নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
একটা সহজ সরল কথা দিয়ে লেখাটা শুরু করি- আমাদের কপাল ভাল হুমায়ূন আহমেদের মতো একজন লেখক বাংলাদেশে জন্মেছে। সারা বাংলাদেশের মানুষ গর্ব করতে পারে এমন একজন লেখক হচ্ছেন হুমায়ুন আহমেদ। হুমায়ূন আহমেদ মারা যান ১৯ জুলাই। অন্যদিকে ১৯ জুলাই লেখক-প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেনের জন্মদিন। হূমায়ূন আহমেদ কাজী আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে এক পাতা মন্তব্য লিখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, 'কাজী আনোয়ার হোসেন একজন উঁচুদরের লেখক, পাঠক তৈরিতে অসামান্য অবদান রেখেছেন তিনি।' সাপ্তাহিক রোববার এর কভার স্টোরি করা হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদের মন্তব্যটি। সেই সময় অসংখ্য কপি বিক্রি হয়েছি এই ম্যাগাজিনটি।
হুমায়ূন আহমেদে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের 'আত্মপ্রকাশ' উপন্যাসটি পড়ে, আমার মনে হয়েছিল-এমন ঝর-ঝরে গদ্য তো চাইলে আমিও লিখতে পারি। মেদহীন গদ্যের ধারনা হুমায়ূন আহমেদের মাথায় ঢুকিয়ে দেন সুনীল। এক সময় হুমায়ূন আহমেদ নিউমার্কেট থেকে প্রচুর বই কিনতেন। এমন কি তাঁর পুত্র নুহাশকেও কিনে দিতেন।
পরপর আট বছর পশ্চিমবঙ্গের 'দেশ' পত্রিকায় হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ছাপা হলো। এই দেখে পশ্চিমবঙ্গের প্রচেত গুপ্ত নামে এক লোক হুমায়ূন আহমেদের লেখা নকল করে লিখতে শুরু করলেন। কিন্তু প্রচেত গুপ্ত পাঠকের হৃদয়ে ঝড় তুলতে পারেন নি।
২০১০ সালে টিভি চ্যানেলের এক সাংবাদিক ঈদের দিন হুমায়ূন আহমেদকে ফোন দিল। ঈদ স্পেশাল রিপোর্ট হবে। হুমায়ূন আহমেদ সারা বছর নানান কাজে ব্যস্ত থাকেন। এক হিসেবে নিজের পরিবারকে সময়ই দিতে পারেন না। তাই ঈদের দিনটি ঠিক করে রেখেছিলেন শুধু পরিবারের জন্য। সেই রিপোটার ফোন দিল, হুমায়ূন আহমেদ মন দিয়ে সব শুনলেন। এবং স্পষ্টভাবে বললেন, ''শোনো মেয়ে, অনেক বড় বড় লেখক আছে, দেখবা তারা তোমাদের টিভিতে মুখ দেখানোর জন্য বইসা আছে, তাদের ফোন দাও লাভ আছে। ঈদ হলো পরিবার পরিজন নিয়ে উপভোগ করার বিষয়, সুন্দর সাদা পাঞ্জাবী পড়ে সেমাই খাবো, দুপুরে লাল পাঞ্জাবী পড়ে বিরানী খাবো- এইসব কথা বার্তা দর্শকদের সাথে শেয়ার করার কোনো আগ্রহ আমার নেই। তোমাকে কি অন্য লেখকের নাম্বার দিব? রিপোর্টার খুব অপমানিত বোধ করল। সে আবার ফোন দিল এবং বলল, ...
থাক, এই ব্যাপারে আমার আর কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে না। শুধু এইটুকু বলি, কিছু কথার পরে হুমায়ূন আহমেদ রিপোর্টারকে বললেন, আম্মা আপনি কি আমার সাথে এক কাপ চা খেতে আসবেন? আমি খুব খুশি হব কিন্তু ক্যামেরা আনবেন না। তাহলে আমি খারাপ ব্যবহার করবো।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর। এদিনে জন্ম নেয় রানী এলিজাবেথ-এর ছেলে প্রিন্স চার্লস। একই দিনে বাংলাদেশে জন্ম নেয় এক পুলিশ কর্মকর্তার প্রথম সন্তান। মায়ের খুব আফসোস হয়েছিল রানীর ছেলেকে নিয়ে পৃথিবীময় মাতামাতি, তারও যে একটু পুত্র সন্তান হয়েছে সেদিকে কেউ নজর করছে না। বাবা স্ত্রীকে বলেছিলেন, প্রিন্স চার্লসকে নিয়ে উৎসব হচ্ছে তাঁর মা-বাবার কারনে। আমার ছেলে একদিন তাঁর নিজের যোগ্যতায় বড় হবে, তখন সারা দেশ তাকে নিয়ে মাতামাতি করবে।
হুমায়ূন আহমেদকে দেখলাম মন খারাপ করে ধানমন্ডি লেকে বসে আছেন। আমি খুব সাহস নিয়ে তার পাশে গিয়ে বসলাম। হঠাত এক চা বিক্রেতা আমাদের সামনে আসতেই- আমি বললাম দু'কাপ চা দাও। হুমায়ূন আহমেদ খুব আরাম করে চা খেলেন। তারপর সিগারেট। তারপর সন্ধ্যা পর্যন্ত নানান বিষয় নিয়ে গল্প বললেন। আমি অবাক হয়ে অদ্ভুত সব গল্প শুনলাম। আমি এর আগে এত সুন্দর করে, এত সহজ করে কাউকে গল্প বলতে শুনিনি। স্যার আমাকে বললেন- তুমি শ্রোতা হিসেবে খুব ভাল। চলো আজ তোমাকে পুরান ঢাকা নিয়ে গিয়ে ভোলা ভাইয়ের বিরানী খাওয়াবো।
হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আমি একটা কবিতা লিখেছি। যদিও আমি কবিতা লিখতে জানি না। তারপরও চেষ্টা করলাম।
হুমায়ূন আহমেদ আমাদের কাছে-
কখনও হিমু, কখনও শুভ্র কখনও মিসির আলি
শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে এক খন্ড আনন্দ আপনি
আপনি অনেক যত্ন নিয়ে অনেক শিখিয়েছেন
আপনার মৃত্যু নেই, নেই এবং নেই
আপনার সাজানো বাগানে আপনি আছেন
বাংলার মানচিত্র থেকে-
কোনো শকুন আপনাকে মুছে ফেলতে পারবে না
কোনো ভয় নেই, কোনো চিন্তা নেই,
বলি পরিস্কার-
আমাদের মনের নরম ঘরে আপনাকে দিয়েছি স্থান।
২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০২
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ আমার কাছে ঠিক একটি নক্ষত্রের মত, তিনি খুটিনাটি বিষয়গুলো সুন্দর ও সহজ করে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন যা বাংলাদেশের কোন লেখকই তুলে ধরতে পারে নাই
৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০৪
আবু শাকিল বলেছেন: ভাল লাগল ।
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল।
৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:১৪
মোহামমদ ইকবাল হোসেন বলেছেন: ভাল লাগলো, আমি আজই সবগুলো পর্ব পড়লাম।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩৪
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: সুন্দর।
ভালো লাগল।