নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
মানব জীবন বড় রহস্যময়।
বড় আনন্দময়। তবে জীবনের পথ মসৃন নয়। জন্মের পর আমৃত্যু সংগ্রাম করে যেতে হয় বেঁচে থাকার জন্য। কোনো মানুষের জীবনই সহজ সরল সুন্দর নয়। তবে দক্ষ ও পরিশ্রমী মানুষেরা জীবনটাকে নিজের মনের মতো সাজিয়ে নিতে পারে। অবশ্য তাদের সংখ্যা খুবই কম। বেশির ভাগ মানুষই জীবন যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর তাঁরা দুঃখে-কষ্টে আর অভাবে অভাবে জীবন পার করে। অল্প কিছু মানুষ সত্যিকারভাবে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারে। ধনী দেশের মানুষের তুলনায় দরিদ্র দেশের মানুষের কষ্ট বেশি। আমাদের বাংলাদেশের মানুষ সীমাহীন কষ্ট করে আমৃত্যু পর্যন্ত। জীবনে ঘটে যাওয়া কোনো কোনো ঘটনা জীবনকে মহামানিত্ব করে তোলে। বড় আনন্দ দেয়। আজ সেরকমই দু'টা ঘটনা বলব।
১। মন্ডা মিঠাইঃ
এই ঘটনা শুরু প্রায় ২০/২২ বছর আগে। একদিন আমি বাগেরহাট যাচ্ছিলাম। আমি যাবো রায়েন্দা। সেখানে বাসে আমার সাথে পরিচয় হয় কামাল নামের একজনের সাথে। কামাল যাবেন মোল্লারহাট নামক জায়গায়। বাসে আমরা পাশাপাশি বসেছিলাম। কামাল দরিদ্র ঘরের সন্তান। লেখাপড়া সামান্য করেছে। কামালের সাথে নানান বিষয়ে গল্প হলো। এক জায়গায় বাস থামলো। আমরা চা-টা খেলাম। কথায় কথায় কামাল বলল- আপনি কি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মন্ডা খেয়েছেন। আমি বললাম- না খাই নি। কামাল বলল- আমি আপনাকে খাওয়াবো। আমাদের অঞ্চলের বিখ্যাত মন্ডা মিঠাই। কামাল প্রায় জোর করেই আমার ঠিকানা নিলো।
এরপর কামালের সাথে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।
মাঝখানে ২০/২২ বছর কেটে গেছে। কামালের কথা আমি সম্পূর্ন ভুলে গেছি। যদিও এর মধ্যে আমিও বেশ কয়েকবার মনমনসিংহ গিয়েছি। কিন্তু মন্ডা খাওয়া হয়নি। এই তো কয়েক বছর আগে এক আত্মীয়ের বাসায় মুক্তাগাছার মন্ডা খেয়েছি। আমার কাছে আহামরি কিছু মনে হয় নি। গতকাল এক অপরিচিত লোক বাসায় এসেছে। তার নাম কামাল। কামাল বাসায় দুই কেজি মন্ডা দিয়ে গেছে। কামাল তার কথা রেখেছে- সে আমাকে তার অঞ্চলের মন্ডা খাইয়েছে। ২০/২২ বছর সময় লাগার কারন হচ্ছে- তার জীবনের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। সে কাজের জন্য মধ্যপ্রাচ্য চলে গিয়েছিলো। সেখানে বিনা অপরাধে তার জেল হয়েছিলো। ইত্যাদি ইত্যাদি।
২। একজন অসহায় মাঃ
ইসলামপুর পাটিয়াটুলী'তে আমার ফুপার ব্যবসা আছে। বিরাট ব্যবসা। কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। যাই হোক, একদিন ফুপার কাছে গিয়েছি। ফুপা অফিসে নেই। আমি ফুপার অফিসের নীচে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছি। এমন সময় দেখি একজন অসহায় মা তার দুই শিশু কন্যার জন্য ভিক্ষা চাচ্ছে। কেউ তাকে ভিক্ষা দিচ্ছে না। অসহায় মা খুব আকুতি মিনতি করে বলছে- আমার বাচ্চা দু'টা না খাওয়া। ওদেরকে ভাত খাওয়াবো। কেউ টাকা দিচ্ছে না। রাস্তার পাশে ফুটপাতে এক ভাতের হোটেলে মা তার দুই বাচ্চাকে নিয়ে বলল- সামান্য ভাত আর একটু ঝোল দেন, বাচ্চাদের খাওয়াবো। হোটেলওলা ধমক দিয়ে বলল- যাও এখন বিরক্ত করো না। বিকেলের দিকে আসো। আমার খুব রাগ হলো। সামান্য ভাত দিলে কি এমন ক্ষতি হতো হোটেলওলার!
