নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

নয়ন তোমারে পায়না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে... (পর্ব - তিন)

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩২

হুমায়ূন আহমেদের অজানা বিষয়ের আজ লিখব তৃতীয় পর্ব। আপনাদের ব্যাপক সাড়া পেয়ে আমি মুগ্ধ। আগের দু'টি পর্ব ফেসবুকে অনেক গুলো পেজে এবং গ্রুপে পোষ্ট করা হয়েছে। হাজার খানিক মানুষ লেখাটি পছন্দ করেছেন। তারা আমাকে বলেছেন, যে যা খুশি বলুক, লেখা চালিয়ে যান। আমাদের ভাল লাগছে।







মৃত্যুর কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন, হেমিংওয়ের লেখা পড়ে আমরা কখনোই বুঝতে পারি না যে, হেমিংওয়ে নিজেকে গুলি করে মেরে ফেলতে পারেন। তিনি অসম্ভব জীবনবাদী একজন লেখক। তাঁর লেখা পড়ে যদি তাঁকে আমরা বিচার করতে যাই, তাহলে কিন্তু আমরা একটা ধাক্কা খাব। মায়কোভস্কি পড়ে কখনোই বুঝতে পারব না যে, মায়কোভস্কি আত্মহত্যা করার মানুষ। আমরা কাওয়াবাতা পড়ে কখনো বুঝতে পারব না যে, কাওয়াবাতা হারিকিরি করে নিজেকে মেরে ফেলবেন। এঁরা প্রত্যেকেই জীবনবাদী লেখক। জীবনবাদী লেখকদের পরিণতি দেখা গেল ভয়ংকর। তার মানে কী? তার মানে কী দাঁড়ায়? লেখকরা কি সত্যি সত্যি তাঁদের লেখায় নিজেকে প্রতিফলিত করেন? নাকি তাঁদের শুদ্ধ কল্পনাকে প্রতিফলিত করেন?



হুমায়ূন আহমেদ নাস্তিক ছিলেন না। নামাজ পড়তেন। যদিও তিনি মাঝে মাঝে তার লেখাতে ধর্ম নিয়ে রসিকতা করতেন। এক সাক্ষাৎকারে হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন, মেঘের ওপর বাড়ি বইটা লিখতে গিয়ে প্রধান যে সমস্যা হয়েছে, সেটা ধর্মীয়। মৃত্যুর পরবর্তী জগত্ নিয়ে যদি আমি এমন কিছু লিখি, যেটা ধর্মের সঙ্গে মেলে না, তাহলে ধর্মবিশ্বাসী লোকজন তো রাগ করবে। তবে এই বিষয় নিয়ে আগেও বই লেখা হয়েছে। আমাদের এখানে প্রথম এই বিষয় নিয়ে যিনি লেখেন, তিনি বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়। বইটার নাম দেবযান। এই বইয়ে তিনি মৃত্যুর পরের জগতের অনেক বর্ণনা দিয়েছেন। মৃত্যু নিয়ে প্রায়ই ভাবি। মৃত্যুর পরের জগত্ নিয়েও অনেক ভাবনা-চিন্তা করেছি। সম্ভবত এটা থেকেই মেঘের উপর বাড়ি বইটার ভাবনা মাথায় এসে থাকবে।



হুমায়ূন আহমেদ ডাক্তারের কাছে যেতে ভয় পেতেন। হসপিটালের ওষুধের যে গন্ধ, এটা একেবারে সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদকে অসংখ্যবার ডাক্তারদের কাছে যেতে হয়েছে।



হুমায়ূন আহমেদ তার এক জীবনে বহুবার বলেছেন তার জীবনে শ্রেষ্ঠ নারী হচ্ছেন গুলতেকিন। হুমায়ূন আহমেদ একা থাকতে পছন্দ করতেন না। সব সময় তিনি চাইতেন তাঁর সব প্রিয় মানুষেরা তাকে ঘিরে থাকুক। তাঁর নাটক-সিনেমারর শূটিং চলাকালে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর পরিবারেই সদস্যদের নিয়ে যেতেন। মাকে নিয়ে যেতেও ভুলতেন না।



এ পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদ রচিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৩৩৪টি (তবে একটি বইয়ের গল্প অন্যরকম। বইটি লিখেছিলেন দু’জন মিলে। বেরিয়েছিল ১৯৮৯ সালে। প্রকাশ করেছিল জনপ্রিয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সূচীপত্র। বাংলা একাডেমির একুশের বইমেলায় সর্বাধিক বিক্রির তালিকাতেও বইটির নাম উঠেছিল। বইয়ের নামটিও ছিল বেশ দীর্ঘ, ‘কাদের সিদ্দিকীর গ্রন্থ সমালোচনা ও সুদীর্ঘ সাক্ষাৎকার।’ ভেতরে-বাইরে লেখকদ্বয়ের নামও সংযোজিত ছিল : হুমায়ূন আহমেদ ও সালেম সুলেরী।) হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে লেখা ৩২টি বই এবং হুমায়ূন আহমেদ অংকিত ৩৪টি পেইন্টিং রয়েছে।



