নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
শাহেদ জামাল বাসা থেকে বের হয়েছে।
উদ্দেশ্য রমনা পার্ক। কিন্তু সে কি মনে করে রমনা পার্ক গেলো না। চলে গেলো মন্ত্রী পাড়া। এখানে দেশের মন্ত্রীরা থাকেন। মন্ত্রীদের সরকারী বাড়ি। তাদের কি নিজেদের বাড়ি নেই? সরকারী বাড়িতে কেন থাকতে হবে? শাহেদ জামাল হাঁটতে হাঁটতে এক মন্ত্রীর বাড়ির সামনে চলে এলো। সেখানে অনেক ভিড়। মন্ত্রীরা যেখানে থাকে সেখানে সব সময় অনেক লোকজন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। একটা দল এসেছে মন্ত্রীর সাথে দেখা করতে। সাহেদ সেই দলের সাথে মিশে গেলো। একদল লোকের সাথে শাহেদ জামাল চলে গেলো মন্ত্রীর বসার ঘরে। শাহেদ কাউকেই চিনে না। আবার শাহেদকেও কেউ চিনছে না। সবাই ফিসফিস করে কথা বলছে। বসার রুমটা অনেক বড়। সেখানে অনেক লোক। সবাই মন্ত্রীর অপেক্ষায় আছেন।
বুড়ো মন্ত্রী সাহেব এলেন।
সবাই উঠে মন্ত্রীকে সালাম দিলো। কেউ কেউ মন্ত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করলো। অনেকে মোবাইলে ছবি তুলছে, কেউ ভিডিও করছে। শাহেদ চুপচাপ শুধু দেখে যাচ্ছে। সব অতিথিকে নাটোরের বিখ্যাত সন্দেশ খেতে দেওয়া হলো। শাহেদ জামাল দুটা সন্দেশ নিয়ে নিলো। একদম খাটি দুধের সন্দেশ। খেতে বেশ ভালো। আজকের এই দলটি মন্ত্রীর খুব কাছের লোক সম্ভবত। মন্ত্রী তাদের খেয়ে যেতে বলেছেন। দলটির প্রধান বিরাট সাইজের একটা রুই এবং একটা কাতল মাছ নিয়ে এসেছেন। চারজন লোক সেই মাছ নিয়ে এলো মন্ত্রীর কাছে। মন্ত্রী মাছ দেখে খুব খুশি হলেন। শাহেদ জামাল জানে, দেশের মন্ত্রী এমপিদের বাজার করতে হয় না। তাদের খুশি করতে লোকজন বাড়ি এসে এরকম বড় বড় মাছ দিয়ে যায়। দেশের মন্দ লোকেরা ভালো ভালো খাবার খায়। যাই হোক, মাছকে সামনে রেখে ছবি তোলা হলো। ছবিটা তুলে দিলো শাহেদ জামাল। মন্ত্রী, এমপিদের সবাই খুশি করতে চায়। মধ্যবিত্তদের কেউ খুশি করতে চায় না। শাহেদ জামাল মাছ দুটা দেখে অবাক! এত বড় মাছ!
মন্ত্রীর কাছে গিয়ে কেউ কেউ ফিসফিস করে কথা কইছে।
আর হাত কচলাচ্ছে। শাহেদ জামাল মনে মনে বলল, গাধা হাত কচলানো বন্ধ কর, নইলে হাতের চামড়া উঠে যাবে। সাথে আছে তেলানো মুখের হাসি। অতি কুৎসিত দৃশ্য। সাহেদ জামালের বিরক্ত লাগছে। শাহেদ জামাল উঠে রুমের বাইরে গেলো। কিছু দূর যেতেই রান্না ঘর চোখে পড়লো। সেখানে মাছ দুটা কাটা হচ্ছে। বাবুর্চি বলে দিচ্ছে মাছ কিভাবে কাটতে হবে। শাহেদ জামাল বাবুর্চিকে বলল, আপনি অভিজ্ঞ মানুষ। বাবুর্চি বলল, ভাইজান আপনার নাম কি? আপনাকে তো চিনলাম না। শাহেদ জামাল একটু হাসলো। হাসি দেখে বাবুর্চি বলল, আমি এখন রান্না করবো। আপনি আমার সাথেই থাকুন। এই বাবুর্চি মন্ত্রীর খুব কাছের লোক। সতের বছর ধরে সে মন্ত্রীর সাথে সাথে আছে। মন্ত্রীর নাড়ীনক্ষত্র এই বাবুর্চি সব জানে। শাহেদ জামালের সাথে মুহুর্তেই বাবুর্চির খুব খাতির হয়ে গেলো। বাবুর্চি বিশাল সাইজের একটা ভাপা পিঠা শাহেদ জামালকে খেতে দিলো।
মাছ কাটা শেষ।
বাবুর্চি রান্না শুরু করেছে। শাহেদ জামাল মোড়ায় বসে আছে। তার হাতে চায়ের মগ। বাবুর্চি সমানে কথা বলে যাচ্ছে। বাবুর্চির কথা শুনে শাহেদ কামাল অবাক। এই বাবুর্চি একত্রিশ টা দেশ ভ্রমন করেছে। মন্ত্রী তার রান্না ছাড়া একদম খেতে পারেন না। মন্ত্রী যেখানেই যায় এই বাবুর্চিকে সাথে করে নিয়ে যায়। বাবুর্চি তার মোবাইলে তার স্ত্রী কন্যা পুত্রের ছবি শাহেদ জামালকে দেখিয়েছে। শাহেদ জামাল বলেছে, মাশাল্লাহ ভাবী তো অনেক সুন্দর। বাবুর্চি বলেছে, সে প্রেম করে বিয়ে করেছে। শাহেদ জামালকে আরেকদিন আসতে বলেছে, সেদিন সে তার প্রেমের গল্প শুনাবে। রান্না শেষ। বিশেষ অতিথিদের খাবার দেওয়া হয়েছে। শাহেদ জামাল আর বাবুর্চি খেতে বসেছে সবার শেষে। বাবুর্চি বিশাল এক পিছ মাছ শাহেদ জামালকে দিয়েছে। পালং শাক দিয়ে চিতল মাছ রান্না করা হয়েছে। শাহেদ জামাল বলল, এই মাছ আমি একা খেয়ে শেষ করতে পারবো না। বাবুর্চি বলল, ভাত খাওয়ার দরকার নাই। শুধু মাছটাই খান। মুখে মাছ দিয়ে দেখুন। মোমের মতোন গলে গলে যাবে।
বাবুর্চির মন্ত্রী বাড়ির নানান গল্প করলো।
