নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্য ভূবন থেকে জিহাদ তার মায়ের কাছে চিঠি লিখেছে

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১১

মা, তুমি মন খারাপ করে থেকো না। বাবাও কেমন পাগল পাগল হয়ে আছে। সেদিন কেন যে তুমি মানা করার পরও খেলতে বের হলাম! তুমি বলেছিলে দশ/পনের মিনিট খেলে যেন বাসায় চলে আসি, আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার বলটা ওই গর্তে পড়ে গেল- আমি নিচু হয়ে বলটা খুজতে গিয়েই গর্তের মধ্যে পড়ে গেলাম।

মা, গর্তে পড়ে গিয়ে আমার খুব কষ্ট হয়েছে। কি ভয়ানক অন্ধকার! একটুও নড়াচড়া করতে পারছিলাম। জানো মা, মাথাটা নিচের দিকে ছিল-কি যে কষ্ট হচ্ছিল। ঠান্ডা পানির মধ্যে আমার মাথাটা ডুবে ছিল, নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। মা, আমি শুধু তোমাকে ডেকে যাচ্ছিলাম, মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হয়েছিল কিনা জানি না। কিন্তু মা তুমি ঠিকই বুঝতে পেরেছিলে আমি কি ভীষন তোমাকে ডাকছিলাম।

মা, আমার মৃত্যুতে সারা দেশের মানুষ খুব কষ্ট পেয়েছে। মা, আমার কি এত তাড়াতাড়ি মরে যাওয়ার কথা ছিল? তুমি বলেছিলে জানুয়ারীতে আমাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবে। কত স্বপ্ন দেখেছি কাঁধে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাবো। কিছুই করা হলো না আমার। তবে মা, দ্রুত কিছু করলে আমি বেঁচে থাকতে পারতাম। ফায়ার সার্ভিস আংকেলরা জানেই না কিভাবে গর্ত থেকে আমাকে তুলবে। তাদের কোনো ধারনা নেই। একটুও নেই।

মা, বিজ্ঞানের সুত্র ব্যবহার করে আমাকে খুব সহজেই বের করে আনা যেত। মা, স্বরাষ্ট প্রতিমন্ত্রী আংকেলের মাথায় বুদ্ধির ঘাটতি আছে। যখন আমি মধ্যে রাত্রে গর্তের মধ্যে মরে পড়ে আছি তখন অনেকেই চিৎকার করে বলেছিল গর্তে কোনো বাচ্চা নেই- তখন আমার ইচ্ছা করেছিল সব গুলোর মুখে মুতে দেই। বাবাকে আবার পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে খারাপ ব্যবহার করেছে। বেশির ভাগ পুলিশেরই ব্যবহার খারাপ তা সবাই জানে। আচ্ছা, মা যারা আমাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেল তারা কেন আমাকে এত দূরের হাসপাতালে নিয়ে গেল? কাছে তো বেশ কয়েকটা হাসপাতাল ছিল।

মা, তুমি মন খারাপ করে থেকো না। আমি বেহেশতে আছি। অনেক গুলো এঞ্জেল আমার দেখাশোনা করছে। এখানে কোনো গর্ত নেই, নেই কোনো ভাঙ্গা রাস্তা। মা, মাগো তুমি আর কেঁদো না। যে সব আংকেলদের জন্য আমাকে মরে যেতে হলো- তারা সবাই নরকে যাবে, তাদের জন্য ভয়ংকর শাস্তি অপেক্ষা করে আছে- আমাকে বলেছে এঞ্জেল'রা। সব শেষে যে তিন আংকেল আমার লাশ গর্ত থেকে তুলে এনেছে তাদের সাথে একদিন আমার বেহেশতে দেখা হবে। হবেই।

এখন যাই মা, তুমি চোখের পানি মুছে ফেলো। জঞ্জালে ভরা শহর থেকে বেহেশতে আমি ভালো আছি। তুমি পারলে সবাইকে ক্ষমা করে দিও। তবে আমার মতন এমন কষ্টের মরন যেন আর কারো না হয়।

ইতি, তোমার আদরের জিহাদ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৯

এস কাজী বলেছেন: পড়ে ভাল লাগলো। আমরা দুইজনেই প্রায় একই ভাবে চিন্তা করেছি জিহাদকে নিয়ে। ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.