নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ গল্পঘর ডট কম।
ক্ষুধার্থ মানূষের কাছে সৌন্দর্যের কোনো মুল্য নেই,
তাই বলে সব সুন্দর জিনিস মুছে ফেলতে হবে?
যে লোক না খেয়ে আছে, গোলাপের কোনো মুল্য নেই তার কাছে,
কারণ গোলাপ-বেলী-চাঁপা এগুলো তার খাদ্য নয়, খেলে পেটও ভরে না।
সেই জন্য তুমি পৃথিবী থেকে সব ফুলগাছ উপড়ে ফেলতে চাও?
নীলা'র গল্প শুনে শুনে সবাই নীলাকে দেখতে চায়।
নীলা হচ্ছে সেই ধরনের মানুষ, যে লোকের অনুরোধের উত্তরে বারবার না বলার চেয়ে ইচ্ছায় হোক, অনিচ্ছায় হোক কোনো ক্রমে মেনে নিয়ে স্বস্তি বোধ করে। সৌজন্য ও ভদ্রতার খাতিরে এবং বন্ধুদের উপরোধে সে বোধ হয় বিষও খেয়ে ফেলতে পারে। বয়সের তুলনায় নীলা যতই ভারিক্কী ভাব দেখাক, তার ভিতরের শিশুটি যাবে কোথায়? নীলাকে লাস্যময়ী বলা চলে না, তার নৃত্যের মধ্যেও মোহবিলাস নেই। প্রায় সর্বাঙ্গ ঢাকা অতিশয় আঁট পোশাক পরিধান করে থাকে।
নীলা ছোটবেলা থেকেই মদ্যপানকে ঘৃনা করে।
আসলে অচেনা কোনো জিনিসকে জানার সাহস তার নেই। মদ্যপান না করার মধ্যেও কোনো বীরত্ব বা সাহসের পরিচয় নেই। আমার বন্ধু বাবলু, যে- কোনো নতুন তরুনীর সঙ্গেই ব্যবহার করে অতি ঘনিষ্ঠের মতন, প্রথমেই বাবলু তাদের নাম জেনে নেয় এবং তারপর তাদের তুই সম্বোধন করে কথা বলে। আমার মনে হয়, বাবলু বোধহয় আসলে অন্তরে অন্তরে নারী বিদ্ধেষী। মা ও প্রেমিকার কাছ থেকে শান্তি পায়নি বলেই সম্ভবত বাবলু পৃথিবীর আর কোনো রমনীকে শ্রদ্ধা করে না। নারী তার কাছে শুধুই যেন ভোগের সামগ্রী, তাদের আর যেন কোনো মূল্য নেই।
প্রায়ই বন্ধু বাবলু বলে- মেয়ে মানুষ হবে দু' রকম।
হয় নিজের সন্তানের গর্ভধারিনী অথবা নাচুনী। আমি বাবলুকে বলেছি, যারা নিজের বিচার বুদ্ধি দিয়ে ন্যায়-অন্যায় বুঝতে শেখে, তারা কখনো পরের কথায় নাচে না। তুমি যদি প্রকৃত মানুষ হতে চাও, তবে নিজের বিচার বুদ্ধিকে জাগ্রত করো। কোনো সৎ কাজ করতে পারলেই মানব জীবন সার্থক হয়। যদিও মানুষের মন সব সময় যুক্তি মানে না। এক এক সময় ন্যায়-নীতি-ধর্ম সবই তুচ্ছ হয়ে যায়!
ভাবছি, একটা জাহাজ কিনে নিরুদ্দেশে ভেসে পড়লে কেমন হয়?
সেই জাহাজে আর কেউ থাকবে না, একজন নাবিকও না, শুধু আমি আর নীলা। পৃথিবীর অজানা প্রান্তে যেসব দ্বীপে এখনও মানুষের পদস্পর্শ ঘটেনি, সেখানে আমি একটি কাঠের দোতলা বাড়ি বানাবো। বড় বড় জানালা থাকবে। ঘর ভরতি থাকবে বই দিয়ে। ব্যলকনিতে দুটা চেয়ার থাকবে। সেই চেয়ারে বসে আমি আর নীলা বসে চা খাব।
হুট করে আমি ভর দুপুরবেলা নীলার বাসায় গিয়ে হাজির হই।
আজ দুপুরে আমি নীলা সাথে লাঞ্চ করেছি। আমাকে দেখেই নীলা ভালো করে আঁচল জড়িয়ে উঠে দাঁড়াল। আমার হাত ধরে হাসতে হাসতে বলল, তোমার গা থেকে একটা তাপ বেরোয়, কাছে গেলেই টের পাই। মধ্য দুপুর আকাশ ধুয়ে যাচ্ছে কড়া রোদে। নীলা এক একবার আমাকে দেখছে, এক একবার জানালা দিয়ে দেখছে আকাশ। নীলাকে প্রথম চুমু দেবার পর নীলা বলেছিল, আমার একুশ বছরের জীবনে এমন আনন্দ আর কখনো পাইনি। লেবুর সরবতে একটা চুমুক দিয়ে এবং অনেকদিন অনভ্যাসের ফলে দু-বার বিষম খেয়ে সামলে নিলাম। আর তখনই মনে হলো- আজ রাতে খুব বৃষ্টি হবে।
রান্না ঘরে গিয়ে দেখি নীলা ডিম ভাজছে আর গুন গুন করে গাইছে-
'দি ওয়ান্ডারিং এয়ারস দে ফেইন্ট
অন দা ডার্ক দা সাইলেন্ট ষ্ট্রিম-
দি চম্পক ওডারস ফেইল
লাইক সুইট থটস ইন আ ড্রিম;
দি নাইটিঙ্গেল কমপ্লেইন
ইট ডাইজ আপ অন হার হার্ট
অ্যাজ আই মাস্ট ডাই অন দা...