গল্প শুনে শাহেদ জামাল অবাক! এই মন্ত্রীর ঢাকা শহরে তেরো টা ফ্লাট আছে। প্রতিটা ফ্ল্যাটের দাম এক কোটি টাকার উপরে। লন্ডন, মালোশিয়া, কানাডা আর সুইজারল্যান্ডে মন্ত্রীর বাড়ি আছে। গ্রামের বাড়িটা বিশাল। সেই বাড়িতে চারটা পুকুর আছে, পুকুরের ঘাট গুলো মার্বেল টাইলস দিয়ে বাঁধানো। দুইটা বিশাল বাগান আছে। বাগানে সব বিদেশী ফুল গাছ। ছোট একটা চিড়িয়াখানা আছে। সেই চিড়িয়াখানার পশু পাখি গুলো মালোশিয়া থেকে আনা হয়েছে। সম্প্রতি দুটা উট আনা হয়েছে ভারত থেকে। মন্ত্রীর ছেলেমেয়ে সবাই কানাডা থাকে। তবে তারা বছরে দুইবার দেশে আসে। মন্ত্রী বুড়ো হলে কি হবে, গান বাজনা ভীষন পছন্দ করেন। তাই ভারত থেকে নামীদামী শিল্পীদের আনা হয়। তারা সারারাত গান করে আর নাচে। মন্ত্রী নাচ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। এবং দরাজ দিলে তাদের ডলার বিতরন করেন। এই নাচলেওয়ালী কাউকে পছন্দ হয়ে গেলে মন্ত্রী তাদের মালোশিয়ার বাড়ি নিয়ে যান।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা জানি।
২| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:২৮
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: মন্ত্রীদের সব হালহকিকত জেনে নিলেন,মন্ত্রী হবার ইচছা আছে নাকি?সব সময় বিক্রমপুরের দুই একজন মন্ত্রী থাকে।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: মন্ত্রী হতে পারলে ভালোই হতো। চুরী দূর্নীতি করতাম না। ভালো কিছু কাজ করে যেতাম।
৩| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৩৬
এম এ হানিফ বলেছেন: মন্ত্রী বাড়ির গল্প, ভালই লাগল।
আপনার লেখার হাত চমৎকার।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১০
রাজীব নুর বলেছেন: ভুল কথা। আমি লিখতে জানি না।
৪| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:১৯
মোড়ল সাহেব বলেছেন: ভালো লাগলো মন্ত্রী বাড়ির গল্প।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১১
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫২
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বাহ রাজীব দা মন্ত্রীপাড়ার সোনাই সোহাগাই লেখেছেন অনেক স্যালুট জানাই
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১১
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।
৬| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১০
ইসিয়াক বলেছেন: কবে গেলেন?
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১২
রাজীব নুর বলেছেন: একসময় প্রায়ই যেতাম।
৭| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩
মেহেদি_হাসান. বলেছেন: মন্ত্রীদের চোখ উঠতি নায়িকাদের উপর থাকে
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: বুড়ো হলেও তাদের যৌনতা থাকবে না?
৮| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: এই দশ বার বছর কোন মন্ত্রীর গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয়নি তাই এখন মন্ত্রীদের গ্রামের বাড়ির কি হাল জানি না । তবে আগে এত কিছু না
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: এখন সব আছে।
৯| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:১৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
মন্ত্রীদের টাকা পয়সার তুলনায় বউ'এর সংখ্যা কম, সরকার গাড়ী দেয়, বউ দেয় না!
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: তারা বউ চায় না। তারা গার্ল ফ্রেন্ড চায়।
১০| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৪
অশুভ বলেছেন: ছোটবেলায় কেউ ভাব নিলেই একটা কথা খুব বলতাম "নায়ক নায়ক ভাব, কিন্তু নায়িকার অভাব"।
শাহেদ জামাল কে দেখে সেটা মনে পড়ে গেল।
"হিমু হিমু ভাব, রুপার অভাব।"
শাহেদ জামাল কে একটা রুপা উপহার দিয়ে দিন রাজীব ভাই।
লেখাটা ভাল লেগেছে।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: শাহেদ জামালের প্রেমিকা আছে। তার নাম নীলা। আগের পর্বে নীলার কথা এসেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:২০
অনল চৌধুরী বলেছেন: অফিসার্স ক্লাব খেকে শুরু করে রমনা উদ্যান পর্যন্ত পুরো এলাকাটাই মন্ত্রী পাড়া।