নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
রাতে একেবারেই ঘুম হয়নি।
জাস্ট তন্দ্রা তন্দ্রা ভাব হয়েছিলো। আর তখন দেখেছি পাগলাটে, অদ্ভুত ও অযৌক্তিক সব স্বপ্ন। ভয় লাগছিলো। শেষে বিরক্ত হয়ে বিছানা থেকে নামলাম। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ভোর পাঁচ টা বাজে। বাইরে আকাশ ফরসা হয়নি। শীতকাল না হলে আকাশ এতক্ষণে ফরসা হয়ে যেতো। সুরভির ঘুম না ভেঙ্গে যায়, এজন্য আলো জ্বালালাম না। বেচারি ঘুমাক। কি করবো? মাথার মধ্যে এলোমেলো নানান রকম চিন্তা। ভেসিনে গিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলাম। ঠান্ডা পানির ঝাপটা একদম হাড়ের মধ্যে এসে যেন লাগলো। হাড়ে কাঁপন লাগলেও কিছুটা সতেজ লাগছে এখন। ফারাজা কাশছে। শুকনো কাশি। ইচ্ছা করছে ঘরের জানালাটা খুলে দেই। জোরে জোরে একটু ঠান্ডা বাতাস বুকে টেনে নিন। জানালা খুললাম না। মেয়েটার কাশি হয়েছে।
গতকাল রাতে এক প্যাকেট সিগারেট কিনেছিলাম।
গত কয়েকদিন ধরে খুব সিগারেট খাচ্ছি। সিগারেট খেলে কোনো উপকার নেই। তবে কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত থাকা, আর কি। সস্তা সিগারেট খেতে পারি না। ঘরের ফুলদানীতে দীর্ঘদিন ফুল রাখা হয় না। ফুলের যা দাম। একটা সিগারেট ধরিয়ে আমি ব্যলকনিতে এসে দাড়ালাম। ভোরের স্বচ্ছ বাতাসে সারা শরীর কেঁপে উঠলো। এক কাপ চা খেতে পারলে ভালো লাগতো। ভোরবেলা চারপাশটা বেশ সুন্দর লাগে। বড় পবিত্র লাগে। শুধু মাত্র ভোরবেলাতেই এই শহরটাকে ভালো লাগে। কিছু পাখি ডাকাডাকি করছে। আলো না ফুটলে তাঁরা ঘর থেকে বের হবে না। হুট করে খুব শীত পড়ে গেলো এবার। অনেক কুয়াশা। এই কুয়াশা সকাল দশটার আগে কাটবে না। আলতাফ স্যার একটা বই দিয়েছিলেন, সেই বইয়ের প্রতিটা পাতায় ছবি আর ছবি। সেই বইয়ে এরকম একটা ভোরের ছবিও দেখেছিলাম।
সদ্য কৈশোর পেরনোর পর একটা মেয়েকে ভালো লেগেছিলো।
মেয়েটা ভীষন সুন্দর। দূর থেকে আমি রোজ মেয়েটাকে দেখি। মেয়েটাকে দেখলেই আমার রক্ত যেন নেচে উঠতো। এত খুশি লাগতো যে ইচ্ছা হতো হেটে হেঁটে এয়ারপোর্ট চলে যাই। একটা সুময়ের অপেক্ষায় থাকলাম। সুসময় এলেই মেয়েটাকে আমার ভালোবাসার কথাটা জানাবো। মনে মনে সব ঠিক করে রাখলাম। সময় বয়ে যেতে লাগলো। গোপনে মেয়েটাকে নিয়ে কবিতা লিখি। গল্প লিখি। সেই সব লেখা নিজেই বারবার করে পড়ি। মুগ্ধ হই। রোমাঞ্চিত হই। কি যে ভালো লাগে! আমার ভাগ্য মন্দ। একদিন আমার চোখের সামনে দিয়ে একলোক মেয়েটাকে বিয়ে করে আমেরিকা নিয়ে চলে গেলো। ভীষন দুঃখ পেলাম। রাগে দুঃখে হেঁটে হেঁটে এয়ারপোর্ট চলে গেলাম। পকেটে টাকা ছিলো না। তাই হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরলাম। বাসায় ফিরেই জ্বরে পড়লাম। চার দিন ভুগলাম।
এই পৃথিবীতে কেউ ঠিকঠাক বেঁচে নেই।
আবার পুরোপুরি মরেও যায়নি কেউ। অনেকে যা দেখতে পায় না আমি তা-ই দেখি। সেই মেয়েটা যদি এখন আমেরিকা থেকে ফিরে এসে আমার হাত ধরতে চায়। আমি তাকে স্পষ্ট মানা করে দিবো। বেশি বাড়াবাড়ি করলে হয়তো একটা থাপড় দিয়ে বসতে পারি। শুনেছি ওর স্বামীর মাথায় এখন চুল নেই। পুরো টাক। ভালো হয়েছে। নে এবার টাক স্বামীর ঘর কর। সে যাজগে, আজকাল আমার খুব ভুল হয়। অতীত বর্তমান সব মিলেমিশে যায়। পরশু দিন বিকেলে হঠাত বই পড়তে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। স্বপ্ন দেখলাম। দুইশ ' সাতান্ন বছর পেছনে চলে গেছি আমি। একজন বলল, এখন তোমাকে মরতে হবে। আমি মনে মনে বললাম, শালা বলে কি! ভয়ে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচলাম। মরতে ইচ্ছা করে না। এখন মরেও তো শান্তি পাবো না। ছোট মেয়েটার মাত্র দুই বছর। আমাকে ছাড়া সে আনন্দ নিয়ে বড় হতে পারবে না।