আমি নিরবে নীলার পাশে গিয়ে দাঁড়াই। নীলার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। আমি পকেট থেকে রুমাল বের করে নীলার কপালের ঘাম মুছে দেই। নীলা আমার দিকে তাকিয়ে বলল- শোনো মিঃ নূর, আমি তোমাকে একটি প্লেইন ট্রুথ বলতে চাই। যে-কোনো রোগেই, যত ভালো মেডিসিনই থাক, সর্বোত্তম ঔষধ হলো উইল টু লিভ, উইল টু সারভাইভ...এই উইল পাওয়ারের মতন ঔষধ আর নেই।
আমাদের খাওয়া শেষ।
মেন্যু ছিল ডিম ভাজি আর ডাল। আমি নীলাকে বললাম- ম্যডামজ্বী আচার হিসেবে কি দু'একটা চুমু পেতে পারি? এই কথা বলতেই, যেন কোনো অপার্থিব সুখের আলো এসে পড়ে নীলার চোখে মুখে। আমি নীলার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম- 'লেট দাই লাভ ইন কিসেস রেইন অন মাই লিপস্ অ্যান্ড আইলিডস পেইল'। কিসেস রেইন মানে কী বুঝলে তো? বৃষ্টির মতো চুমু ঝরে পড়া, কেমন ভাবে ঝরে পড়ে দেখবে? বলতে বলতেই লাফ দিয়ে উঠে এসে আমি নীলাকে আলিঙ্গনাবদ্ধ করে, এই এমনিভাবে... ঠোঁটের ওপরে ...চোখের পাতার ওপরে...
এখন বিকেল।
আমরা দু'জন ব্যালকনিতে বসে আছি। হাতে চায়ের মগ। নীলা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, এই যে এত বড় একটা আকাশ, তাও কি কোনো দিন কোনো কাব্যে ধরা পড়েছে? নীলা গুনগুন করে একটা গান গাইছে। জীবন তাকে চর্তুদিক থেকে ভরিয়ে দিয়েছে, সুখ যেন আর ধরে না তার শরীরে। একদিন নিউমার্কেটে উন্মাদ নূরকে দেখে নীলা ভেবেছিল, তার ভবিষ্যৎ একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে, কিন্তু আবার তার জীবনে যে এমন পরিপূর্ণতা আসবে সে স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। তার ভালোবাসার মানুষ একেবারে দেবতার মতন মানুষ, জন্ম-জন্মান্তর তপস্যা করেও কটা মেয়ে এমন ভালোবাসার মানুষ পায়!
আমি কখন নীলার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।
নীলা খুব সন্তর্পনে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। দেখে দেখে আর আশ মিটে না। শয়ন ভঙ্গিটি কেমন যেন করুন ধরনের। তেজী, অহংকারী মানুষটি ঘুমের মধ্যে একেবারে অন্যরকম। হাত দু'টি বুকের কাছে গুটানো। হঠাৎ নীলার চোখের দু'ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো...
এই বিকেলই বুঝি পৃথিবীর শেষ বিকেল।
০৩ রা জুন, ২০২১ রাত ১:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: কারন লেখার ব্যাপারে আমি অপরিপক্ক।
২| ০৩ রা জুন, ২০২১ রাত ১২:৪৫
কামাল১৮ বলেছেন: রাজলক্ষী শ্রীকান্তকে বলেছিল,ভাবার্থ ঠিক এই রকম,তুমি আমি সারা জীবন কাটিয়ে দিই এই নির্জনে,শ্রীকান্ত বলেছিল, আমি পারি না।
আজকের গল্পটি বেশ ভাল।স্বপ্নে থেকে বাস্তবতা বেশি।আমি সেকালের মানুষ,আপনার গল্প পড়ে আধুনিকতা সম্পর্কে একটা ধারনা পাই।তাদের চিন্তা ভাবনা চলন বলন,জীবনাচার।
০৩ রা জুন, ২০২১ রাত ১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: এযুগের আধুনিকতা মানেই নোংরামি।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২০
শেরজা তপন বলেছেন: বেশ তো রোমান্টিকতায় ভরপুর ছিল কিন্তু শেষে এসে কেন বিরহের আভাস!!!