হুমায়ুন আহমেদ খুব একটা ধার্মিক ছিলেন না। তবে মাঝে মাঝে নামাজ পড়তেন কিন্তু রোজা রাখতে পারতেন না। মৃত্যুর আগে আমাদের মহানবী কে নিয়ে একটা মহান লেখা শুরু করেছিলেন। এক পর্ব লিখে শেষ করেছিলেন- যা অনন্যা ঈদ সংখ্যায় ছাপা হয়েছিল। (এই লেখার মজার একটা ইতিহাস হুমায়ূন আহমেদ নিজেই লিখে গেছেন।)



সুনীল, শীর্ষেন্দু এবং সমরেশ মজুমদার হুমায়ূন আহমেদকে অনেক পছন্দ করতেন। তারা ঢাকা আসলে অবশ্যই হুমায়ূন আহমেদের সাথে দেখা করে যেতে ভুলতেন না। সুনীল তো একেবারে নুহাশ পল্লীতে চলে যেতেন। অনেক বার নুহাশ পল্লীর পুকুরে গলা পর্যন্ত ডুবিয়ে বসে থাকতেন। একবার পুকুরে নামলে এক ঘন্টার আগে উঠতেন না।



হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় বইয়ের সংখ্যা অনেক। তিনি একবার তাঁর পাঠকদের জন্য একটা লিস্ট বানিয়ে ছিলেন। হুমায়ূন আহমেদ সব সময় তাঁর কাছের মানুষদের তাঁর প্রিয় বইগুলো পড়তে দিতেন। এবং অনেকেই সেই বই গুলো ফেরত দিতেন না।



হুমায়ূন আহমেদ অসংখ্য মানুষের প্রতিভা বিকশিত করে দিয়েছিলেন। যেমন কুদ্দুস বয়াতি, বারি সিদ্দিকি, এস আই টুটুল, সেলিম চৌধুরী এরকম অসংখ্য নাম বলা যায়। তারপর সিনেমার নায়ক-নায়িকার সংখ্যাও কম নয়।



মেহের আফরোজ শাওন বলেছেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতাম হুমায়ূন আহমেদ লিখতে বসেছেন। ঘুম থেকে উঠে এই দৃশ্য দেখে কি যে ভাল লাগত । এটা আমার জীবনের অনেক বড় পাওয়া।



নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদ দু'টা লিচু গাছ আছে। তাঁর একটা তিনি রেখেছেন শুধু পাখিদের জন্য। অন্যটা ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য।



কবি শামসুর রাহমানের সাথে আমি তাল মিলিয়ে বলতে চাই- সৃষ্টিশীল মানুষদের কম পক্ষে ৫০০ বছর বেঁচে থাকা উচিত। আমার সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আমি একজন ফোটোগ্রাফার হয়েও স্যারের একটাও ছবি তুলতে পারি নি। এই দুঃখ আমি কোথায় রাখি?



(বন্ধুরা হুমায়ূন আহমেদের অজানা কথা কি আপনাদের ভাল লাগছে? যদি ভাল লাগে আওয়াজ দিয়েন। আপনাদের আওয়াজের উপর নির্ভর করছে পরবর্তী পর্ব লেখা হবে কি হবে না।)









ছুটির দিনে আমি ও পরী। (লেখার সাথে এই ছবির কোনো সামঞ্জস্য নেই।)





মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫০

প্রফেসর মরিয়ার্টি বলেছেন: আপনার লেখার মাধ্যমে হুমায়ুন আহমেদ সম্পর্কে অনেক অজানা জিনিস জানতে পারছি।


পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: সাথে থাকুন।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪০

অবিবাহিত ছেলে বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১০

রাখালছেলে বলেছেন: লেখা ভাল হয়েছে । চালিয়ে যান ।

৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০৯

মহান অতন্দ্র বলেছেন: ভাল লাগলো। লিখে যান।

৫| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৯

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আমি সাথেই আছি রাজীব। পরবর্তী পর্বও লিখে ফেলুন।

৬| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪৫

মোতিমহল বলেছেন: লেখক হুমায়ুন আহমেদ সমন্ধে এই সকল তথ্য দেবের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আরও কিছু জানার আগ্রহ রইল।

৭| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৭

শাহ আজিজ বলেছেন: একজন তোঁ হুমায়ুনের হিমু কে নিয়ে কেচ্ছা ফেদেছে যে ওটা অমুকের লেখার হিমু, তিনি নকল করেছেন ইত্যাদি। লিখে যান কারন হুমায়ুনের মতো একাধিক বিষয়ে প্রতিভাধর লেখক এখনো আসেনি এই বঙ্গে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.