ভেতরে মানুষের কর্মোদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। সমাজবিরোধীশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে সমবেত আত্মশক্তির প্রয়োজন উপলব্ধি করেছেন সেই সময়েই। ব্যক্তি সমাজ সৃষ্টি করে, আর সমাজ সৃষ্টি করে রাষ্ট্রের। সমাজে সৎ অংশগ্রহণ সৎ রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্ম দেয়। এটা ছিল তাঁর কর্মের মূল প্রত্যয়।



রবীন্দ্রনাথ সারাটা জীবন একজন সাধকের বেশে মানবাত্মার উন্নত মহিমার জয়গান গেয়ে ফিরেছেন৷ তিনি তার সমগ্র চৈতন্যে উপলব্ধি করেছেন, এ বিশ্ব চরাচরের সবকিছুই একই সূত্রে গাঁথা আর অননত্ম-অপার রহস্যময় এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সকল কর্মকাণ্ড৷ হুমায়ুন আজাদের ভাষায়-’রবীন্দ্রনাথই আমাদের সব’৷ রবীন্দ্রনাথ সাথে চিঠিপত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল অনেক মুসলমান কবি সাহিত্যিকদের। রবীন্দ্রনাথ চিঠি লিখেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমউদ্দীন, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, স্যার আজিজুল হক, আবুল ফজল, কাজী আবদুল ওদুদ, বন্দে আলী মিয়াসহ খ্যাত-অখ্যাত অনেকের কাছেই ।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রবন্ধের দিকে তাকালে প্রায় ৩০ টিরও বেশি প্রবন্ধ পাওয়া যাবে যেখানে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক বিষয়ে তাঁর কোনো না কোনো বক্তব্য পাওয়া যাবে।



রবীন্দ্রনাথ যেভাবে যীশু খ্রিস্ট বা গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, সেরকম উচ্ছ্বাস কখনই প্রকাশ করেননি হজরত মুহম্মদ [স.] সম্পর্কে। তবে হজরত মোহাম্মদ [সা.]-এর জন্মদিন উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ একবার বাণী পাঠিয়েছিলেন স্যার আবদুল্লাহ সোরাওয়ার্দীকে। ২৫ জুন ১৯৩৪ ওই বাণীটি প্রচারিত হয় আকাশবাণীতে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উপন্যাস ও নাটকের ‘প্লট’ দিয়েছিলেন জসীমউদ্দীন ও বন্দে আলী মিয়াকে। এছাড়া তিনি কাজী নজরুল ইসলাম ও জসীমউদ্দীনকে শান্তিনিকেতনের কাজে যোগ দিতে আহবান জানিয়েছিলেন। জীবদ্দশাতেই ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও পূর্ব এশিয়ায় প্রভূত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ১৯১৬-১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে দেওয়া তাঁর ভাষণগুলি বিশেষ জনপ্রিয়তা ও প্রশংসা পায়। তবে কয়েকটি বিতর্ককে কেন্দ্র করে ১৯২০-এর দশকের শেষদিকে জাপান ও উত্তর আমেরিকায় তাঁর জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। কালক্রমে বাংলার বাইরে রবীন্দ্রনাথ “প্রায় অস্তমিত” হয়ে পড়েছিলেন।



আমাদের প্রত্যেকের জীবন পরিচালিত হচ্ছে স্রষ্টার মহা ইঙ্গিতে, যা আমরা সহজে অনুভব করতে ব্যর্থ হই। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তার জীবনের সমস্ত কৃতিত্বের পেছনে তাঁর উপস্থিতি অনুভব করেছেন। তাই তিনি এক দিন লিখেছিলেন-

‘অন্তর মাঝে বসি অহরহ

মুখ হতে তুমি ভাষা কেড়ে লহ,

মোর কথা লয়ে তুমি কথা কহ

মিলায়ে আপন সুরে।

কী বলিতে চাই সব ভুলে যাই,

তুমি যা বলাও আমি বলি তাই,

সঙ্গীতস্রোতে কূল নাহি পাই

কোথা ভেসে যাই দূরে।’



নীরদ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘হিন্দু একেশ্বরবাদের আলোচনা করিতে গিয়া কেহই হিন্দুমাত্রেরই একটা গভীর বিশ্বাসের উল্লেখ করে না। সেটা এক ঈশ্বর বা ভগবানের ধারণা। আচারে ও অনুষ্ঠানে, ধর্মের লৌকিক চর্চায় হিন্দু শুধু ‘ঠাকুরবেতা’ মানিলেও এবং প্রতিদিন এবং বৎসর ব্যাপিয়া ‘ঠাকুর দেবতার’ই পূজা করিলেও, এই সব ‘ঠাকুর দেবতার’ উপরে এক ঈশ্বর আছেন এই বিশ্বাস সকল হিন্দুরই ছিল এবং আছে। তাহারা মনে করিয়াছেন যে, তিনি বিপদে ত্রাণকর্তা, দু:খে সান্তবনা দাতা, অত্যাচারীর দ- দাতা ও সকলের প্রতি সমদ্রষ্টা। কবির সাহিত্য জগৎ বিশাল সন্দেহ নেই, কিন্তু কবির আধ্যাত্মিক সঙ্গীতই যে তাকে বিশ্বসাহিত্যে মর্যাদার শীর্ষ স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছে তাতে মোটেই সন্দেহ নেই।



স্ত্রী মৃণালিনীর ঘরে তাঁর প্রথম কন্যা মাধুরীলতার জন্ম হয়েছিল ১৮৮৬ সালে। একে একে তাঁদের আরও চারটি সন্তান জন্মগ্রহণ করে, কিন্তু রেণুকা ও শমীন্দ্রনাথের শিশুকালেই মৃত্যু হয়। ১৮৯৮ সালে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে পিতার নির্দেশে পরিবার নিয়ে চলে আসেন রবীন্দ্রনাথ, এখানে থেকে জমিদারি দেখাশোনা করেন। পাশাপাশি চলে তাঁর সাহিত্যচর্চার স্বর্ণযুগ।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রাজনৈতিক দর্শন অত্যন্ত জটিল। তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের সমর্থন করতেন। ১৮৯০ সালে প্রকাশিত মানসী কাব্যগ্রন্থের কয়েকটি কবিতায় রবীন্দ্রনাথের প্রথম জীবনের রাজনৈতিক ও সামাজিক চিন্তাভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়।রবীন্দ্রনাথের “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য” ও “একলা চলো রে” রাজনৈতিক রচনা হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। “একলা চলো রে” গানটি গান্ধীজির বিশেষ প্রিয় ছিল। যদিও মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক ছিল অম্লমধুর।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:৪৯

কপোতাক্ষের তীরে এক অসামাজিক বলেছেন: এবং উনিই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বাধা দেন প্রানপণে, একেবারে অসাধারণ উদার মানবিকতার উদাহরণ।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: জানতে হবে। সত্যটা জানতে হবে।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:৪৮

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


রবীন্দ্রনাথের কোনো বিকল্প নাই

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই।

৩| ২২ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

সাফায়াত কাদির বলেছেন: কারোরি বিকোলপো না

৪| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: হে হে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.