নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
রামানুজন প্রতিভাবান একজন ভারতীয় গণিতবিদ।
প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও সম্পূর্ণ নিজের প্রচেষ্টায় তিনি গণিতের বিভিন্ন শাখায়, বিশেষ করে গাণিতিক বিশ্লেষণ, সংখ্যাতত্ত্ব, অসীম ধারা ও আবৃত্ত ভগ্নাংশ শাখায়, গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার রেখে যাওয়া নোটবুক বা ডায়েরি হতে পরবর্তীতে আরও অনেক নতুন সমাধান পাওয়া গেছে। রামানুজন মাত্র এগারো বছর বয়সেই কলেজ ছাত্রদের অংকের সমাধান করে দিতেন।
গ্র্যাজুয়েট হতে না পেরে লাইব্রেরিতে বইয়ের সমুদ্রেই ডুবে গিয়েছিলেন রামানুজন। ৫ বছর ছিলেন ইংল্যান্ডে। সেই সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছে। বৃত্তের পরিধি আর ব্যাসের অনুপাত সব সময়েই একটি ধ্রুবক বা কনস্ট্যান্ট। যাকে বলে- ‘পাই’। রামানুজন ওই ‘পাই’য়েরই একটি অসীম শ্রেণি বা ‘ইনফিনিট সিরিজ’ আবিষ্কার করেছিলেন।
১৯০৯ সালে রামানুজন বিবাহ করেন।
কিন্তু তার কোন স্থায়ী কর্মসংস্থান ছিলনা। বিয়ের সময় তার স্ত্রীর বয়স ছিলো ৯ বছর। স্ত্রীর নাম জানকি দেবী। রামানুজনের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী জানকী স্বামীর সমস্ত চিঠি এবং কাগজপত্র মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে দিয়েছিলেন সামান্য মাসিক বন্দোবস্তের বিনিময়ে।
রামানুজনকে ডাকা হয়- ‘The man who knew infinity’ নামে। তাঁর গাণিতিক আবিষ্কারগুলো এখন সমানে ব্যবহৃত হচ্ছে কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানে, বিশেষত স্ট্রিং থিওরিতে।
গোঁড়া হিন্দু হওয়ায় ট্রিনিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি পাওয়ার পর সমুদ্র পাড়ি দিতে বাধ সাধিয়ে বসেন তিনি। যদিও পরে অবশ্য তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষ রামানুজনের নাম জানে না ঠিকই। কিন্তু পৃথিবীর প্রতিটি গণিতবিদ রামানুজনের নাম শুনে শ্রদ্ধায় মাথা নত করে। তাকে বলা হয় গণিতবিদদের গণিতবিদ।
রামানুজন ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ইয়েঙ্গার ছিলেন শহরের একটি কাপড়ের দোকানের হিসাবরক্ষক। তার মা একজন গৃহিণী ছিলেন এবং একটি স্থানীয় মন্দিরে গান গাইতেন। তিনি ছিলেন তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন মহিলা। পাঁচ বছর বয়সে রামানুজনকে পাড়ার পাঠশালায় ভর্তি করা হয়। সাত বছর বয়সে তাকে কুম্ভকোনাম শহরের টাউন হাই স্কুলে ভর্তি করানো হয়। রামানুজন সাধারণত কম কথা বলতেন এবং মনে হতো তিনি কিছুটা ধ্যানমগ্ন থাকতেন। রামানুজন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই তার নোট বুকে কিছু লিখতেন। কী লিখছেন জিজ্ঞাসা করলে বলতেন যে, নামাক্কলের দেবী স্বপ্নে তাকে এই সব সূত্র দিয়ে প্রেরণা দিচ্ছেন।
রামানুজনের উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে- গামা ফাংশন, মডুলার রূপ, রামানুজনের অবিচ্ছিন্ন ভগ্নাংশসমূহ, অপসারী ধারা, অধিজ্যামিতীয় ধারা, মৌলিক সংখ্যা তত্ত্ব ও মক থেটা ফাংশন। এছাড়া হার্ডির সঙ্গে মিলে উদ্ভাবন করেছেন- উচ্চতর যৌগিক সংখ্যাসমূহের বৈশিষ্ট্য এবং বিভাজন ফাংশন ও এর অসীমতট সম্পর্কীয় তত্ত্বসমূহ।
রামানুজন ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু।
ধর্মীয় অনুশাসন পালনে তিনি যথেষ্ট কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তার মতে, পৃথিবীর সব ধর্মই কমবেশি সত্য। তিনি নিরামিষভোজী ছিলেন। তিনি যতদিন কেমব্রিজ ছিলেন, সবসময় স্বপাক আহার করতেন এবং বাইরের পোশাক পরিধান করতেন। কেমব্রিজ-এর আমন্ত্রণে বিদেশে আসার অল্প দিন পরই রামানুজন ট্রিনিটি কলেজের ফেলোশিপ পেয়ে যান। এই সময় মাদ্রাজ থেকে প্রাপ্ত বৃত্তির পরিমাণ ছিল বার্ষিক ২৫০ পাউন্ড; তার ৫০ পাউন্ড দেশে পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য দিতে হত। এ ছাড়া ট্রিনিটি কলেজ থেকে ভাতা বাবদ ৫০ পাউন্ড পেতেন।
