নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মনুষ্য হৃদয়

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৫



ছবিটা দেখুন। ভালো করে দেখুন।
চিনতে পারছেন? চিনতে পারছেন না? অবশ্য চেনার কথাও না। মুখ দেখা যাচ্ছে না যে। আচ্ছা, আমিই বলে দিচ্ছি। ছবিতে আমি আর সুরভি। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? পুরো ঘটনা বললে ছবিটা পরিস্কার হবে। তাহলে ঘটনাটি শুনুন। বিয়ের আগের ঘটনা। একদিন হুট করে ঠিক দুপুরবেলা আমি মিরপুর চলে গেলাম। মিরপুর সুরভিদের বাসা। সুরভি আমাকে দেখে প্রচন্ড অবাক। সুরভিদের বাসায় কাজ করে শাহানা বুয়া। শাহানা বুয়া আমাকে আগে থেকেই চিনেন। বুয়া বললেন, ভাইজান রান্না শেষ আগে খেয়ে নিন। আমি টেবিলে বসে পড়লাম। সুরভি বলল, আব্বা যে কোনো সময় এসে পড়বে। ভাইয়াও চলে আসবে। ভাইয়া এলে গজব নেমে পড়বে। আমি বললাম, আসলে আসুক। আমার ক্ষুধা লাগছে, এখন আমি খাবো। সকালে নাস্তাও খাই নি।

খুব আরাম করে খেলাম।
শাহানা বুয়ার রান্না খুব সুন্দর। উনার বাড়ি আমাদের বিক্রমপুর। বিক্রমপুরের মেয়েদের রান্নার হাত খুব ভালো। খাওয়া শেষ করে সুরভিকে বললাম- চলো বাইরে যাই। সুরভি বলল- আজ বাইরে যেতে পারবো না। বিকেলে বাসায় ছোট মামা-মামী আসবেন। আমি বললাম, বিকেলের আগেই তোমাকে বাসায় দিয়ে যাবো। সুরভিদের বাসা থেকে বের হলাম- দুপুর আড়াই টায়। কই যাই? কই যাই? ভাবছি। বিকেলে আবার মামা-মামী আসবেন। সুরভিদের বাসার কাছেই বোটানিক্যাল গার্ডেন। কিন্তু আমরা বোটানিক্যাল গার্ডেন গেলাম না। চলে গেলাম চিড়িয়াখানায়। সুরভি কিছুতেই চিড়িয়াখানায় যাবে না। অনেকটা জোর করেই নিয়ে গেলাম। বললাম, পশু পাখি দেখবে। অবশ্যই তোমার ভালো লাগবে। প্রেম সব জাগায় করা যায়। মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় প্রেমের সময়টা।

বিশ মিনিট হেঁটেই সুরভি বলল- আর হাঁটতে পারবো না।
আমি বললাম, এখনও হাতী দেখি নি। হাতী দেখার জন্যই চিড়িয়াখানাতে এসেছি। সুরভি বলল, যাও তুমি দেখে এসো। আমি এখানে বসলাম। অতঃপর আমরা একটা বেঞ্চে বসি। সামনে ছিলো একটা লেক। ঠিক লেক না পুকুরের মতো। তবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন না। কোনো কথা নেই। দু'জনেই চুপ করে বসে আছি। চারিদিকে কত মানুষ যাচ্ছে, আসছে। নানান রকম হকার, চিৎকার চ্যাঁচামেচি- সেদিকে আমাদের কোনো খেয়াল নেই। নিরবতারও একটা ভাষা আছে। সেই ভাষায় আমাদের অনেক কথা হলো। হু হু করে সময় চলে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে বিকেল পাঁচ টা বেজে গেলো। আমি বললাম, তোমাকে বাসায় যেতে হবে। তোমার মামা-মামী আসবেন। সুরভি বলল, আসুক আমি যাবো না। তোমার কাছে থাকতেই বেশী ভালো লাগছে। সন্ধ্যায় আমরা চিড়িয়াখানা থেকে বের হলাম।

চিড়িয়াখানা থেকে রিকশা নিয়ে দশ নম্বর গেলাম।
সেখানে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। এখানে আমরা প্রায়ই খেতে আসি। রেস্টূরেন্টের সবাই আমাদের খুব ভালো করেই চিনে। অনথন আর থাই স্যুপ খেলাম। সুরভিকে বললাম, সাত টা বাজে বাসায় যাবে না? সুরভি বলে আর একটু থাকি। আমি বললাম, তোমার বাসা তো কাছে, আমার বাসা এখান থেকে অনেক দূর। সুরভি বলল, আর আধা ঘন্টা থাকবো। আমরা বেনারসি শাড়ির দোকান গুলোর সামনে দিয়ে এলোমেলো অনেকক্ষন হাঁটলাম। হাঁটতে হাঁটতে এগারো নম্বর চলে গেলাম। সেখানে একটা চটপটির দোকান আছে। খুব ঝাল দিয়ে আমরা চটপটি আর ফুচকা খেলাম। তারপর হাঁটতে হাঁটতে মিপুরপুর কমার্স কলেজ পর্যন্ত চলে এলাম। সব সময় এখান থেকেই আমি বিদায় নেই। সুরভিকে রিকশা তুলে দেই। সুরভি বাসায় গিয়ে ফোন করলে তারপর আমি আমার বাসায় রওনা দেই।

