নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আমাদের এলাকায় একটা পাগল আছে।
নাম সোহেল। সবাই সোহেল পাগলা বলে ডাকে। বয়স ২২ বা ২৫ হবে। একসময় সোহেল পাগলা রাস্তায় সুন্দরী মেয়ে দেখলে গান গেয়ে উঠতো- 'শ্বশুর বাড়ি যাও, ভালা ভালা খাও'। তার এই একটাই গান। চিৎকার দিয়ে গানটা গাইতো। এলাকার মানুষজন বেশ মজা পেত। গানের সাথে সাথে সোহেল পাগলা অদ্ভুত ভাবে নাচতো। এখন সোহেল পাগলা নাচে না, গান গায় না। তার একটা অসুখ আছে। হঠাৎ হঠাৎ সে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। ধাম করে মাটিতে পড়ে গিয়ে তার মাথা ফাটে, ঠোট কাটে এবং হাতে পায়ে বেশ ব্যথা পায়। মাটিতে পড়ে পুরো শরীর কাপতে থাকতে। মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়। খিচুনী রোগীর মতোন অবস্থা। সোহেল পাগলার মৃগী রোগ আছে। জুতোর ঘ্রান শুকলে নাকি মৃগী রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। সোহেল পাগলার গলায় সব সময় চামড়া মালা আছে।
সোহেল পাগলার মা আছে, দুই ভাই আছে, ভাবী আছে, আছে দুই বোন। অথচ সোহেল পাগলাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। অনেক বছর ধরে সে এক বিল্ডিং এর নীচে ঘুমায়। মাঝে আশে পাশের দোকানদারদের টুকটাক কাজ করে দেয়। এই পানি এনে দিলো, এই চা এনে দিলো। বিনিময়ে তারা তাকে রুটি কলা খেতে দেয়। আজ থাক। সোহেল পাগলার গল্প আরেকদিন বিস্তারিত বলবো। এখন মূল লেখায় যাই।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের একটা বই আছে 'পার্থিব'।
চমতকার বই। অনেক মোটা বই। আমি দুইবার পড়েছি আগে। আবার নতুন করে পড়া শুরু করেছি। এই 'পার্থিব' বইটাতে একটা চরিত্র আছে 'চয়ন' নামে। সে ইংরেজি এবং অংকে অনেক ভালো। বেশ কয়েকটা টিউশনি করে চয়ন জীবিকা নির্বাহ করে। তার ভাই ভাবী আছে, তারা চয়নের দিকে ফিরেও তাকায় না। মা বেচে ছিলো। দীর্ঘদিন রোগে ভূগে মা-ও মরে গেল। চয়নের অনেক কষ্ট। কিন্তু কষ্টের কথা বলার তার কেউ নেই। চয়নের মৃগী রোগ আছে। হঠাত হঠাত তার খিচুনী দেখা দেয়। তখন তার ভীষন কষ্ট হয়। লেখক শীর্ষেন্দু মৃগী রোগের বর্ননা দিয়েছেন। মৃগী রোগীর কি পরিমান কষ্ট সহ্য করতে হয় তা বিস্তারিত বলেছেন। বাংলা সাহিত্যে আর কেউ মনে হয় মৃগী রোগ বা রোগী নিয়ে লিখেন নি। যদিও বাংলা সাহিত্য আমি অল্প পড়েছি। যাই হোক, আজ আমার লেখার বিষয় এই মৃগী রোগ। আসুন এই রোগ নিয়ে বিস্তারিত জানি। জানার দরকার আছে। জেনে রাখা ভালো।
মৃগী রোগীর চিকিৎসা আছে।
চিন্তার কিছু নেই। সঠিক চিকিৎসায় রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়। ৯০ শতাংশ রোগী ওষুধ খেয়ে ভালো থাকে। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে ২ থেকে ৫ বছর ওষুধ খেয়ে রোগমুক্ত হয়। মৃগী এক প্রকার মস্তিষ্কের রোগ। মৃগী রোগকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় 'নিউরোলোজিক্যাল ডিজিজ' বলা হয়।
মৃগী রোগ যে কোনো বয়সে হতে পারে। এটা কোনো সংক্রামক রোগ নয়। এই রোগের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। মৃগী রোগে খিঁচুনি হঠাৎ শুরু হয়ে কিছুক্ষণ পর এমনিতেই থেমে যায়। সাধারণত এ ধরনের অ্যাটাক আধা মিনিট বা এক মিনিট সময় ধরে হয়ে থাকে। অনেকে অস্থির হয়ে রোগীর হাত-পা চেপে ধরে, মাথায় পানি দেয় আবার অস্থির হয়ে মুখে ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করে, চামড়ার জুতা বা গরুর হাড় বা লোহার শিক ইত্যাদি মুখে চেপে ধরে। কিন্তু এসব কোন কিছুই করার দরকার নেই। এসবে কিন্তু কোনো কাজ হয় না বরং ক্ষতিই বেশি হয়। রোগটি নিজে নিজেই থেমে যাবে এবং রোগী ঘুমিয়ে পরবে।
বর্তমানে মৃগী রোগের উন্নত চিকিৎসা আছে।
মৃগী রোগীকে মানসিক ভাবে অনেক বেশি সহযোগিতা করতে হয়। জগতে বিখ্যাত অনেক মানুষদের মৃগী হয়েছে। যেমন- আর্টিস্ট ভিনসেন্ট ভ্যানগগ, বিজ্ঞানী সক্রেটিস, সাহিত্যিক চার্লস ডিকেন্সসহ বহু লোক। তারা তাদের কাজের মধ্যে দিয়ে খিঁচুনি রোগকে জয় করতে পেরেছেন। ১৭ নভেম্বর সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় বিশ্ব এপিলেপসি বা মৃগী দিবস।
এপিলেপ্সি বা মৃগী রোগ গ্রিক শব্দ এপিলেপ্সিয়া থেকে এসেছে। এই রোগ নারীদের কম হয়। মানুষের দেহের সব কাজ নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয় মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে। যখন মস্তিষ্কের উদ্দীপক ও নিবৃত্তিকারক অংশদ্বয়ের কার্যপ্রণালির ভারসাম্য নষ্ট হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন মৃগি রোগ বা এপিলেপসির উপসর্গ প্রকাশ পেতে শুরু করে।
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২১
রাজীব নুর বলেছেন: কিন্তু এই রোগ দরিদ্র লোকজনদের বেশি হয়।
সরকার কবে এদের খুজে বের করে চিকিৎসা করাবে?