মরতে অবশ্য আমার কোনো ভয় নেই।
কিন্তু মেয়েটার কথা ভাবলে আমার মরতে ইচ্ছা করে না। সুরভির ঘুম ভেঙ্গেছে। নরম সুরে বললাম, এক কাপ চা কি পেতে পারি? সুরভি কিছুটা রেগে বলল, দাঁত ব্রাশ না করে কেউ চা খায়? কি যে বাজে অভ্যাস তোমার! সুরভির জায়গায় যদি সেই মেয়েটা থাকতো তাহলে সে-ও কি এখন সুরভির মতোন বলতো- 'দাঁত ব্রাশ না করে কেউ চা খায়? কি যে বাজে অভ্যাস তোমার!' যাইহোক, চায়ের কাপ হাতে নিলাম। কোনো কাজ নেই আমার। এজন্য অনেক কিছু খেয়াল করতে পারি। অনেক রকম শব্দ শুনতে পাই। অথবা কিছুই খেয়াল করি না। কোনো শব্দই শুনি না। সবটাই আমার ভুল। আমার নিজস্ব একটা ভুবন আছে। সেখানে কোনো সমস্যা নেই, অভাব নেই, দুঃখ কষ্ট নেই, হতাশা, হাহাকার কিছুই নেই। সেখানে আমি ঘুরে বেড়াই। গান গাই। আনন্দ করি। ধান চাষ করি। পুকুরে মাছ। গোয়াল ঘরে গরু। সব আমি এক হাতেই সামলাই।
আমি সক্কাল বেলাতেই লিখতে বসলাম।
যা মন চায় লিখব। কেউ ঠিকঠাক ভাবে বেঁচে নেই। অথচ সকলেই বেঁচে আছে। আমার কান্না পায়। কথায় যাবো আমি? সুরভি চায়ে চিনি কম দিয়েছে। চায়ে চিনি কম কেন হবে? ঘরে কি চিনি নেই? সুরভি কি ইচ্ছা করেই চায়ে চিনি কম দিয়েছে? নাকি চিনি ঠিকই আছে। দেশে কি চিনির টানাপোড়ন চলছে? টানাপোড়ন? নাকি সংসারে? সংসারে কি খুব অভাব চলছে? কে জানে! আমার ধান কই? মাছ কই? গোয়াল ঘরের গরু কই? আজ কি কোথাও কোনো সমাবেশ আছে? আছে কোনো মানববন্ধন? কে জানে? আমি জানি না। আমি শুধু জানি আজ আমার চায়ে চিনি কম হয়েছে। চায়ে চুমুক না দিয়ে আমি জানালার পাশে এসে দাঁড়াই। রোদ উঠেছে। চারপাশ বেশ স্বাভাবিক। কুয়াশা কেটে গেছে। আকাশে কয়েকটা পাখি উড়ছে। লোকজন হাঁটছে। সব স্বাভাবিক। শুধু আমার চায়ে চিনি কম হয়েছে। সারাটা দিন কেটে যাবে, শুধু বিস্বাদ চায়ের স্বাদ মুখে লেগে থাকবে।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: আমার ইচ্ছা করে কেউ আমাকে চা বানিয়ে দিক।
২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩২
কামাল১৮ বলেছেন: হযবরল লেখা।কিন্তু অন্য রকম একটা ভালোলাগা আছে।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: এই লেখাটা আসলে আমার একটা এক্সপেরিমেন্ট।
৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:১৭
মোঃ আসিফ ইকবাল রুমি বলেছেন: দামি সিগারেট তাও এক প্যাকেট আবার সাথে ফুলের শখ । অনেক ধনী ভাই আপনি ।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: সস্তা সিগারেট খেতে পারি না।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: সস্তা সিগারেট খেতে পারি না।
৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:১৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- খাপছাড়া লেখা, তবে লেখার টোনটা ভালো।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: নতুন স্টাইলে কিছু লিখতে চেয়েছিলাম।
৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৬:২৬
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: চিনি একটু নিয়ে নিলেই পারতেন!
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমি আইলসা।
৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৫৩
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সুন্দর রাজীব দা
আপনার চমৎকার ভাবনা
তবে নাটক লেখতে পারেন
অনেক শুভ কামনা জানাই
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪
সোনাগাজী বলেছেন:
আমি চা নিজে বানাই, স্ত্রীর জন্যও বানাই।