আমি অসহায় মায়ের কাছে গেলাম।
ছোট দুটা বাচ্চার বয়স ৪/৫ হবে। আমি ফুটপাতের সেই হোটেলে মা আর বাচ্চাকে বসালাম। বললাম, আপনাদের যা যা খেতে ইচ্ছা করে আপনারা খান। টাকা আমি দিবো। মা এবং বাচ্চা দুটি খুব আরাম করে খেলো। আমি তাদের পাশে চুপ করে বসেছিলাম। মা তার দুই কন্যাকে ভাত মেখে খাইয়ে দিচ্ছে। দুই কন্যার চোখমুখ খুশিতে ঝলমল করছিলো। বাচ্চা দুটার আনন্দ দেখে আমার মন খুশিতে ভরে উঠলো।
এই ঘটনার পর অনেক বছর পার হয়ে গেছে।
আমি অসহায় মা আর তার দুই কন্যার কথা ভুলেই গেছি। বছরে দুই তিন বার আমার পাটুয়াটুলী যাওয়া হয়। ফুপার সাথে দরকারী আলাপ সেরে চলে আসি। দুই বছর আগের কথা। ফুপার কাছে গিয়েছি। ফুপার সাথে দেখা সাক্ষাৎ শেষ করেছি। ফুপার অফিস থেকে বের হতেই এক মহিলা আমার কাছে এলো। বললো- ভাইজান আমাকে চিনতে পারছেন। আমি বললাম, না চিনি নাই।
মহিলা অনেক বছর আগের সেই ঘটনা বলল।
আমি তাকে এবং তার দুই কন্যাকে ভাত খাইয়েছিলাম। মহিলার চোখে পানি চলে এসেছে। মহিলা গর্বের সাথে বলল, সেই ভাতের হোটেল এখন আমার। আমি কিনে নিয়েছি। আমার দুই মেয়ে লেখাপড়া করে। মহিলা খুব নরম গলায় বলল- আপনি যদি আমার হোটেলে আসেন, একটু ভাত খান আমি খুবই খুশি হবো। আমি সেই হোটেলে গেলাম এবং ভাত খেলাম। রান্না বেশ ভালো। মহিলা তার দুই মেয়েকে ডেকে নিয়ে এলো। দুটা মেয়েই অনেক বড় হয়ে গেছে। দেখতে বেশ মিষ্টি। দুটা মেয়ের মাথায় হাত রেখে আমি দোয়া করে দিলাম।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:০১
রাজীব নুর বলেছেন: ভূয়া থেকে দূরে থাকুন।
২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: না ভাইয়ের সাথে সহমত হতে পারলাম না। আমাকে ওনাকেই যে বেশি নিরাপদ মনে হয়। ভাইকে তাহলে বলি একটি অভিজ্ঞতা। ব্লগিং করতে গিয়ে নানারকম উপদ্রবের শিকার হয়েছি।সেন্টু খেলে হয়তো ব্লগিংকে গুডবাই জানিয়ে দিতাম। কিন্তু আজো ব্লগিং টা করছি গায়ের চামড়া মোটা করে।আর এর পিছনে ভূয়া ভাইয়ের কুমিরের চামড়ার কথা মনে রেখে নিজেকে টিকিয়ে রেখেছিল। যাইহোক কবিগুরুর কথায় বলতে হয়,
তার চেয়ে নাহি মোর অধিক গৌরব
পান্ডব পান্ডব থাক, কৌরব কৌরবে।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: কথায় বলে আপনের চেয়ে পর ভালো, পরের চেয়ে জঙ্গল।
দাদা খুব সাবধান। খুব।
৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৯
কামাল১৮ বলেছেন: বেঁচে থাকাটাই একটা সংগ্রাম।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।
৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫২
কামাল১৮ বলেছেন: পড়ে আবার আসলাম।দুটি সত্য গল্পই মনকে নাড়া দিয়েছে।মানুষের জীবনে কত কি ঘটে।তা কি দোয়া করলেন?
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: দোয়া করলাম মেয়েদের জীবন যেন আনন্দময় হয়। জগতের কোনো খারাপ যেন তাদের স্পর্শ না করে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৫২
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: এক্কেবারে নুতন রিকশা? আমার একটা টোটো কেনার ইচ্ছা আছে। ভুয়া ভাইয়ের চারচাকা দেখে প্লান নিয়েছি একটা টোটো কিনবো। পরিবেশ বান্ধব গাড়ি।