১৯১৭ সালের বসন্তকালের প্রথমে রামানুজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে কেমব্রিজের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। ১৯১৯ সালে রামানুজন ভারতবর্ষে ফিরে আসেন। কিছুকাল যক্ষ্মারোগে ভোগার পর ১৯২০ সালের ২৬ই এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
ছোটবেলা থেকে মৌলিক সংখ্যা নিয়ে রামানুজনের আগ্রহ।
কোনো একটা সংখ্যা মৌলিক কি না, এটা জানতে হলে দেখতে হয় সেই সংখ্যাটিকে অন্য কোনো সংখ্যা দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায় কি না। ১৯১৫ সালের রামানুজন গাণিতিক ফাংশনের সর্বোচ্চ মান নিয়ে একটি দীর্ঘ নিবন্ধ লিখলেন। সেখানে বাতলে দিলেন যেকোনো সংখ্যার উৎপাদকের সংখ্যা বের করার একটা কৌশল।
১৯১১ সালে তাঁর প্রথম গবেষণা প্রবন্ধ ‘জার্নাল অফ দ্য ম্যাথেমেটিক্যাল সোসাইটি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কতকগুলো বিশেষ বিষয় তিনি সে সময় ভাবতে পছন্দ করতেন- পৃথিবীর প্রথম মানুষ কে? মেঘগুলোর মধ্যে দূরত্ব কত? তিনি ১২-১৩ বছর বয়সে কিউবিক সমীকরণের সমাধান শিখে ফেলেন।
রামানুজন সম্পর্কে বলতে গিয়ে পণ্ডিত জওয়াহেরলাল নেহরু লিখেছিলেন, 'ভারতীয় গণিত অবশ্যই প্রত্যেককে সাম্প্রতিক সময়ের এই অসাধারণ ব্যক্তিত্বের কথা ভাবাবে। বার্ট্রান্ড রাসেল লিখেছিলেন, আমি হার্ডি ও লিটলউডকে এক ধরনের বন্য উত্তেজনায় দেখেছিলাম কারণ তারা মনে করে তারা আবিষ্কার করেছেন দ্বিতীয় একজন নিউটনকে, বার্ষিক ২০ পাউন্ড আয়ের একজন ভারতীয় হিন্দু ক্লার্ক।
কলেজের দিনে গণিত ছাড়া সমস্ত বিষয়ে ফেল করতেন রামানুজন।
কারণ, অঙ্ক ছাড়া আর কিচ্ছু ভালো লাগত না তাঁর! তাঁর দিনরাত নিমেষে কেটে যেন অঙ্কের জটিল সমস্যা সমাধানে। মাদ্রাজ পোর্ট ট্রাস্টের একজন গণিতবিদ প্রথম তাঁকে অঙ্কবিশারদের স্বীকৃতি দেন। স্কুল ছেড়ে আসার সময় তাঁর বন্ধুরা তাঁকে জি এস কারের লেখা একটা বই দেন। সিনোপসিস অফ এলিম্যানটরি রেজাল্ট ইন পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড ম্যাথ। এই বই তাঁর জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে হন্যে হয়ে মাদ্রাজের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন একটা চাকরির জন্যে। দোকানে দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করছেন হিসাবের খাতা-পত্র দেখার জন্যে কোনো কেরানী তাদের প্রয়োজন আছে কিনা? রাতে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত শরীর নিয়ে ফিরে আসেন খুপরির মতো রুমে।
এই সময় হাতে এলো তাঁর হার্ডির চিঠি। রামানুজন চিঠির জবাবে স্রেফ না জানিয়ে দিলেন। বলে দিলেন ব্রাহ্মণ হয়ে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে পরদেশে যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। হার্ডিও নাছোড়বান্দা। তিনি এজেন্ট লাগিয়ে দিলেন রামানুজনের পেছনে তাঁকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিয়ে আসতে ইংল্যান্ডে।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: সংগীত এবং গনিত পৃথিবীর শুরুতেই তাদের জন্ম।
২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫০
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমরা গুণীর কদর দিতে জানি না।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: কথা পুরোপুরি সত্য নয়।
৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:৩৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
তিনি অতি-প্রাকৃত মানুষ ছিলেন।
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ২:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: তিনি এত বড় পন্ডিত ব্যাক্তি হয়েও ধর্মের অলৌকিকতায় বিশ্বাস করতেন।
৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ ভোর ৬:৩৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমি সব সময় অংককে ভয় পেতাম।
অংককে মনে হতো ভূতের মতো ভয়ঙ্কর কিছু একটা।
অংক ছিল আমার কাছে আতঙ্ক।
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: আমিও মারাত্মক ভয় পেতাম।
কিন্তু একসময় একটূ একটূ বুঝতে শুরু করলাম। তারপর মজা পেতে শুরু করলাম।
৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:৩০
ইকবাল সরদার বলেছেন: শ্রীনিবাস রামানুজন কে নিয়ে নির্মিত সিনেমা The Man Who Knew Infinity(2015)
https://www.youtube.com/watch?v=8WwLPep9xNg
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখি নাই। অবশ্যই দেখব।
৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:২৮
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বেশকিছু জানলাম রাজীব দা---------------
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: বাঁচতে হবে জানতে হবে।
৭| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:৪৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অংক যানা মানুষ জীবনে সাফল্য পায়
আমি আজো জীবনের অংক মলিাতে পারিনাই।
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: অংক জানতে হবে, বুঝতে হবে। তা না হলে জীবনে সাফল্য আসবে না।
৮| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:৪৭
শেরজা তপন বলেছেন: লেখা পড়ে মনে হল গনিত শাস্ত্র আপনারও খুব প্রিয়? ভাল লাগল
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: বীজগনিত, পাটিগনিত, ত্রিকোনোমিতি আমার ভালো লাগে। আমি এসবে আনন্দ পাই।
৯| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:১৪
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: এমন প্রতিভা সহজে আর মেলে না।
পৃথিবী এঁদের কাছে ঋণী।
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই।
১০| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:০৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: রামানুজন সংখ্যা ১৭২৯ নিয়ে একটি লেখা ছিলো আমার।
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা অবশ্যই পড়বো।
১১| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৩৩
ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার পোস্ট
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ বন্ধু।
১২| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ধর্মের অলৌকিকতায় বিশ্বাস করলে পণ্ডিত হওয়া যায় না?
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: যায়। কিন্তু তারপরও কেমন একটা খটকা লেগে থাকে।
১৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০১
এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: রামানুজনের পিতার নাম আয়েঙ্গার নয়, আয়েঙ্গার হচ্ছে তামিল ব্রাহ্মণদের একটি গোত্র যার অন্তর্ভুক্ত ছিল রামানুজনদের পরিবার।
লেখাটি ভালো, অনেক তথ্য সন্নিবিষ্ট, তবে প্রবাহটি আরেকটু গোছানো হতে পারত। গাণিতিক শব্দগুলো সহজভাষায় ব্যাখ্যা করা যেত খানিকটা।
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আপনি ঠিক বলেছেন। আসলে আমি ইচ্ছা করেই বেশি ভিতরে যাই নি। যদি তালগোল পাকিয়ে ফেলি!
১৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩০
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শ্রীনিবাস রামানুজন সম্পর্কে সমৃদ্ধ হলাম ভাইয়ের পোস্ট থেকে।
শুভেচ্ছা প্রিয় ছোট ভাইকে।
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:১১
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা।
আজকাল তো আপনাকে দেখাই যায় না!!
১৫| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৭:১১
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: সুন্দর এবং তথ্যবহুল লিখা। এক কথায় চমৎকার।
১১ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৬| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৫১
অন্তরা রহমান বলেছেন: পরের পর্ব লিখে ফেলুন। জাফর ইকবাল স্যার উনাকে নিয়ে লিখেছিলেন, দারুণ লেগেছিল তখন পড়ে।
১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: লিখতে গেলে পড়তে হয়। পড়তে পারি না। চোখ জ্বলে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৪৮
আকন বিডি বলেছেন: গনিতের মাজা যে পায় সে অনেক কিছু ভুলে থাকতে পারে।