২| ১০ ই মে, ২০২০ ভোর ৪:১৯
মীর আবুল আল হাসিব বলেছেন: অদ্ভুদ সব তথ্য পেলাম। বিশেষ করে বিখ্যাত ব্যাক্তিদেরও মৃগী রোগ আছে জানতাম না।
মৃগী রোগীদের সাথে যে আচরন করা হয় তা অমানবিক।
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২২
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশের লোকজন কুসংস্কারে বিশ্বাসী। তাই মৃগী রোগীদের ভোগান্তি বেশি।
৩| ১০ ই মে, ২০২০ ভোর ৪:১৯
ওমেরা বলেছেন: আমের ফটোক দেখে আমার তো এখন কাঁচা আম খেতে ইচ্ছা করছে , তার কি হবে এখন!!
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: দেশে এখন প্রচুর কাচা আম পাওয়া যাচ্ছে। ৬০ টাকা কেজি। লোকজন ইচ্ছা মতো কিনছেন। আচার বানানোর জন্য।
৪| ১০ ই মে, ২০২০ ভোর ৬:১৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমাদের বাড়ীর পাশের একটা ছেলে, একা গোসল করতে গিয়ে এই রোগে পানিতে ডুবে মারা গেছে অকালে।
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: মৃগী রোগীদের একা একা চলাফেরা ঠিক না। বিশেষ করে পুকুরে গোছল করা, ট্রেনে বাসে।
৫| ১০ ই মে, ২০২০ সকাল ৭:০৪
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অনেক সময় ফুটপাতে এমন লোক পড়েযেতে দেখেছি ।ভাবতাম সাহায্যর জন্য এমন করছে।আসলে তাদের হয়তো মৃগীরোগই ছিল।কুসংস্কার সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে,এরথেকে সমাজকে মুক্ত করতে হবে।
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: মৃগী রোগীদের দরকার মানবিক সাহায্য।
৬| ১০ ই মে, ২০২০ সকাল ৭:৩০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
Good post.
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ১০ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:১৪
পদ্মপুকুর বলেছেন: হঠাৎ এপিলেপ্সি নিয়ে কেনো, আশেপাশের কেউ কি এপিলেপ্সিতে আক্রান্ত হয়েছে? এপিলেপ্সি নিয়ে আমার এই লেখাটা পড়ে দেখতে পারেন।
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: না।
এলাকার সোহেল পাগলাকে দেখলেই মৃগী রোগটা নিয়ে ভাবি।
৮| ১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৪
সাইন বোর্ড বলেছেন: আমার এক চাচাত ভাই, দীর্ঘ বছর তাকে চোখে চোখে রেখেও তাকে বাঁচানো যায়নি, নদীতে গোসল করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত পানিতে ডুবে মারা গেছে । এর আগে অবশ্য তাকে বিভিন্ন চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি । হতে পারে সঠিক চিকিৎসা সে পায়নি ।
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখজনক।
সঠিক চিকিৎসা আছে।
৯| ১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫০
ঢাবিয়ান বলেছেন: ছবির আমগাছটার নীচে বসে আম পেড়ে লবন মরিচ দিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে।
১০ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: আগে বেচে থাকেন। দেশের যে অবস্থা!!!
আপনাকে আমাদের গ্রামে নিয়ে যাবো। আম গাছের নিচে আম খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিব।
১০| ১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:০৩
শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: লেখক বলেছেন: কিন্তু এই রোগ দরিদ্র লোকজনদের বেশি হয়।
সরকার কবে এদের খুজে বের করে চিকিৎসা করাবে?
..........................
কঠিন ভাবনার বিষয়। তবে আশেপাশের মানুষের উচিত তাদের জন্য সাধ্যমত কিছু করা।
১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: সোহেল পালার জন্য আমার মায়া হয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ৩:৫৮
শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: ব্যতিক্রমী পোস্ট ! কুসংস্কারের শেকড় অনেক গভীরে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতিতে কিছুটা হলেও তা কমেছে।