রাত ৯ টায় সুরভি বাসায় পৌঁছালো।
আমি বাসায় আসলাম রাত এগারোটায়। রাস্তায় ভয়াবহ জ্যাম ছিলো। বাসা ফিরতেই মা বললেন, কোথায় গিয়েছিলি? আমি একটা হাসি দিলাম। মা বললেন, তোমার হাসি দেখে বুঝতে পারি নি- তুমি কোথায় গিয়েছিলে? আমি আগের চেয়ে বেশি করে আবার হাসি দিলাম। মা বললেন, হাসি দিচ্ছো কেন? মুখে বললে সমস্যা কি? আমি বললাম, কোনো সমস্যা নাই। আমি মিরপুর গিয়েছিলাম। মা বললেন, মিরপুর কেন? আমি বললাম, এত প্রশ্ন করো কেন? আমার কাজ ছিলো। মা বলল কি কাজ? আমি বললাম, ভাত দাও ক্ষুধা লাগছে। সাথে একটা ডিম বাজি দিও তো। অনেকদিন তোমার হাতের ডিম ভাজা খাই না। তোমার হাতের ডিম ভাজা অনেক মজা হয়। সাথে একটা শুকনা মরিচ কড়া করে বাজবে। মা বললেন, আর কি খাবেন মহারাজ। যুদ্ধ জয় করে এসেছেন।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৪

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: আপনার লেখার হাত এতো চমৎকার বার বার পড়তে ইচ্ছে করে, আপনার লেখার মধ্যে আমার প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের স্বাদ পাই। আপনার আর সুরভি ভাবির কাহিনি পড়লে প্রেম করার হচ্ছে জাগে :) আপনাদের মধ্যে কি সুন্দর বোঝাপড়া এখন এরোকম পাওয়া যায় না।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: মন দিয়ে লিখলে মোটামোটি লিখতে পারি। খুব ভালো না হলেও, একেবারে ফেলে দেবার মতোন না।
আমি খুব সচেতন ভাবে হুমায়ূন আহমেদকে ফলো করি।
অবশ্যই প্রেম করবেন। কিন্তু তার আগে লেখাপড়া শেষ করুন। এবং ভালো চাকরি বা ব্যবসা শুরু করুন।
বোঝাপড়া করে নিয়েছি দুজন। তাই ভালো আছি। আনন্দ নিয়ে বেঁচে আছি।

২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৬

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সত্যি হলেও গল্পের মতোই লাগছে,আবার গল্প হলেও সত্যের মতোই লাগছে।ছবি তুলে দিল কে?

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমি পুরোপুরি মিথ্যা লিখতে পারি না। ইচ্ছাও করে না।
আমার একটা ট্রাইপট আছে। ট্রাইপটে ক্যামেরা বসিয়ে নিজেদের ছবি নিজেই তুলি।

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪৩

সোহানী বলেছেন: চিড়িয়াখানার বিলের ধারটা চমৎকার জায়গা। সেখানে একটা রেস্টহাউজ আছে জানেনতো? ঠিক পানির মাঝে। অনেকবার গেছিলাম।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: জানি।
তবে রেস্টহাউজের চেয়ে বিলে যে সাদা কয়েকটা বক আছে, সেটা আমার খুব ভালো লাগে।

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: কোন দুনিয়ায় আছি।এখন আপনি আমাকে ট্রাইপট বোঝাবেন কিভাবে,যেটা ঘুরে ঘুরে ছবি তুলে দেয়।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা----
আপনাকে শেখানোর কিছুই নেই। আপনি অভিজ্ঞ এবং জ্ঞানী মানুষ। এ বিষয়ে আমি নিশ্চিন্ত।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা আপনাকে।

৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: কিন্তু কড়া করে মরিচ ভাজা কেন খেলেন বলেন এবার। ছবি সুন্দর এডিং

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: ডিম ভাজার সাথে শুকনো মরিচ ভাজা ডিমের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।

৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৫:৪৬

রাবেয়া রাহীম বলেছেন: প্রায় বিশ বছরের বেশী সময় আগে চিড়িয়াখানায় একবার ঈদের দিন বেড়াতে গেছিলাম। ভালো লেগেছিলো খুব । তখন শীত কালো ঈদ হতো। চিডিয়াখানার লেকে অনেক পাখি ছিলো।
আপনার লেখায় আমারও পুরনো স্মৃতি রোমন্থন হয়ে গেলো ।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: এবার ঢাকা আসলে আপনাকে চিড়িয়াখানা দেখার দাওয়াত রইলো।

৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: গত বছর পিকনিক করলাম অফিসের সবাই। সে সময় এক কলিগ আমার দেশী ভাইও ছিলেন। করোনা তাকে কেড়ে নিলো :(

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখজনক।

৮| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বেশ মজার রাজীব দা অনেক নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: ভালোবাসা ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.